নুহা - ৬
আমার দেহজুড়ে যে অবসাদ ছিল সারাদিনের হাঁটাহাঁটিতে, চোখজুড়ে রাজ্যের যে ঘুম কিছুক্ষণ আগেও ছিলো , তার ছিটেফোঁটাও যদি এখন আমার মাঝে থাকতো ,আমি না হয় চেষ্টা করতাম ঘুমোতে। রেজা পাশেই ঘুমোচ্ছে। আলো-আঁধারির ছায়াঘেরা কামরাটা কেমন যেন নিষ্প্রাণ লাগছে আমার মতোই। আমাদের শোবার এই রুমটায় কোনো জানালা নেই, দুটো দরজা আছে শুধু। এর মাঝে একটা দরজা বারান্দায় যাবার জন্য। এ বারান্দায় কয়েকটা ফুলের গাছ লাগিয়েছি; তবে গোলাপই বেশী। কাছেই একটা নার্সারি আছে, সেখান থেকে কেনা আর আছে একটা চায়নিজ কমলার গাছ। বারান্দার এক কোণে একটা ইজিচেয়ার রাখা আছে যেখানে সন্ধ্যার পর মাঝে মাঝে আমি বসে থাকি রেজা ঘরে আসার আগ পর্যন্ত।
দিনের আলোর চেয়ে সন্ধ্যা আর রাতের সৌন্দর্য কেন জানি আমার বেশী প্রিয়। ঠিক এ কারণেই বোধহয় রাতের টি টি পাখি আর জোনাকির ডাক এ মুহূর্তে আমি উপেক্ষা করতে পারি না বলে বিছানায় আর শুয়ে থাকতে পারি না। বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রাণভরে নির্মল বাতাস নেবার জন্য আমার ভেতরটা খুব হাঁসফাঁস করতে থাকে। যদিও আমি এখন বিছানা ছেড়ে বারান্দায় গেলে পাশে শুয়ে থাকা মানুষটা জানতেও পারবে না। রেজার মনের ব্যাপার নিয়ে আমি ততটা নিশ্চিত নই তবে ওর শরীর তৃপ্ত থাকলে আমার অন্য কোনো ব্যাপার নিয়ে সচরাচর ও মাথা ঘামায় না। নাক ডেকে ডেকে তখন ঘুমায়। যেদিন অতিরিক্ত নাক ডাকে, বেশী শব্দ করে সেদিন ওর গায়ে হালকাপাতলা ধাক্কা দিতে হয়। তখন আওয়াজটা কমে আর কি !
বারান্দায় এসে টের পেলাম বাইরে এখনো হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। এখন গ্রীষ্মকাল হলেও সকালে আর রাতের দিকে বিশেষ করে বৃষ্টি হলে তখন একটু ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে। বৃষ্টির ছাঁট হালকা হলেও বারান্দা আর ইজিচেয়ারটা ভিজে আছে। আমাদের বিল্ডিং থেকে একটু সামনের রাস্তায় একপাশে এতো বেশী গাছপালা লাগানো যে প্রথম দেখায় কেউ ভেবে নেবে ওখানে কোনো পার্ক থাকতে পারে। আর ওপাশটায় মানুষের চলাচল এমনিতেও একটু কম বলেই দিনের বেলাতেও সেখানের ঝিঁঝিঁর ডাক আমি আমার বারান্দাতে দাঁড়িয়েই শুনতে পাই; গাড়ি চলাচল কম থাকলে ঝিঁঝিঁর ডাক আরও ভালো মতো শোনা যায়। আমি মাঝে মাঝে ও রাস্তাটাতেও হেঁটে দেখেছি রেজার নিষেধ সত্ত্বেও। কারণ নিরিবিলি রাস্তায় নাকি হাইজ্যাকাররা থাকে, তবে আমার মনে হয়েছে ও নিজেই ভয় পায় বলে হাইজ্যাকারের ভয় দেখিয়ে আমাকে সেখানে যাওয়া বন্ধ করতে এ কথা বলেছে। ও রাস্তায় গাছপালা বেশী বলে শুকনো পাতা পড়ে রাস্তাটা প্রায়ই ভরে থাকে। আর একেকটা গাছ কি ভীষণ উঁচু! চার পাঁচ তলা বিল্ডিং ছুঁই ছুঁই সমান উচ্চতা !
