গ্রেফতারের দিন আগেই তৈরি করা গোলাম আজমের একটি পত্র বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সংবাদসংস্থার অফিসে প্রেস বিজ্ঞপ্তির আকারে একযোগে পাঠানো হয়।
এর আগে বিভিন্ন টিভি সাখ্যাতকারে নয়াদিগন্ত ও জামাতের দৈনিক সংগ্রামে তার ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়েছিল। এগুলোর মুল বক্তব্য প্রায় একই।
আল-বদর, আশ-শামস এর অস্তিত্ত শ্বীকার করলেন।
তিনি বলেন –
“উল্লেখ্য, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে ১৯৭১ সালের সামরিক সরকার সরকারি আদেশের মাধ্যমে জনগণ থেকে রাজাকার, আল-বদর, আশ-শামস নামে বিভিন্ন বাহিনী গঠন করে। এসব বাহিনীকেও শেখ সাহেব এর সরকার ‘কলাবরেটর' আখ্যা দেন”।
ওনার দল জামাতে ইসলামি, ছাত্রশাখা ইসলামি ছাত্রসংঘ পাকিসেনা সহায়তায় আলবদর বাহিনী গঠিত হয়েছিল এতে কোন সন্দেহ নাই। সেই সময়কার পত্রপত্রিকা এবং তাদের দলিয় পত্রিকা দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশীত খবরগুলো এই অভিযোগ সমর্থন করে।
উনি অবলিলায় অসম্পুর্ন ও ভুল তথ্য দিলেন।
তিনি বলেন –
১৯৭৩ সালের নবেম্বরে সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার পর গ্রেফতারকৃত ও সাজাপ্রাপ্ত সকলেই মুক্তি পায়।
এটি সম্পুর্ন ভুল তথ্য।
সাজাপ্রাপ্তরা কেউ অব্যহতি বা মুক্তি পাননি, মামলা চলমান ছিল, পলাতকদের গ্রেফতারি পরয়ানা জারি ছিল। সুধু দালালি আইনে নন ভায়োলেন্ট অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অব্যহতি পায়।
যাদের বিরুদ্ধে কোলাবরেশন উইথ ভায়োলেন্স (হত্যা-ধর্ষন-লুন্ঠন)অভিযোগ ছিল তারা কেউই মুক্তি বা অব্যহতি পাননি। কিছু মামলার চার্জশিট দেয়া প্রকৃয়াধিন ছিল। অতচ উনি বললেন "মামলা দায়ের হয় নাই" ??
উনি বলতে পারতেন "চার্জশিট দেয়াহয় নাই"
গোলাম আজম বলেন -
"১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে ঢাকায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যে হত্যাকান্ড চালায় তা থেকে বুঝা গেল যে, ইয়াহিয়া-মুজিব সংলাপ ব্যর্থ হয়ে গেছে। পরে জানা গেল যে, '৭০-এ নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।"
এত সহজে সব বলে ফেললেন ?
২৫স শে মার্চ পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কি সুধু আওয়ামী লীগের উপর হামলা করেছিল না সমগ্র জাতীর উপর ?
তাহলে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, বেঙ্গল রেজিমেন্ট দফতর, বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা কালিমন্দির, পিলখানা EPR দফতর, এদের উপর কোন সতর্কতা ছাড়াই কামান দেগে হামলা করা হল কেন? তারা তো হামলার আগে বিদ্রহ করেছে বলে শোনা যায় নি। আত্নসমর্পনের সুযোগ দিলনা কেন ? বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ঘেরাও করে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে নিরস্ত্র ছাত্রদের মেরে ফেললো। আর উনি বলছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো নাকি ১৬ই ডিসেম্বরের পর ভারতীয় বাহিনী লুন্ঠন করেছে.!!
ভারত যুযুর অযুহাতে সেই জল্লাদদের সাথে হাতমেলাতে কি একটুও বাধলনা?
পত্রীকা ও ATN News এর সাথে সাক্ষাতকারে পাকসেনাদের সহায়তায় কিছু বাঙ্গালি বিপদগ্রস্থ দের সাহায্যের কাহিনী বর্ননা করছেলেন। এতে তার তৎকালিন অবরুদ্ধ দেশটিতে কি পরিমান ক্ষমতাধর ছিলেন বুঝতে অসুবিধা কোন হওয়ার কথা না। দখলদার সামরিক বাহিনীর সাথে তার দহরম-মহরম দেখে বোঝাই যায় যে গনহত্যায় নেতৃত্বদানে শুনির্দিষ্ট ভাবে জরিত থাকা সম্ভব ছিল।
তিনি স্পষ্ট শ্বীকার করেছেন টিক্কা খান ও জেঃ রাও ফরমান আলির সাথে তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল। তার হটলাইন ফোন নম্বর সব সময় তার কাছে থাকতো (দুর্গত-বিপদগ্রস্থ দের সাহায্যের জন্য.!!)
তার বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে তিনি যেকোন সময় ক্যান্টনমেন্টে ঢুকে তাদের বাসভবনে যেতে পারতেন। জেনারেল দের সাথে আলোচনা করতে পারতেন।
উনি হয়ত সত্যই কিছু দুর্গত-বিপদগ্রস্থদের বাঁচিয়েছিলেন জেঃ রাও ফরমান আলির সাহায্যে,
এটা সত্য হতে পারে।
আর এটাও সত্য উনি যাদেরকে ওনার ভাষায় "পাকিস্তানের দুশমন" বা "ভারত সমর্থক দুস্কৃতিকারী" ভাবতেন তাদের কে ঠিকই পাকি দখলদারদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তালিকা তৈরি করে বাসা চিনিয়ে দিয়েছিলেন।
যে হত্যা তালিকার অস্তিত্ব পরে পাকিস্তানী বিচারবিভাগীয় তদন্ত “হামিদুর রহমান কমিশন” রিপোর্টে বের হয়ে আসে। মার্কিন দুতাবাসের গোয়েন্দা রিপোর্টে সমর্থিত হয়।
আল-বদর, আশ-শামস এর অস্তিত্ত শ্বীকার করে তিনি বলেন
"পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে ১৯৭১ সালের সামরিক সরকার সরকারি আদেশের মাধ্যমে জনগণ থেকে রাজাকার, আল-বদর, আশ-শামস নামে বিভিন্ন বাহিনী গঠন করে। এসব বাহিনীকেও শেখ সাহেব এর সরকার ‘কলাবরেটর' আখ্যা দেন" ।
অভিযোগ পাওয়া যায় যে উনি এবং ওনার দল জামাতে ইসলামি এবং ছাত্রশাখা ইসলামি ছাত্রসংঘ পাকিসেনা সহায়তায় আলবদর বাহিনী গঠিত হয়েছিল।
এতে কোন সন্দেহ নাই। কারন সেই সময়কার পত্রপত্রিকা এবং তাদের দলিয় পত্রিকা দৈনিক সংগ্রামে খবরগুলো প্রকাশীত হয়েছিল।
স্পেশাল ট্রাইবুনাল এর তদন্ত কর্মকর্তাগন,
তার সম্প্রতি ভিডিও ও লিখিত বক্তব্যগুলোর দিকে একটু নজর দিন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:২৯