somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়াবতীর গল্প

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ঘরদোর নেই , মস্ত এই পৃথিবীতে আত্মীয়- পরিজন সবাই থাকবার পরও যেন আমার কেউই নেই আমার জন্য আর এরকম একটা বোধ নিয়েই এতটা কাল যেন ছুটে চলছিলাম। কিন্তু কোথাও একটা নিরাপদ অন্তরাল খুঁজে পাচ্ছিলাম না। নিদারুণ এক ভয়ে আচ্ছন্ন হয়ে এই ছুটে চলা যেন। ভয়টা আর কিছুই নয় । নিজের ছায়াকেই নিজের ভয়। একেই কি তবে প্রতিবিম্বের বিদ্রূপ বলে ? কি জানি হবেও বা !


যে কালো চুলে বয়ে যেতো আইলার ঝড়, রাত্রিরে পাথর প্রতিমার অন্ধকারে হল্লা তুলতো বাঘের হিমশীতল গর্জন, ভয়ে আমার কলিজা খামচে ধরতো তামসের প্যাঁচা তখন হন্যে হয়ে খুঁজতাম সবল দুটি হাত কিংবা ভরসায় পেতে দেয়া প্রশস্ত এক বুকের , কখনোবা স্বর্ণলতার বেষ্টনীতে আঙুলের ফাঁকে আঙুল গলিয়ে একে অপরের সাথে মিশে যেতে মন্ময় সহবাসে। চাইলেই যদি পাওয়ার খাতায় শব্দের জাল বোনা হয়ে যেতো তাহলে হয়তো পৃথিবীতে “ আক্ষেপ “ নামক কোনো শব্দের স্থান অভিধানে পাওয়া যেতো না। সে সময়ে আমার বসবাস ঐ আক্ষেপ নামক শব্দটার সাথেই ছিল।


এরকম ভয়ের তাড়া খেয়ে ছুটতে ছুটতেই একদিন তাকে পেয়েছিলাম। এক দিব্য দিবাকরের তাপিত সালোক্য মূর্তি যেন। বহুদিন …. বহুদিন পর যেন মনে স্থিতির আবেশ এলো। ঠিক যখনই এসে সে আমার হাতটা ধরলো তখন তো আর আমি আমার ছিলাম না। তখন ভয়ই বা কি আর নির্ভয়ই বা কি । সে ছিল তখন পাশে।


উড়ন্ত রোমান্টিকতায় জলভাঙা পানকৌড়ির কান্নার খুনখুনে সুর এখন আর শোনা যায়না । বৈশাখী রাতে প্রণয়ের এলাচ সুঘ্রাণ খুঁজতে খুঁজতে আমরাও বুঝে যাই প্রাত্যাহিক সুখ- দুঃখেরা ঘুঙুর বাজালেও আমাদেরকে আর কতটাই বা ধাক্কা দিতে পারবে। চারিদিকের ক্লান্ত নুন দানা, অন্ধকারের নৈঃশব্দ্য , রাহুর করাল গ্রাস ছেঁড়া কাশফুলের মতো আমাদের উড়িয়ে আর কতদূর নেবে বলো ! সাগর , মহাসাগর কিংবা বড়জোর সুজন –সখির আঙ্গিনার বাইরে পর্যন্তই নেবে। জ্যান্ত মানুষের ধাক্কায় আর এক্কাদোক্কায় আমাদের দখিনা বাতাস চলাচলের পথ রোধ হলেও , গীতিকাব্যের মলাটা বিবর্ণ হয়ে ছাল উঠে গেলেও আমরা কবে ভয় করেছিলাম আর করিনি সে গল্প আর কেউ না জানলেও মায়াবতী আর তার সূর্য-পুরুষ ঠিকই জানে।


পুরনো দিনের হারমোনিয়াম বাজালে তার ভেতর থেকে যে চাপ চাপ ক্ষুধাতুর বোধের জোছনা বের হয়ে আসে তারই নাম যে জীবন , ফাল্গুন – পলাশের ঝিনুক ঝংকারে জোনাকিদের আত্মপ্রকাশ, প্রণয় স্তুতি না শুনেও যে নির্ভরতার বোধ , বাঞ্ছনীয় আরশি নগরের বাউল গানের বাসন্তী বৈভব – এরপর তুমিই বলো নষ্ট শামুক কি আর আমাদের রক্ত ঝরাতে পারবে ?


