somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেরানো গেল না কিছুতেই

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহুকালের পরিচিত সেই জটিল মুখটি দেখার জন্যে পাশে মুখ ফেরালাম। সেই একই ভঙ্গী! কোনকিছু মনমতো না হলে দু’ঠোঁট চেপে রাখা ওর সবসময়ের অভ্যাস।ভেবে ভেবে দিশেহারা হওয়া মনে হয় একেই বলে! কিভাবে আমি ওকে আজ বিয়ের কথা বলব! বললে প্রতিক্রিয়াই বা কী হবে!ভ্রু থেকে ঘাম গড়িয়ে পড়লো;আমার পাগলপারা দশাকে ওর কাছে একেবারে উন্মুক্ত করে দেবার জন্য যে এটা যথেষ্ট হবে আমি জানতাম।
ও আমার দিকে মুখ ফেরালো, স্বাভাবিক প্রশ্নটাই ছুড়েঁ দিলো – তুমি এভাবে ঘামছো কেন?
বোকার মতো হেসে বললাম, “এখানে আজকে খুব গরম, না কি বলো? দাঁড়াও গাড়ির জানালার কাঁচ নামিয়ে দেই।”
কাঁচ নামানোর সুইচে হাত দিতে গিয়েই দেখলাম ও সিট বেল্ট বাধেঁনি, নিশ্চয়ই প্র্যাগন্যান্সির এমন অ্যাডভান্স স্টেজে বেচারার সামনের সিটে সিটবেল্ট বেঁধে অনেক সময় ধরে বসতে খুবই কষ্ট হবে!পরক্ষণেই মনে হলো ও সামনের সিটে, সিট বেল্ট ছাড়া বসাটা বিপদজনক তো বটেই, বিশেষ করে হাইওয়েতে।
সিটয়ারিংয়ে হাত রেখেই বললাম রাস্তা দেখতে দেখতে, “তারা, বেল্ট বেঁধে নে প্লীজ।”
এতক্ষণে প্রথমবার ওর নাম ধরে ডাকাতেই কি না, না কি ‘তুই’ বলাতে জানি না, ঝট করে তারা আমার দিকে তাকালো একদম স্থির দৃষ্টিতে এবং অবিচল কণ্ঠে বললো, ‘তোমাকে বিয়ে করার কথা বলবে আজ তুমি, তাই না?’
এত অসহায় কখনো লাগেনি এতটা বয়সে, আমার ঘাড় নিজের অজান্তেই কেমন শক্ত হয়ে গেল, কিছুতেই আমি রাস্তা থেকে চোখ সরাতে পারলাম না। যে কেউ আমাকে দেখলে ভাববে আমি রাস্তার মসৃণতা বা এর গড়নের উপর কোন গবেষণা করছি।
গত কয়েকমাসের খুটিঁনাটি সব স্মৃতি এক ঝলকে আমার মাথায় ঝাঁপ দিয়ে পড়তে থাকলো।
তারা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছিলো যখন আমি হঠাৎ করে বললাম কেনসাস ইউনিভার্সিটিতে একবছরের জন্যে এমএস কোর্স করতে যাব। তারা আমার এই সিদ্ধান্তে একেবারে হতবাক হয়ে গিয়েছিলো, কারণ তখন আমরা এতবছরের সম্পর্কের পর মাত্র ভাবছি একসাথে থাকা শুরু করব, বিয়ে করব, তারার ইচ্ছেমতো ওর নিজের একটা বাচ্চা হবে। যদিও আমি লেসবিয়ান যুগল হিসেবে বাচ্চা নিয়ে বন্ধুবান্ধবের সামনে আর নাটক করতে চাইনি, বাচ্চা না নেয়ার ব্যাপারে আমার একধরনের একগুয়েঁমি ছিল। অন্য সবাই নিচ্ছে আর এটা এখন এখানে খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু আমি আমার স্বপ্নের এত কাছাকাছি এসে একেবারে উন্মাদ বলতে যা বুঝায় তাই হয়ে গেলাম। তারা নিজের মনকে পোষ মানানোর আগেই আমি “মাত্র তো এক বছর!” – এই একটা কথা বলে সত্যি সত্যি কেনসাস চলে এলাম। আমার চলে আসার সময় ওর ঐ নীরবতা, পাথরের চোখে চেয়ে থাকা...সব পেছনে ফেলে আমি উড়াল দিলাম।মনে মনে ভেবেছি এক বছর এমন আর কী! সবই ঠিক থাকবে। কিন্তু যখন ফিরলাম তখন আর কিছুই আগের মতো নেই।

