আজকের এই ত্রুটিহীন ভর্তি প্রতিযোগিতা ‘কে হতে চায় ভার্সিটি ছাত্র?’ এর পরীক্ষক হিসেবে আছেন ‘নুরু নাহিদ’ এবং এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ‘ইয়ো ক্যাশ-অ্যাম(কাশেম)’। আজকের সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলেই ইয়ো ক্যাশ-অ্যাম পেয়ে যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ভর্তি হবার সুযোগ। তাহলে চলুন মূল প্রতিযোগিতায়।

নুরু নাহিদঃ সুধীবৃন্দ, আমাদের আজকের ‘কে হতে চায় ভার্সিটি ছাত্র?’ ভর্তি প্রতিযোগিতায় আমাদের মাঝে উপস্থিত আছেন জনাব ইয়ো ক্যাশ-অ্যাম। তিনি বসছেন আজকের গরম চেয়ারে মানে হট সিটে। জনাব ইয়ো ক্যাশ-অ্যাম আপনি ক্যামন আছেন?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ ভালো আছি স্যার। আপনার সামনে আসতে পেরে, দেখাতে পেরে যারপরনাই খুশ।
নুরু নাহিদঃ শুনে খুশি হলাম। তো চলুন তাহলে শুরু করি। প্রথম প্রশ্ন ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়য়ের’। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারলেই আপনি পায়ে যাবেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ভর্তি হবার সুযোগ।
* কোন মন্ত্রী কানা/অন্ধ ছিলেন?
১। বারাক অবামা
২। মদি
৩। মখা
৪। নুর্যাঅ নাইদ্যা
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ খুবই কঠিন প্রশ্ন স্যার! তবে পারব বলে মনে হচ্ছে। বারাক অবামাকে তো চিনি উনি টাকলু না! অবশ্য হলিউড তো! কারে যে কী বানায়! আর মদিরে হবার কথা না। বিশাল বড় চোখ! মখা কানা না যতটুকু জানি! সুতরাং বাকি থাকল আপনার নাম! সুতরাং আমি যাব অপশন D তে!
নুরু নাহিদঃ আপনি নিশ্চিত? লক করব?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ জ্বি করুন।
নুরু নাহিদঃ মার্ভেলাস! ইয়ো ক্যাশ-অ্যাম আপনি তো একেবারে বিপ্লব ঘটিয়ে দিলেন। কোন লাইফলাইন ছাড়াই পেরে গেলেন। এবারে ২য় প্রশ্ন, জবি’র জন্য। একটু কঠিন হবে আগেই বলে দিচ্ছি।
* বাংলাদেশে বর্তমানে বোর্ড পরিক্ষা কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
১। স্কুলে
২। সচিবালয়ে
৩। কারাগারে
৪। ফেসবুকে
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ এত কঠিন প্রশ্ন!
নুরু নাহিদঃ আগেই বলেছিলাম পরের প্রশ্নগুলো একটু কঠিন হয়!
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ যেহেতু ৪ টা অপশন আছে তাই আমি নিশ্চিত এই ৪ টার একটাই হবে!
নুরু নাহিদঃ আমি আপনার সাথে ১০০% একমত। এই ৪ টার মধ্যেই আছে!
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ আমি আপনার সাথে ১০০% একমত। এই ৪ টার মধ্যেই আছে!
বিপ্লবঃ আমি জানতাম স্যার! এখানে আসার আগে আমার বাপ বলে দিয়েছিলো বাবা যা মনে আসে তাই করবি। দুনিয়াটা ২ দিনের! আমি স্যার একটা লাইফ লাইন ইউজ করতে চাই। অডিয়েন্স পোল।
নুরু নাহিদঃ অবশ্যই। দর্শক আপনারা আপনাদের হাতের কাছে রাখা বাটনে চিপি দিয়েন। যেটা আপনার মনে হয়। দুনিয়াটা ২ দিনের!
[ দর্শকরা ভোট দেয়ার পর। ]
নুরু নাহিদঃ ৫০ ভাগ দর্শক যাচ্ছেন ফেসবুকে ‘র পক্ষে। ২০ ভাগ স্কুলে, ২৫ ভাগ সচিবালয়ে। ৫% কারাগারে।
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ আমি স্যার দর্শকদেরকে শ্রদ্ধা করি। গণতান্ত্রিক পথে যেতে চাই। আমি দিব অপশন ৪.
নুরু নাহিদঃ লক করে দিন কম্পিউটার সাহেব। এবং উত্তর সঠিক হয়েছে! জনগণ কখনো ভুল উত্তর দেয় না! পরের প্রশ্ন, জাবি’র।
*বাথরুম চাপলে কোথায় যেতে হয়?
A.সুন্দরবন
B. বাথরুম
C. বেডরুম
D. পাবলিক লাইব্রেরি।
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ আরেকটি কঠিন প্রশ্ন! পাবলিক লাইব্রেরিতে কখনো যাই নাই সুতরাং জানি না ঐখানে কি করা হয়!! বেডরুমে অবশ্য ছোটকালে অনেক করছি! আম্মা মারছেও অনেক! স্যার আমি আরেকটা লাইফলাইন ইউজ করতে চাই।
নুরু নাহিদঃ অবশ্যই! কোনটা ব্যবহার করতে চান বলুন তো?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ ফুনানো! মানে ফুন এ ফ্রেন্ড!
নুরু নাহিদঃ উকে! আপনার কোন বন্ধুকে ফোন করবেন?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ আমার বন্ধু ফক্রুলকে!
