somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৩ ।।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আগের পর্ব ২টি পড়েননি, শুধুমাত্র তাদের জন্য আগের পর্বগুলোর লিংক দিলামঃ
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০১ ।।
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০২ ।।



জনাব হাসান সাহেব এবং মিসেস সুমনা চৌধুরীর পরিচয় হয় একটি স্বনামধন্য সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ডিপার্টমেন্টে পড়ার সুবাদে । অবশ্য তারা এক সাথে পড়তেন না । মিসেস সুমনা চৌধুরী যখন ফাস্ট ইয়ারে ক্লাস শুরু করেন, তখন হাসান সাহেব ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র । তো পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নিজের এবং নিজের স্ত্রীর বন্ধু-বান্ধবদের পরিবারসহ দাওয়াত করলেন । যেহেতু হাসান সাহেব এবং মিসেস সুমনা চৌধুরী একই ডিপার্টমেন্টে পড়তো, তাই তাদের বন্ধু-বান্ধব সম্পর্কে সিনিয়র-জুনিয়র । অনেকটাই ডিপার্টমেন্টের রি-ইউনিয়ন হয়ে যাবে কয়েক ব্যাচের । তবে এই কারণে সবচেয়ে আনন্দ পাবে সুমনাই, ভেবে বেশ আনন্দ পেলেন হাসান সাহেব । সকলকে অবশ্য রাতের ডিনারের সময় আসতে বলা হলো ।

তো সেই নির্দিষ্ট দিনে সন্ধ্যার দিক থেকেই দাওয়াতকৃত মানুষজনের আনাগোনা বাড়তে লাগলো হাসান সাহেবের বাড়িতে । মিসেস সুমনা চৌধুরী যখন এই পার্টি সম্পর্কে বুঝতে পারলেন, তখন বেশ খুশি হলেন । সবচেয়ে বেশি খুশি হলেন তার স্বামীর কষ্ট করে আয়োজন করার কারণে । আসলে এই মানুষটাকে যত ভালোবাসা যায়, ততই আরও ভালবাসতে ইচ্ছা করে । এত ভালো একজন মানুষকে নিজের স্বামী হিসেবে পেয়ে মিসেস সুমনা চৌধুরী সবসময় মনে মনে গর্ব করেন, অবশ্য মুখে খুব একটা প্রকাশ করেন না । তার এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ বিশেষ দিনটির কথা মনে পড়ে । ক্যাফেটেরিয়ায় বসে সেদিন বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা মারছিলেন মিসেস সুমনা চৌধুরী তথা সুমনা । প্রায় সবার হাতেই প্লেট, প্লেটে সিঙ্গারা ও সামুচা, আর সাথে একটা কোল্ড ড্রিংকস । এভাবেই তাদের আড্ডা চলতো সবসময় । হঠাৎ সেদিন কোথেকে যেন ঝড়ের মত উদয় হলেন হাসান সাহেব তথা হাসান । তাকে দেখেই সবাই যে যার জায়গা থেকে দাড়িয়ে সিনিয়র দেখে সালাম দিলো । হাসান ছিল ব্যাচের ফাস্ট বয় । খুব একটা আড্ডা মারায় অভ্যস্ত ছিলেন না । দেখতে বেশ সুশ্রী থাকলেও কোন মেয়ের দিকেই তাকাতেন না কোন সময় । সবসময় মনোযোগ ছিল পড়াশুনায় । তিনি হয়তো সেদিন প্রথমবারের মতই ক্যাফেটেরিয়ায় এসেছিলেন তার চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে । তো, এসেই তিনি ব্যস্ত ভাব দেখাতে আরম্ভ করলেন । এমন একটা ভাব, কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন কিন্তু বলতে পারছেন না । প্রায় সবাই মিলেই তাকে জিজ্ঞাসা করলো,

- কি হয়েছে ভাই ? কিছু বলবেন ?

জুনিয়রদের কাছে এরকম প্রশ্ন শুনে আৎকে উঠলো হাসান । তবু কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

- কই, না তো । কিছু বলবো না ।

এবার সবার মধ্যে সাহস করে সুমনা আগ বাড়িয়ে হাসান ভাইকে জিজ্ঞাসা করলো ।

- ভাই, কি হয়েছে ? আমাদের বলেন । আমরা তো আপনার ছোট ভাই-বোনের মত । আমাদের বলবেন না তো কাকে বলবেন ?

এই কথা শুনেই মনে হয় হাসান বেশ সাহস পেলো । এরপর সাহস করে বলেই ফেললো ।

- এই, তোমার নাম সুমনা, না ? একটু এদিকে এসো তো । তোমাকে একটা কথা বলবো ।

হাসান যে ঐসময় কাউকে এই কথা বলতে পারে, তা কেউ কল্পনাতেও নিতে পারতো না । সেখানে উপস্থিত সবার মুখ আশ্চর্য হওয়ার তীব্রতায় হাঁ হয়ে গেলো । এমনকি সুমনাও বেশ অবাক হলো । তবু কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে হাসানের সাথে ক্যাফেটেরিয়ার এক কোনার দিকে চলে গেলেন । সে যে এখন কি শুনতে যাচ্ছে, তা সম্পর্কে তার আদৌ কোন ধারণা নেই । যাই হোক, হাসান এবং সুমনা ক্যাফেটেরিয়ার এক কোণায় যখন দাঁড়ালেন, তখন কিছু বলার আগেই হাসান বেশ ঘামতে লাগলো এবং দুই হাত অস্বাভাবিক আকারে ঘষতে লাগলো । একটি মেয়ের সামনে একটি ছেলের এরকম আচরণ স্বাভাবিক হয়তো কিন্তু একজন জুনিয়রের সামনে একজন সিনিয়রের এরকম আচরণ অনেকটাই অস্বাভাবিক ।

(বাকীটা আগামী পর্বে)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×