somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নুহা - ১৬

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নুহা - ১৫

আমার ঘুমের ওষুধ কীভাবে কিংবা কোথায় জানা থাকলে তো ভালোই হতো। তাহলে রোজ রাতে ঘুমাবার জন্য এতো যন্ত্রণা পোহাতে হতো না। রাতে ঘুম না হবার জন্যই কি না কে জানে মাথায় একরাশ যন্ত্রণা নিয়ে সকালে ঘুম ভাঙে, মেজাজ খারাপ থাকে সকাল বেলাটায়। রেজাকে বলেছিলাম ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার এই মাথা ব্যথার জন্য। কিন্তু ওর কথা একটাই- ঠিক মতো ঘুমাও আর আমার সাথে প্রেম করো, তোমার মাথা ব্যথা বাপ বাপ কইয়া কই পলাইবো ! শীতের দিনে মাথা ব্যথা আরও বাড়ে। হয়তো সাইনোসাইটিস এর সমস্যা। আর রাতে ভালো ভাবে ঘুম না হবার ফলে যত ধরনের আজগুবি স্বপ্ন দেখা তো আছেই। হয়তো আজকেও কোনো স্বপ্ন দেখবো। যথারীতি সকালে উঠে ভুলে যাবো, শুধুমাত্র স্বপ্নের একটা রেশ থেকে যাবে যে 'আমি একটা স্বপ্ন দেখেছিলাম'। মানুষ যা ভাবে চেতনে বা অবচেতনে তারই প্রতিফলন হচ্ছে স্বপ্ন আর স্বপ্ন দেখা মানে তার ঘুম পরিপূর্ণ ভাবে গাঢ় হয়নি এমন। অবশ্য এটা আমার কথা না, আমার অতি পড়ুয়া মামাতো বোন, রুমকির। ওর কাছে হেন প্রশ্নের উত্তর নেই যে ও জানে না। তবে এর কতগুলি সঠিক আর কতগুলি মনগড়া ওই ভালো জানে। আমরা তো আর বইপত্র ঘেঁটে দেখার প্রয়োজন মনে করি না কিংবা উইকিপিডিয়া ঘাঁটি না। কিন্তু তোমাদের উইকি ঘেঁটে দেখা দরকার, প্রয়োজনে পত্রিকার বিভিন্ন রেফারেন্স, জার্নাল,জেনারেল নলেজ থেকে শুরু করে ডাক্তারি বিদ্যা,পদার্থ বিদ্যা থেকে জ্যোতিষ শাস্ত্র সব কিছুই -- এমনটা বলে রুমকি, যখন আমি বা আমরা কাজিনরা ওর দেয়া কোনও তথ্যে কোনও প্রকার সন্দেহ প্রকাশ করি। অনেকদিন হয়েছে রুমকিটার কোনো খোঁজ নেই না। শুনেছিলাম আহসানউল্লাহ ইউনিতে ভর্তি হয়েছে। নাহ একদিন সময় করে এই পিচকি-পাচকা গুলোকে ফোন দিয়ে কনফারেন্স লাইনে কথা বলতে হবে। মামাতো-ফুপাতো-খালাতো মিলিয়ে বেশ ক'জন ভাই বোন আমরা। বয়সের তারতম্য থাকলেও আমাদের বোঝাপড়াটা বেশ ভালো, আন্তরিক।

