somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৬

১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা এই গল্পের আগের পাঁচটি পর্ব পড়েননি বা পড়ার সুযোগ পাননি, তাদের জন্য লিংক শেয়ার করলাম নিচেঃ
(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ১-৪
(পর্বভিত্তিক বড় গল্প) জীবনের এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন - পর্ব ৫

স্বপ্নের ঘোর থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম সেই পুলিশ ভাইটির ডাকে যে কিনা আমাকে পুলিশ স্টেশনে প্রথম আসার পর পানি এনে খাইয়েছিল । আমি পুলিশ ভাইটির কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতেই কিনা নেমপ্লেটে লেখা তার নাম খেয়াল করলাম । আসলাম শেখ । বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের পর থেকে শেখ নামধারী বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক । কেউ নামের আগে, কেউবা মাঝে আবার কেউ নামের পিছে লাগিয়ে দিচ্ছে এই শব্দখানা । হয়তো বাপ-দাদা চৌদ্দ-গুষ্ঠির মধ্যে কেউ শেখ নেই অথচ ছেলে দিব্যি শেখ নাম নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । যাই হোক, এই শেখ কি তেমনই নতুন সংযোজিত শেখ কিনা তা আর আমি জিজ্ঞাসা করলাম না । অনেকক্ষণ ধরে ডাকছেন মনে হচ্ছে । কারণ তার মুখে আমি এখন রাগের অভিব্যক্তি দেখতে পাচ্ছি । খুব প্রিয় একজন মানুষের উপরেও অবহেলা কারণজনিত ব্যাপারে রাগ করা খুব অস্বাভাবিক নয়, আর তাছাড়া আমি তো পুলিশ ভাইয়ের আপন কেউ না । আর তাছাড়া আমি স্বপ্নের জগতে ছিলাম বেশ অনেকক্ষণ যাবৎ । আশ্চর্য লাগছে এখন এই ভেবে এই সময়ের মধ্যে নূপুর বা সালাম কি আমার সাথে কথা বলেনি নাকি তারা খেয়ালই করেনি যে আমি অন্যমনস্ক নাকি তারা ঠিকই কথা বলে যাচ্ছে কিন্তু আমি শুনতে পারছিলাম না । কি জানি বাপু, কোনটা । তবে পুরনো সুখের স্মৃতিগুলো রোমন্থন করতে খুব ভালো লেগেছে । আমি জনাব আসলাম শেখকে জবাব দিলাম, "ভাই, আমাকে ডাকছিলেন ?" আসলাম শেখ সাহেবের তীক্ষ্ণদৃষ্টি এবার একটু শীতল হলো । তিনি এবার আমার দিকে উত্তর দিলেন, "আপনাকে স্যার ডাকছেন ।" "কে বদরুল সাহেব ?" "জী," । এতটুকু কথোপকথন শেষে আসলাম শেখ হাজতের গেট খুলে দিলো, আমি আবারও হাজতের বাইরে আসতে পেরেছি, কেমন জানি এবার সত্যি সত্যি স্বাধীনতার অনুভূতি হচ্ছে । ১৯৭১ এ স্বাধীনতা পাওয়ার চেয়েও বেশি ভালো অনুভূতি ।

আমাকে হাজত থেকে বের করেই সরাসরি বদরুল সাহেবের সামনে আনা হলো । আমার পাশে দাড়িয়ে নূপুর আর সালাম । তাদের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারছি চোখেমুখে উৎকণ্ঠা । সালাম অনেকক্ষণ ধরেই আমার জামিনের জন্য ওরই পরিচিত একজন উকিলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করছে, কিন্তু ওর ভাব দেখে বুঝা হচ্ছে হয়তো উকিল সাহেবকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না, নয়তো উকিল সাহেব রাজী হননি । আমি সালামকে চিনি ভালো করেই, নয়তো সালামের মুখ এত গোমরা হয়ে থাকতো না । যাই হোক বদরুল সাহেবের সামনে দাঁড়ানো মাত্র আমি আবারও আমার আশেপাশের মানুষজনের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা শুরু করলাম ।

বদরুল সাহেবের পুরো চোখ লাল হয়ে রয়েছে । সাধারণত দুইটি ক্ষেত্রে একজন মানুষের চোখ এমন সাত-সকালে লাল হতে পারে । এক, যদি ঘুম একেবারেই না হয় আর দুই, ঘুম হয়েছে বেশি বা অপূর্ণ আকারে । আমার মনে হচ্ছে বদরুল সাহেবের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ব্যাপারটাই ঘটেছে । "স্যার, আমাকে ডেকেছেন ?" বদরুল সাহেবের মুখভর্তি পান । ভালোই বুঝা যাচ্ছে কারণ তিনি উপর্যপুরি মুখ নাড়িয়েই যাচ্ছেন আর তার মুখের দুই পাশ থেকে পানের চিপ একটু একটু করে চুইয়ে পড়ছে । আবার লক্ষ্য করলাম তার সামনে চা রাখা । দুধ চা । একটি শক্ত কাগজ দিয়ে ঢেকে রাখা । আমি বুঝলাম না একজন মানুষ একইসাথে পান আর চা কি করে খেতে পারে ? এমনিতেই পুলিশের সাথে ঘটা ঘটনাগুলো আমার বরাবরই কেমন জানি একটু কনফিউশন লাগে । এই তো গেলো বদরুল সাহেবের কথা । এবার আসি আরও যা পর্যবেক্ষণ করলাম তা নিয়ে ।

(বাকিটা আগামী পর্বে)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×