ঘর থেকে একটা শুকনো কাপড় এনে ইজিচেয়ারটা মুছে গা এলিয়ে দিলাম সেখানে। বৃষ্টির রাতের একটা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ পাচ্ছি আমি। দিনের বেলায় যখন বৃষ্টি হয় তখনও চোখ বন্ধ করে গন্ধটা অনুভব করার চেষ্টা করেছি আমি। ভেজা পাতা, গাছের গুড়ি বেয়ে নামা পানি আর হালকা একটা কাগজ বা পাতা পোড়ার মতো মনে হয়েছে বৃষ্টির গন্ধটা। আমার এখানটায় গাছপালা বেশী হবার কারণেও এমনটা হতে পারে। অবশ্য এ গন্ধটা শুধুমাত্র এ বারান্দাতে এলেই আমি টের পাই এবং আমি একাই পাই। ইজিচেয়ারে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে রাতের গন্ধ নিতে আমার ভালোই লাগছিল। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ। আর হঠাৎ হঠাৎ করে দুই একটা গাড়ি হুশহাস করে চলে গিয়ে রাতের নিস্তব্ধতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছিলো সেই সাথে। হয়তো কেউ বাড়ি ফিরছে কিংবা কেউ বা যাচ্ছে বারে বা ডিসকোতে ! আমার এভাবে একা বসে থাকতে বা ভাবতে খুব একটা খারাপ লাগছে তা না। আমার ভাবনাগুলোকে আমি বরং তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে পারি যা খুব সহজেই অন্যরা পারে না। যদিও এখন রাত কিন্তু আমার মাথার মাঝে চারলাইন কবিতাও ঘুরছে -
একদিন অসময়ের বৃষ্টি শেষে
আকাশকে দেখেছিলাম কী ভীষণ নীলে
যেন স্নেহ-মায়া !
শব্দ নয়, শব্দের মতো বেজে ওঠা কোনো
অলৌকিক গানে !
আমার হঠাৎ করেই কেমন যেন এখন জ্বর জ্বর লাগছে। হয়তো মাথা ভার মনে হবার কারণ এটাই। সত্যি বলতে কি জ্বরের আগমনে আমি খুশীই হয়েছি। মাঝে মাঝে জ্বর হওয়া ভালো। নিজের কাছেই তখন নিজের আহ্লাদ করতে ভালো লাগে। কলেজে থাকতে আমার ডায়েরি লেখার অভ্যাস ছিল। ঐ সময়ে যখন মাঝে মাঝে ভীষণ জ্বর আসতো টুকটুক করে ডায়েরিতে লিখে রাখতাম -
" জ্বরের সময় কি তোমার শরীরটা কেমন তুলোর মতো হালকা মনে হয় না ? তুলোর বীজ যেমন বাতাসে ভেসে বেড়ায় তেমনি ভাবে তোমার মনে হবে তুমিও বুঝি ভেসে বেড়াচ্ছো ! প্রবল জ্বরের ঘোরে যখন তুমি জাগরণ আবার তন্দ্রার মাঝামাঝি থাকবে, সে সময় আমি চুপটি করে এসে তোমায় দেখে যাবো। ঘুম থেকে জেগে ইরাবতী তুমি ঠিকই বুঝবে আমি এসেছিলাম তোমার কাছে, তোমার ঘুমের মাঝে বা তন্দ্রার ঘোরে। তোমার ঘর জুড়ে রইবে কেয়ার গন্ধ ! "
আমার কখনই তেমন কাছের কোনো বন্ধু -বান্ধব ছিলো না। তাই নিজের সব কথা জমা ছিলো নিজেরই কাছে। এখন সেসব ভাবতেই একটা ছেলেমানুষি আবেগে মন ছেয়ে যাচ্ছে আমার। আমার নাম আমি দিয়েছিলাম - ইরাবতী; নদীর নামে নাম।
সেদিনের সে কলেজের দিনগুলো আর নেই এখন। থাকলে হয়তো আমি আবারো ইরাবতীকে লিখতাম -
" প্রিয় ইরাবতী,
কী নিবিড় এক বৃষ্টিমুখর দিন গেলো আমার এই পাহাড়ঘেরা বাড়িটার আঙিনায় , তুমি কি দেখেছিলে ? কী গভীর মদির মেঘমাদলই না বেজেছে আজ ! দিনের চোখের কাজল তাই এখন রাতের সুরভীতে আচ্ছন্ন। সমস্ত কোলাহল আর ব্যস্ততার শেষ করে এরকম করে স্বগতোক্তির মতো করে সবকিছু একমাত্র তোমাকেই বলা যায় , ইরাবতী ! তুমি অনুভব করতে পারছো কী ?