আর কতরাত জেগে থাকবো কে জানে! ইশ কেন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। ক্লান্তও ছিলাম অবশ্য।সারারাত এখন এর জের টানতে হবে আমাকেই। কিন্তু রেজাও তো ঘুমিয়েছিলো কই ওর তো ঘুমাতে সমস্যা হচ্ছে না। বিছানায় পিঠ ঠেকানো মাত্রই দিব্যি নাক ডেকে কী সুন্দর ঘুমিয়ে পড়ে। ওকে রীতিমত ঈর্ষা হতে থাকে আমার। ইচ্ছে করে ওকে খোঁচাখুঁচি করে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেই কিংবা ওর গায়ে পিঁপড়া এনে ছেড়ে দেই। এখানে অবশ্য আমি পিঁপড়া এখন পর্যন্ত চোখে দেখিনি আসার পর। আমাদের দেশে তো চিনির কৌটা মানেই পিঁপড়া, কৌটার গায়ে এবং কৌটার ভেতরে। সেই পিঁপড়ার আছে আবার প্রকারভেদ; হিন্দু পিঁপড়া আর মুসলমান পিঁপড়া। লাল বিষ পিঁপড়া মানেই হিন্দু পিঁপড়া, মার ঐগুলিরে আর পোলাপান সেসন পিঁপড়া কতটা নির্দয় ভাবেই না মারতো। স্কুলে, খেলার মাঠে কতদিন এমন হয়েছে,আমিও মেরেছি সেসব পিঁপড়া। শিশুবেলায় পিঁপড়া নিয়ে এ বৈষম্য কী করে আমাদের মাথায় ঢুকেছিলো এখন আর সেসব মনে করতে পারি না। কিন্তু এখন চিন্তা করলে দেখি কী ভয়াবহ একটা ধর্ম সংক্রান্ত স্পর্শকাতর ব্যাপারে অন্ধবোধ, বিশ্বাস একেবারে আমাদের গোঁড়াতেই ঢুকে গেছে মাথার ভেতরে বা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যা আধুনিক সমাজেও বর্তমান। থাক সে কথা, এখন যেহেতু পিঁপড়া পাবো না রেজার ঘুম কী করে ভাঙাবো সেটাই খুঁজে বের করি তাহলে। উমমম পেয়েছি। ওড়না এক কোণা চিকন করে পাকিয়ে পাকিয়ে ওর নাকের ভেতরে ঢুকিয়ে সুড়সুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়বো, হঠাৎ করে ও বুঝবেও কী থেকে কী হলো। ভাবতেই হাসি পাচ্ছে। আচ্ছা অন্যকে খোঁচাখুঁচি করে, বিরক্ত করে কী বিকৃত আনন্দ পাওয়া যায় ! আমার অধঃপতন হচ্ছে নাকি দিন দিন ! হলে হোক, ওকে একটু বিরক্ত করবই। বাইরে রাস্তার ল্যাম্প পোস্টের আলো দরজার ফাঁকফোঁকর দিয়ে ঘরে ঢুকে শোবার ঘরটিকে পুরোপুরি অন্ধকারে দখল করে নিতে পারেনি। দিব্যি দেখা যাচ্ছে রেজা টানটান হয়ে কেমন আরাম করে ঘুমাচ্ছে। ও ঘুমালে একেবারেই নড়াচড়া না করে কী করে সারারাত ঘুমাতে পারে, মাঝে মাঝে আশ্চর্য লাগে ভাবলে। রেজার নাকে সুড়সুড়ি লাগাতে ও একটু নড়েচড়ে ওঠে, নাকের কাছটায় হাতের তালুতে ঘসে। বাহ মজার তো, আমার মাথায় অদ্ভুত খেয়াল চাপে। একটু পর ওর কানে একবার সুড়সুড়ি দেই। আমার দিকে ঘুরে কাট হয়ে শোয়। আমি ওর ভারী শ্বাস শোনার অপেক্ষায় থাকি, আবার ওকে কানে বা নাকে একটু সুড়সুড়ি দিবো। ওকে একটা হাঁচি দেয়াতে পারতাম, বেশ মজা হতো। নুহা, তুমি এতো দুষ্টু কেন? তোমার স্বামীটাকে একটু ঘুমাতে দাও। বেচারা সকালে তো কাজে যাবে ! হাহহাহ, বেচারা বলেই তো তার সাথে একটু মজা করছি। আমি আরেকটা নুহাকে উত্তর দেই। বলি, চুপ করো তো মেয়ে, আমার কাজ আমাকে করতে দাও। আমার নিঃশ্বাস কিছুক্ষণ আটকে রেখে কান পেতে শুনে নিশ্চিত হই, হ্যাঁ ওর ঘুম আবার গাঢ় হয়েছে। খুব সন্তর্পণে ওড়নাটার কোণা আবার পাকিয়ে পাকিয়ে ওর নাকে দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করি। ও বেশ জোরেশোরে একটা হাঁচি দেয়। নড়ে পাশ ফিরে শোয়। বিরক্ত হয়ে বলে, বারান্দার দরজাটা লাগাও তো। পিনপিন কইরা বাতাসের সাথে ধূলাও আসতাছে। ঠাণ্ডা লাইগা যাইবো আমার। আমি হাসি চেপে থাকি। যাক কাজ হয়েছে। কিন্তু সাথে সাথে ওর কথার উত্তর দিলে ও বুঝে যাবে আমি সজাগ। আর ও যে সব কথা সজাগ হয়েই বলছে তারই নিশ্চয়তা কী। নাহ্‌ অনেক দুষ্টুমি হয়েছে। মন একটু ফুরফুরাও হয়েছে। কী এবার তো ঘুমাবে নুহা, নাকি ?
- আমিও লক্ষ্মী মেয়ের মতো নুহাকে বলি, হুম ঘুমাবো। আমার চুলে বিলি কেটে দাও,গুনগুন করে গান গাও।

- কী লুলাবাই শুনতে চাও ?

