somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্নসাতকারিরা টাকা সরানোর সময়ে মোটেই সতর্ক ছিলনা

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভেবেছিল “আমাদের একাউন্টের টাকা আমরা নেব এতে কার বাপের কী”!
মামুলি ৩-৪ কোটি টাকার মামলায় এত ঘাবরানর কি আছে? যেখানে শত কোটির মামলা, গ্রেনেড মেরে খুনের মামলা ঝুলছে!
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুটি মামলায় খুবই চিন্তিত হয়ে হয়ে পরেছে বিএনপির হাইকমান্ড। তত্তাবধায়ক আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই এতিমের তহবিল “আত্মসাতের” অভিযোগ এনে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)

এত মামলা থাকতে এই ফালতু মামলায় এত গুরুত্ব দেয়ার কি আছে?
আসলে “পচা সামুকেই ঠ্যাং কাটে”
এটি একমাত্র মামলা যা কনভিক্ট করতে উকিল সাহেবদের খুব একটা কষ্ট করা লাগে না। কারন প্রমান হাতের কাছেই। ট্রাস্টের তহবিলের সমুদয় অর্থ ব্যক্তি নামে কাটা চেকের মাধ্যমে ট্রান্সফার করে আত্মসাৎ করার চেক বই, স্বাক্ষর করা চেক সহ সকল প্রমান পাওয়া গেছে। ব্যাঙ্কগুলোতেও সকল ডকুমেন্ট অক্ষত আছে। অল্প টাকা বিধায় বিপুল ক্ষমতার বলয়ে থাকা আত্মসাতকারিরা টাকা সরানোর সময়ে তেমন সতর্ক ছিলনা বলেই মনে হয়। ভেবেছিল “আমাদের একাউন্টের টাকা আমরা নেব এতে কার বাপের কী”! তাই খুবই হতাশ আসামি পক্ষ।

এই মামুলি মামলাটিতে তাদের বাঘা বাঘা ব্যারিষ্টাররা হিমশিম খেয়ে এখন সাফ বলে দিয়েছে, – “এই মামলায় ন্যায়বিচার পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই”।
তারা মামলাটি বিলম্বিত করতে একাধিক বার উচ্চ আদালতে গিয়ে রিট করেছে, বেঞ্চ বদল, বিচারক বদল করেও এই অর্থমামলাটি থামাতে বা বিলম্বিত করতে পারেনি। রাষ্ট্রপক্ষও তাদের সব আবদার মিটিয়ে বার বার বেঞ্চ বদল বিচারক বদল করেছে, অকারন সময় প্রার্থনার দাবি মেনে নিয়েছে বার বার।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯১-৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ নামে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। যার চলতি হিসাব নম্বর ৫৪১৬। এই এ্যাকাউন্টে ১৯৯১ সালের ৯ জুন এক সৌদি দাতার পাঠানো ইউনাইটেড সৌদি কর্মাশিয়াল ব্যাংকের ডিডি নম্বর ১৫৩৩৬৭৯৭০ মূলে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ইউএস ডলার যার মূল্য ততকালীন বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে বাংলাদেশি টাকায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা অনুদান হিসেবে জমা হয়। ১৯৯১ সালের ৯ই জুন থেকে ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া সোনালী ব্যাংকের উক্ত একাউন্টে জমাকৃত এই অর্থ কোনো এতিমখানায় প্রদান করেননি। এই সময়ের মধ্যে তারেক রহমান ‘সমাজ সেবার ব্রত’ নিয়ে আরাফাত রহমান ও মমিনুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে Trust Act, 1882 এর ধারা ৬ এর বিধান অনুযায়ী জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট গঠন করেন। যদিও এই ট্রাস্ট গঠনের প্রক্রিয়ায় আরাফাত রহমানের কোন সাক্ষর না থাকায় তাকে এ মামলায় আসামী করা হয়নি। ১৯৯৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গুলশান সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ট্রাস্টের নাম নিবন্ধন করা হয়। যার ঠিকানা হিসেবে সেনানিবাসের ৩ শহিদ মঈনুল রোডের বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। এ সময় তারেক রহমানকে দি অথর বা দি সেটেলর অব দি ট্রাস্ট (ট্রাস্ট সৃষ্টিকারী) নিয়োগ করা হয় এবং মমিনুর রহমান এই ট্রাস্টের ট্রাস্টি হন।

অভিযোগ অনুযায়ী, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ৫০ লক্ষ টাকা (ব্যক্তিনামে) কাজী সলিমুল হকের নামে ২০০৬ সালের ১২ এপ্রিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের একাউন্ট থেকে ট্রান্সফার করা হয়। অভিযোগে আরো বলা হয়, এই শাখায় কাজী সলিমুল হকের নামে পরবর্তীতে ২ কোটি টাকার আরো দু’টি এফডিআর খোলা হয়। যা তিনি নিজ নামেই ট্রান্সফার করেন। এছাড়া ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের ছেলে সৈয়দ আহমেদের নামে একটি ১ কোটি টাকা এবং দুজনের যৌথ নামে আরেকটি ১ কোটি টাকার এফডিআর খোলেন কাজী সলিমুল হক। এদের মধ্যে সৈয়দ আহমেদ এখন মৃত। এই দুই এফডিআর থেকে গিয়াস উদ্দিন আহমেদের এফডিআরে ট্রান্সফার হয়। এর কিছুদিন পরই গিয়াস উদ্দিন আহমেদ তার এফডিআরের এক কোটি টাকা ভেঙে ৫০ লাখ টাকার ২টি এফডিআর করেন। এরপর আবার সেই এফডিআর ভেঙ্গে শরফুদ্দিনের একাউন্টে ৬টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার করেন। পরে শরফুদ্দিন আহমেদ ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা তুলেন।
কোন ক্যাশমেমো, ভাউচার, চুক্তিনামা, ইনভয়েস ছাড়া ব্যক্তিনামে এই ২,১০,৭১,৬৪৩ টাকা হস্তান্তরের নামে আত্নসাতই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার ভ্যালু।

ট্রাস্ট আইনের বিধি মোতাবেক এটিকে অনেকটাই আর্থিক স্বাধীনতা দেয়া হয়, ট্রাস্টিকে কারো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে কাজ করতে হয় না। তবে যখন কোন ট্রাস্ট কোনো বিশেষ মানুষের বা বিশেষ শ্রেণীর (এতিম-দুস্থ, সংখালঘু, ধর্মিয়, বা প্রতিবন্ধি ইত্যাদি) কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয় তখন যদি ট্রাস্ট কর্তৃক ট্রাস্টের শর্তাবলী কিংবা ট্রাস্ট আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আর্থিক বা অন্যান্য অনিয়ম করা হয়, তাহলে বেনেফিশারি অর্থাৎ ঐ বিশেষ শ্রেণী (এতিম-দুস্থ পক্ষ) এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র দেশের সকল এতিম-দুস্থদের অভিবাবক। সঙ্গত কারনেই রাষ্ট্রপক্ষের আইনানুগ সংস্থা দুদক রাষ্ট্রের পক্ষে ২,১০,৭১,৬৪৩ টাকা “আত্মসাৎ” এর অভিযোগ এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×