somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব - ০১ :( :(

১৩ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাড়ি থেকে যখন পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে এলো আমি তখন ভালো করে জামাটাও পড়ার টাইম পাইনি । নাইট ড্রেসটা পড়ে ছিলাম, একটু পরই ঘুমাবো বলে । এর আগে ব্যস্তভাবে ডিনারটা সেরে নিচ্ছিলাম । আমার স্ত্রী নূপুর আমার সাথেই বসে খাচ্ছিল । সারাদিন ব্যস্ততা শেষে এই ডিনার টাইমেই দুইজন একসাথে বসে খাবার টাইমটুকু পাই । অবশ্য ডিনার করতে করতে কখনও ১২ টা আবার কখনও ১টা বেজে যায় । পাগলিটা কেমন যেন, আমাকে ছেড়ে কখনই রাতের সময়টাতে খায় না । অনেক বলেছি ওকে কিন্তু কথাই শোনে না । তাই তো রাতে যদি কখনও খেয়েও আসি তবুও ওর সাথে বসে হালকা হলেও খেতে চেষ্ঠা করি । অবশ্য এই সময়ে এসে কখনই বাচ্চাগুলোকে জাগ্রত অবস্থায় পাই না ।

যাই হোক, ঘড়িতে ঠিক তখন ১২টা বেজে ১৯ মিনিট, দরজায় নক । এত রাতে প্রতিবেশী যে এসে নক করবে না, এটাই স্বাভাবিক, এটাই সামাজিকতা । যাই হোক, একটু পর নকের তীব্রতা বাড়তে লাগলো । আমি ধৈর্য্যহারা হয়ে গেলাম । রাগ তখন চরমে । দরজা খুললাম, কিন্তু খুলেই পুলিশ দেখেই রাগ আমার কনফিউশনে পরিণত হলো । এত রাতে পুলিশ !!! কিন্তু পুলিশই কেন !!!

মিঃ কালাম, আপনাকে আমাদের সাথে একটু পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে । আমরা আপনার এরেস্ট ওয়ারেন্ট নিয়ে এসেছি । আপনি দ্রুত ড্রেসটা চেঞ্জ করে নিন । This night will be so long for you । পুলিশের মধ্যে যে এতক্ষণ আমার মধ্যে কথা বলছিল সে যে উচ্চশিক্ষিত, বুঝতে পারলাম । আমি কথার প্রতত্ত্যুরে কিছুই বললাম না । নীরবেই ড্রেসটা চেঞ্জ করে পুলিশের সাথে চললাম । নূপুর এতক্ষণ ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় হয়ে ছিল । শুধু যাবার সময় বললো, আমি আসবো ? আমি শুধু বললাম, না থাক, বাচ্চারা তো ঘুমাচ্ছে । হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলে ওরা তোমাকে খুঁজতে পারে । তুমি বরং সালামকে বলে কাল সকালে একবার আসতে পারো ওখানে । আগে বলে নিই, সালাম আমার ছোট ভাই । নূপুর আর কিছু না বলেই আমার কথা মেনে নিলো । আর আমি চললাম পুলিশের সাথে ।

পুলিশ স্টেশনে বসে আছি আধা ঘণ্টার বেশি হয়ে গেছে । আমাকে একটি ছোটখাট বেঞ্চে বসিয়ে রেখেছে তারা । আবার বেঞ্চের হাতলের সাথে আমার হাত হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকানো । এর মধ্যে আর আমার সাথে কেউ কথা বলছে না । এমনকি আমার দিকে কেউ তাকাচ্ছেও না । মনে হচ্ছে আমি অদৃশ্য কেউ একজন । তাই আমি বাধ্য হলাম চোখ বুলানোর জন্য । বেঞ্চে আমি একা না, আরও দুইজন বসে আছে । এদের মধ্যে একজন মহিলা আর একজন পুরুষ । মহিলাটি আমার পাশে আর পুরুষটি আরেক কোনায় । ঐ পুরুষটিকেও আমার মত হ্যান্ডকাফ দিয়ে হাত আটকিয়ে রেখেছে বেঞ্চের হাতলের সাথে । মহিলাটির মুখে অতিরিক্ত মেক-আপ । বুঝলাম, রাস্তা থেকে ধরে এনেছে, হয়তো টাকা নিয়ে বনিবনা হয়নি । পুরুষটিকে দেখে মনে হচ্ছে টাল হয়ে আছে । যে কোন মুহূর্তে বেঞ্চ থেকে পড়ে যেতে পারে । আবার রুমটির এক কোনায় একটি বাচ্চা অবিরত কেঁদেই চলেছে । কিন্তু সবাই যে রকম ভাবে ছোটাছুটি করছে, মনে হচ্ছে কেউ এই বাচ্চাটির কান্না শুনতেই পাচ্ছে না । আমি আশেপাশে তাকিয়ে বাচাটির মা কিংবা অভিভাবককে খুঁজার চেষ্ঠা করলাম কিন্তু না, কেউই নেই আশেপাশে । আবার সেখানে বসেই শুনতে পেলাম পুলিশ পেট্রলের গাড়িগুলো একটা স্টেশন ছাড়ছে তো আরেকটা এসে ভিরছে । তাই একটু পর পর সাইরেনের আওয়াজ একবার বাড়ছিল আবার একবার কমছিল ।

(বাকিটা আগামী পর্বে)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৬ সকাল ১০:৪১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×