আমি নুহার ভেতরে গুটিসুটি মেরে আরও মিশে যেতে চাই। বলি - হুম। আমার কেমন কান্না কান্না পায়। ওদিকে নুহা আমার মাথায়, চুলে বিলি কেটে দেয়। কপালে চুমু খায় ছোট বেলায় বাবা যেমন করে আমায় চুমু খেতো। শুধু এটুকু অনুভূতিই পাই বাবার। বাবাকে হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাই। কিন্তু বাবা জনারণ্যে হারিয়ে যায়। বাস টার্মিনালের কোন আড়ালে গিয়ে লুকায় কে জানে, আমি খুঁজে পাই না। আমি খুঁজতে থাকি। মানুষের ভিড় ঠেলে সামনে আগাতে পারি না, হঠাৎ বাবার মতো মনে হলো কাউকে দেখলাম। মুখটা কেমন কালো, ক্লান্ত দেখাচ্ছে। একবার আমার ডাক শুনে পিছু ফিরে থমকে দাঁড়ালো, তারপর আবার জোরে জোরে হাঁটতে লাগলো। ভিড়ের মাঝে মিশে গেলো। আমার অনেক ভয় লাগতে থাকে। ছোট বেলায় সিনেমা দেখতে গিয়ে ভাইয়ার হাত ছেড়ে দিয়েছিলাম, বারবার বলছিলাম, ছেড়ে দে, আমার হাত ছেড়ে দে, আমি বড় হয়েছি না? তারপর হাঁটতে লাগলাম। হাঁটতে হাঁটতে বড় ভাইয়ার সাথে কথা বলছিলাম। ও আমার কোনও কথার উত্তর দিচ্ছিলো না দেখে পাশে তাকাতেই দেখি ভাইয়া নেই। মা, মামা, খালা, ছোট চাচা যারা সবাই এক সাথে সিনেমা দেখতে এসেছিলাম, আমার পাশে কেউ নেই। আমি ভয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলাম। এক লোক এসে বললো, কী বাবু কান্না করো কেন, চলো তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যাবো। আমি জানি না আমি কী করে মায়ের কাছে পৌঁছেছিলাম। বাসায় ফেরার পর বাবা আমাকে তার বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছিলো। আমি তখন এইটুকু ছোট ছিলাম, হাত দিয়ে আমার উচ্চতা দেখাই নুহাকে, আমার আমি ইরাবতীকে। তখন আমি ক্লাস ওয়ানে পড়ি কী? কী জানি মনে করতে পারি না। আমার সেইদিনের সিনেমাহলের শো শেষে হারিয়ে যাবার কথা মনে পড়ে যায় বাবাকে বাস টার্মিনালের মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যেতে দেখে। আমি বাবাকে হারিয়ে ফেলেছি না বাবা ভিড়ের মাঝে হারিয়ে গেছে বুঝে উঠতে পারি না। আমি বাবাকে এই বয়সে এসে হারিয়ে ফেলার কারণে আবার কাঁদতে থাকি। আমি আকুল হয়ে কাঁদি। আমার ছেলেবেলার শিক্ষক কমল আপা আমাকে সান্ত্বনা দিতে থাকে। বলে - কাঁদিস না। তোরে নিয়ে তো আমি অনেক চিন্তায় আছি রে নুহা। তোর এই কান্দন সারাজীবনেও থামবো না এমন লাগে আমার। কমল আপা এই অসময়ে কোত্থেকে এখানে আসে, আমার এই দুঃসময়ে আমার মাথায় কিছুই ঢোকে না। উনার কথা শুনে আমার ভবিষ্যৎ কান্নাকাটির কথা ভেবে আরও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। এমন সময় মা আসে। বলে -

