বিএনপি-জামাত জ়োট সরকারের সাবেক জালানি উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক।
আসলে সাংবাদিক তো দূরের কথা, কোন কালে কোন সংবাদপত্রে এক কলম লিখেছিলেন কি না সন্দেহ।
ছিলেন প্রকৌশলী, দুর্নিতীবাজ সরকারি আমলা। পরে এরশাদের নিষ্ঠাবান চামচা।
জামাই সুত্রে ঢুকেছিলেন মুন্নু পরিবারে, পরে বেক্সিমকো, ১৯৯৯ সালে আরটিসান সিরামিকস নামে নিজের একটি কোম্পানিও খোলেন।
পরে বেক্সিমকোর শাইনপুকুর সিরামিক্স এর এমডি (মালিক) বনে গেলেন জামাইবাবু।
এর কিছুদিন পর সংগবদ্ধ দুর্নিতীগ্রস্থ মাল্টিন্যাসনাল তেল কম্পানিগুলো বেক্সিমকোর ছায়ায় জালানি উপদেষ্টা করে ঢুকিয়ে দেয়া হল। জালানিমন্ত্রী বিহীন জালানি মন্ত্রনালয়ে, সরকারি চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী একই সাথে কম্পানিএমডি+জালানি উপদেষ্টা দুই পদে থাকা অসম্ভব ও বেআইনি। মাহামুদুরের কাছে এসব কোন ব্যাপারই না! এরপর আর উত্থান আর ঠ্যাকায় কে। মাহামুদুর তখন রাজা। নাইকো কেলেঙ্কারির (হাওয়া ভবন গ্রুপের সহায়তায়)নেপথ্যের রুপকার, নিজেরা শতকোটি টাকা আত্নসাত করেও, মাত্র এককোটি টাকার একটি লেক্সাস গাড়ীর কারনে ফাসিয়ে বলির পাঠা বানিয়ে ফাসানো হয় তৎকালিন জালানী প্রতিমন্ত্রী মোশাররফকে। পদত্যাগও করানো হয় এই সামান্য কারনে।
এরপর রক্তাক্ত ২৮সে অক্টোবর। পরিকল্পনার অংশ হিসাবে প্রথম অবস্থায় ইয়াজুদ্দিন-আজিজ তত্তাবধায়ক সরকারের থেকে দূরে থাকে। নেপত্থে চলে কলকাঠি নাড়ানো। রাষ্ট্রপতির প্রেসসাচিব মোখলেস হয় হাওয়াভবনের রিমোট কন্ট্রলার। তার সমন্নয়ে চলে ষড়যন্ত্র, তৈরি হচ্ছিল পরিকল্পিত নির্বাচন কারচুপির ছক।
দেড় কোটি ভুয়া ভোটার রেডি, এরপরও সন্তুষ্ট বা আস্বস্ত হতে পারছেনা, বার বার দফায় দফায় উপদেষ্টা বদল চলছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকি পক্ষে যুদ্ধকারি পাকিস্তানি অবঃ জল্লাদ সেনা কর্মকর্তাকেও উপদেষ্টা করা হয়েছিল। দলসমর্থক রাষ্ট্রযন্ত্রের একদল আমলা রেডি করা হল যারা সাজানো নির্বাচনের ছক বাস্তবায়ন করবে। ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং ও চলছিল সমানে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে, গোপনেই।
তার এক পর্যায়ে তাদের আনা হয়েছিল উত্তরার একটি বাড়ীতে। বাড়িটিতে কেউ না থাকলেও বাড়ীর মালিক মাহামুদুর রহমান। রাতবিরেতে এতোগুলো সরকারি আমলাকে কেন উত্তরার একটি বাসায় এনেছিলেন, তার কোন ব্যাখ্যা কখনোই করেন নি। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে মটরসাইকেলে চার-পাচজন সাংবাদিক সেই বাড়ীর গেইটের কাছে এসে দারোয়ানকে কিছু জিজ্ঞাসা সুরু করলে ভেতরে ওনারা ভিষণ আতঙ্কিত হয়ে যায়। অনেকেই খাবার ফেলে পেছনের দেয়াল টপকে দৌড় দিতে দেখা যায়! উপস্থিত পত্রিকা সাংবাদিকরা তখনো কিছু বুঝে উঠতে পারেন নি। টিভি চ্যনেলের কেউ আসেনি, ইটিভি ছাড়া চ্যানেল আই ও এটিএন তখনো এসব কভার, বা এর নিউজ ভ্যালু বোঝার মত পেশাদারিত্ব অর্যন করতে পারেনি। আমলা-সচিবদের গাড়ীগুলো বেশ দূরেই অন্ধকারে লুকিয়ে পার্কিং করা ছিল, উচ্চপদস্থ আমলা, যাদের দেখলে মানুষ ভয় পায় তারাই মুখ লুকিয়ে অন্ধকারে দৌড়াচ্ছেন পার্কিং করা গাড়ীর দিকে! এসব ছবি পরদিন ফলাও করে পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল
