somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহবাগ গনজাগরন মঞ্চের অবস্থান সঠিক ছিল

২২ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহবাগ গনজাগরন মঞ্চের অবস্থান ও দাবিসমুহ সঠিক প্রমানিত হয়েছে।
অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে প্রখ্যাত আইনজীবী রফিক-উল হক ও এম আমীর-উল ইসলাম, রোকনউদ্দিন মাহামুদ সহ কয়েকজনের আদালতে দাখিল করা লিখিত বক্তব্যে এ মত উঠে এসেছে।
গনজাগরন মঞ্চের মুল দাবি ছিল কাদের মোল্লার সর্বচ্চ শাস্তি (ফাসি)
এর জন্য যা যা দরকার তা করতে হবে।
অর্থাৎ প্রয়োজনিয় আইন প্রনয়ন, সংশোধন করে সরকারের আপিল ক্ষমতা অর্জন ও এই আইন কাদের মোল্লার উপর প্রয়োগ করে সর্বচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।
সরকার দ্রুততার সাথে একমাসের মধ্যে আইনগুলো প্রনয়ন ও সংশোধন করে।
কিন্তু উচ্চ আদালত এই আইন কাদের মোল্লার উপর এই আইন প্রয়োগ করতে দ্বিধাগ্রস্থ হয়।
এব্যাপারে পরামর্শ চাইতে আদালত ৭ জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন। যাদের দুজন বাদে প্রায় সবাই আওয়ামী বিরোধী, কিছু বিএনপি-জামাত সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এরা রফিকুল হক, টি এইচ খান, হাসান আরিফ .. ইত্যাদি।
৭ জন অ্যামিকাস কিউরিদের কাছে দুটি প্রশ্ন করা হয় -
১। দণ্ড ঘোষণার পর আইনে আনা সংশোধনী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি না?
২। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না?

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিষ্টার রফিক-উল হক এই আইনটির প্রশংসা করেন এবং কাদের মোল্লার উপর এই নতুন আইন প্রয়োগ করতে কোন বাধা নেই বলে মত দেন।
রফিক-উল হকের বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ২১ ধারায় যে সংশোধনী আনা হয়েছে। তা বৈধ ও সংবিধানসম্মত। এই সংশোধনী ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে তা কার্যকর বলে গণ্য হবে। সংবিধানের ৪৭(৩) অনুচ্ছেদে আইনটিকে সুরক্ষা দেওয়া আছে। নতুন ধারা অনুসারে, কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে অধিকার হিসেবে সরকার আপিল করতে পারে।
রফিক-উল হক এর মত প্রখ্যাত আইনজীবীর মত প্রকাশের পর অন্য অ্যামিকাস কিউরিদের ভিন্ন মত দিবেনা বলেই মনে হয়েছিল।
অ্যামিকাস ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম ও মাহামুদুল ইসলাম আদালতে একই মত দিলেন। বললেন,
পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যত ট্রাইব্যুনাল আইন হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আইন তৈরি হয়েছে অপরাধ সংঘটনের পরে।
গতকাল ব্যারিষ্টার রোকনউদ্দিন মাহামুদও অন্যদের মত একই মত প্রকাশ করলেন।

কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার অ্যামিকাস ব্যারিষ্টার টি এইচ খান সবাইকে অবাক করে দিয়ে ভিন্নমত প্রকাশ করলেন, দলবাজির উর্ধে উঠতে পারলেন না ব্যারিষ্টার সাহেব!

তিনি বললেন - "কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করে ৫ই ফেব্রুয়ারি। তার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়। প্রবল আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৮ই ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাস আইন সংশোধন আনা হয়। এ সংশোধনে যে কোন দণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে আপিল দায়েরের সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু এর আগেই কাদের মোল্লার মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ সংশোধনী প্রয়োগের সুযোগ নেই"।
এটা প্রতিষ্ঠিত নীতি যে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে বিভেদ দেখা দিলে দেশীয় আইনই প্রাধান্য পাবে। সাধারণত দেশীয় আদালত দেশীয় আইন অনুসরণ করে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইন পূর্ণাঙ্গ নয়, যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইনে অস্পষ্টতা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আদালত আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মীমাংসিত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করতে পারে।
গত বিএনপি-জামাত সরকারের সাবেক এটর্নি জেনারেল এডভোকেট হাসান আরিফও টি এইচ খানের সাথে সুর মিলিয়ে এর বিরোধিতা করলেন!

সমস্যা নেই, যেহেতু বেশীরভাগ (৫ জন) অ্যামিকাস পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছে তাই সংশোধনিটি বহাল হয়ে আইনে পরিনত হবে নিশ্চিত।

কিছু ইনফো এড না করলে পোষ্ট অসম্পুর্ন থেকে যায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না?

শুধুমাত্র ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মত দেন প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের কোন সুযোগ নেই।
অন্যান্ন ৬ অ্যামিকাস পক্ষে মতামত দেন।

ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের পক্ষে মত দেন।

ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ১৯৭৩ সালের ট্রাইব্যুনালস আইনে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিফলন রয়েছে।

মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এ প্রশ্নে হাঁ না উত্তর দেয়া কঠিন। সাধারণভাবে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে না। তবে দেশীয় আইনে কোন ধরনের অস্পষ্টতা থাকলে, শূন্যতা থাকলে অথবা ব্যাখ্যার জন্য প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক আইনের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।

আজমালুল হোসেন কিউসি মত দেন, সাংঘর্ষিক না হলে আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইন প্রযোজ্য হবে।

টিএইচ খানের মত প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে। তবে দেশীয় আইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন সাংঘর্ষিক হলে সেক্ষেত্রে দেশীয় আইনই প্রাধান্য পাবে।

এএফ হাসান আরিফের মতে আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইন প্রযোজ্য হবে।

এই সংশোধনি আইনটি নিয়ে উচ্চ আদালত একটু দ্বিধাগ্রস্থ ছিল, পরে যাতে কোন বিতর্ক না উঠে এবং আরো স্বচ্ছতার জন্য এক্সপার্ট অভিমত চেয়েছিল।
তাই অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে গত ২০ জুন ৭ জন সিনিওর আইনজিবী নিয়োগ দেয় আপিল বিভাগ। এরা হচ্ছেন
ব্যারিস্টার টিএইচ খান,
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক,
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম,
এডভোকেট মাহমুদুল ইসলাম,
ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ,
ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন. কিউসি,
এডভোকেট এএফ হাসান আরিফ।

গনজাগরন মঞ্চের দাবির আগে কোনো অভিযোগে আসামির অপর্যাপ্ত সাজা হলে তার বিরুদ্ধে আপিলের কোন সুযোগ ছিল না সরকারপক্ষের।

ধন্যবাদ গনজাগরন মঞ্চ।

সাপোর্টিং লিঙ্ক
http://www.prothom-alo.com/detail/news/366485
http://www.mzamin.com/details.php?
http://www.prothom-alo.com/detail/news/366631
http://www.mzamin.com/details.php?nid=NjM2MzQ=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ==
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪৪
১৪টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×