ও কাঁদবো না তো কে কাঁদবো ? জিগান তো ওরে, এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না। বিদেশ আইসা হাত্তির পাঁচ পাও দেইখ্যা ফালাইছে, কমল আপার দিকে তাকিয়ে মা নালিশ করে তাকে, ছোট বেলায় যেভাবে করতো মায়ের কথা না শুনলে। মায়ের কথা শুনে আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলি। ডুকরে কেঁদে উঠি। আমার স্নেহ-ভালোবাসার আঁধার আমার বাবার শোকে কাঁদতে থাকি। বাবা, ও বাবা তুমি কই, আমাকে নিয়ে যাও, বলে চিৎকার করতে থাকি। সারা দুনিয়ার ধ্বংসস্তূপের মাঝে নিজেকে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া কোনো নিঃস্ব প্রাণী মনে থাকে আমার, যার নিয়তি একা থাকা, নৈঃশব্দ্য আর বিষাদে যার বসবাস। আমার অনুভূতিগুলো এখনো কেন ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে না। নাম না জগতের এক অচিন ভয়ে আমার শরীরটা ঠাণ্ডা মনে হতে থাকে, মৃত মানুষের মতো। দাদাজি যখন মারা যায়, তার কপালে হাত রেখে দেখেছিলাম, কী ভীষণ ঠাণ্ডা। আমার গায়ের চামড়া মনে হতে থাকে ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে, ঠোঁট কেমন নীলচে আর কালোর মাঝামাঝি রঙে পরিণত হয়েছে। আমি হাওয়ায় ভাসছি। ভাসতে ভাসতে কোন শক্ত এক দেয়ালে বাঁধা পেয়ে ঘুরতে ঘুরতে আকাশের দিকে উড়ে যেতে থাকি ধীরে ধীরে। যত উপরের দিকে উঠতে থাকি, কর্পূরের গন্ধ তীব্র হতে থাকে। দাদাজানের গলায়, কপালে, গালে যে কর্পূর লাগানো ছিল অমন গন্ধে আমার শ্বাস ভারী লাগতে থাকে। আমি ছটফট করতে থাকি। আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে কেন ! আহ্‌

এই নুহা, এই ? কী হইছে তোমার? এমন করতাছ কেন ? ওঠো, ওঠো। পানি খাইবা ?

গায়ে রেজার জোরে জোরে ধাক্কা পেয়ে একবার চোখ খুলে তাকাই কী তাকাই না বুঝি না। আমি কাঁদতে থাকি। শব্দ করে করে কাঁদতে থাকি।
আরে কী হইছে তোমার ? স্বপ্ন দেখছো নাকি ? ভয় পাইতাছো কী দেইখ্যা ? একটু উঠে পানি খাও।

আমার উঠে বসার মতো শক্তি মনে হয় অবশিষ্ট নেই আর। মুখ দিয়েও শব্দ বের হয় না আঃ আঃ জাতীয় শব্দ ছাড়া। পানির বোতলের দিকে হাত বাড়াতে গিয়ে দেখি হাত কাঁপছে প্রচণ্ড ভাবে। রেজা বালিশ থেকে আমার মাথাটা দু'হাতে একটু উঁচুতে তুলে বিছানার পাশের সাইড টেবিল থেকে বোতল নিয়ে আমার মুখের কাছে ধরে। আমি এক ঢোঁক পানি তৃষ্ণার্তের মতো পান করে মাথা আবার বালিশে ঠেকাই। দুই এক ফোঁটা পানি মনে হয় ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে গড়িয়ে পড়ে। গলার কাছটা ভেজা ভেজা লাগে। নাকি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কেঁদেছি বলে সেই পানি গালে, গলার কাছে লেগে ভেজা ভেজা লাগছে ! আমি কী বিছানায় এসে শোবার পর ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম, ভাবতে থাকি। শরীর জুড়ে ভয়াবহ একটা অবসন্ন ভাব কাজ করছে। একটু একটু মনে পড়ছে, রেজাকে ওর ঘুমের মঝে নাকে, কানে সুড়সুড়ি দিচ্ছিলাম। তারপর নিজের সাথে কথা বলতে বলতে কী ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম? স্বপ্ন দেখছিলাম ? কিন্তু স্বপ্ন কী এতো জীবন্ত হয় ? আমি কী স্বপ্নে মারা গিয়েছিলাম ? আমি মনে হয় আবার তন্দ্রায় ডুবে যাচ্ছি ! কেমন খস খস শব্দ পাচ্ছি। আলমারি খোলার, বন্ধ করার আওয়াজ পাচ্ছি। উফফ আমাকে কী কেউ একটু ঘুমাতে দিবে না? ঘড়ঘড় শব্দ করে দরজার শাটার নামানোর আওয়াজ পাই। ঘরে যেটুকু আলো আসছিলো সেটাও বন্ধ হয়ে গেলো। পুরো ঘর কবর অন্ধকারে ঢেকে গেলো। রেজা আস্তে আস্তে আমাকে ডেকে বললো, একটু ঘুমাও। তোমার মনে হয় শরীর ঠিক নাই। আমি কাজে গেলাম।