জরুরি অবস্থার সময়ও ফক্রুদ্দিন তত্তাবধায়ক সরকার এর সাথে তার ব্যাপক উঠাবসা।
বিম্পির জাদরেল নেতারা যখন জেলে বা পালিয়ে, তখন এই মাহামুদুর একটি পুরাতন মামলায় হাজিরা দিতে গেলেন, দ্রুত জামিন পেয়ে গেলেন। এরপরও হাতপা ছুড়ে অজ্ঞাত কাউকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে আদালত থেকে বের হতে দেখেছিলাম। জরুরি অবস্থায় বাঘা বাঘা নেতারা তখন জেলে, দুর্নিতির আখড়া জালানিমন্ত্রনালয়ের জাদরেল উপদেষ্টা ও হাওয়া ভবন গ্রুপের দাপুটে সদস্য, নেতা। সে সময় নিরাপদে হাওয়া খাচ্ছেন। ফকরুল-মইনুলদের জরুরি অবস্থায় সেদিন আদালতে ওনার দাম্ভিকতা দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিল।
এর পর আরো কাহিনী।
তত্তাবধায়ক সরকারের সাথে ঘনিষ্টতাকে অবলম্বন করে ফালু কে জেলের ভেতর চাপে রাখে। মাহামুদুর তখন অজানা কারনে ফক্রুদ্দিন সরকারে সাথে ঘনিষ্টতা। সামাজিক অনুষ্ঠানেও দেখা যাচ্ছে, যেখানে বিম্পি-আম্লিগ গা ঢাকা দিয়ে আছে।
এর কিছুদিন পর জামিনের লোভ দিয়ে আমারদেশ পত্রিকার পরিচালক (ফালুর ভাই) সাথে দরকষাকষি করে জামিনের লোভ দেখিয়ে পরে সম্পুর্ন গুন্ডামি করে আমারদেশ পত্রিকা নামমাত্র মুল্যে কিনে নেয়। স্বনামধন্য সম্পাদক আমানুল্লাকবিরকে বিনা কারনে বরখাস্ত করে পোক্ত করে তার অবস্থান।
এরপর একদিন মাহামুদুর নিজেই সম্পাদক বনে গেলেন। এরকিছু আগে এন্টিভি-আমারদেশ ভবনে অবস্থিত ফালুর অফিস ও তারেকের প্রাক্তন অফিসের সকল ২নম্বরি আলামত কাগজ পত্র পোড়ানো হয়, এতে পুরো ভবনটিতে আগুন ছড়িয়ে পরেছিল।
পরে জেল থেকে বের হয়ে আসেন ফালু। চালু পত্রিকাটি হারিয়ে ম্যাডামের কাছে এসব নিয়ে বিচার দিয়েছিলেন, বিচারে কিছু একটা সমঝোতা হয়েছিল, কিন্তু আমার দেশ পত্রিকা আর ফিরে পাননি ফালু।
এর আগে ২০০৯ এর একটি সামান্য মামলায় উনি গায়ে পড়ে সেচ্ছায় জেল খেটেছিলেন।
একটি আদালত অবমাননা মামলায় হাজিরা দিয়ে তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল অথবা সামান্ন জরিমানা দিয়ে মুক্ত হতে বলা হয়েছিল।
( এসব মামুলি আদালত অবমাননা মামলায় মতিউররহমান, সাকার উকিল, মানব্জমিনের মতিউররহমান, শেখ হাসিনা সহ অনেকেই মুক্ত হয়েছিলেন)
তিনি তার কোনটাই না করে জেল খাটতে মনস্ত করেন। উনি ভালকরেই জানতেন এদেশে জেলখাটার রেকর্ড একটা রাজনৈতিক এসেট। যাতে বলতে পারে, এই জুলুমবাজ সরকার মহান এক সাংবাদিকে জোরপুর্বক জেলে রাখছে।
তখন আবার এই জেলখাটা নিয়েই নতুন বইও লিখেছেন।
সেই সময় এখন বালিশের পাশে রাখতেন কোরান। হাসপাতালে শুয়ে ফটোসেসনে ভং ধরছেন, চোখে চশমা পরে নাকে মেশিন-অক্সিজেন, লাগিয়ে আইসিইউ এর বেডে শুয়ে কোরান পাঠ করেন, বালিশের পাশে কোরান রেখে ফটোসেশনও চলছিল!