মাঝে মাঝে তুমি বলো বটে নৈঃশব্দ্যের আগুনে পুড়ে যাচ্ছে তোমার সত্ত্বা। সে সময় কখনো কখনো তোমার দিগন্তে মিলিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু আমার মতো করে তুমিও জানো হয়ত আভ্যন্তরীণ এ দহন বড় তৃপ্তির যেমন করে যন্ত্রণারও। যদিও আমি বা তুমি আমরা কেউ জানি না এ পথের শেষ কোথায় , যন্ত্রণাগুলো দুঃসহ অপেক্ষায় থেকে থেকে কবে প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দুতে মেলাবে।
লক্ষ্মী মেয়ে ইরাবতী, এবার বলোতো তোমার গভীরতম বেদনার কথা ! অন্তত একটা বেদনার কথা হলেও আমায় বলো ! শোনো , তোমার পাঁজরে জমে থাকা যত বাষ্প তা আজ মুক্ত করে দাও। কুয়াশা যেভাবে ঝরে পড়ে পাতার কান্নায় তেমনি করে ঝরিয়ে ফেলো তোমার জীবনের প্রগাঢ় বিষফোঁটা।
আজ এখানেই বিদায়। ধরে নাও আমি তোমারই মতো
- এক ইরাবতী কিংবা নুহা কিংবা তোমার লাবণ্য- বিলাপ !!! "
ধ্যাত কী সব ভাবছি এখন এসব ! নস্টালজিক হাওয়া বাইরে। সারারাত জেগেই রইলাম অন্যান্য রাতের মতোই আজ রাতেও ; নির্ঘুম আরেকটা রাত !
সকালে চোখে রোদ পড়তেই ঘুম ভাঙল আমার। এরকম একটা আলো ঝলমলে দিনের শুরু দেখে ভেবে নেয়া সত্যিই কঠিন গতকাল ওরকম একটা বৃষ্টিমুখর রাত গিয়েছে। কতটা নস্টালজিকই না হয়েছিলাম গতরাতে। ঘুম ভাঙার পর গায়ে আরামদায়ক এক আলস্য কাজ করে। তাই ঘুম ভাঙার সাথে সাথেই বিছানা ছাড়া ঠিক না। তবে ইজিচেয়ারে শুয়ে বিছানার আরামদায়ক আলস্য পাওয়া সম্ভব না বলে ঘরের দিকে পা বাড়াই। রাতে বারান্দায় ইজিচেয়ারে শুয়ে কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম টেরই পাইনি !
রেজা এতো বেলা অবধি ঘরে থাকবে না সে জানা কথাই তবুও ঘরে ঢুকে ওকে না দেখে এই সকালেই কেমন করা এক শূন্যতায় যেন ভেতরটা হু হু করে উঠলো। সকাল বেলাতেই জটিল বা দার্শনিক ভাবনায় বুঁদ হওয়া ঠিক না তবুও মনের মাঝে একটা প্রশ্ন উঁকিঝুঁকি দিয়ে যাচ্ছে -
- রেজার জন্য কি শুন্যতা অনুভব হচ্ছে নাকি ঘরে একলা আছো বলেই হু হু করা এক আকুলতা ঘিরে ধরেছে তোমায় , নুহা ?
- জানি না
- এড়িয়ে যাচ্ছ কেন ?
- এড়াচ্ছি না তো !
- রেজাকে ভালোবাসো ?
- এতগুলো বছর একসাথে কাটিয়ে দিলাম , এখন আবার ভালোবাসার প্রশ্ন উঠছে কেন ?
- মোটে তো তিন বছরের সংসার তোমাদের
- হুম , তো কি হয়েছে ?
- রেজাকে তো কখনো ভালোইবাসনি, তাই প্রশ্নটা করলাম
- ধ্যাত !
নাহ একা একা থেকে আমি উল্টাপাল্টা ব্যাপার নিয়ে যথেষ্ট মাথা ঘামাচ্ছি। আর ভালো লাগে না এভাবে ঘরে বসে থাকা। আজ রেজা বাসায় ফিরলে এ ব্যাপারে কথা বলতে হবে। জব করলে অন্তত সে সময়টা ভালো কাটবে ! ঘুম ভেঙে রেজাকে ঘরে না দেখে সত্যিই কি আমার বুকটা ছ্যাত করে উঠেছিলো ? উমমম তা কেন হবে ! পাশাপাশি থাকতে গেলে একে অপরের প্রতি সহানুভূতি জন্মাতেই পারে কিন্তু তাকে কি আর ভালোবাসা বলা যায় !
- নুহা , তুমি তো কাউকে কখনো ভালোইবাসনি , তুমি জানবে কি করে ভালোবাসার অনুভব কেমন !
