somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার সেই অসহায় দিনগুলো - পর্ব ১

১২ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সালটা ২০০৪, সময়টা বছরের শেষে। আমার ছোটবোনের বিয়ে দেই রাজশাহীতে। ছেলে ভালো, চাকুরী করে বাংলাদেশ বিমানে এয়ারলাইনসে। তখন পোষ্টিং ছিল রাজশাহীতে। বিয়ের অনুষ্ঠানও হয় রাজশাহীতে। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বিয়েতে যোগ দিয়েছিলাম। ছুটি পেয়েছিলাম ৬ দিন। বড় ভাই হিসেবে অনেক কাজ ছিল। আমার বাবা দেশে ছিলেন না।

বোনকে বিদায় দিয়ে আম্মাকে নিয়ে ঢাকা বাসায় ফিরে আসি। আম্মা ডায়বেটিক পেসেন্ট। তার এই অসুখ অনেক পুরানো। আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন ধরা পড়ে। যাই হোক, ঐ সময়টা উনি অনেকদিন যাবত বিভিন্ন অসুখে ভুগছিলেন। উনার পেটে প্রচন্ড ব্যথা হতো, এসিডিটি হতো ইত্যাদি। উনি খুবই কম খাবার খেতেন। মামা ডাক্তার। কাছাকাছি বাসা হওয়াতে আমরা ওনার পরামর্শেই নিতাম। আমাদের ফ্যামিলিতে আবার ডাক্তারের আধিক্য।

আম্মা বাসায় একলা থাকে। আমি অফিসে চলে যাই। ফিরে আসি সন্ধ্যার পরে। এই পুরোটা সময় যে কিভাবে কাটতো তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। একদিকে আমার চাকরী, আরেকদিকে আম্মা। এক মূহুর্তও স্বস্তি পেতাম না। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় ফোন করতাম। কোন কাজের লোক বা কোন আত্মীয় স্বজন জোগাড় করতে পারিনি যে তারা এসে আম্মার কাছে একটু থাকবে। রান্নার আর কোন কাজ আম্মা করতে পারতো না তখন।

রিপোর্টে ধরা পড়লো আম্মার গলব্লাডারে পাথর হয়েছে। এবং সেটা খুব সিভিয়ার পর্যায়ে। এই মুহুর্তেই অপারেশন করা প্রয়োজন। কিন্তু সেটার তো প্রিপারেশন দরকার। বিভিন্ন ঔষধ দিয়ে সেটাকে ম্যাচিওর করতে হয় অপারেশনের জন্য। আমি অফিস থেকে ফিরলে আম্মা যে আমার দরজাটা খুলে দিবে সে অবস্থা আর থাকলো না। উনি একেবারে বিছানায় পড়ে গেলেন। জীবনের কি যে চরম মুহুর্ত ছিল তা এখন চিন্তা করলে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।

অফিস থেকেও ছুটি নিতে পারি না। আমার কাজ আমাকেই করতে হয়। অনেকদিন বাসায় কাজ নিয়ে এসে পিসিতে সারারাত ধরে করেছি। বাসার কাজ করেছি। রান্না করেছি। আমার কাছে সবচেয়ে ভয়াবহ সময় ছিল যখন আমি অফিসে থাকতাম আর আম্মা বাসায় একলা অসহায় সময় কাটাতো।

আম্মা বারবারই অনুভব করতেন বাসায় আরেকজন মানুযের দরকার। সেটা আমার স্ত্রী হলে ভালো হয়। আর তাছাড়া যেহেতু আমার ছোট বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তাই অতিসত্তর আমার বিয়েটা উনি দিতে চাইছিলেন। এসব কথা আমার সাথে শেয়ার করেছিলেন উনি। কিন্তু তখন এই ধরনের কথা ভাবার কোন সময়ই আমার বা তারও ছিল না।

অপারেশনের দিনক্ষণ ঠিক করা হলো। বাংলামোটরের একটা প্রাইভেট হাসপাতালে আম্মার গলব্লাডার টোটালি রিমুভ করা হলো। অপারেশন করলেন আমার এক দুঃসর্স্পকে নানা আর মামা।

চলবে.............
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:১৭
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×