somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নুহা - ১৩

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নুহা - ১২

ঘরের সাজসজ্জার ব্যাপারে তেমন একটা গুরুত্ব দেইনি আমি কারণ এ দেশে সেটেল হবার ইচ্ছে নেই। তবে রেজার ইচ্ছে ভিন্ন, দেশে যাওয়ার ব্যাপারে একেবারেই ভাবে না ও। দেশে ওর বাবা, ভাই- বোন কারো সাথে যোগাযোগের তেমন আগ্রহও দেখি না। আজব মানুষ! দিনের পর দিন ও ওর পরিবারের মানুষদের সাথে কথা না বলে কী করে থাকে এটা আমার কাছে বিস্ময় হলেও ওর কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার, বলে-
- আরে ধুর ধুর, বাদ দাও। দেশে ফোন করলেই খালি এইটা দ্যাও ,ওইটা দ্যাও। আমি কী ভাই টাকার মেশিন যে তারা বললো আর টাকা বানাইলাম।

আর এই লিভিং রুমের পাশের রুমটা সেটাতে একটা মাত্র আলমারি ছাড়া আর কোনো আসবাব নেই। তাও এটা রেজার পুরনো বাসা থেকে এনে রাখা। আর এ রুমটা বাকী দুইটা রুমের চেয়ে তুলনামূলক বড়। কিন্তু এ রুমটার সমস্যা হলো এ রুমটায় একেবারেই আলো-বাতাস ঢোকে না আর শীতের দিনে খুব ঠাণ্ডা হয়ে থাকে রুমটা। রুমের হিটারটাও নষ্ট। এ রুমে আসা বা থাকা কোনটাই হয় না বলে হিটারটাও ঠিক করা হয় না। এ রুমের একটা ব্যাপারই সুন্দর, মেঝেটা কাঠের ফিটিংসে করা, মসৃণ। একবার রেজার সাথে রাগ করে শীতের এক রাতে শোবার ঘর থেকে এসে এ রুমের ফ্লোরে শুয়েছিলাম। সাথে অবশ্য একটা কম্বল নিয়ে এসেছিলাম আর বালিশ। ফ্লোর এতো ঠাণ্ডা ছিলো, তার উপর হিটার নষ্ট। দু'বার রেজা ডাকতে এলেও যাই নি ওর সাথে। বরং উঠে গিয়ে দরজা লক করে এসে শুয়েছিলাম। রাতের বেলা কীসের যেন একটানা কতক্ষণ ঠকঠক শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিলো। কিছুক্ষণ পর হাঁটাহাঁটির শব্দ আর একটা শনশন বাতাসের আওয়াজ হচ্ছিলো জানালা বন্ধ করার পরেও। ভূতে বিশ্বাস নেই আমার কিন্তু সারাক্ষণই সে ভয়ে অস্থির ছিলাম ঐ রাতে। নিজেকে সাহস দিতে ভাবছিলাম যেহেতু ফ্লোরে শুয়েছি, কিয়ারাদের রুম থেকে কী কোনো আওয়াজ হচ্ছে? কারণ আমার ফ্ল্যাটের উপরে আর কোনো ফ্ল্যাট নেই, আর আরেক পাশে চিলেকোঠার মতো একটা ফ্ল্যাট। এতো রাতে কি আর সে ফ্ল্যাটের কেউ হাঁটবে এই শীতের রাতে। কেন যেন সে রাতে ভীষণ ভয় পাচ্ছিলাম, মনে হচ্ছিলো আমার আশেপাশে দিয়ে একদল অশরীরী কিছু নেচে যাচ্ছে অবরত। একবার ভাবছিলাম এ রুম থেকে চলে যাই, কিন্তু রেজার কাছে গেলে ও আবার হাসবে, খোঁচা দিবে সেই আশংকায় ভয়, তন্দ্রা, আবার খানিকটা স্বপ্ন সব মিলিয়ে একটা ভূতুড়ে রাত পার করে দিয়েছিলাম।