২০১৩র ৫ই ফেব্রুয়ারী কাদের মোল্লার ত্রুটিপুর্ন রায়ে ফুঁসে উঠে দেশবাসী, শাহাবাগে ব্যাপক গণজাগরন তৈরি হতে থাকে
অস্তিত্ত বিলুপ্ত ঠ্যাকাতে মরিয়া কুচক্রিরা তাদের সর্বশেষ মোক্ষম অস্ত্র প্রয়োগ করে। রেডি ছিল পুর্বথেকে প্রস্তুত করা নবীকে নিয়ে কুৎসিত ভাষায় থাবা বাবার নামে বানোয়াট ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ। হাতে আরো উপাত্ত নিয়ে রেডি ছিল, একটা ব্যার্থ হলে আরেকটা লাগাবে! হেফাজত ২০০৮ থেকেই টাকার বিনিময়ে তাদের হাতের অস্ত্র হিসেবে রেডি ছিল।
সম্ভবত ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটি বানাতে ও রোপন করতে সাহায্য করেছিল জামাতের লন্ডন শাখা, পাকিস্তানের ISI ও জরিত থাকার নিশ্চিত আলামত পাওয়া যায়। কারন পাকিস্তানি ডিফেন্স ফোরাম সাইটের মাধ্যমে সর্ব প্রথম থাবা বাবার বানোয়াট ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটির সংবাদ সবাই জানতে পারে। থাবাকে টার্গেট করা হয়েছিল কারন থাবা ফেসবুকে নিজস্ব ফোরামে প্রায়ই ইসলামের অন্ধকার দিক নিয়ে ও নবী নিয়ে হালকা নির্দোষ সমালোচনা করতো, (২০০৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত এরুপ অনেকেই করত) তাই মোক্ষম বলির পাঁঠা নির্বাচন করা হয় তাকেই। তবে আলচিত নোংড়া ভাষায় ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটি সে নিশ্চিতভাবেই লিখেনি।
থাবাবাবা / রাজিবকে হত্যা করার পর হত্যাকারি চক্র তার নামে ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগ খুলে, তারিখ দেয় ২০১২, দেয়া হয় নবি ও আল্লাহ কে নিয়ে অকথ্য কথা বার্তা। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার থাবা হত্যার পরদিনও ব্লগটি তে মাত্র ৫ বার পঠিত ছিল। আলেক্সা র্যাঙ্ক বা গুগল ক্যাসএ এর কোন ছায়া ছিলনা।
এতে নিশ্চিত প্রমান হয়েছিল এটি হত্যাকারি চক্রের সম্প্রতি 'আরোপিত' ব্লগ। হত্যাকারি চক্রের একটি অংশ খুনিদের গ্রুপ, হত্যার আগে তাদের সদ্য তৈরি ব্লগটি পড়তে দেয়া হয়েছিল খুনে উজ্জিবিত করার জন্য। খুনিদের গ্রুপ ধরা পড়ার পর এদের অনেকেই আদালতে একথা বলেছিল।
১ বছর আগের তারিখ দেয়া থাকলেও থাবার ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটির হিটসংখা ছিল মাত্র ৫টি। রাজিব হত্যার দুদিন পরও আলেক্সা র্যাঙ্কিংএ এই ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটির কোন হিষ্ট্রি পাওয়া যায় নি। এটাই প্রমান ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটি স্থাপন/রোপন করা হয়েছিল রাজিব হত্যার পরপরই।
রাজিব হত্যার পর দ্রুতই বানোয়াট ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগটির কন্টেন্ট একটি লক্ষাধিক সার্কুলেশনের জনপ্রীয় দৈনিক পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপানোর ব্যাবস্থা করে এই কুলাঙ্গার মাহামুদুর।
অতচ মুল সাইটের ভিজিটর সংখা ছিল তখনো মাত্র ৫ জন, অর্থাৎ এই ৫টি হিট সাইট রোপনকারিদেরই। শিরনামে ১ বছর আগের ডেট সত্য হলে হিটসংখা অনেকবেশী থাকার কথা, আলেক্সা লিষ্টে হিট হিস্ট্রি পাওয়া যেতই।
এরপরের ঘটনা সবারই জানা, শাহাবাগ গণজাগরনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্মাবমনার বিরুদ্ধে সংগবদ্ধ প্রচারনা চালানো হয়। অতচ সবাই জানে শাহাবাগ আন্দলনে কোথাও ধর্মনিয়ে একবিন্দু টুশব্দও করা হয়নি। এরপরও পরিকল্পিত ভাবে মসজিদে, রাস্তায় গনজাগরনের নামে মিথ্যা নাস্তিকতার কুৎসা রটয়ে পরিকল্পিত বিক্ষোব ছড়িয়ে দেয়া হয়। শুক্রবার বাইতুলমোকারমে নারকিয় সংঘাত ছড়িয়ে দেয়া হয়, মসজিদের মাদুর, হোগলা, আসবাবপত্রে আগুন দেয়া হয়। চাপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও রাজশাহিতে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পরে, পুলিশ বিজিবি সহ ৩ শতাধক নিহত হয়। সম্পুর্ন মাহামুদুরের দুরভিসন্ধিতে পত্রিকার প্রথম পাতাজুড়ে বানোয়াট ব্লগটির কন্টেন্ট ছাপিয়ে পরিকল্পিত সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে অকারনে ৩০০ লাশ হয়েছিল। অতচ মুল বানোয়াট ব্লগটি হিট ছিল মাত্র ৫টি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৫