বুধবার। জানুয়ারী ১০, ২০০৭
এর মধ্যে গোছগাছ করে আমরা রেডি হয়ে গেলাম।
আর্মি চিফ আসলেন, বাহিনী প্রধানরা আসলেন। রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনের কাছে সময় নেওয়া হলো। উনি সময় দিলেন, লাঞ্চের পরে।
তারপর ওনারা ওনাদের বক্তব্য দিলেন। সেনাপ্রধান তার বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
এমনসময় প্রেস সেক্রেটারি মুখলেছ সাহেব এসে কিছু বলছিলেন। এরপর উত্তপ্ত বাক্যে .. ঠাস করে একটা চড় মারার শব্দ হল , এরপর একটা নিস্তব্ধতা। আবার মিটিং শুরু। সবাই শীতল একটা গুরুগম্ভীর পরিবেশ
রাষ্ট্রপতি বললেন, কী করা?
উনি বললেন, ইমার্জেন্সি দেওয়া।
আচ্ছা ঠিক আছে আমি একটু আলাপ-আলোচনা করে দেখি।
কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টকে পদত্যাগ করতে হবে।
আমাকে পদত্যাগ করতে হবে নাকি?
না, আপনাকে প্রেসিডেন্টশিপ থেকে পদত্যাগ করতে হবে না। বাট অ্যাজ কেয়ারটেকার চিফ ইউ হ্যাভ টু রিজাইন।
উপদেষ্টাদেরও পদত্যাগ করানো হলো।
পদত্যাগ করানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন - হু উইল বি দ্য কেয়ারটেকার চিফ?
নাম আসল ড. ইউনূসের। ইয়াজউদ্দিনও সমর্থন করলেন।
জেনারেল মাসুদ ও ব্রীঃ আমিনকে নিয়ে উনি গেলেন ওনার কাছে। মিরপুর গ্রামিন ব্যাংক বিল্ডিঙ্গে।
ইউনুসের কথাশুনে মনে হচ্ছিল আগেই পরিকল্পনা .. হোমওয়ার্ক করে রেখেছেন।
আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়ার পর ওনার প্রথম কথা হলো টাইম ফ্রেম কত দিনের জন্য?
তা তো আমরা বলতে পারি না, তবে সংবিধানে আছে ৩ মাস
২ মাস ৪ মাস একবছর কেউই বলতে পারে না মইনুদ্দিনও জানে না, কত দিন। শুরুই তো হয় নি, কে কি জানবে?
উনি (ইউনুস) বললেন, ৩-৪ বছরের কমে এই অবস্থার পরিবর্তন আনা কিছু করা আমার দ্বারা সম্ভব হবে না।
সরি, টাইম ফ্রেমের ব্যাপারে আমরা কোন গ্যারান্টি দিতে পারছিনা।
ইউনুস বললেন ধন্যবাদ। (হয়তো বিম্পি-জামাত হাইকমান্ড বা হিলারি তাৎক্ষনিক কোন আপডেট দিতে অনেক দেরি করে ফেলেছিল।)
পরে ফিরতি পথে গাড়িতে , সেকেন্ড চয়েস কে?
ড: ফখরুদ্দীন আহমেদ। ব্রীঃ আমিনের ঠান্ডা উত্তর
ড. ইউনুস যদি জানতো এই কেয়ারটেকার ২ বছর যাবে , তাহলে কি এই প্রস্তাব কি ছাড়তেন?
লেখক-গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ তাঁর ১/১১ শীর্ষক লেখায় এসব কথা বলেছেন।
যার লেখার সূত্র ধরে মুহাম্মদ ইউনুস ওয়ান ইলেভেনের ঘটনাবলী সম্পর্কে তাঁর ভূমিকার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সেই গবেষক-লেখক মহিউদ্দীন আহমেদ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, এতদিন পর কেন মুহাম্মদ ইউনুস এই ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মুহাম্মদ ইউনুস যে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান হতে আকাঙ্খা প্রকাশ করেছিলেন, সেই কথা বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনায় আছে। জেনারেল মইন ইউ আহমেদের লেখা বইতেও এর উল্লেখ আছে।
"এ বিষয়টা কিন্তু পাবলিক ডিসকাশনে ছিল। গুঞ্জন হিসেবেই হোক, যেভাবেই হোক। অধ্যাপক ইউনুস কেন এগারো বছর পর মুখ খুললেন আমি জানি না। তবে এই প্রথম এই বিষয়ে আমরা তার বক্তব্য পেলাম। এখন কে ঠিক বলছেন, কে বলছেন না, সেটা বিচার করা মুশকিল।"
মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, প্রথম আলোতে প্রকাশিত যে লেখাটির সূত্র ধরে এই বিতর্ক শুরু হয়েছে, সেটি তাঁর প্রকাশিতব্য একটি গবেষণামূলক বইয়ের অংশ।
"এক এগারো নিয়ে আমি একটি গবেষণার কাজ করছি।সেখানে আমি এক এগারোর সঙ্গে সম্পর্কিত অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। প্রথম আলোতে প্রকাশিত লেখাটি এই বইয়েরই খসড়ার একটি অংশ।"
মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, এই গবেষণার অংশ হিসেবে তিনি সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ এবং ডিজিএফআই এর সাবেক একজন কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফজলুল বারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অতি সম্প্রতি। মুহাম্মদ ইউনুস সম্পর্কে তিনি যা লিখেছেন, তা মূলত এই দুজনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা।
"এই সাক্ষাৎকারে তারা জানিয়েছেন, কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান করার প্রস্তাব নিয়ে তারা মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে যান, কিন্তু তিনি এত অল্প সময়ের জন্য কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান হতে চাননি। তখন বিকল্প হিসেবে তারা ড: ফখরুদ্দীন আহমেদের কাছে যান।"
তার বইটি শীঘ্রই প্রকাশিত হবে বলে তিনি আশা করছেন।
view this link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ১:৪৯