somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেভাবে অর্থ পাচার

০৪ ঠা মে, ২০১৭ সকাল ১০:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কিভাবে অর্থ পাচার হয়?
১০ বছরে মাত্র ৭৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বাংলাদেশ থেকে।
আৎকে ওঠার মতই খবর।

অর্থমন্ত্রী মাল সাহেব হয়তো বলবেন, এইটা তো কোনো টাকাই না। সামান্য কয়টা টাকা!
শুশিলরা বলবে কালটাকা পাচার হচ্ছে।
বিরোধীরা বলবে সরকারি দল লুট করা টাকা পাচার করছে।

আসলে ঘটনা কি?

আপনি বিদেশ থেকে যত ইচ্ছা ডলার আনতে পারেন, পকেটে করে আনেন, ব্যাঙ্কিং চ্যানেলে আনেন, ওয়েষ্টার্ন ইউনিয়নে .. ইত্যাদি।
এয়ারপোর্ট বা ব্যাঙ্কে ডলারের সুত্র বৈধ না অবৈধ, কেউ কোন প্রশ্ন করবে না।

কিন্তু বৈধ ভাবে আপনি ৫ ডলার দামের একটি বই, বা ১ ডলার দামের কোন পন্যের দামও পাঠাতে পারবেন না।
ওয়েষ্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে ১ ডলারও স্বজনদের বা বন্ধুদের গিফট পাঠাতে পারবেন না।
সুধুমাত্র বৈধ ভিসা ও কনফার্ম টিকেট থাকলে হাতখরচ হিসেবে অল্প কিছু ডলার/ইউরো, তাও পাসপোর্টে এন্ডোর্স করে নিতে হবে।

অন্য সব দেশে এত কঠিন নিয়ম নেই, সুধু বাংলাদেশেই এই নিয়ম।

দ্রুত বাড়ন্ত অর্থনীতির দেশেটির বাইরে দেড় কোটি প্রবাসী, লেনদেন কি হবে না?
হচ্ছে তো চোখের সামনেই।
আমার নিকটাত্নিয়, স্থায়ী আমেরিকা প্রবাসী। বাড়ী বিক্রি করলেন ৮ কোটি টাকায়। শর্ত ছিল টাকা পেমেন্ট হবে আমেরিকায়ই।
নিশ্চিতই পাচার। কিন্তু কিছু বললে বলবে - "টাকা কি তর বাপের"?

ব্যাবসায়ীরা কি সব এলসি বাদে অন্যভাবে পে করবে না?
ব্রীফকেস ব্যাবসায়ীদের কথা বাদ দিলাম।
বার্মার সাথে মাছ, পিয়াজ-রসুন আমদানি বেশিরভাগই নন ব্যাঙ্কিং চ্যানেল। বৈধ ব্যাবসা। কিন্তু এটা পাচার হিসেবেই গন্য হবে।

বড় গার্মেন্টস কাঁচামাল ইমপোর্টের ক্ষেত্রে ওভার ইনভয়েসিং
আপনি বিদেশ থেকে ১০০ কোটি টাকার জিনিস কিনবেন বলে ইনভয়েস করলেন। আসলে আপনি কিনলেন ২০ কোটি টাকার জিনিস।
কারন তার জরুরি ৮০ কোটি টাকা বাইরে দরকার, চাইনিজ মোবাইলের লট আনবেন।
তাহলে গেল কত? মাত্র ৮০ কোটি টাকা পাচার হলো।

বৈধ ব্যাবস্থা না থাকলে মানুষ বিকল্প খুজবেই।
আরো ব্যাবস্থা আছে।
গার্মেন্টস বা অন্যান্ন এক্সপোর্টের ক্ষেত্রে মেলা সুযোগ আন্ডার ইনভয়েসিং:
আপনার ৫০ লাখ টাকার জিনিস রপ্তানি করার কথা। কিন্তু আপনি নয়ছয় করে ২০ লাখ টাকার ইনভয়েস দেখালেন। আর মাল পাঠালেন ৫০ লাখ টাকার। দেশ থেকে মাল গেল ৫০ লাখ টাকার। দেশে ঢুকলো ২০ লাখ টাকা। বিদেশে থেকে গেল কত? মাত্র ৩০ লাখ টাকা।

হাতের কাছে সেসব সুযোগ না থাকলে আছে হুন্ডি।
আপনি বিদেশ থেকে মাল কিনলেন কিন্তু বিদেশে পেমেন্ট করলেন বিদেশ থেকে। দেশে কিন্তু রেমিট্যান্স ঢুকলো না। কত ঢুকলো না তা ডিপেন্ড করে আপনি কত কোটি টাকার মাল কিনলেন। টাকা আপনার, দরকার আপনার। তবু হিসেবে এটা পাচার।

আবার দেশে হুন্ডির মাধ্যমে পরিশোধ করে বিদেশে মাল পাঠিয়ে দিলেন। হুন্ডির মাধ্যমে পরিশোধিত টাকার অংক রাষ্ট্র জানে না। এটা অবস্য বৈধ ভাবেই আনা যেত, তবে ডলারের রেট একটু কম পাওয়া যেত।
তাই কাজটা এমনভাবে করলেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আপনার কিছুই টের পেল না। কামের কাম কী হলো? দেশে রেমিট্যান্স ঢুকলো না। কিন্তু দেশের টাকায় (হুন্ডি) পরিশোধ হলো। ব্যাপারটা কী বোঝা গেল!

কালোটাকা বৈদেশিক লেনদেনের নামে পাচার।

দেশে এমন সুদিন আসেনি যে কাল টাকা থাকবে না।
তত্তাবধায়ক সরকারের আমলে অর্থমন্ত্রী সাইফুর, খালেদা জিয়া, হাসিনার দলের অনেকেই কাল টাকা সাদা করেছেন।
অর্থাৎ রাজনিতিকদের, আমলাদের কালটাকা থাকে। এটাই সত্য।

কালোটাকা বৈদেশিক লেনদেনের মাধ্যমে খুব সহজেই পাচার করার বহুত পদ্ধতি আছে।
এছাড়াও আছে।

আপনি কত টাকা পাচার করবেন? হুন্ডির দালালদের কাছে সেই টাকা দিয়ে দেন। যে দেশে টাকা পাচার করতে চান, সেখানে আপনার প্রতিনিধি দালাল থেকে পাওয়া কোড নম্বরটি ঠিকমত বললেই ওই পরিমাণ টাকা বিদেশে আপনার প্রতিনিধির হাতে ঠিকই চলে যাবে।
পাচার, অবস্যই।

আর ড্রাগ স্মাগলার, ভদ্র স্মাগলার, সীমান্তের গরু ব্যাবসা বৈধ অবৈধ সবই পাচার হিসেবে গন্য।

বৈধ লেনদেন ব্যাবস্থা না থাকলে মানুষ বিকল্প উপায় খুজবেই।
বেশী আৎকে ওঠার কিছু নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×