- উমমম কয়টা বাজে এখন?
- সকাল পৌনে সাতটা। ঘুমাও তুমি

দপ করে মনে পড়ে যায় শবনমকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে আর এক ঘণ্টা পর। একবার ইচ্ছে করে ওকে ফোন করে বলি আমি আজ ওর সাথে যেতে পারবো না। আমি ঠিক নেই,আমি আমার মাঝে নেই। হঠাৎ করে আমার কী হলো আমি জানি না। কিন্তু কী করে ওকে বলি যে আমি যেতে পারবো না। ওর একটা বাবু নেই। ওর কান্না কান্না মুখটা ভেসে ওঠে আমার চোখের সামনে। মা না হতে পারার অনেক কষ্ট রে নুহা, তুই বুঝবি না -- শবনমের এই কথাটা মনে হয় আমার ঘরের চার দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে, দেয়ালে দেয়ালে আছড়ে পড়ে আবার আমার কাছেই ফিরে এসে বিস্ফোরিত হয়। এক বেসুরো বিস্ফোরণ; সময়ের, আমার, আমাদের সবার।

রেজা সকালে কাজে চলে যাবার পর আমার আর ঘুম হয় না। যে স্বপ্ন দেখলাম সেটা নিঃসন্দেহে দুঃস্বপ্ন ছিলো। ভূত প্রেত ছাড়াও ভয় পাবার মতো স্বপ্ন যে মানুষ দেখে আবার টের পেলাম। এমনিতে আমি স্বপ্ন দেখলে বেশীরভাগ দিনই মনে রাখতে পারি না। তবে একই জিনিস ঘুরে ফিরে বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখলে সেটা আর ভুলতে পারি না। হয়তো অনেক রাত্রি জাগরণ,নিজের ভেতরের কিছু হতাশা রেজার সাথে কথা বলতে বলতে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়া, টেনশন সব মিলিয়ে ছাড়া ছাড়া ভাবে তন্দ্রা আসা, এ কারণে স্বপ্নটাকে দীর্ঘ মনে হচ্ছিলো আর আজকে সে স্বপ্নের কথা তাই মনে আছে। মোবাইলটা হাতে নিয়ে সময় দেখি। সকাল সাড়ে সাতটা বাজে। গতকাল আসা এস এম এস গুলো চেক করা হয়নি, মনে পড়ে যায়। মোবাইল কোম্পানির দুটো এস এম এস আর আরেকটা এস এম এস মনি'র, রেজার ছোট ভাইয়ের বৌ। লিখেছে " ভাবী, ফোন দিও।" মনি মেয়েটা খুব চঞ্চল, ভালো লাগে কথা বলতে। এই মেয়ের এক সমস্যা খুব চাপাবাজি করে এবং মিথ্যে কথা বলে। আমার কাছে ধরাও পড়েছে কয়েকদিন, তবুও হাসে। ওর স্বামী তপু, সেও থাকে দেশের বাইরে কোরিয়াতে। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই তপু আর মনির ঝগড়া হয় এবং প্রতি সপ্তাহেই ওদের ডিভোর্স হয়। একটা ফালতু ব্যাপার স্যাপার। আগে ওদের ঝগড়ার মাঝে পড়ে খুব ভয় পেয়ে যেতাম আমি কিন্তু এখন একটা রোজকার ব্যাপার হয়ে গেছে। বিরক্ত লাগে শুনতে। নিশ্চয়ই এ জাতীয় কোনও ব্যাপার হয়েছে আবার। তাই মনিকে ফোন করার ব্যাপারে অনীহা কাজ করে এখন আর তেমন জরুরী কিছু হলে ও নিজেই হয়তো ফোন দিতো। তপু আর মনি বিয়ে অনেক আগেই করেছে, আমি ওদের বাড়ির বড় বৌ হলেও সাংসারিক অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে মনির বেশিই। আমার আর রেজার বিয়ের আগেই যেহেতু ওকে কোর্ট ম্যারেজ করে নিয়ে এসেছে তপু। ওদের ছয় বছর বয়সী একটা বাচ্চাও আছে, অর্ক ওর নাম। ভারী মিষ্টি দেখতে বাবুটা।

