আমরা মরে গেছি সেই কবে
তবু আবার ডেকেছে সময়, জীবনের পিগলিত বরফ-লগন
কারণ—
বেলজিয়াম কবে কখন মিলিয়ন মিলিয়ন মুসলিম খুনে মেতেছে
হিটলার কেনো জায়নাবাদ ঠেলে পাঠিয়েছে ফিলিস্তিন
মার্চ মাস এলেও কিভাবে আমরা বেলা এগারোটায় আড়মোড়া ভাঙি
বসন্তেও সেনানিবাসে কী করে ঠাণ্ডি মেরে পড়ে থাকে তনুদের লাশ
ধর্মের নামে কোন খেয়ালে কারগুজারি ছাপে সেক্যুলার শয়তান
এইসব কারুকাজ আমাদের জানতে হবে— হবেই
কেননা— আমরা জানতে পারি নি,
কবে আমাদের শরীরের লোদ শুকিয়ে গেছে
এখন আমাদের হাড্ডিগুলো কেনো কয়েকটা শুকনো কাঠের আঁটি
শিরা-উপশিরা কেমনে পড়ে আছে খসখসে খড়ের মতো
আর আমাদের মুখ দেখে তোমার মনে হবে
চৈত্রের রোদে শুকানো পল্লীবালার টনটনে চুল্লির কথা
হাতের গড়ন হয়েছে শিরীষ পাতার অবিকল
আমাদের জিহ্বাগুলো দেখো,
মেহেগনি ফলের মতো ঘুরে ঘুরে উড়ে উড়ে
নেমে এসেছে মর্তের মাটিতে
ধূনি করা কার্পাশ তুলার মতো আমাদের হৃদয়গুলো
বাতাসের দমকে দমকে ঘুড়ির মতো সাঁতরায়
হতে পারে—
অচ্ছূৎ লাশের মতো আমরা পড়ে আছি তোমার হাবেলির বাইরে
অপেক্ষা করো, আমরা এবারের বেনোজলে ভেসে যাবো
অথবা আমাদের দেহের একটা একটা টুকরো ধরে
ছুঁড়ে ফেলো তোমার তেতে ওঠা পৃথিবীর বাইরে কোথাও
তবু— আমাদের অনুতপ্ত হবার সুযোগ দিয়ো না
ঝাঁটার আঘাতে কুড়িয়ে কুড়িয়ে আমাদের সংঘবদ্ধ করো না
সাবধান !
কারণ—
ছায়াবিহীন দীর্ঘসময় সবটুকু মানবিকতা শুষে নিয়েছে আমাদের
তাই এখন কিশোরীর প্রথম প্রেম কিংবা ভোরের কাগজের মতো
সামান্য উত্তাপ পেলেই আমরা জ্বলে উঠতে পারি
পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারি তোমার দুর্গের এপিটাফ
কুণ্ডুলি পাকানো ধোয়ায় কালি মেখে দিতে পারি
তোমার রপ্তানিমান সমৃদ্ধ ইজ্জতের আকাশ
যদিও— আমরা মরে গেছি
কিন্তু মনে রেখো— মৃতদেরও প্রাণ আছে
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