উফফফ আবার শুরু হলো ভেতরের আরেক নুহার প্রশ্ন- জিজ্ঞাসা ! এমন অস্থির লাগছে কেন আমার আজ , তাও ঘুম ভেঙেই ! কেমন বুক ফেটে কান্না আসছে ! বাংলাদেশের সাথে আমাদের এখানের সময়ের ব্যবধান চার ঘণ্টা। এই সময়ে মা রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকে । তাকে এখন ফোন দিলেও দেখা যাবে আমার দিকে তার মনোযোগ নেই। আমাকে লাইনে রেখেই বুয়ার সাথে কথা বলবে কিংবা কিছু না কিছু করবে। তারপর এক পর্যায়ে বলবে -
- হুম তুই বল না কি বলবি , আমি শুনতাছি তো
- কি রান্না করছ ? প্রায় দুপুর একটা বাজে , এখন তো খাবার সময় ! এখনো রান্না করো যে !
- তোর বাপে অফিস থেকে আসার সময় মাছ নিয়া আইছে ! এইগুলো কাটাইলাম বুয়ারে দিয়া , ফ্রীজে রাখনের আগে কইতাছে টাটকাই খাইতে পারলে ভালো হইত। তাই আবার নতুন আরেকটা তরকারীর পদ রানলাম । একটু লাইনে থাক , দেখি কে জানি আইছে
আমার আর লাইনে থাকার অপেক্ষা শেষ হয় না ! মা যে ঠিক কি কি নিয়ে ব্যস্ত কে জানে ! যখন ফোন রেখে দিবো ভাবছি সে সময় আবার মা বলবে - হুম , বল ।
- ধুর , একটু পর পর কই যাও মা ?
- আর কইস না ! ঐ তুই একটু পরে ফোন কর তো দেখি ! তোর হারুন মামার আব্বায় আইছে।
- কোন হারুন মামা আবার !
আমার কথার উত্তর না দিয়েই মা ফোন রেখে দেয়। বাংলাদেশে সবাই এতো ব্যস্ত যে কারোই কথা বলার সময় নেই। আর এসব কারণেই মা কে ফোন দিতে ইচ্ছে করে না দিনের বেলায়। রাজ্যের কাজের দায়িত্ব সে একাই নিয়ে বসে আছে যেন। কাকে যে ফোন দিয়ে একটু গল্প করা যায় ভাবছি ! আমার এই মুহূর্তে ঘরের নীরবতায় একটা অসহ্য দম বন্ধ করা ভাব হচ্ছে। মনে হচ্ছে কারো সাথে কথা না বলতে পারলে মারাই যাবো। আমার তেমন একটা বন্ধু - বান্ধব কোনো কালেই ছিলো না ! উমমম কাকে ফোন দেয়া যায় তাহলে ! ইয়েস ! লাবনীকে ফোন দেই। আমেরিকাতে এখন রাত বারোটার মতো বাজে হয়তো !
- হ্যালো লাবনী !
- ওহ নুহা ! কি রে কি খবর !
- ঘুমাচ্ছিলি নাকি ?
- বাসায় সারাদিন অনেক গেস্ট ছিলো তো ! কাজ কর্ম শেষ করে বিছানায় এসে শুলাম মাত্র ! সমস্যা নাই বল ।
ওপাশ থেকে ওর হাই তোলার শব্দে আমি খুঁজে পাই না আসলে কি বলব ! নারে লাবনী , তেমন জরুরী কিছু না । ভাবলাম অনেকদিন খোঁজ নেয়া হয় না , তাই ফোন করলাম !
- অনেক স্যরি রে দোস্তো , লাস্ট ফোন তুইই করেছিলি। আমার উচিত ছিলো তোকে ফোন করা কিন্তু কামরুলের বন্ধু - বান্ধবদের বাসায় পার্টি থাকে , আমাদের বাসায়ও থাকে। আবার মেয়েটাকে মাত্রই নতুন ভর্তি করালাম স্কুলে তাই সময় করে উঠতে পারি না। আর যখন মনে পড়ে তোর কথা তখন তোর এখানেও সকাল , ঐ টাইমে তুই যদি ঘুমিয়ে থাকিস এই ভেবে আর ফোন করা হয় না !
- ঠিক আছে ! তুই অস্বস্তিতে ভুগিস না ! রেস্ট কর। আবার কথা হবে ।
ধ্যাত আজ সকালটাও বাজে ভাবে যাবে নাকি গতকালের সকালের মতো ! কী যে করি এখন! এক কাজ করি ! রান্না শেষ করে আজ রেজার অফিসেই যাওয়া যাক ! এমনিতে বেশ কয়েকদিন ও বলেছিলো ওর এখানে যেতে বিকালের দিকে। আশেপাশের মার্কেটগুলো ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় এক সাথে বাসায় ফেরার কথা বলেছিলো রেজা। আজ সেখানেই যেয়ে ওকে একটা সারপ্রাইজ দেয়া যেতে পারে।
চলবে