রেজা আর আমি দুজনে ধরাধরি করে টিভিটা লিভিং রুমে রেখে ঝটপট তৈরি হয়ে নিয়ে বাইরের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাই। ঘরের কাঁচাবাজার করতে যাওয়ার নাম তাহলে বেড়াতে যাওয়া কী বলো? রেজার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলি আমি। ও গাড়িতে উঠলে আমার সাথে তেমন একটা কথা বলে না, মনোযোগ নষ্ট হয়ে যাবে ড্রাইভিং এ তাই। আমারে না খোঁচাইয়া আগে সীট বেল্ট বাঁধো, নাইলে তোমার মামু আইসা টিকিট কইরা দিবো। বলে রেজা ইশারায় দেখায় আমি এখনো সিট বেল্ট বাঁধিনি। এখানের লোকজন মানে বাঙালিরা পুলিশকে মামু বলে কেন কে জানে। রেজাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বলে, আমিও জানি না। এখানে আইসা আমিও তো শুরু থেকেই একই কথা শুইনা আসতাছি, মনে হয় এইখানের পুলিশেরা জেলেও ভালো খাতির যত্ন করে, এই কারণে। ঘড়িতে সকাল প্রায় সাড়ে এগারোটা। ভিক্টোরিয়া পৌঁছাতে হয়তো মিনিট চল্লিশ লাগবে। তাড়াহুড়ায় লিস্ট করিনি ঘরের জন্য কী কী জিনিস কেনা লাগবে। সেই বাজার কিনে বাসায় এসে সেগুলো গুছিয়ে রাখা আর টাটকা মাছ, মাংস রান্না করে খেতে খেতে কয়টা বাজবে কে জানে। ব্যাগ থেকে ছোট ফোন বুকটা বের করে একটা কাগজে কিছু জিনিস লিখে রাখি যাতে দোকানে গিয়ে মনে মনে হাতড়াতে না হয় কী কিনতে হবে। বাংলাদেশে ফোন করার জন্য কার্ড, সরিষা,প্লেট ধোয়ার লিকুইড ক্লিনার, মুড়ি, চালের গুঁড়া, ইলিশ মাছ, সরিষার তেল, কাঁচা আম - যে কয়টা জিনিসের নাম মনে ছিলো, আমি লিখে ফেলি। রেজা রেডিওটা অন করতে করতে আড়চোখে হয়তো দেখার চেষ্টা করে লিস্ট কত বড় হলো।টেরমিনি চলে এসেছি প্রায়। এখান থেকে বাঙালি বাজারে পৌঁছাতে মিনিট পাঁচেক লাগবে হয়তো। সমস্যা একটাই পার্কিং এর জায়গা সুবিধামত পাওয়া যায় না। রেজা জিজ্ঞেস করে, কী মাছ কিনবা ঠিক করছো ?

- নাহ, আগে তো যাই, দেখি বাজারের কী অবস্থা

- মাগুর মাছ খাইবা নাকি?

- ওয়াক ওয়াক, না। আফ্রিকান মাগুর গুলো দেখলে কেমন ঘেন্না লাগে। পাঙাশ, আইড় ছাড়া আর তাজা মাছ কী আছে ! চিংড়ি কিনবা নাকি। আইচ্ছা আগে যাই। শালার ব্যাটারা তো তোমারে দেখলে ভাবী ভাবী কইয়া গইল্যা পড়ে, কিন্তু দাম কমানের বেলায় তো মুখে তালা মাইরা রাখে।

- ধ্যাত রেজা, মুখ খারাপ করবে না তো। তারা ব্যবসা করতে বসছে, কম দামে তারা কেন বিক্রি করবে কেন! আর বাঙালি দেখলে ভাবী ভাবী বলবেই, তোমাকেও তো ভাই এটা নেন, ওইটা নেন বলে। সমস্যা কোথায়!