নক্ষত্রের নরম আলোয় আমাদের ভেতরের অস্থিরতা ধীরে ধীরে ময়ূরকণ্ঠী ছন্দে দোল খায়, গড়ে ওঠে এক সবুজ অরণ্যের। হাত ভর্তি স্বপ্ন নিয়ে প্রথম যেদিন সে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল, সেদিন ঠিক মতো তার ডাক বুঝতে না পারলেও এখন সেসব দিনের কথা মনে এলেই বুঝি সে ডাকে নির্ভরতাই ছিল। এখনো কি সতেজতায় তার ঐ ডাক কানে ভাসে –

“ মায়াবতী , দাঁড়াও, দাঁড়াও! "


এই যে সে আমার চোখের সামনে শুয়ে আছে এখনো তার গঙ্গা - যমুনার গোপন খঞ্জনির একটানা বেজে চলা মাতাল ধ্বনির অনুরণন আমার চারদিকে আমি শুনতে পাই যা শুরু থেকে এই পর্যন্ত আমাদের দাম্পত্য নীড়ে তৈরি করে রেখেছে এক নিরাপদ বেষ্টনী – সুস্পষ্ট-নির্ভরতায়। তার এই মাতাল খঞ্জনির বাজনা আমি শুনতে পাই ধূলি থেকে নয়নতারায় , পৃথিবীর অতি শান্ত সিন্ধু থেকে আল্পস , সান পাওলোর ঘণ্টা থেকে মালিয়ানার সেই ছোট পার্কটা যার পথটা শেষ হয়ে গিয়েছে অন্য কোনো পাহাড়ি ঢালের অভিমুখে । ভেজা ভেজা রাত্রির তছনছ করার অভিলাসে আমাকে যেন সে রেখে দিয়েছে স্থলপদ্মের ওপর নিপুণ ছন্দে খোদাই করে ভ্যাটিকান সিটির কেন্দ্রমুখের সেই সফেদ ফোয়ারায় ।


একারণেই বুঝি সে ঘুমোতে পারে এতো নিশ্চিন্তে , দু’ চোখে এঁকে নিতে পারে তার মায়াবতীর গার্হস্থ্য নিপুণতার রূপমঞ্জরির লালা- নীল ছায়াচ্ছন্ন শ্রাবণ , বাবুই – শালিকের আলতো চুম্বনের ছোঁয়া। সত্যি বলতে কি তার মতো সুখী মানুষ আমি দেখেছি হাতে গোনা – যাদের সংখ্যা হাজারে নগণ্য। সে আমাকে বারংবার এই অনুভবই দিয়েছে জীবন অনেক সুন্দর, তাই সুন্দরেই বাঁচো। তার অনেকগুলো চিঠির মাঝে একটি চিঠির কথা খুব স্পষ্টই আমার মনে আছে যেখানে সে লিখেছিল বেঁচে থাকা নিয়ে, স্বপ্ন নিয়ে –

“ মায়াবতী,

আমি নিশ্চিত তুমি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছ। সুতরাং মনোযোগ দাও নিজের দিকে। ঝেড়ে দাঁড়াও। ভালো করে ঘষে মেজে সাফ-সুতরো করে ফেল নিজেকে। কাজল টেনে দাও দু চোখে। এঁকে নাও বা পরে নাও একটি কালো টিপ ভ্রু দুটির মাঝখানে। ফেলে দাও মাথার কাপড়, ছেড়ে দাও চুলের খোঁপা। হাওয়ায় উড়ুক তোমার অবিন্যস্ত চুল। আমি প্রাণ ভরে দেখি।

