somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সঠিক পথে গাড়ী চালানোর লাইসেন্স পেতে যা করতে হবে...

১৮ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব
শিক্ষানবীশ ফর্ম মিরপুর বিআরটিএ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। ওদের অফিসে আপনি পাবেন না। নিতে হবে দালালের কাছ থেকে। সে জন্য আপনাকে ১০/২০ টাকা খরচ করতে হবে। তারপর সেই ফর্ম পূরণ করে তার সাথে ভোটার / ন্যাশনাল আইডি কার্ড, কমিশনার সনদপত্রের সত্যায়িত কপি এবং দুই কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি এবং ৫০০ টাকা ফিসহ জমা দিতে হবে। ভাগ্য ভালো হলে ২/৩ দিনের মধ্যে শিক্ষানবীশ কার্ড পেয়ে যাবেন। ৩ বার যাওয়া-আসা, ফিসহ অন্যান্য খরচের পরিমান : ৮০০ টাকা।

দ্বিতীয় পর্ব

মাসখানেক বাদে ওদের দেয়া তারিখ অনুযায়ী আপনাকে জুরাইনের চীন মৈত্রী সেতু পার হয়ে কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া বিআরটিএ অফিসে যেতে হবে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা দেবার জন্য। সকাল নয়টার পরীক্ষা শুরু হবে দশটায়। দেরীতে শুরু করলেও মাত্র পনের মিনিটে শেষ হবে লিখিত পরীক্ষা। এরপর ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত বসে থাকতে হবে আপনাকে রেজাল্টের জন্য। ভালো পরীক্ষা দিলে আপনি পাশ করবেন এবং মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাক পড়বে আপনার। সেখানেও যদি পাশ করেন, তবে ৩ টার পর আপনাকে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অবতীর্ন হতে হবে। গাড়ী স্টার্ট করে এদিক সেদিক সামান্য চালাতে পারলেই আপনি পাশ। এদিনে ওরা আপনার শিক্ষানবীশ কার্ডটা রেখে দেবেন। এতসব পরীক্ষা দিতে যেয়ে সারাদিন আপনার শেষ। ইকুরিয়াতে যাওয়া এবং আসা আর সারাদিনে খাবার দাবার মিলিয়ে আপনার এবারের খরচ পড়বে: ৩০০ টাকারও বেশি।

তৃতীয় পর্ব
১৫ দিন পর শিক্ষানবীশ কার্ডটি সংগ্রহ করতে আপনাকে মিরপুর বিআরটিএ যেতে হবে। এরপর নির্ধারিত তারিখে দ্বিতীয়বারের মতো আপনাকে যেতে হবে কেরানীগঞ্জে। যাবার পর এটা সেটা আজাইরা প্রশ্ন করবে আপনাকে। আসলে আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত হয়ে নেবেন তারা। সেদিনও সারাদিন আপনার শেষ...। আজকের খরচ : ৩০০ টাকা

চতুর্থ পর্ব
আবার ১৫ দিন পর আপনি মিরপুর অফিসে যাবেন। শিক্ষানবীশ কার্ডটি সংগ্রহ করবেন। ৪ পৃষ্ঠার একটা সবুজ ফর্ম আর দুটো সাদা রংয়ের বিআরটিএর ডিএল (ড্রাইভিং লাইসেন্স) ফর্ম যা অফিসে পাবেন না। আপনাকে ১০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। সবুজটি ফ্রি। এ ৩টি ফর্ম পূরণ করে এর সাথে যা যা দিতে হবে :
১. ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
২. ২ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি
৩. কমিশনারের নাগরিকত্ব সনদপত্র
৪. ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি
৫. মাধ্যমিক পরীক্ষার সনদপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি
৬. শিক্ষানবীশ কার্ড

এতোসব কাগজ পত্র যোগাড় করেছেন ? খুশী হবার মতো কিছু ঘটেনি। কাউন্টারে জমা দিতে যাবেন ? ঘড়ির দিকে তাকান ! ১ টা বেজে গেছে ! স্যরি, আজ আর জমা নেয়া যাবে না। কাল আসুন। খরচ হলো : ২০০ টাকা।

পঞ্চম পর্ব
সকাল সকাল মিরপুরের বিআরটিএ অফিসে গেলেন। প্রতিজ্ঞা করেছেন, আজ ফর্ম জমা দিবেনই...। সব কাগজসহ জমা দিলেন। কাউন্টার থেকে আপনাকে টাকা জমা দেবার চালান দেবে। একটু দুরেই ডাকঘর। সেখানে যেয়ে ঠেলাঠেলি করে ২ হাজার টাকা জমা দিলেন। জমার রশিদ পেতে আরো ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। এরমধ্যে দেখবেন, আপনার পাশ থেকে কতোজন আলম ভাই, আলম ভাই বলে ওপাশের কাউন্টারের ভদ্রলোকের কাছে টাকা জমা দিয়ে রশিদ নিয়ে গেছে। ওপাশের আলম ভাইয়ের সাথে ওদের একটা বুঝাপড়া আছে আগে থেকেই...। তো জমার রশিদ নিয়ে আবার সকল কাগজ জমা দিতে এলন ৭ নং কাইন্টারে। ওপাশের অন্য এক আলম ভাই সব দেখেবে গম্ভীর হয়ে। তারপর বলবেন: শিক্ষানবীশ কার্ডটির ৩ টি, টাকা জমার ৩ টি মোট ৬টি ফটোকপি লাগবে। ফটোকপি মেশিন কোথায় ? গেইটের বাইরে। দৌড়ালেন আপনি। ফটোকপিও করলেন। টাকা দিতে যেয়ে আপনার আক্কেল গুড়–ম! ৬ টি ফটোকপি মাত্র ৩০ টাকা। কেনো ? কারণ, বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটরের সাহায্যে ফটোকপি করতে হয়েছে। অতি কৌতুহলী হয়ে আপনি হয়তো জানতে চাইলেন, যখোন বিদ্যুৎ থাকে। ফটোকপি মেশিনের ওপাশের ভদ্রলোক হেসে বলবেন- বিদ্যুৎ এখানে প্রায়ই থাকে না..। এরপর জমা দিলেন সব কাগজ। আপনাকে ৩টি কাগজ ফেরত দেবে- যা দেখিয়ে লাইসেন্স সঙগ্রহ করতে হবে। আপনার আজকের খরচ : ২৩০০ টাকা। ভাবছেন, লাইসেন্স পেয়ে গেলেন ? জ্বী না মশাই ! আপনাকে কম করে ৪ টি মাস অপেক্ষা করতে হবে লাইসেন্সের জন্য। যেমন আজ থেকে আমি অপেক্ষা করছি...



৫২টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×