বাংলাদেশে সময়টা এখন প্রায় দুপুর বারোটা ছুঁই ছুঁই। বাবা এ সময়ে অফিসেই থাকে। মোবাইলটা নিয়ে বাবাকে একটা ফোন দেই। বাবা খুব জোরে জোরে কথা বলে ফোনে। অনেকদিন বলেছি -

আস্তে কথা বলো না বাবা, আমি তো শুনতে পাচ্ছি।

- ওহ আমি আরও ভাবি, তুই এতো দূর থেকে ফোন করিস, আস্তে কথা বললে যদি না শুনিস তাই। আমি বাবার ছেলেমানুষি কথাতে হাসি। বাবার খুব দেখার শখ আমি কোন বাসায় থাকি, জায়গাটা দেখতে কেমন, এখানকার মানুষগুলো কেমন, কত কত শখ বাবার। আমি অনেকগুলো ছবি তুলে পাঠিয়েছি রোম শহরের দর্শনীয় জায়গাগুলোর। বাবা সেগুলো দেখে খুশী হলেও সে দেখতে চায় তার মেয়ে কোথায় থাকে, তার মেয়ের বাসাটা কেমন, আমার চায়নিজ কমলা গাছটার কমলার সাইজ কেমন, দেশ থেকে আনা বীচি থেকে লাউ গাছটা কত বড় হলো, করলা ধরেছে কিনা গাছের এসব দেখতে। বাবাকে ছবি তুলে পাঠাবো পাঠাবো করেও পাঠানো হয় না। বাবার অফিসে ফোন দিয়ে তাকে অবশ্য সিটে পাই না, তার কলিগ জানায় একটু অপেক্ষা করতে। আমার ফোনের খবর পেয়ে বাবা হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছে মনে হয়। কেমন হাঁপাচ্ছে।

- কি রে মা, কেমন আছিস? সব ঠিকঠাক আছে তো ? এতো সকালে ফোন দিছিস যে ? ভাত খাইছিস ?

বাবার গলা শুনে তার কাছে এক ছুটে আমার চলে যেতে ইচ্ছে করে। কত দিন দেখি না। প্রায় দেড় বছর আগে ইতালি থেকে একবার ঘুরতে গিয়েছিলাম দেশে মাসখানেকের জন্য। আমি খুব আস্তে বাবাকে বলি - আমি ভালো আছি। তোমার শরীরটা ঠিক আছে তো ? কোনও ধরণের সমস্যা পাও না তো তোমার বুকে?

- গত সপ্তাহেই এস আর খানকে দেখাইয়া আসছি। হার্টে আপাতত আর সমস্যা নাই। আগের ওষুধই চলছে। তোর গলার আওয়াজটা এমন কেন রে মা? জ্বর আসছে নাকি ?

- না, জ্বর আসেনি। একটু আগে ঘুম থেকে উঠলাম তো। এখনো ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ। বিছানা থেকেই নামিনি।

- ওহ, রেজা কেমন আছে? ওর খেয়াল রাখস তো ?

- হুম রাখি।

- আচ্ছা এখন ফোন রেখে দে তুই। তোর অনেক বিল উঠবো কিন্তু। মিনিটে কয় টাকা কাটে তোদের এখান থেকে বাংলাদেশে?