সময় হলে, চোখ তুলে দেখ আকাশ। চাঁদ। দেখ তোমার চারপাশ। জীবন আসলেও কতোটা সুন্দর। জীবনের হতাশ সময়ে কতবার গিয়েছি কমলাপুর স্টেশনে এবং স্বামীবাগ রেল-ক্রসিঙে। কতদিন দাঁড়িয়ে থেকেছি চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেবো বলে,কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো দৃশ্য এসে নয়তো খুব ছোট্ট কোনো ঘটনা ঘটে আমাকে জানিয়ে দিয়েছে জীবন সত্যিই সুন্দর। থাক অভাব, থাক অপ্রাপ্তি, থাক নানা দুঃখ আর বেদনার রাঙা চোখ চারদিকে, তবু জীবন অর্থহীন নয়। আমি কিছু দিতে পারি আর না পারি, কারো হয়তো প্রয়োজন আছে আমাকে। সেই হয়তো নিজ থেকে কিছু আদায় করে নিতে পারবে আমার কাছ থেকে, যৎসামান্য বা কিঞ্চিৎ যাই হোক, মূল্যহীন বা ক্ষুদ্রাকৃতি হলেও তার কাছে হয়ে উঠতে পারে অমূল্য আর জীবনের আরাধ্য কিছু। তাহলে অযথা মরে কী হবে। বরং বেঁচে থাকা জরুরি।
আজ এ পর্যন্তই। এখন তাহলে বিদায় দাও মায়াবতী। আবার সময় করে লিখবো ।

- তোমার সূর্য-পুরুষ ”


একটা ব্যাপার ভাবলে আমার ভীষণ হাসি পায় । বলা যায়, ছেলেমানুষি ধরনের নির্মল হাসি। যে আমাকে প্রাত্যহিক সম্ভাষণে কখনোই “ তুমি “ সম্বোধনে ডাকতে পারেনি আর আমারও বলা হয়ে ওঠেনি তাকে তুমি করে বলা। তবে সে আমার এ ইচ্ছেটুকু , চাওয়াটুকু পূর্ণ করে দিয়েছে চিঠি লিখে লিখে। তৃপ্ত করেছে আমাকে। মুখর করে দিয়েছে আমার ঝাউ-বনানীর নীরব আর গহীন অরণ্যকে। বিবাহিত হলেই স্বামী বা স্ত্রী পূর্ণরূপে হতে পারে কয়জনে! পরস্পর শুধু ভালোবেসেই যাবো কিন্তু কেউ কারো অস্ফুট দীর্ঘশ্বাস , তার চোখের তারার ঝলকানিতে কি চমকাচ্ছে তা বুঝবোনা , তার স্পর্শের ভাষা বুঝবোনা এরকম জীবনসঙ্গিনী আমি কখনো হতে চাইনি। জীবন ও জীবিকার তাগিদে আমাদের সাময়িক যে অবস্থানগত ব্যবধান তা সে প্রাণপণে ঘুচাতে চেষ্টা করতো কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইমেইলে চিঠি লিখে।

" আমার মায়াবতী ,

কেমন আছ তুমি। স্বভাব অনুযায়ী ভালোবাসা বা শুভেচ্ছা জানালাম না। অবশ্য তুমি এ নিয়ে কখনোই মনঃক্ষুণ্ণ হও না তাও আর অজানা নয় আমার। আসলে এই ব্যাপারগুলো এমন যে, পোস্টারে লিখে বা লাউড স্পিকারে বলে প্রকাশের বিষয় নয়। এগুলো এমনই এক অনুভূতি যা কথকের মনের সঙ্গে সম্পর্কিত। যদি সেগুলোর অবস্থান মনের গভীরে প্রোথিত থাকে তাহলে তার প্রকাশ কথা আর আচরণের প্রতিটি পদক্ষেপে ফুটে উঠবে। সরাসরি এর প্রকাশ না থাকলেও পুরো চিঠির কোথাও না কোথাও ঠিকই থেকে যাবে। আবার এমনও হতে পারে যে, শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসার প্রলেপে মোড়ানো থাকবে পুরো চিঠিটি। যার অনুভব তোমাতেই অনুরণিত হবে কেবল। অন্যের কাছে এর মূল্য বা পরিচয় মামুলি এক চিঠি হলেও।