নুরু নাহিদঃ উনি কি অনেক জানেন?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ জানেন মানে! সব জানে! সারাদিন ফেইসবুকিং করে! ফেইসবুকে ওর পেইজ আছে “ফক রুলজ!” ফ্যান সংখ্যা ২ লাখ! ফেইসবুকিং করলে আবার দারুণ জ্ঞানী হওন যায়। ফেইসবুকারদের একেকটা স্ট্যাটাস তো জ্ঞানের মুক্তা! এক একজন ফেইসবুকার জ্ঞানের খনি!
নুরু নাহিদঃ ফোন যাচ্ছে না ক্যান? রবিউল নাম্বার তো ছায়ার মত লেগে থাকে!
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ স্যার আমার বন্ধু তো ঘরের মধ্যে! রবি আবার চিপা চুপা বাসা বাড়ির মধ্যে কানেকশন পাওয়া যায় না! ঐখানে ছায়া থাকে না তো!
নুরু নাহিদঃ ইয়ে রবিউল এই ভর্তি প্রতিযোগিতার অন্যতম স্পনসর! আপনার বন্ধুকে লাইনে পাওয়া গেছে। প্রশ্ন করুন মনে রাখবেন আপনার সময় মাত্র ৩০ সেকেন্ড।
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ ইয়ো ম্যান!
ফেইসবুকার বন্ধুঃ ইয়ো! তুই বলে ফাডায়ালাইতাছস? ফেইসবুকে তো দেখলাম না!
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ ব্যাটা আমি এখনো হট সিটে! স্ট্যাটাস আপডেট করার টাইম পাই নাই! প্রশ্নটা শোন। বাথরুম চাপলে কোথায় যেতে হয়? অপশন ১ সুন্দরবন, অপশন ২ বাথরুম, অপশন ৩ বেডরুম অপশন ৪ পাবলিক লাইব্রেরি।
ফেইসবুকার বন্ধুঃ দোস্ত স্ট্যাটাসে আপডেট করে দিছি উত্তর এসে যাবে নো ওরিস! দাঁড়া দাঁড়া নোটি আসছে! কমেন্টে লিখছে কোন বাথরুম?বড়টা না ছোটটা ?! ওয়েট ওয়েট আরেকজন কমেন্ট করছে ওরা নাকি সুন্দরবনে বাঘের ভয়ে একবার ইয়ে করে দিছিলো!!…
নুরু নাহিদঃ আপনার সময় শেষ।
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ শিট ম্যান!
নুরু নাহিদঃ [একটু কেশে।] জনাব ইয়ো ক্যাশ-অ্যাম আপনি উত্তর বলুন। বাথরুম চাপলে আমরা কোথায় যাই? চিন্তা করুন বিপ্লব! চিন্তা করুন আপনার বাথরুম পেলে আপনি কী করেন?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ ওহ হো! এতক্ষণে মনে পড়েছে! নাহ! ভুলে গেছি! পেট এ আসি আসি করেও মুখে আসছে না! পেট থেকে ইয়ের দিকে গেলেও উত্তর পেতে পারতাম! আচ্ছা আরেকটা লাইফ লাইন ব্যবহার করা যাবে না?
নুরু নাহিদঃ অবশ্যই! এখন আপনি ব্যবহার করবেন ফিফটি ফিফটি! কম্পিউটার সাহেব। ফিফটি ফিফটি ব্যবহার করুন প্লিজ। দুটি অপশন উধাও হয়ে গেলো। এখন আছে বাথরুম এবং পাবলিক লাইব্রেরি।
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ লাইব্রেরিতে কখনো যাই নাই! আর বাথরুম হচ্ছে মৌলিক অধিকার এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ! লাইব্রেরীতে হবার কথা না! আমি বাথরুমের সাথেই যাব!
নুরু নাহিদঃ তাহলে আপনি দিচ্ছেন অপশন B?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ জ্বি স্যার। যদিও শিওর না। তবুও…
নুরু নাহিদঃ কম্পিউটার সাহেব। উত্তর জানান। আপনি যদি এই প্রশ্নের উত্তরে ভুল করেন আপনাকে কিন্তু এই হট সিট ছেড়ে উঠে যেতে হবে? তখন আপনি কোথায় যাবেন?
ইয়ো ক্যাশ-অ্যামঃ স্যার খুব বাথরুম চাপছে!! সবার আগে মুতু করব!
নুরু নাহিদঃ [একটু কেশে] আপনার উত্তর সঠিক হয়েছে!
উপস্থাপকঃ আপনি আপনার সব লাইফলাইন ইউজ করে ফেলেছেন। আপনার ভবিষ্যৎ তো সুবিধের মনে হচ্ছে না! আপনার কোন স্মরণীয় ঘটনা আছে যেটা আমাদের সাথে শেয়ার করতে চান? ইন কেইস আপনার হট সিটে অবস্থান স্বল্প সময়ের জন্য হয়।
বিপ্লবঃ আছে স্যার। রাষ্ট্রপতি একবার আমাদের বাসায় খাইছেন। আমার বাপে একই দলের রাজনীতি করে তো!
উপস্থাপকঃ বলেন কী! আগে বলবেন না?! আপনার জন্য তো আমাদের স্পেশাল একটা লাইফলাইন আছে! রাষ্ট্রপতির ক্ষমা! আপনি যে কোন ভুল উত্তর দিলেও আপনাকে হট সিট থেকে কেউ উঠাতে পারবে না! আপনার ঢাবিতে চান্স পাওয়া নিশ্চিত! আপনাকে অভিনন্দন! আপনার কোন ভুলই ভুল না, কোন অপরাধই অপরাধ না!