somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহবাগ আন্দোলন সম্পর্কীয় কিছু ভুল বোঝাবুঝি নিরসনের চেষ্টা। সিনিয়র ব্লগারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আন্দোলনের স্বার্থে আসুন সবাই মিলে গঠনমূলক আলোচনা করি।

সংঘাত নয় সম্প্রিতি হোক আমাদের আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি।
কোনভাবেই মনে হচ্ছেনা হেফাজতে ইসলাম আর জামাতে ইসলাম ভিন্ন ভিন্ন নামে অভিন্ন দল।
আমি ব্যক্তিগতভাবে জুনাইদ বাবুনগরি সাহেব এবং আল্লামা আহমেদ সফি সাহেবকে চিনি। যদি বাংলাদেশের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ এবং জামাত দুইমাত্র নির্বাচনী প্রতিদন্ধি হিসেবে লড়াই করে; এরা চোখ বন্ধ করে আওয়ামীলীগকে ভোট দেবে। তার পরেও জামাতের পক্ষে যাবেনা। জামাত সম্পর্কে তাঁদের নীতি অত্যন্ত কঠোর। তাঁরা কোনভাবেই জামাতকে ইসলামী দল মনে করেননা।

চট্রগ্রামের "হেফাজতে ইসলাম" আর আশুলিয়ার "হেফাজতে ইসলাম" এক মনে হচ্ছেনা। যেমন ভাবে শাহবাগের "প্রজন্মচত্বর" আর মিরপুর-১০ এ ব্যক্তিবিশেষের করা "জাগরন মঞ্চ" এক নয়।

এখানে একটি বড়মাপের ভুলবোঝাবুঝি হচ্ছে। আর এই ভুল বোঝাবুঝির জন্যে কিছু অংশে আমরাও দায়ী।
যেই ব্যপারগুলোর কারনে এই চরম ভুল বোঝাবুঝিটা হচ্ছে আসুন একবার সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে নেইঃ

*আন্দোলনের তৃতীয় দিনে শাহবাগে আমরা কিছু লিফলেট দেখতে পাই, যেগুলোতে ব্লগারদের দাবিগুলোর পাশাপাশি কিছু এমন টারমস ছিল যা আমাদের আন্দোলনের এজেন্ডা নয়। যেমন "জামাত সহ সকল ধর্মভিত্তিক দল নিসিদ্ধ করতে হবে"
এই লিফলেট টি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ছিল। অনলাইন অ্যাক্টিভেস্টদের নয়। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার সাধারন মানুষ যারা শাহবাগ কিংবা এর দাবি সম্পর্কে ঘরে বসেই জানার চেষ্টা করেছেন তাঁরা এটাকে ব্লগারদের দাবি বলেই মনে করেছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা ওই বিশেষ রাজনৈতিক দল কিন্তু তাদের লিফলেট সুধু শাহবাগে সীমাবদ্ধ রাখেনি। বরং ধানমন্ডির শঙ্করেও আমি তা দেখেছি।

*বাংলাদেশে দুই একজন ব্লগার আছেন যারা যেই কোন কারনেই হোক কিছুটা বিতর্কিত। আমরা জানি তাঁরা কোনভাবেই শাহবাগ আন্দোলনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেননা। তাদের পূর্ণ সংহতি ছিল, থাকাটাই স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রীও সংহতি জানিয়েছেন, তাই বলে নিশ্চয়ই তিনি এই মঞ্চের উদ্যোক্তা বলে নিজেকে দাবি করবেননা??? তবে এই দু একজনের কেউ কেউ ক্রেডিট নেওয়ার লক্ষে এইরুপ দাবী করেছিলেন। যার খেসারৎ আমরা দিয়েছি। আমরা যারা শাহবাগ সরাসরি ছিলাম তারা হয়ত তাদের দাবিকে হেঁসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বেশিরভাগ মানুষই শাহবাগ ভ্রমন করেছে গণমাধ্যমের পিঠে চড়ে। তাঁরা বাস্তবতাটা না বোঝাই স্বাভাবিক।