সেকেলে মানুষ বলে প্রযুক্তির নানা উন্নতি হলেও তুমি এখনও উত্তর যৌবনে পড়ে থাকলে চিঠির যুগেই। আজকাল কেউ চিঠি লেখে নাকি? আমাদের সন্তানদের সন্তানরা হয়তো তাদের জীবনে চিঠি শব্দটা বইপত্রে আর পুরোনো লেখাতেই পাবে, ব্যক্তিগত জীবনে এর প্রকৃত ব্যবহার কী ছিলো তা অনুধাবনে সক্ষম হবে না।

যাই হোক, তোমার চাহিদা বলে কথা। এ পর্যন্ত তোমার যতটা চাহিদা নিজ থেকে বুঝতে পেরেছি, চেষ্টা করেছি নিজ থেকে পূরণ করতে। তা ছাড়া যেগুলো নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেছো তা তো আরো আন্তরিকতার আলোকে পূরণে সচেষ্ট হয়েছি বা ছিলাম। অবশ্য তোমার চাহিদাই বা কী এমন যে তারও উল্লেখ করতে হবে!
গতকাল হয়তো ঠিকই তোমার মনে এ প্রতীতির জন্ম হয়েছে যে, আমার অনুভবে তোমার অস্তিত্ব কতটা মিশে গেছে। শুরুর দিকগুলোতে যখন বলতাম, তোমার আকুতি আমি টের পাই, হয়তো তোমার কাছে ব্যাপারটা ছিলো হাস্যকর। সেই কৈশোর থেকেই অবহেলা পেতে পেতে বড় হয়েছি। যে কারণে কেউ যদি সহস্র কিলোমিটার দূর থেকেও আমার জন্যে খানিকটা হলেও ভালোবাসা অনুভব করে, আমি তা টের পাই। সত্যি সত্যিই টের পাই। যদিও কোন মানুষটা তার হৃদয় ভালোবাসার বিছানা পেতেছে আমার জানা থাকে না। কিন্তু টের পাই সে হৃদয়ের উষ্ণতাটুকু। তেমনি আমি টের পাই তোমার হৃদয়ের উষ্ণতাটুকুও। বুঝি তাও, তোমার কোন শব্দে কোন সম্বোধনে আমার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসার প্রকাশ রয়েছে। তুমি মুখ ফুটে আমাকে বলতে হয়নি তুমি যে আমাকে ভালোবাসো। আমার সঙ্গে কথা বলতে বিবক্ষা কাতর তুমি কতটা উচাটন ছিলে, তাও আমাকে কেউ বলে দিতে হয়নি। আমার মন জেনে গেছে, যেভাবেই হোক, তোমার সেই অস্থিরতা। সময় মতো সাড়াও দিয়েছি সেই অনুযায়ী যা তোমারও অগোচর থাকেনি।

আজ এতটুকুই। ভালো থেকো আমার মায়াবতীটা।

--- তোমার সূর্য-পুরুষ "


কাল রাতে দীর্ঘ ১১ মাস পর সে প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরল মাত্র তিন সপ্তাহের ছুটিতে। ঘরে ফিরেই আমায় দেখে সে একগাল হাসল। জানতে চাইল, কেমন আছি । তার হালকা ঘামে ভেজা , শহরের ধুলোবালি লেগে থাকা শার্টটা খুলতে খুলতে বললাম- “ কেমন দেখছেন ?”

