somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিতর্কিত ড.পিয়াস করিম।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পিয়াস করিম, একজন টকশো তারকা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাধারন অধ্যাপক, এতদিন আমেরিকায় শিক্ষকতা করেছেন, কিছুদিন আগে ফিরে এসে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে যোগ দেন।
পিয়াস করিম পারিবারিক ভাবেই স্বাধিনতা বিরোধী বলয়ে বড় হয়েছেন। বাবা এমএ করিম ও নানা জহিরুল হক (লিল মিয়া) ছিলো কুমিল্লায় শান্তি কমিটির নেতা। দালালি গুরুতর পর্যায়ে যাওয়ায় একাত্তর সালে লিল মিয়া এবং এমএ করিমের বাসায় গ্রেনেড হামলা করে মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযুদ্ধের পর এমএ করিমকে দালালির অপরাধে দালাল আইনে গ্রেফতার করা হয় এবং অনেকদিন সে কুমিল্লা কারাগারে বন্দী থাকে। এসময় ধূর্ত পিয়াস করিম তার বাবাকে বাঁচাতে ছাত্রলীগে যোগ দেয়। পরবর্তিতে যোগ দেয় বাম রাজনীতিতে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর একসময় তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিরও সদস্য ছিলেন। মুলত আনু মোহাম্মদের এই তেল-গ্যাস কমিটির ছায়াতলেই প্রথম টকশো করার সুযোগ পান। এরপর থেকেই তিনি বিভিন্ন চ্যানেলের টকশো ‘র পরিচিত মূখ হয়ে ওঠেন, পরে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কথা ভুলেগিয়ে বিম্পি-জামাত তোষন সুরু করেন।

একজন টকশো তারকা হলেও হাইলাইটে আসেন গণজাগরণ মঞ্চের সময়ে। উলঙ্গ ভাবে যুদ্ধাপরাধ বিচার বিরোধী মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। চ্যানেল ৭১ এ যুদ্ধাপরাধী ও স্কাইপ হ্যাকারদের সাফাই গাইতে যেয়ে চরম ধরা খেয়েছিলেন শাহারিয়ার কবিরের হাতে, আর ছিলেন ছিলেন ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত। রাগে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন পিয়াস, বললেন “আগে জানলে এখানে আসতাম না”।
সাহাবাগ গণজাগরণ তুঙ্গে থাকাকালিন জামাতি পক্ষে জনমতের বিরুদ্ধ মন্তব্য করতে থাকায় বিভিন্ন টকশোতে নাস্তানাবুদ হতে থাকেন। কয়েক মাস আগে একাত্তরের উপস্থাপক সামিয়া রহমান অধ্যাপক পিয়াস করিমকে প্রশ্ন করেছিলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক শেয়ার হোল্ডার গরিব নারীরা কখনই লাভের অংশ পান না। তাহলে তারা ওই ব্যাংকের মালিক থাকেন কীভাবে? পিয়াস করিম সচেতনভাবে এই প্রশ্নের এড়িয়ে গেলে সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম কিছু বলেন। এতে তার ওপর চটে বসেন, ক্ষিপ্ত হয়ে ঢাকাইয়া রিকশাওয়ালাদের মতো ঝগড়া করতে থাকেন এই অধ্যাপক। ইউনূস সাহেব তার ৮ লাখ নারী ঋণগ্রহিতাকে গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক বানিয়েছেন এটা নাকি একটা ফিলোসফি? নাইমুল ইসলাম কিছু বললে অধ্যাপক সাহেব ‘মিথ্যা বলছেন’ ‘মিথ্যা বলছেন’ বলে চেঁচাতে থাকেন এবং নাঈমুলকে ‘বাজে সাংবাদিক’ বলে মন্তব্য করেন। নাইমুল তার পাশে থাকলে নিশ্চিত ডঃ পিয়াস গায়ে হাত তুলতেন! এই টকশোজীবী অধ্যাপক RTV, এনটিভি, দিগন্ত চ্যানেলগুলোতে প্রায় প্রতিরাতে সরকার দলের মন্ত্রী-নেতাদের বিভিন্ন উপদেশ দিয়ে থাকেন। তাদের কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করেন। কিন্তু এই অধ্যাপক সেদিন নিজে একটি অনুষ্ঠানে যে আচরণ করেছিলেন তা শুধু দৃষ্টিকটূ নয়, অসোভনও।

গণজাগরণ মঞ্চের সময়ে। উলঙ্গ ভাবে যুদ্ধাপরাধ বিচার বিরোধী মন্তব্য করে আক্রান্ত হতে থাকেন বিভিন্ন দিক থেকে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়। গতবছর জামাত-শিবিরের বিরামহীন নাসকতার সময়কালে তার বহুতল এপার্টমেন্টের সামনের রাস্তায় একটি ককটেল ফুটলে বিম্পি-জামাত পক্ষের পত্রিকাগুলো ও চ্যানেল একে তার বাসায় বোমা হামলা বলে দাবি করতে থাকে।
এরকম অবস্থায় তার পাশে এগিয়ে আসে বিএনপি। তিনিও এগিয়ে যান বিএনপির পাশে। বিএনপি-জামাত নেতাদের সংগে জনসভায় এক মঞ্চেও উঠতে শুরু করেন ড.পিয়াস করিম। বিএনপির দলিয় সংবাদসম্মেললেও তাকে দেখা যেতে থাকে প্রায়ই। টকশো ‘র আলোচনায় সরাসরি কথা বলতে শুরু করেন বিএনপির পক্ষে। এমন আলোচনা, মঞ্চে ওঠা …নিয়ে শুভাকাংখী বুদ্ধিজীবিরা অনেকেই তাকে সতর্ক করেছেন। কিন্তু তাকে অবস্থান পরিবর্তন করতে দেখা যায়নি। হয়ত ক্রমাগত আক্রমণের মূখেও দলবাজী পরিবর্তন করতে পারেন নি। ইদানিং দূ ‘একটি অনুষ্ঠানে সামান্য কারণে অনেক বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলেন ড.পিয়াস করিম। এটা শারীরিক কোনো সমস্যার কারণে হচ্ছিল কিনা, ঠিক জানা যায়নি।
পিয়াস করিম সাহেব এইতো মাত্র একহপ্তা আগে বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লবি করে গেছেন। ওয়াসিংটনে জামাতি লবির সাহায্যে বিএনপির নেতাদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশবিরোধী সেমিনারে আযোজন করে, সেমনারে আমন্ত্রিত মার্কিন ডিপুটি সেক্রেটারি অব স্টেট বক্তৃতার একপর্যায়ে মৌলবাদি মিলিট্যান্ট দমনে বাংলাদেশ সফল ইত্যাদি বলতে থাকলে জবাবে পিয়াস উত্তেজিত হয়ে তীব্র ভাবে এর বিরোধিতা করেন।

মৃত ব্যক্তির নামে খারাপ কিছু বলতে নেই, তবু বলতে হয় -
আমৃত্যু পিয়াস করিম রাজাকার, আলবদর ও স্বাধীনতাবিরোধীদের দালালি করে গেছেন। পিয়াস ছিলো বাংলাদেশের এক বুদ্ধি বেশ্যা। তার মৃত্যুতে দেশ খানিকটা জঞ্জাল মুক্ত হয়েছে। এই বহুরুপি দালালকে আল্লাহ্‌ তার কৃত কর্মের উপযুক্ত শাস্তি দিবেন।
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×