- তোমার ফোনের বিল নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তুমি কথা বলো নিশ্চিন্তে। কিন্তু বাবা আমার কথায় আশ্বস্ত হয় না মনে হয়। ফোন রেখে দেয়ার জন্য ব্যস্ততা দেখা যায়। বাবা এখনো ভেতরে ভেতরে কতটা শিশু, ভাবতেই নির্মল এক ভালো লাগায় মনটা ভরে যায়। এখনো এই যুগে কোনো মানুষ তার সারল্যকে যে ধরতে পারে তার অজান্তেই সেটা বাবাকে না দেখলে কেউ বুঝবে না। আমার কাছ থেকে বাবার গল্প শুনে শুনে শবনমও আমার বাবার ভক্ত হয়ে গিয়েছে। শবনমের কথা মনে পড়তেই এবার বিছানা থেকে নেমে দাঁড়াই। আড়মোড়া ভাঙতে গিয়ে বুঝি আরেকটু ঘুমাতে পারলে কিংবা একটু শুয়ে থাকতে পারলে ভালো হতো। শাটার ফেলে দরজা রেজা আটকে দিয়ে গিয়েছিলো। আমার শোবার ঘরে ঘুটঘুটে অন্ধকার এখন। হুট করে অঞ্জন দত্তের 'জেরমির বেহালা' গানটার কথা মনে পড়ে গেলো।

"চুপি চুপি রাত নেমে এলে পরে ভাঙা জানলার শার্সিটা খুলে যায়
কালিঝুলি মাখা ঘরটায় কে যেন আবার হেঁটে চলে খালি পায়
মাঝে মাঝে লোডশেডিংয়ের রাতে বেজে ওঠে জেরমির বেহালা "


বাইরে হয়তো ঝকঝকে দিনের আলো। কিন্তু এ গান কেন মনে পড়লো কে জানে। নির্ঘাত এ গান আজ সারাদিন আমার মাথায় বাজতে থাকবে। নাহ আলসেমী করে লাভ নেই। বিছানাটা গুছিয়ে ফ্রেশরুমের দিকে যাই। গিজারটা অন করে দাঁত ব্রাশ করে নেই। মাথা ধরে আছে। চুলায় এক কাপ চা বসিয়ে দিবো ভাবছি। চা হতে হতে ততক্ষণে গোসলের পানি গরম হয়ে যাবে। চা বসিয়ে দিয়ে ঘরে আসি, বারান্দার দিকের দরজাটা খুলে দেই। আমাদের শোবার ঘর আর এ বারান্দা যেটা পাশের লাইব্রেরী রুমের সাথে লাগোয়া, ঠিক রাস্তার পাশেই। আলমারি থেকে জামাকাপড় বের করে ভাবি শবনমকে একটা ফোন দিয়ে দেখি কী খবর, রেডি হচ্ছে কিনা। আমি ফোন দেবার আগেই দেখি মোবাইলে রিং বাজছে। কিন্তু এ রিং টোন তো আমার মোবাইলের না, রেজার। ও আজ কাজে যাওয়ার সময় মোবাইলটা নিশ্চয়ই ভুলে ফেলে গেছে। ও বিছানার যে পাশটায় ঘুমায় সেখানেও একটা সাইড টেবিল আছে, মোবাইলটা ওখানেই রাখা। কোনো জরুরী ফোন কিনা ভেবে মোবাইলটা হাতে তুলে নেই, ততক্ষণে লাইন কেটে গেছে। নাম্বারটা দেখলাম সেভ করা "লিও" নামে। এই লিও কে, লিয়ানা নামের ঐ কলিগটা নাকি ? মোবাইলটা নামিয়ে রাখতে রাখতেই আবার একটা এস এম এস আসলো, একই ব্যক্তির। কারো মোবাইল, মানিব্যাগ, মেয়েদের পার্স, কারো ডায়েরি এসব খুব ব্যক্তিগত জিনিস। এসব ঘাঁটাঘাঁটি করা ঠিক না জেনেও আমি মেসেজটা ওপেন করি। লিয়ানার মেসেজ বলেই ওপেন করলাম যেহেতু মেয়েটার মাঝে মাঝে একটা অস্বস্তিকর ভাব দেখেছিলাম আমার মাঝে। আবার গত পরশুই সে রেজাকে নিয়ে একসাথে বের হয়েছিলো এবং যার জন্য রেজা আমাকে মিথ্যেও বলেছিলো। সে কৌতূহল থেকে আমি দেখতেই পারি লিয়ানা রেজাকে কী মেসেজ পাঠালো। ইশ ঢং কতো, স্বামীর উপর অধিকার ফলাচ্ছো নাকি নুহা? ডু ইউ কেয়ার হিম ?
- ইয়েস আই ডু
- ইউ লায়ার

