somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৫ ।।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আগের পর্বগুলো পড়েননি, শুধুমাত্র তাদের জন্য আগের পর্বগুলোর লিংক দিলামঃ
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০১ ।।, একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০২ ।।, একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৩ ।।, একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৪ ।।



ততক্ষণে সেই জায়গাটিতে বেশ বড় রকমের জটলা বেধে গেছে । সুমনার দেরি হতে দেখে তার বন্ধু-বান্ধবরা ভিড় ঠেলে তাকে খুঁজতে এসে এই দৃশ্য দেখে বেশ অবাক হয় । তারা হাসান ভাইয়ের এই রূপ কখনই কল্পনাও করতে পারেনি । সেদিন থেকে আজ অবধি সুমনার হাত ছাড়েনি হাসান । অদ্ভুতভাবে ঠিক সেদিন থেকেই হাসান সাহেব আড্ডাপ্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন । বন্ধু-বান্ধব, সিনিয়র, জুনিয়র সবার সাথেই বেশ আড্ডা মারতেন । অবশ্য এর কারণে তার রেজাল্টে কোন তারতম্য হয়নি ।

পার্টিতে বেশ মজা হল । কিছুক্ষণ নাচ-গান, একসাথে খাওয়া-দাওয়া, এরপর আবার বাচ্চাদের একসাথে খেলাধুলা সব কিছুই বেশ আনন্দদায়ক হল । পার্টি শেষে সবাই ধীরে ধীরে চলে গেল । দেখতে দেখতে মুহূর্তেই সবকিছু কেমন জানি নীরব হয়ে গেল । মিসেস সুমনা চৌধুরী নিজের শরীরের দুর্বলতাকে উপেক্ষা করেই আনন্দ করেছেন সবার সাথে, তাই এখন তার শরীর বেশি দুর্বল লাগছে । তার এখন ঘুমানো প্রয়োজন । তিনি কোনরকমে ফ্রেশ হয়ে ঔষুধ খেয়েই বিছানায় শুয়ে পড়লেন ।

হাসান সাহেব সবাইকে বাড়ির গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসলেন, বাড়িতে ফিরেই এসে দেখলেন তার স্ত্রী শুয়ে পড়েছেন । যার জন্য এত আয়োজন, তাকে তিনি খুশি করতে পেরেছেন, এতেই তো সার্থকতা । কিন্তু তিনি তো কোন উপহার দিতে পারেননি তাকে । সে যে শখ করে তাজা একটা লাল গোলাপ কিনে এনেছিল, সেটাই তো নিজের স্ত্রীকে দিতে পারেনি । এরকম তাজা লাল গোলাপ এই মেয়েটির সবসময় প্রিয় ছিল ।

তারা দুইজন রিলেশন হওয়ার পর যখন প্রথম ভার্সিটির বাইরে দেখা করে, তখন মেয়েটি তাকে বলে, আমার সাথে দেখা করতে হলে সবসময় একটি তাজা লাল গোলাপ নিয়ে আসতে হবে, বাসি হলে চলবে না । কি আর করার, প্রিয় মানুষটার আবদার বলে কথা । তাই তো কখনও গাছ থেকে চুরি করে, আবার কখনও ফুলের দোকান থেকে কিনে নিয়ে এসেই তবেই দেখা করার সুযোগ মিলতো ভালোবাসার মানুষটির । বিয়ের পর অবশ্য সেই অবস্থা অনেকটাই শিথিল হয়েছে । তবে প্রথম কয়েক বছর বিশেষ দিনগুলোতে সেই তাজা গোলাপের ফরমায়েশ ঠিকি ছিল । এরপর আস্তে আস্তে সময় গড়ানোর সাথে সাথে কি করে যেন ভুলে গেছে দুইজনই । কিন্তু আজও ঠিকই তাজা সেই গোলাপের কথা মনে আছে হাসান সাহেবের । তাই তো অন্যান্য আয়োজনের সাথে এই তাজা গোলাপের আয়োজন তিনি করেছিলেন । কিন্তু তা তো আর সুমনাকে দেওয়া হল না, যাক, সকালে না হয় দেয়া যাবে, এই ভেবেই সেই তাজা গোলাপটি তাদের বক্স খাটের এক পাশে রেখে দিলো হাসান সাহেব ।

আচ্ছা, এক কাজ করলে কেমন হয় ? অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে নিলে কেমন হয় ? রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেই হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি আসলো হাসান সাহেবের । তার স্ত্রীর অনেক দিনের শখ সমুদ্র দেখবে । বেচারি কোনদিন কক্সবাজারে যায়নি । তাই সমুদ্রও দেখা হয়নি । আবার কক্সবাজার গিয়ে সেন্ট-মার্টিন দ্বীপে না গেলে কি হয় ? হুম, ভালোই হয় । ছেলে-মেয়ে বাচ্চাদুইটা আর তারা দুই টুনা-টুনি মিলে ভালোই পারিবারিক ট্যুর হয়ে যাবে । ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে গেলেন হাসান সাহবে ।

খুব সকালেই ঘুম ভেঙ্গে গেল হাসান সাহেবের । মিসেস সুমনা চৌধুরী অবশ্যই তখনও ঘুমিয়ে আছেন । মাঝে মাঝে হাসান সাহেবের বিশ্বাস হয় না, এমন একটি মেয়েকে তিনি বিয়ে করতে পেরেছেন ? আচ্ছা, মেয়েটি যখন তার আই লাভ ইউ এর উত্তরে হ্যাঁ বলে, তখন সে কি ছিল ? এই মেয়ের তুলনায় তার কোন যোগ্যতাই ছিল না । সে ছিল এক ক্যাবলাকান্ত আর আর মেয়েটি ছিল অপরূপা সুন্দরী । তাছাড়া তিনি এসেছেন কোথাকার এক হতদরিদ্র পরিবার থেকে আর এই মেয়েটির পরিবার ছিল অভিজাত ও সম্ভ্রান্ত । কি করে যে সব মিলে গেল, এখনও ভাবলে বেশ অদ্ভুত মনে হয় হাসান সাহেবের । যাক, তিনি সারাজীবন গর্ব করেই বলতে পারেন এই মেয়েটিকে তিনিই পেয়েছেন, সারাজীবনের জন্য নিজের করে পেয়েছেন ।

(বাকীটা আগামী ও শেষ পর্বে)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×