এই ডিজিটাল যুগে সামান্ন কুয়াশার কাছে পরাজিত হওয়ার কোন মানে আছে ?
ঢাকার বাজারে ২০-২৫ হাজার টাকা দামের একটি সাধারন মানের GPS device দিয়েই এই কুয়াশাকে পরাজিত করা সম্ভব।
ব্যাপার টা খুবই সহজ।
যখন কুয়াশা থাকবে না তখন চালক তার ফেরি পারাপারের trail (গতিপথ) GPS device এর মাধ্যমে রেকর্ড করে রাখবে। আর কুয়াশার সময় GPS device এ ডিসপ্লেতে তীরচিহ্ন হুবুহু সেই গতিপথ follow করবে ফেরির চালক।
রাতে বাতি ছাড়াও চলতে পারবে, এর position error মাত্র ৩ মিটারের কম। এটা দিয়ে চরপরা নদীর একটা স্থায়ী ম্যাপও তৈরি করা সম্ভব।
তীর চিহ্ন যুক্ত ম্যাপ সম্বলিত মোবাইলাকৃতি GPS যে কেউ চালাতে পারে, ফেরিচালক দের কম্পাস-নেভিগেশনে ভাল জ্ঞান থাকে। তাদের কাছে এটা আরো সহজ হবে। আমাদের নৌবাহিনীর কাছে উচ্চ মানের GPS device সম্বলিত Boat আছে। রিভার ম্যাপ আছে। প্রয়জনে তাদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
মার্কিন Navy পরিচালিত Global positioning system ২৪ টি Navstar উপগ্রহের মাধ্যমে বিনামুল্যে এই সেবা দেয়া সুরু করেছিল। এখন হয়ত আরো বেশী। বিদেশে কিছু থার্ডপার্টি মোবাইল সার্ভিস প্রভাইডার এই সার্ভিস মোবাইলেও দিচ্ছে।
প্রথম দিকে এই সেবা সুধু মাত্র মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে সিমাবদ্ধ ছিল, এর পর বানিজিক জাহাজ এবং বিভিন্ন Airlines দের অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তিতে ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিনস সহ প্যাসিফিক দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর দ্বীপগুলি মধ্যে সংযোগকারি সকল ফেরি-নৌযান GPS সজ্জিত।
আমাদের নৌবাহিনী এবং Coast Guard এর সকল জাহাজ - বোট, দেশের সমুদ্রগামি সকল বানিজ্যিক জাহাজ GPS navigation সজ্জিত।
একদিন হয়তো আমাদের লঞ্চ সহ সকল inland river নৌযান জিপিএস সজ্জিত হয়ে যাবে। GPS ছাড়া ফিটনেস পাবে না।
২্য় এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১৩
* সংযজন 30-04-16
GPS ব্যাবস্থা মার্কিন নেভির নিজস্য। ন্যাভস্টার নামক একঝাক সেটেলাইট সমন্নয়ে এটা তৈরি হয়েছিল মুলত গ্লোবাল সামরিক ব্যাবহারের জন্যই। কিন্তু সোভিয়েট পতনের পর ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হলে GPS সবার জন্য বিনা মুল্যে উম্মুক্ত করে দেয়া হয়।
ইন্টারনেটও যখন আবিষ্কৃত হয় তা সুধুমাত্র সামরিক বাহিনীর ব্যাবহারের জন্য তৈরি হয়েছিল, কিন্তু পরে তা সবার জন্যই উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। বর্তমানে পৃথিবীর সকল বানিজ্যিক জাহাজ, বেসরকারি এয়ারলাইন্স এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রল ব্যাবস্থা সম্পুর্ন ভাবে GPS নির্ভর।
GPS বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বর্তমানে গুগল ম্যাপের সমন্নয়ে একটি শক্তিশালি বহুল ব্যাবহৃত ডাইরেক্সান ফাইনডিং রোড ম্যাপ নেভিগেশনে পরিনত হয়েছে। বিশ্বের যে কোন স্থানে, হাইওয়ে ৪ লেন ১০০ মাইল গতিতে চলা আপনার গাড়ীকেও পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে আপনাকে গন্তব্যে, চলন্ত গাড়িটি ভুল্ক্রমে ৩ ফিট বিচ্যুত হয়ে ট্র্যাক চেইঞ্জ হলেও আপনাকে কঠিন ভাবে "কিপ লেফট" বলে সাবধান করবে GPS.
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইউরোপ, রাশিয়া, চীন এর নিজস্য জিপিএস ব্যবস্থা আছে, ভারত সম্প্রতি নিজস্ব জিপিএস ব্যবস্থাটি চালু করেছে। তবে সবাই সামরিক বা সরকারি ব্যাবহার। কেউই পাবলিক ব্যাবহারের অনুমতি দেয়না।
আমি এই পোষ্টে মুলত ঘণ কুয়াশায় ফেরি বন্ধ, আটকে যাওয়া বিপুল গাড়ির ভেতর প্রায় ১০ ঘন্টা আটকে ছিলাম। পরে এই পোষ্ট দিয়েছিলাম। তবে আমি সুধু GPS এর উপর নির্ভর করতে বলিনি -
১। দিনের বেলায় ২০ মিটার ভিজুয়াল ডিস্টেন্স
২। হর্ন ও সাইরেন।
৩। দুই ফেরি চালকের মধ্যে মোবাইলে পজিশন বিনিময়।
৪। কম্পাস (ফেরিতে বিল্টিন থাকে)
৫। সুর্যের স্থান অনুমিত হলে, সেক্সট্যান্ট মেসিন (পজিশন নির্নয়কারি যন্ত্র)
৬। শক্তিশালী লাউড স্পিকার ও ওয়াকিটকি।
৭। হলুদ সার্চলাইটের সাহায্যে মোর্সকোডে সিগনেল বিনিময় (৫০০ মিটার)
সব ব্যাবস্থা সমন্নয় করে নৌবাহিনীর সহায়তায় ঘণকুয়াশায় পরিক্ষামুলকভাবে বন্ধ ফেরি চলাচল সুরু করা যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২৮