সাগর-রুনি হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক ভেবেছি। পত্রিকা ও টিভির ইসভেষ্টিগেটরি রিপোর্টগুলো খুবই দুর্বল ছিল। একটি টিভির রিপোর্টেতো দেখলাম ঘটনার গভীরে না যেয়ে হয়রানির ভয়ে পলাতক সামান্য বেতনের গার্ড ও সিকুরিটি ঠিকাদারের পিছনে দৌড়ে দু দিন মুল্যাবান এয়ারটাইম নষ্ট করছে। পত্রিকাগুলো একই অবস্থা।
ভাবলাম, আমার কিছু লেখা উচিত।
দু বছর পার হয়ে গেলেও তদন্তকারিরা সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের কোন কিনারা করতে সক্ষম হয়নি।
দির্ঘ তদন্তেও কোন ক্লু খুজে পায় নাই পুলিশ। RAB ও CID একাধিক তদন্ত, পুনতদন্ত করেও কিছু পায়নি। হত্যার বিশ্বাসযোগ্য কোন মোটিভও পাওয়া যায়নি। খুনিকে খুজে পাওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার।
কিছু গোষ্ঠি কাল্পনিক কাহিনী ফেদে এটাকে রাজনৈতিক রঙ দেয়ার আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে গেছে বছরব্যাপি। এজন্য দায়ী অবস্যই ATN বাংলা চেয়ারম্যান নিজেই। লোকটিকে আমার মানসিক অসুস্থ মনে হয়, লন্ডনে একটি পত্রিকায় অকারনেই সাংবাদিক রুনি কে নিয়ে নোংড়া মন্তব্য করে, এই মানসিক অসুস্থ ব্যক্তিটি কিভাবে যে ২টি চ্যানেল চালায় ভাবতে অবাক লাগে।
আমার মনে হয়না এই জোড়া হত্যাকান্ড পলিটিকালি মোটিভেটেড। মাছরাঙ্গা টিভির সাগর এবং এটিএনের রুনির ডেস্ক তন্ন তন্ন করে কোন পেন্ডিং দুর্নিতির ইনভেস্টিগেসন রিপোর্ট পাওয়া যায় নি। এসব টিম ছাড়া একা করা সম্ভব হয় না কখনোই। কোন কাজ পেন্ডিং থাকলে তার সহকর্মিরা বা নিউজ এডিটর অবস্যই জানার কথা, এরকম কিছু হলে তা সারভারে থাকতো বা পোর্টেবল হার্ড্ডিস্কে থাকতো। দুর্মুখরা বলে তার ল্যাপটপে ছিল। এটাও একটা ফালতু কথা। গনমাধ্যমে যারা কাজ করে এদের কে জিজ্ঞেস করে দেখবেন গুরুত্বপুর্ন নাজুক জিনিস কখোনোই ল্যাপটপে রাখা হয় না। কারন এদের প্রায়ই গভীররাতে বাসায় ফিরতে যেয়ে ল্যাপটপ খোয়াতে হয়েছে ছিনতাইকারিদের হাতে। আর থাকলেই বা কি, খুনি কিভাবে শিওর হবে এই রিপোর্টের কপি অন্য কারো কাছে নাই? এইসব ফালতু কাহিনী কারা যে বানায়, কারা যে গেলায়। তবে অনেক শিক্ষিত আবাল এসব সত্য বলে বিশ্বাসও করে।
দু বছর ব্যাপি টিভি ও পত্রিকায় প্রকাশীত অনুসন্ধানী লেখাগুলো পড়ে দেখেছি। খুনিকে পাওয়া তো দুরের কথা, খুনের মোটিভই পাওয়া যায় নি।
আমার ব্যক্তিগত ধারনা এই জোড়া হত্যাকান্ড কোন একক স্যাডিষ্ট উম্মাদের কাজ হতে পারে।
বিদেশেও এই ধরনের মোটিভলেস খুন এই ধরনেরই হয়ে থাকে। খুনির কোন সহকারি থাকে না। একক আততায়ি খুবই আত্নকেন্দ্রিক এবং নিরিহ-ভদ্র টাইপ হয়ে থাকে বলে এদের কে খুজে পাওয়া খুবই দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। পুলিশের তদন্ত ও ময়না তদন্ত রিপোর্টেও এর সত্যাতা পাওয়া যায়। প্রাপ্ত স্পেসিমেনে একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তির ডিএনএ পাওয়া যায় যার ডিএনএ সন্দেহজনক কারো সাথেই মিলেনি।(কালেরকন্ঠ)
আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে এটি কোন পেশাদার খুনির কাজ না। খুনি আগেই ডুব্লিকেট চাবি যোগার করে বা অন্য ভাবে ঘরে লুকিয়েছিল। সারা দিন সারারাত কাজের পর ক্লান্ত পরিশ্রান্ত সাগর কে ছুরিকাঘাতে ভুপাতিত করে বেধে ফেলে। তার আগে বা পরে রুনি কে মাত্র একটি ছুরির আঘাতে আহত করেছিল, পরে এই আঘাতেই রুনি রক্তক্ষরনে মারা যায়। খুনি পেশাদার কিলার না নিশ্চিত, কারন সে সাগর কে ২০-২৫টা ছুরিকাঘাত করেছিল, কিন্তু ভাইটাল যাগায় (হার্ট, মেইন আর্টারি) একটাও লাগাতে পারে নাই, আবার মৃত্যু হওয়ার পরও গলা কেটেছে, প্রতিটি আঘাতই আনড়ি হাতের! বোঝাই যায় উম্মাদ পাগলের কাজ।
আরো শিওর হলাম যখন জানা গেল এই স্যাডিষ্ট খুনি খুন করার পর দুই দুইটা লাশের সাথে রাতযাপন করেছে, ঘুমিয়েছে! (খোদ শয়তানেরও মনে হয় এত বড় কইলজা নাই!) সকাল সাতটায় ফ্রেস হয়ে দরজা লক দিয়া ভদ্র ভাবে ল্যাপ্টপের ব্যাগ কাধে ঝুলিয়ে অফিস যাত্রীর মত সিড়ি দিয়ে নেমে গেট দিয়া বের হয়ে গেছে। গার্ড কিছু জিজ্ঞেস করেনি, করার কথাও না। কেউ বের হওয়ার সময় সাধারনত কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় না, সুধু ঢুকার সময় সন্দেহ হলে চ্যালেঞ্জ করে।
কোন পেশাদার কোন খুনিই রাত্রিযাপনের মত এই অদ্ভুত ঝুঁকি নিবেনা, পেশাদার আততায়ী কাজ শেষ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করবে, সাধারনত এটাই হয়।
এই ধরনের একক স্যাডিষ্ট ঊম্মাদ বিদেশেও উচ্চ টেকনোলজি ইউজ করে খুজে পাওয়া যায় না। সিরিয়াল কিলার হলে খুনি হয়তো ধরা পড়ত। আমাদের দেশের পুলিশ এই খুনিকে আর পাবে বলে মনে হয় না। যদিও এক অজ্ঞাত ব্যাক্তির ডিএনএ স্পেসিমেন এখনো হাতে আছে।