যাবার পর থেকে তারা কোন যোগাযোগ করলো না, একদম চুপ। নিজের অপরাধী মনে নিজে দগ্ধ হতে হতে আট মাসের মাথায় যখন বুঝলাম তারা আমাকে সত্যি ছেড়ে যাচ্ছে তখন আমি আর পারলাম না। আমি আমার(!)তারার কাছে আবার উড়াল দিলাম।এসে দেখলাম তারা সাজিদের বেবী পেটে নিয়ে ঘুরছে, আর আমাকে সেই পাথর চক্ষুর দৃষ্টি দিয়ে নীরবতার চরম শাস্তি দিচ্ছে।
আজকে শিকাগোর পথে লং ড্রাইভে বেরিয়েছি গত দু’মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর। দিনের পর দিন আমি আমার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করেছি সেইসাথে তারাকে বলেছি বারবার আমার বুকের গভীরে আজ কি শূন্যতা ওকে ছাড়া, সেই এমএস আমি ছুড়েঁ ফেলেছি মাঝপথে, শেষ করিনি, আমি আর কিছু চাই না, শুধু তারাকে আবার চাই। নিজের বোকামীর কথা যতভাবে পারা যায় স্বীকার করেছি। এখনো জানি না তারা আজ কি বলবে!

নিজের এতদিনের আবেগ, কান্না, অপরাধবোধ, তারার প্রতি ভালোবাসা সব কেমন যেন আমাকে বিবশ করে দিচ্ছে। এত ভয় অনেকদিন লাগেনি, ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্টের দিন যেমন লাগে আমার এখন তেমন লাগছে!

নিজের অবশিষ্ট সাহস এক করে তারার দিকে শেষ পর্যন্ত আমি তাকালাম......পৃথিবীর সব ভয় সেই দৃষ্টিতে জড়ো হওয়া, চোখ সামনের রাস্তার দিকে....শুধু দেখলাম রডে বোঝাই এক বিশাল ট্রাক আমাদের গাড়ির সামনেটা পুরো ঢেকে ফেলেছে, আমি কিছুতেই আমাদের গাড়ির সেই রডের উপর আছড়ে পড়া ঠেকাতে পারলাম না..........

(মূল : নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্ধু
অনুবাদ : আফসানা কিশোয়ার)

আমার বিশ্বাস ইংলিশটা পড়লে সবার আরো ভালো লাগবে। তাই সেই ভার্সন দিলাম

I looked at my side and saw her in a perplexed face with pressed lips, I was just wondering how to ask her hand for marriage, and how is she going to respond. A trickle of sweat dropped over my eyebrows. Just at that moment, she moved her face to me and said, ‘why are you sweating?’ I kind of nervously smiled and said, ‘oh, it’s kind of hot here, ain’t it? Let’s roll down the window of the car a bit’. While I was pressing the button, found that her seat-belt is not fastened, I found with such an advanced stage of pregnancy, it might be uncomfortable for her to sit for such a long time with the seat belt on. But she is in the front seat, and I felt really worried, coz it’s a rough highway. Putting my hands right over the steering, I looked sideways at her and said, ‘Tara, please fasten your belt’. She suddenly looked at me with her fixed eyes, and told me, ‘you are going to ask me to marry you today, aren’t you?’ I got really stiff in my shoulders, and couldn’t move my eyes from the road. I was looking at the road, so keenly, as if I am doing a research on the quality check of the highway itself! All pieces of last few months came rushing into my head. How she was shattered by my sudden desperate decision of going to University of Kansas, USA for the year long Ph.D, while we were in the middle of moving together and planning for marriage, and she about to make me crazy with her desire to have a baby of her own, and I, being too stubborn of not making a scene within our friends to get a baby being a lesbian couple…Though it had become quite a common thing surrounding us! So, in the middle of all these, when I got this tremendous dream opportunity of mine to complete my Doctorate in my dream university, she couldn’t gather herself to believe that I m leaving her for a year, to me it was “just 1 year”! And Tara said just nothing…she seemed to be, like stoned… And I flew! Thinking, everything will fall into places, when I return, but nothing did.

After 8 months of guilt-filled mind and complete silence from Tara, I became wild with the thought of her leaving me and I came back. Only finding Tara to be pregnant with Sajid’s kid and stoney eyes over me. And here we are, in a long drive towards Chicago together, after last 2 months of relentless persuasion of making her understand not only my unwavering deep rooted feelings for her but also my sincere-most regret of making such a stupid move at such a time! And I still don’t know, what will be her answer today.

And here I was, having a rush of emotions within my heart and the feeling of a nervous student before the result day!

Finally I gathered all my courage, looked at her……………………only to see the scariest look in her eyes towards the road ahead and the next thing I found was, a huge truck with steel rods stuck just ahead of my car and I had no way to stop smashing towards it…………………………………………………………………

ইতিমধ্যে http://www.amrabondhu.com/meghkanya/3025 এখানে প্রকাশিত। যারা পড়েছেন আর না পড়ান জন্য সতর্কসংকেত:)
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×