somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এম এন লারমা স্মরণেঃ জয় আমাদের হবেই-হবে

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তারিখঃ ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
এম এন লারমা, কারো কাছে তিনি পরিচিত লিডার, তার ভাই-বোনের কাছে তিনি মঞ্জু নামে পরিচিত, জুম্ম জনগনের প্রায় সকলের কাছে তিনি 'অবিসিংবাদিত নেতা, কারো কাছে 'আমাদের নেতা, পার্টি নামে তিনি পরিচিত 'প্রবাহন'।
তাঁর পুরো মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের সেই মৃত্যুঞ্জয়ী শহীদ নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা'র ৭৬তম জন্মদুন। ১৯৩৯ সালের এই দিন তিনি রাঙামাটির 'মাওরুম' নামে ছোট্ট নদীর/ছড়ার তীরে মাওরুম গ্রামে জন্মেছিলেন।
তাকে নিয়ে অনেকেই আজ লিখবেন, বলবেন, আবেগাক্রান্ত হবেন; হয়তো তারপরও দেশের 'মূলধারা'র মিডিয়া-নিপীড়িত জনতার কণ্ঠ থেকে শতাংশের তুচ্ছভাগ তাকে তর্পণ করবে অথবা তাও হয়তো করবে না।
কিন্তু আমরা জানি, বাংলাদেশের ইতিহাসে দেশের আইনপ্রণয়ননের যে ভবন রয়েছে সেই ভবনের ভেতরে গিয়ে গোটা দেশের জনমানুষের অভাব অভিব্যক্তির কথা একমাত্র তিনিই ধারণ করেছিলেন, আর সকলে ছিলো তাদের নিজ নিজ দলেরই সেবাদাস।
এম এন লারমা সংসদে দাঁড়িয়ে সেই বাহাত্তর সালে বলেছিলেন, '... আমার বিবেক, আমার মনের অভিব্যাক্তি বলছে, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথা এই খসড়া সংবিধানে নেই'। তিনিই সংসদে বসে হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেছিলেন, '... আজ যদি তাড়াহুড়ো করে এই সংবিধান পাশ করতে যাই, তাহলে এর মধ্যে ভুল-ত্রুটি থেকে যেতে পারে এবং সেই ভুল-ত্রুটি আমরা পরে সহজে সংশোধন করতে পারবো না। তা ফলে অনেক অসুবিধায় পড়তে হবে'। তিনি সংবিধানকে জনমানুষের কাছে নিয়ে যাবার জন্য সংসদে অনুরোধ করে বলেছিলেন, 'জনমত যাচাইয়ের জন্য এই বিল প্রচার করা হোক'।
আওমীলীগের জাতীয়তাবাদী সমাজতন্ত্রকে তিনিই প্রথম সংসদে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করে বলেছিলেন, '... এই সংবিধানের মাধ্যমে আমরা যে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি সেই সমাজতন্ত্রের নামে আমরা যদি উচ্চ শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর ও সেই ক্ষমতা অপব্যবহারকারীদে
রই আবার দেখতে পাই তাহলে ভবিষ্যতের নাগরিক, যারা আমাদের ভবিষ্যত বংশধর, তারা আমাদের বলবে যে, যারা এই সংবিধান প্রণয়ন করে গিয়েছেন, তারা ক্ষমতায় মদমত্ত হয়ে জনগনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন.. '।
জাতীয় সংসদে বসে তিনিই প্রথম 'সাম্রাজ্যবাদ' শব্দটি ব্যবহার করে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করেছিলেন।
১৯৭৪ সালের ৫ জুলাই সংসদে বাজেট আলোচনায় তিনি বলেছিলেন, "... মাননীয় স্পীকার সাহেব, সুতরাং সরকার জেনেশুনে এক শ্রেণীর মানুষকে ধনী করার পথ প্রশস্ত করেছেন। এটা সরকারের পক্ষে অশুভ লক্ষণ"।
তিনি ১৯৭৪ সালের ১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির ভাষনের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনার সময় সংসদে উঠে দাঁড়িয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে বলেছিলেন, "কিন্তু দুঃখের বিষয়, পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের নিকট আত্মসমর্পণ করে আজো সেই হানাদারকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে বিচার করা হয়নি,... "

কিন্তু তার এই জাতীয় ভুমিকাকে কি এই দেশের সংকীর্ণ জাত্যাভিমানে মত্তগণ স্বীকার করেন???
আমরা কি আশা করতে পারি না যে, তিনি মূলধারার জনমানুষের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবেও সবার কাছে পরিচিত হবেন?
তিনি ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর তিনি নিজ দলেরই বিভ্রান্ত-বিভেদকারী কয়েকজনের হাতে খুন হন।
তিনি তাঁর শেষ ডায়েরি'র পাতা'র প্রথম পাতাটিতে লিখেছিলেন, "মহান জুম্ম জনগণের আন্দোলন দীর্ঘজীবী হোক, সারা দুনিয়ার নিপীড়িত জনতা এক হও। জয় আমাদের হবেই হবে"।
আজ, এবং আজও সেই বিজয়ের আশা নিয়ে আমরা লড়াইয়ে আছি, অতন্দ্র প্রহরী!
সত্যিই কি তা-ই???
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×