হায় মরণ ! বিদ্যুৎ যাবার বুঝি আর সময় পেলো না । মোমবাতি জ্বালিয়ে এনে বললাম – ফ্রেশ হয়ে নেন , চা নিয়ে আসছি।

কিন্তু পেছন ফিরে পা বাড়াতেই কোনো এক অমোঘ আকর্ষণে আটকে গেলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে পেলাম আমার সামনে যে প্রেমিক পুরুষটি অবাক বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে আছে সে কিছু না বলে শুধুমাত্র মৌনতায় আথি-বিথিতে দীর্ঘ অদর্শনের জ্বালা যেন জুড়িয়ে নিচ্ছে। আমি পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই আমার সূর্য-পুরুষের হৃদয়ের ভাষা শুনতে তার বুকের কাছটায়। আমিও শব্দহীন ভাষায় তার কাছে জানতে চাই

- সুজন বন্ধু , আপনি কেমন ছিলেন এতদিন ?

আমাদের নীরবতায় মৃদুমন্দ জলরাশিতে রামধনুর রঙে রাঙা হয় , রুপোলী মাছেরা ঊর্ধ্বমুখী হয় বর্ষণের প্রার্থনায় , ঘর ভর্তি হয় ঐশ্বরিক মায়া – মধু মঞ্জরীর গুঞ্জনে – শূন্য জনপদে ওঠে চুম্বনের শব্দ ।

সারারাত আকাশের পূব – পশ্চিমে পায়চারী করছিলো চাঁদ। খুব ভোরে যখন আমার ঘুম ভাঙল আমি অনুভব করলাম আমার মাথা তার হাতের উপর রাখা, হাতের মুঠোতে আমার হাত। আমার ঊষা , দুপুর- সন্ধ্যা , পায়ের তলার মানচিত্র বদলে যেতে থাকে । বদলে যাই , বদলে যাই – এই আমিও বদলে যেতে থাকি। স্তব্ধতায় ঝাঁ ঝাঁ করে আমার কান । দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকে । ভয়ের মতো , মৃত্যুর মতো একটা অন্ধকার আসতে থাকে আমার দিকে। আঃ তিন সপ্তাহ পরে আমার মানুষটা আবার যখন তার কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবে আমি কি করে একলা একলা থাকবো ! আমার অস্ফুট গোঙানিতে তার ঘুম ভেঙে যায় কিংবা আমার আঙুলের চাপে তার পিঠে ঝরে পড়ছিল শিশির সলিল।

- মায়াবতী , কাঁদছেন কেন ?

পূবের আকাশে তখনো মহল্লায় মহল্লায় জ্বালানো সোডিয়ামের আলো নিভে যায়নি , গা থেকে খুলে ফেলেনি ডিসেম্বর তার কুয়াশার র‍্যাপার । আমি যে প্রতারণায় খুন হয়েছিলাম শৈশবে , যৌবনেও । অবাক বিস্ময়ে সে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে ভোরের বিষণ্ণ সৌন্দর্য দেখতে পায়। বিষণ্ণ কণ্ঠে সে বলে –

- মায়াবতী , যেদিন প্রথম আপনার কণ্ঠস্বর শুনেছিলাম , অমন মায়াময় চোখের ‘পরে চোখ রেখেছিলাম সেদিন মনে মনে একটি শপথ করেছিলাম – কোনোদিন আপনাকে ফাঁকি দেবো না , কোনো মিথ্যার আশ্রয় নেবো না। সিঁদুরে মেঘ দেখলে যে আমিও ভয় পাই মায়াবতী ।

- আমায় মারুন , কাটুন আর কুচিকুচি যাইই করুন আমি আর একলা থাকতে পারবো না। এবার আমি আর যেতে দিচ্ছি না আপনাকে

- পাগলী , ঘুমান এখন। ঘুম আপনার যৌবনকে সময়ের কাঁটার উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিক। কখনো বড় যেন না হন , বুড়িও যেন না হয়ে যান ।

মাঘের ফিনফিনে কুয়াশায় আমার কাতর স্বর ডুবে যায় আবার তার মাঝে। আমি নিজেকে হারাতে হারাতে কামনা করি মনে মনে এই মহা-প্রেমেই আবার আমাদের পুণর্জন্ম হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×