somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার নাস্তিক ভাবনা(১) : সত্য সন্ধানী

১৮ ই মে, ২০০৮ সকাল ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই লেখায় আমি একজন মুসলমান হিসেবে নাস্তিকতাকে কিভাবে দেখি সেকথাই বলার চেস্টা করব। যে কেউ আমার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষন করতেই পারেন-তা হতে পারে ইসলামের দৃস্টিকোন থেকে-হতে পারে নাস্তিকতার দিক থেকে। যে যেদিকথেকে বিবেচনা করুন না কেন আপনাদের ভাবনাগুলি লিখে জানানোর অনুরোধ করছি-যাতে আমার জন্যও তা শিক্ষনিয় হবে। কথা অনেক, কিন্তু ব্লগে বড়লেখা পড়া কস্টকর, আর আমার লেখার হাতও তেমন ভাল নয়, তাই অনেকগুলি পোস্টে অল্প অল্প করে বলার চেস্টা করব, আগ্রহীগন ধর্য্যের সাথে শেষ পর্যন্ত পড়বেন(এবং প্রয়োজনীয় সংযোজন/বিয়োজন কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন) বলে আশা করছি।
এই পর্বের বিষয়: নাস্তিকতা, আল্লাহকে চেনার পথের এক মঞ্জিল।
আমাদের কালেমা শুরু হয়েছে নাস্তিকতা দিয়ে-"নাই কোন ইলাহ" তার পরের অংশ হচ্ছে - "আল্লাহ ছাড়া"। নাস্তিকরা এই কালেমার প্রথম অংশ খুব ভাল ভাবে মানেন - দ্বিতীয় অংশে এখনও পৌছতে পারেন নি-তবে অদুর ভবিষ্যতে পৌছে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
কোরআনে হযরত ইব্রাহীম( আঃ ) এর সত্যানুসন্ধানের বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে-প্রথমে তিনি একটি উজ্জল তারকাকে তার প্রভু মনে করেন, তারকা অস্তগিয়ে যখন চাঁদ উঠল তিনি মনে করলেন এটা তারকার চেয়ে বড়, সুতরাং এটাই আমার ইলাহ, এর পর চাঁদ ডুবেগিয়ে যখন সুর্য উঠল তিনি ভাবলেন এটা তো সবার চেয়ে বড়-এটাই আমার ইলাহ। যখন সুর্যও অস্ত গেল তিনি বল্লেন যা অস্তগামী হয় তা আমার ইলাহ হতে পারে না সুতরাং আমি এই সকল ইলাহকে অস্বীকার করছি-এই পর্যায়ে তিনি ছিলেন চরম নাস্তিক - এর পরই তিনি অনুধাবন করলেন সেই মহান শ্রস্ঠা আল্লাহ রব্বল আলামিনকে যিনি আদি ও অনন্ত, যার শক্তির কোনযার শক্তির কোন সীমা পরিসীমা নেই, যিনি এই বিশ্বজাহানের একক শ্রস্ঠা এবং পালন কর্তা।
এখানে আক্ষরিক অর্থে বিবেচনা করলে মনে হতে পারে - ইব্রাহীম ( আ: ) তো ছোটবেলা থেকেই , চাঁদ,তারা, সুর্য এসবের উদয় অস্ত দেখে আসছেন-তাহলে তিনি কিভাবে তাদের এক একজনকে ইলাহ ভাবলেন? কিন্তু এই ঘটনার মুল শিক্ষার দিকে তাকালে দেখাযাবে - তিনি আসলে এই জগতের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে তার মৌলিক জীবন জিজ্ঞাসার উত্তর খুজছিলেন - এবং একে একে সম্ভাব্য সব ইহজাগতিক ইলাহ কে বাতিল করে - তারপর আল্লাহকে চিনতে পেরে ছিলেন। সুতরাং সত্যিকারের মুসলমান হওয়ার জন্য প্রথমে নাস্তিক হওয়া জরুরী-এজন্যই কালেমার প্রথম অংশে চরম নাস্তিকতার ঘোষনা দেয়া হয়েছে।