- আরে রাগ করো কেন? আমি তো এমনেই বললাম। রেজার মুখ দেখি হাসি হাসি। ওর চোখ অনুসরণ করলে হাসির কারণ বুঝি, মাত্রই একজন তার গাড়ি সরিয়েছে বলে রেজা পার্কিং এর জায়গা পেলো, না হলে আবার টাকা দিয়ে পার্কিং লটে গাড়ি পার্ক করতে হতো। এখানে রাস্তার দুই পাশেই সুবিধামত মানুষজন তাদের গাড়ি পার্ক করে রাখে। কারণ গ্যারাজে গাড়ি রাখাটাও ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। রেজার সাথে সাথে বাজারে ঢুকি , দেখি ওর গন্তব্য ইকবাল ভাইয়ের দোকানের দিকে। দেখা হতেই উনি আমার দিকে তাকিয়ে হাসেন, কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন। অনেকদিন পর আসলেন ভাবী।
- এইতো ভাই, আপনার ভাই সময় পায় না কাজ করে। রেজার সাথেও উনি হাত মিলায়। গরুর মাংস কিনতে হলে এ দোকানেই আসা হয়। আরও কয়েকটা বাঙালি দোকান ছাড়াও আরবীদের দোকানও আছে যেখানে বড় বড় করে লেখা ' হালাল মুরগি ও গরুর মাংস পাওয়া যায়'। এমনিতে তো সুপারশপ থেকে ফ্রান্স থেকে আসা মুরগী কিনেই খাই। রেজা ইকবাল ভাইকে পাঁচ কেজি গরুর মাংস রেডি করতে বলেন। শোনেন ভাই, সিনা থেইকা দেইখ্যা ভালো মতো পিস কইরেন। আর পিসের সাইজ কেমন হইবো আপনের ভাবীরে জিজ্ঞেস কইরা নেন। ইকবাল ভাই আমাকে মাংসের পিস দেখিয়ে নিয়ে উনার কর্মচারীকে সে অনুযায়ীই মাংস কাটতে বলেন। উনি জিজ্ঞেস করেন, আর কিছু নিবেন নি ভাই? ফ্রেশ মগজ আছিলো, উটের মাংসও আছে।
- হ, দুইটা গরুর মগজ দেন। আইচ্ছা সত্যি কইরা কন ইকবাল ভাই, গরু কী আসলেই আপনারা মসজিদের ইমাম দিয়া জবাই করান না শহরের বাইরে নিয়া গরু গুল্লি কইরা মাইরা তারপর মাংস বেচেন।

ইকবাল ভাইকে এ প্রশ্ন শুনে অপ্রস্তুত হতে দেখি না। হয়তো এরকম প্রশ্ন আরও মানুষের কাছে তাকে রোজ শুনতে হয়। মাংস প্যাকেট করতে করতে বলেন-

- আপনেও কিন্তু ভাই জানেন, ইতালিয়ান সরকার এরকম পশুপাখির রক্তপাত ঘটাইয়া শহরের মাঝে গরু, উট, ভেড়া জবাই করতে দিবো না। খুব কম সময়েই হালাল উপায়ে জবাই করা মাংসও পাইবেন। যেই দেশে যেমন নিয়ম। তয় এইটা গ্যারান্টি দিয়া কইতে পারি, শুয়োর কাঁটা ছুরি দিয়া আমরা মাংস কাটিও না, বেচি না, কিংবা অন্য কারো কাছ থেইকা কিন্যাও আনি না। এইটা মানেন তো ? এতদিন ধইরা মাংসও নিতাছেন, শুনছেন এই রকম বদনাম? যাই হোক, ভাবী দুইটা মুরগী দিয়া দিমু নি ? দেশি মুরগী আছিলো। লোকটার মুখে ' দেশি মুরগী' শুনে আমি হাসি। বলে কী এই লোক, এইখানে আবার দেশি মুরগী ! কিছু নব্য ব্যবসায়ী আছে বাংলাদেশের, তারা নিজেরা ফার্ম ভাড়া নিয়ে ভিলা বাড়িতে মুরগী পালন করে। সাইজে একটু বড় এবং মাংসও খেতেও ফ্রেশ। পাকিস্তানি মুরগীর মতো দেখতে হলেও মাংসের স্বাদটা বাংলাদেশি মুরগীর মতোই। আর এটাকেই এখানে সবাই ( প্রবাসি বাঙালিরা ) দেশি মুরগী বলে। আমি উত্তর দেয়ার আগেই রেজা বলে, হ কাটেন চাইরটা মুরগী। পিস বড় বড় করবেন। আজকে হলো কী রেজার, এতো খোলা হাত ওর !

