somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোশারফ হোসেন ০০৭
বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

তমাল আর সুমির পরিণয় - ।। ৩য় পর্ব ।।

২৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আগের পর্বগুলো পড়েননি, শুধুমাত্র তাদের জন্য রইলো ১ম তমাল আর সুমির পরিণয় - ।। ১ম পর্ব ।। ও ২য় পর্ব তমাল আর সুমির পরিণয় - ।। ২য় পর্ব ।। এর লিংক ।

সুমিকে কাঁদতে দেখা নিঃসন্দেহে তমালের জন্য খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার আর সাথে সাথে লজ্জাজনকও । আশেপাশে কেউ আবার দেখছে কিনা এটা দেখার জন্য তমাল আশেপাশে তাকাতেই দেখলো, তাদের ঠিক ডান পাশে মায়ের সাথে এক চার-পাঁচ বছরের একটা ছোট্ট মেয়ে বসে আছে । মা ঘুমিয়ে আছে আর মেয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে । তমাল ছোট্ট মেয়েটির দিকে তাকিয়ে একটু খানি শুকনো হাসি দিলো কিন্তু মেয়েটির কোন ভাবলেশ হলো না । ওদিকে সুমির চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে তো পড়ছেই । তমাল কিছু বুঝে উঠতে না পেরে পকেটে হাত দিয়ে রুমাল বের করলো । কোন বিখ্যাত একটা উক্তি নাকি এরকম যে, ছেলেদের পকেটে রুমাল থাকেই মেয়েদের চোখের পানি মুছে দেওয়ার জন্য । তমাল হাত বাড়িয়ে রুমাল সুমির দিকে এগিয়ে দিলো । সুমি সেটা দেখেও না দেখার ভান করলো । তমাল বুঝে গেছে, সুমি শুধু কষ্টই পাইনি, একটু রাগও হয়েছে । এই সেরেছে !! নতুন বউয়ের রাগ, সে তো সাংঘাতিক ব্যাপার । তমাল অনেকক্ষণ ধরে রুমাল ধরে থাকার পর সুমির নেওয়ার আগ্রহ না দেখে আবার সেটা ভাজ করে পকেটে রেখে দিলো ।

হ্যাঁ, ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে, সাথে সুমির চোখ দিয়ে পানি পড়াও বন্ধ হয়েছে । চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সুমি একটা কথাও বলেনি, এমনকি তমালের দিকে তাকায়নি পর্যন্ত । তমাল বেশ অস্বস্তিতে পড়ে গেছে । সামান্য একটু অভিনয়, একটু আনন্দের জন্য যে এরকম খেসারত দিতে হবে, সেটা আগে বুঝতে পারলে, কখনই সে অভিনয়টুকু করতো না । ওদিকে ট্রেন ছাড়ার মিনিট পাঁচেক পর তাদের পাশে বসে থাকা লোক দুইজন আবার নিজেদের সিটে এসে বসলো । একজন তমালের পাশে আর একজন সুমির পাশে, মুখোমুখি । ঠিক যেমনটা তমাল আর সুমি মুখোমুখি বসে আছে । এই দুইজন লোক চলে আসায়, আদতে তমালের সুমির সাথে কথা বলার চেষ্ঠাটুকু দমে গেলো । উপয়ান্তর না দেখে তমালও নিজের সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললো । তাহলে আবার ফ্ল্যাশব্যাকে যাওয়া যাক...

সুমির বাবার কাছ থেকে সম্মতিসুচক উত্তর পাওয়ার পর মা আর ছোট মামার সাথে বাড়ি চলে এলো তমাল । বাড়িতে এসেই নিজের রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো সে । এরপর সোজা মোবাইলে হেডফোন লাগিয়ে হাই সাউন্ড দিয়ে কানে দিয়েই নাচ শুরু তমালের । সে এমন নাচ, যার কোন নির্দিষ্ট মুভমেন্ট নেই । যেমনটা ইচ্ছা, অনেকটা জংলীদের মত । প্রায় আধাঘণ্টা নাচার পর ক্লান্ত হয়েই বিছানায় শুয়েই ঘুমিয়ে গেলো তমাল । সকালে ঘুম থেকে উঠেই হাতের কাছে মোবাইল খুঁজতে লাগলো তমাল । অনেকক্ষণ হাতড়ানোর পর মোবাইল পেয়ে গেলো সে । মোবাইল হাতে নিয়ে সময় দেখেই তড়াক করে লাফ দিয়ে একেবারে খাটে বসে গেলো সে । ও মা, ঘড়িতে তো দুপুর দেড়টার মত বাজে । গতকাল ছিল বৃহস্পতিবার । গতকাল যেহেতু সন্ধ্যার দিকে সুমিদের বাসায় গিয়েছিল তারা, সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া করে আসায় রাতে কিছু খাওয়ার প্রয়োজন পড়েনি আর । কিন্তু আজ তো শুক্রবার !! তার মানে জুম্মার দিন । শিট !! এই ঘোড়ার ডিমের ঘুমের কারণে তো জুম্মার নামাজই মিস হয়ে গেলো তার । ধুর !! যাই হোক, আফসোস নিয়েই ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো তমাল ।

দরজা লাগিয়েই ঘুমিয়ে গিয়েছিল তমাল, সকালের দিকে তমালের মা অনেকক্ষণ দরজা ধাক্কা দিয়েও ছেলের ঘুম ভাঙ্গাতে পারেনি । তার উদ্দেশ্য ছিল, সুমিকে নিয়ে তমালের সাথে কথা বলা । মায়ের উপদেশ, আর কি । বলা নেই, কওয়া নেই, হঠাৎ সুন্দরী মতন একটা মেয়েকে দেখে এত লাফানোর কিছুই নেই । এমনও তো হতে পারে, সেই মেয়েই হয়ে গেলো এ বাড়িতে অশান্তি সৃষ্টি করার কারণ । কিন্তু ছেলের ঘুম না ভাঙ্গায় এমন গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো পরেই বলা লাগবে, ভেবেই আবার নিজের ঘরে চলে গিয়েছিল মিসেস আসমা আনোয়ার, মানে তমালের মা ।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১১:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×