চাঁদ তারা সুর্য ছাড়াও পৃথিবীতে আরো অনেক ইলাহ আছে- যেমন টাকা বা অর্থ সম্পদ - যার মোহ আমাদের হিতাহিত জ্ঞানসুন্য করে দেয়, বৈধ-অবৈধ যেকোন উপায়ে টাকা উপার্যনের জন্য আমরা জীবন কোরবান করতেও প্রস্তুত হয়ে যাই। চাকরি-বাকরি ব্যাবসা-বানিজ্য সামাজিক রীতি নিতি এসবই এক একটি জাগতিক ইলাহ যা মানুষের কাজ কর্ম নিয়ন্ত্রন করে। এর সাথে আছে ভন্ডপীর-মাজার পুজারীসহ অসংখ্য ধর্ম ব্যাবসায়ী যারা ধর্মকে তাদের অন্য ইলাহ(যেমন অর্থ,ক্ষমতা, খ্যতি)এর পুজার জন্য ব্যাবহার করে। অন্য ধর্মাবলম্বিদের দেব-দেবী তো আছেই। একজন মুসলমানকে খাটি মুসলমান হওয়ার জন্য এই অসংখ্য ইলাহকে প্রথমে অস্বীকার করতে হয় - তাহলে সেই সময় সে চরম নাস্তিক - তার পর ইমান আনতে হয় সর্বশক্তিমান এক আল্লাহ এর উপর - তারপর সে মুসলমান। এভাবে যারা মুসলমান হয় তারাই প্রকৃত মুসলমান এবং তারাই পারে পৃথীবির চেহারা বদলে দিতে। ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে দেয়ে মানবতাকে সকল যুলুম-নির্যাতন, অন্যসব জাগতিক ইলাহের দাসত্ব থেকে মুক্ত করার হিম্মত তাদেরই থাকে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে সাহাবাগন এই ধরনের মুসলমান ছিলেন বলেই যাযাবর বেদুইন থেকে বিশ্ব নেতৃত্বে উঠে আসতে পেরেছিলেন।
সত্যানুসন্ধিৎসু নাস্তিকগন এই পথের পথিক হিসেবে অনেক ইলাহ কে বাতিল করে শেষ মঞ্জীলে বিজ্ঞান নামক এক ইলাহে এসে আটকে আছেন। যেদিন তারা বুঝতে পারবেন - এই বিজ্ঞানও অস্তগামী-বিজ্ঞানেরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, ভৌত-জাগতিক বিষয়ে বিজ্ঞানের উন্নতি এবং সম্ভাবনা অনেক হলেও আত্মিক-আধ্যাত্মিক বিষয়ে বিজ্ঞান প্রায় অচল- সেদিনই তারা অনুধাবন করতে পারবেন সেই মহান আল্লাহ রব্বল আলামীনকে যার উপস্থিতি ছাড়া এই বিশ্বজগতকে কোন ভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় না, মানুষের মৌলিক জীবন জিজ্ঞাসার জবাব দেয়াও সম্ভব না।
আমি এই ধরনের নাস্তিকদের সালাম দেই এবং তাদের সত্যানুসন্ধাকে আরো জোরদার করার আহ্বান জানাই, কারণ আমি আশা করি এই ধরনের অনুসন্ধানের মাধ্যমে তারা যখন আল্লাহকে চিনবেন তখন আমাদের মত জন্মগত মুসলমানের চেয়ে অনেক শক্তিশালী ইমানদার হবে। বিশ্বে এরকম অনে নজির আছে।
কিন্তু আমাদের এই ব্লগের নাস্তিক পরিচয়দানকারীদের মধ্যে সত্যানুসন্ধানের চেয়ে অন্যকে হেয়করা-অপদস্থ করা - নিজেকে নাস্তিক এবং মহাজ্ঞানী বলে জাহির করার প্রবনাতাই বেশী দেখা যায়। কেন, সে সম্পর্কেও আমার কিছু বক্তব্য আছে - যা আর একদিন বলার চেস্টা করব।

ধর্যসহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আজকেরমত শেষ করছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:৩৪
১৩টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×