ঘুরে ঘুরে লিস্টে লিখে রাখা জিনিস কেনা ছাড়াও সবজি, লেবু, করলা এসবও কেনা হলো। করলা আমার খেতে ভালো লাগে না। কিন্তু যে দোকান থেকে করলা কেনা হয়েছে সে লোকটা বললো -

এক কেজি নিয়া যান ভাবী। এক্কেবারে ফ্রেশ, কালকার বিমানেই দুই কার্টন আনাইলাম। রেজাও দেখলাম বেশি দামাদামি না করে নিয়ে নিলো হাফ কিলো করলা। তারপর মাছের দোকান থেকে গিয়ে শিং মাছ, স্যামন মাছের বড় চার পিস টুকরা, এক কিলো লাল কুচো চিংড়ি। চিংড়ি মাছের ভর্তা আবার ওর খুব প্রিয়। সব কেনাকাটা শেষ করতে করতে ঘড়ির কাঁটা দেড়টা পেরিয়েছে। বাংলাদেশে ফোন করার কলিং কার্ড আর কেনা হয় না। বাসায় ফেরার পথে দুজনেই এতো ক্লান্ত ছিলাম যে গাড়িতে খুব একটা কথা হয় না আমাদের। বরং ঘরে ফিরে রান্নাবান্নার যে একটা চাপে পড়তে হবে এই চিন্তাতেই আমি ডুবে থাকি। ফেরার পথে তেমন একটা ট্র্যাফিকে পড়তে হয় না বলে বিশ কি পঁচিশ মিনিটেই বাসায় পৌঁছে যাই। রেজা বাজারগুলো গুছিয়ে রাখতে সাহায্য করলো বলে ঝটপট ভাত, ধনে পাতা দিয়ে ডাল ভুনা আর কয়েক টুকরা ইলিশ মাছ ভেজে আমরা দুপুরের খাবারটা সেরে নেই। এখানে ধনে পাতা আর টমেটো সারা বছর পাওয়া যায়। খাওয়া শেষ করতে করতে রেজা জানায় গরুর মগজ আর শিং মাছটা ডিপ ফ্রিজে না রেখে ও আলাদা বক্সে করে বাইরেই রেখেছে। আজকের রাতের রান্নাটা ও করবে। ওকে রান্না করতে দিলে সমস্যা একটাই, পুরো রান্না ঘর ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাজ করে। পরে আমাকেই আবার সেসব গোছাতে হয়। তাই ওকে বললাম -

- আমাকে তুমি পেয়াজটা কেটে দিও আর মাছটা পরিষ্কার করে দিও লবণ দিয়ে কয়েকবার হালকা করে কচলে। আমিই রান্না করবো।

- কেন আমার রান্না মজা লাগে না তোমার ? যেন খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো। আমি হাসতে হাসতে বলি -

- পারলে তোমাকে দিয়েই রোজ রাঁধাতাম। নিজের রান্না খেতে ভালো লাগে না আমার। তুমি যে মাঝে মাঝে রাঁধো , আমার তো ভালোই লাগে। টেস্ট চেঞ্জ হয়। দেখো না ঐদিন বেশি বেশি খাই ! আমার কথা শুনে ও খুশী হয়।

খাওয়াদাওয়ার পর আমার শরীরে একটা ঘুমের আবেশ চলে আসে আবার। ফ্রেশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে রান্নাঘরের সাথে লাগোয়া বারান্দাটাতে গিয়ে একবার দাঁড়াই। আমার এই বারান্দাটা দিয়ে যতদূর চোখ যায় সে পর্যন্ত মনে হয় পাহাড়ই বেশি।আকাশটা ঐ পাশটায় কেমন মেঘলা দেখাচ্ছে। হয়তো বৃষ্টি হবে। সূর্যাস্তের সময় এই বারান্দায় দাঁড়ালে মনটাই ভালো হয়ে যায়। টবের গাছগুলোর দিকে এক মুহূর্তের জন্য চোখ পড়লে ভাবি রাতে একবার পানি দিবো। মাঝে একবার বৃষ্টি হলো বলে পানি দেয়া হয়নি। রান্নাঘরের দরজাটা আটকে শোবার ঘরে চলে আসি। এর মাঝেই দেখি রেজা ঘরের লাইট অফ করে, বারান্দার দরজাটা খুলে শাটার আটকে দিয়েছে। দিনের বেলা ঘুমের সময়ে এরকম অন্ধকার অন্ধকার ভাবটা খুব ভালো লাগে। বিছানায় শোয়ার পরেই রেজা আমার কাছে একটু ঘেঁষে এসে শুলো। ওর রকম-সকম ভালো ঠেকছে না। কানের কাছে ও মুখ এনে বললো -
- এখন বৃষ্টি হলে ভালো হতো তাই না?