লিয়ানার মেসেজে তেমন কিছুই লেখা নেই রেজার জন্য। " তুমি কী ব্যস্ত রেজা ?" তার মানে মেয়েটা আজ নিশ্চয়ই কাজে যায়নি। কাজে গেলে তো রেজার সাথে দেখাই হতো, এস এম এস পাঠাবার দরকার পড়তো না। বিরক্ত লাগছে কেন যেন। ফালতু চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে চেষ্টা করি, শবনমকে ফোন দিয়ে জানাই পৌঁছাতে আমার পাঁচ/দশ মিনিট দেরীও হতে পারে।
- আচ্ছা। তুই আসলে এক সাথে কোনও বারে বসে নাস্তা করে নিবো নে। আমিও রেডি হইতে থাকি তাইলে।

এরপরের কাজ গুলো খুব দ্রুতই সেরে নেই। আজ আর ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাবার মতো পর্যাপ্ত সময় পেলাম না। জিন্স, শর্ট কামিজ আর স্কার্ফটা গলায় ঝুলিয়ে কোনমতে চা'য়ে চুমুক দেই। ব্যাগে আইডি কার্ড, অন্যান্য কাগজপত্র চেক করে টাকা আর মোবাইল দুটো ভরে নিয়ে ফ্ল্যাটের মেইন গেট লক করে দেই। লিফটের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে দেখি লিফট ব্যস্ত। ধ্যাত, কতক্ষনে লিফট আসবে কে জানে। আমি সিঁড়ি দিয়েই নামতে থাকি। নিচে গেটের কাছে এলিজা আর তার হাজব্যান্ড মউরোর সাথে দেখা হতেই হাসি বিনিময় হয়। মউরো জিজ্ঞেস করে, কী সব খবর ভালো তো? আমি মাথা নাড়াই, হেসে জানাই ভালো আছি। এখানে যখন প্রথম আসি, মাস চারেক পরের ঘটনা। রেজা ছিলো না বাসায়, আশেপাশের কয়েকটা দোকান চিনি এমন একটা অবস্থা আমার। ভাষাও তেমন প্রায় কিছুই বুঝি না। বাইরে থেকে ফিরে লিফটে উঠেছি, দুই তলা আর তিন তলার মাঝামাঝি এসে লিফট আটকে গেলো। এমন না যে ইলেক্ট্রিসিটি চলে গিয়েছে। আর ইলেক্ট্রিসিটি থাকে না বা বাংলাদেশের মতো বিদ্যুৎ বিপর্যয় এসব শব্দ এ দেশের অভিধানে বিরল। প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলাম সেদিন। মোবাইলেও কোনো নেটওয়ার্ক নেই। ইমারজেন্সি বাটন চেপে অনেকবার বাজাবার পর কারা যেন লিফটের কাছে আসে, আমাকে কী কী যেন জিজ্ঞেস করে। আমি শুধু এটুকুই ইতালিয়ান ভাষায় বলতে সক্ষম হই, ওদের কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না আর আমিও ইতালিয়ান জানি না। পরে জেনেছিলাম লিফট সচল করার সিস্টেমের কথাই আমাকে এলিজা আর তার স্বামী বলেছিলো। মিনিট দশেক এভাবে আটকে ছিলাম লিফটে। এখানে প্রতিটা বাড়ির, প্রতিটা ফ্লোরের দেখাশনার জন্য একজন করে কেয়ারটেকার আছে,তার অধীনে আছে আরও কয়েকজন কর্মচারি। সে কেয়ারটেকার এসে পরে লিফট চালু করে আমাকে বের করে। বের হবার পর তারা দুজনেই আমাকে অনেক সাহস দেয়, স্বাভাবিক কথাবার্তা বলে আমার নার্ভাসনেস কাটাতে সাহায্য করে। বলাই বাহুল্য আমি তাদের কথার কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। আমি তাদের ধন্যবাদ দিয়ে সেদিন নিজের ঘরে ফিরেছিলাম। রেজা ফেরার পর ওকে জানিয়েছিলাম লিফটে আটকা পড়ার ব্যাপারটা। ও বলেছিলো - এইটা তেমন বিশাল কিছু না। ভয় পাওনের কী হইলো ! মউরো আর এলিজা দুজনেই সমাজকর্মী, আরও পরে যখন আমি ইতালিয়ান ভাষা শিখি, বুঝতে আর বলতে পারি তখন ওদের আরেকদিন বাসার নিচে দেখা হতেই সেদিনের লিফট থেকে বের হতে আমাকে সাহায্য করার জন্য নতুন করে কৃতজ্ঞতা জানাই।

চলবে
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৯
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×