somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাপ বাপকেও ছাড়েনা ... এর নাম আমেরিকা!

২৭ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাপ বাপকেও ছাড়েনা ... এর নাম আমেরিকা!
মাহাফুজ হক। গুলশানের এক নামি ইন্টারন্যাশানাল স্কুলের তরুন শিক্ষক।
৮০র দশকে অনেকের সাথে স্বপ্নের (ফ্রীসেক্সের দেশ!) দেশ আমেরিকাতে পাড়ি জমান

মার্কিন নাগরিকত্ব পেতে বেশী সময় লাগেনি। ফ্রীসেক্সের স্বপ্ন বিলিন হয়ে যায় যখন দেখে তার পছন্দের একজন তাকে পাত্তা কম দিয়ে অন্য একজনের সাথে ঘনিষ্ঠতা! বোকা মাহাফুজ মনে করে এই আপদ (টড কেলি) কে সরিয়ে দিলেই তার পছন্দের ক্রিস্টিন মাটজফেল্ডের সাথে আবার ঘনিষ্ট হওয়া যাবে। একপর্যায়ে টডকে একা পেয়ে পিঠে মেরে বসেন, সেদিন ১৯৮৯ সালের ৯ই আগস্ট, নির্মম ভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় টড।

আমেরিকার পুলিশ ঘাশ খায় না। মাহাফুজকে খোঁজাখুজি সুরু করে। কিন্তু পায় নি।
বেগতিক দেখে অন্য স্টেটে পালিয়ে যায়। মাহাফুজ পরে একটি বাংলাদেশি গলাকাটা পাসপোর্টের সাহায্যে কানাডা হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। দাড়ি রেখে নামপরিচয় গোপন করে টেনিস কোচ হিসেবে ভালই কাটছিল মাহাফুজের জীবন। কিন্তু মার্কিন নজরদারির বাইরে যেতে পারেনি। ২০০৮ এ তাকে ধরার চেষ্টা অল্পের জন্য ব্যার্থ হয়। আবার ভুয়া পাসপোর্টে নামপাল্টে কোলকাতা। তার কিছুদিন পর দিল্লি।
মার্কিন গোয়েন্দারা ২৪ বছর পার হলেও হাল ছাড়েনা। মাহফুজের সকল আত্নিয়স্বজনের ফোন কল চেক করতে থাকে বছরের পর বছর। (মার্কিনদের হাতে পৃথিবীর সকল ফোনকলের রেকর্ড থাকে) সব কল এনালাইসিস করে নয়াদিল্লির একটি টেনিস ক্লাবের আশেপাসে তার সন্ধান পাওয়া নিশ্চিত হয়। আসিফ নামের জেনুইন বাংলাদেশী পাসপোর্ট সহ ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় তাকে পাকড়াও করা হয়।

২৫ বছর আগের ওই অপরাধে বিচার করে গত ২৪-সে মার্চ ২০১৪ মাহফুজকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আমেরিকান আদালত। স্টেউবেন কাউন্টির জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় শোনার পর কৃতকর্মের জন্য ভীষণ অনুতপ্ত মাহফুজ কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিচারক উইলিয়াম ফি রায় ঘোষণা করেন।


মাহফুজ ১৯৮৮

আদালতে পেশ করা এজাহারের তথ্যানুযায়ী,
বাংলাদেশী মাহফুজ ছিলেন ঢাকার এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক। পরে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন। ১৯৮৯ সালের ৯ই আগস্ট ছুরিকাঘাতে ১৯ বছরের তরুণ টড কেলিকে হ্যামিল্টনে তার নিজ বাড়িতে হত্যা করেন মাহফুজ। কেলিকে হত্যার পর মাহফুজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে তার খোজ় পায় মার্কিন গোয়েন্দারা। নাম পালটে দাড়ী রেখে আসিফ হক নামের বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট। নয়াদিল্লিতে টেনিসের ট্রেনার হিসাবে চাকুরি করছিলেন। একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণের সময় মার্কিন অনুরোধে তাকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। কিন্তু এক্সট্রাডিশন আইন জটিলতায় তাকে আমেরিকার কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। ২০১৩ র জুলাইতে তাকে বিশেষ ব্যাবস্থায় জোড়পুর্বক মার্কিন মার্শাল বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করে পাঠিয়ে দেয়া হয় মার্কিন জাষ্টিস ডিপার্টমেন্টের কাছে।
ক্রিস্টিন মাটজফেল্ডের কথিত প্রেমিক ছিলেন ২২ বছরের তরুণ মাহফুজ। কেলিকে হত্যার জন্য তার বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করছিল মাহফুজ। সেখানে থাকা সিগারেটের অবশিষ্টাংশই তার প্রমাণ, আংগুলের ছাপও পাওয়া গেছে। হত্যার দুই সপ্তাহ পর তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ গঠন করা হয়। তাকে হত্যার আগে কয়েকবার হুমকি দিয়েছিলেন মাহফুজ। ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের পুলিশ বলছে, কেলির পিঠে ছুরিকাঘাত করে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল।


এই হত্যাকান্ড দারুন চাঞ্চল্য শৃষ্টি হয়েছিল। ৯০ দশকে ‘আনসলভড মিস্ট্রিজ’ এবং অ্যামেরিকা’স মোস্ট ওয়ান্টেড নামে টেলিভিশনে প্রচারিত দুটি অনুষ্ঠানে এ ঘটনাটি বেশ সাড়া ফেলেছিল।

এত আলোড়ন শৃষ্টিকারি খবরটি এদেশী কোন পত্রিকায় চোখে পরলনা।

সুত্র-
এসোসিয়েটেড প্রেস, ও কিছু মার্কিন অনলাইন পত্রিকা থেকে অনুদিত।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১৫
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×