- বৃষ্টি হলেই কী আর না হলেই কী, বৃষ্টির শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমাতে পারলেই না ভালো হতো। মাত্র খেয়ে আসছি, পেটের উপর থেকে হাত সরাও। দম বন্ধ লাগে। ওর হাতটা সরিয়ে দিলেও ও একটু পড়েই আবার হাতটা পেটে রাখে। আমি আর কিছু বলি না। জানি এখন ও আমাকে নিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটাবে। কিন্তু খেয়ে এসেই শোয়ার সাথে সাথে এসব ঘনিষ্ঠতা ভালো লাগে না আমার। ও আমাকে টেনে ওর দিকে মুখ করে শোয়ায়। বলে -

- কালকে থেকে আমারে তুমি অনেক কষ্ট দিছো, দূরে দূরে থাকছো। কাছে আসো এখন । ও আরও একটু ঘনিষ্ঠ হয় আমার। বুকের কাছটায় মুখ রেখে বলে, কাপড় খোলো।

উফ্‌ কী ধরণের ভাষা এগুলো। রোমান্সের ভাষা এমন হয় কখনো ! ফিলিংস চলে যায় এসব শুনলে। এতই যদি বোঝো রোমান্সের ভাষা তাহলে দাও না নিজের স্বামীকে শিখিয়ে, গজগজ করে কেউ একজন বলে ওঠে আমাকে। কী বললে রেজা, আমি তোমাকে কাল কষ্ট দিয়েছি?

- আরেহ্‌ না আমি এইটা বলতে চাই নাই, মানে তোমারে কাল অনেক মিস করছি। অহন আসো তো কাছে বলে সে আমাকে অধিকার করে নিতে চায়, হামলে পড়ে গলায়, ঘাড়ে চুমু খেতে খেতে আমাকে আরও কাছে টানতে চায়। গাঢ় স্বরে বলে, তুমি খালি দূরে দূরে থাকতে চাও। বাইরে থেইকা ঘুরাইয়া আনলাম, নাস্তা বানাইয়া খাওয়াইলাম আর তুমি তোমারে ধরতে দিতে চাও না, একটা চুমা দিতে চাও না। রেজার কথা শুনে আমার চোখে পানি চলে আসতে চায়। ঘরটা অন্ধকার বলে আমার ভেজা চোখটা ও দেখতে পায় না। সেক্সের বিনিময় মূল্য চোখে আঙুল দিয়ে ও তাহলে দেখিয়ে দিলো ! ও কী নির্বোধ না সেয়ানা মানুষ আমি দ্বিধান্বিত হই।ওর এই ধরণের আচরণগুলো আমাকে সময়ে সময়ে অসাড় করে রেখেছে, ও কী কখনোই বুঝবে না। তুমি তো জানোই তোমার স্বামীটা মোটা দাগের মানুষ, সুক্ষ্ম আবেগের ধারাটা সে বোঝে না বা বুঝলেও সে ধরেই নিয়েছে এ ধরণের আবেগের স্থান সিনেমা, বইয়ের পাতায়। মেনে নাও নাহলে তাকে নিজের মতো করে গড়ে নাও। তিনটা বছর তো অভিমান করে করেই পার করে দিলে। কবে যে আমার নিজের সাথে নিজের কথোপকথন শেষ হবে ! বাবা-মায়ের উপরে অভিমান ঘনিয়ে আসে।তাদের ঘাড়ে চেপে ছিলাম কী যে এভাবে গ্র্যাজুয়েট একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলো, একমাত্র যোগ্যতা মনে হয় এই যে, রেজার অনেক টাকা আছে। জীবনে কী টাকাই সব ?

চলবে
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×