*আমি গত কয়েকদিন আগে ফেবুতে একটা ভিডিও দেখেছি যেখানে প্রজন্ম চত্বরে কোন একজন বক্তা বক্তব্য দিচ্ছিলেন মাদ্রাসাগুলোকে কটাক্ষ করে।
একটা বিশাল আন্দোলনে এই ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে, কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের আরও সাবধান হওয়া উচিত ছিল; যেহেতু আমাদের বিরোধীরা যথেষ্ট শক্তিশালী। অন্ততপক্ষে কয়েকহাজারবার ফেবুতে এই ভিডিওটি তারা শেয়ার করেছে।

*সর্বোপরি আমরা সবাই জানি, নির্ধারিত কিছু গণমাধ্যম আমাদের এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণ বিকৃতরূপে বাংলাদেশের সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে উপস্থাপন করেছে। আর তাদের হেল্পিং হেন্ড হিসেবে জামাতের চতুর আইটি এক্সপার্টরাতো ছিলই। সুতারাং সাধারন মানুষ যদি ভুল বোঝে আমি কোনভাবেই তাদেরকে দোষারোপ করবনা।

*এটা অপ্রিও হলেও সত্য যে আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষই এখনো শিক্ষার আলো পাননি, আর যারা পেয়েছেন তাদের বেশিরভাগ আবার অনলাইন এর সাথে কোন সম্পর্ক রাখেননা। সুতারাং "ব্লগার" শব্দটির সাথে তারা পরিচিত না হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর তাদের এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়েছে বিরোধীরা। তারা খুব সুক্ষ ভাবে এই শব্দটিকেও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে।

*যখন শিক্ষা না থাকে তখন ধর্ম হয় মানুষের একমাত্র আশ্রয়, ধর্মের মৌলশিক্ষা না থাকাই এর একমাত্র কারন।
আর এই ধর্মআশ্রয়ী সাধারন মানুষগুলোকেই আমাদের বিরুদ্ধ্বে উস্কে দিয়েছে বিরোধী পক্ষ।

এবার মূল কথায় আসিঃ
আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে বাংলাদেশের সাধারন মানুষের religious sensitivity খুব উচ্চমাত্রার।
এদের ধর্মীয় অনুভুতি যেই মাত্রারই হোকনা কেন আমাদের আন্দোলন কিন্তু এদেরকে বাদ দিয়ে নয়, এদেরকে সাথে নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। আজ দুদিন যাবত ব্লগে আমরা কিন্তু "হেফাজতে ইসলাম" কে কটাক্ষ করা দু একটি পোস্ট পেজ খুল্লেই দেখতে পাচ্ছি।
আমরা কেন ভুলে যাচ্ছি যে আমাদের বিরোধীপক্ষ এখন পর্যন্ত পূর্ণভাবে এক্টিভ আছে। আর বিতর্কিত গণমাধ্যম গুলোও কিন্তু সমানভাবে সুযোগের সন্ধানে আছে।
সুতারাং অসতর্ক হবার মত বোকামি না করার জন্য সবাইকে স্বনিরবন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।

সামহোয়্যার ইন ব্লগে যথেষ্ট সিনিয়র এবং বিজ্ঞ ব্লগারগন আছেন। আশা করি ধর্মীয় অনুভুতি সম্পন্ন মানুষদের সাথে বিরোধ এড়িয়ে কিভাবে তাদেরকে এই আন্দোলনের সহযাত্রী করা যায় সেই ব্যাপারে আপনারা এই পোস্টে আলোচনা করবেন। আশা করি আমরা একটি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারব।


জয় বাংলা, জয় হোক শুভবুদ্ধির।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৭
২৩টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অল্প পুঁজিতে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার সন্ধান, যে কেউ চাইলে শুরু করতে পারে

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩৫



কেউ একজন জানতে চেয়েছেন ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে কিভাবে মাসে ১/২ লাখ টাকা ইনকাম করা যায়? বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম বাংলাদেশে ১০/১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×