গল্প - ২
দেশের রাজধানীর কোন একটা ক্লিনিক কাম হাসপাতাল। একজন রোগী এলেন। প্রেগনেন্সী সংক্রান্ত জটিলতার কমপ্লেন নিয়ে। সঙ্গে দামী পোশাকপরা সঙ্গীরা ব্যস্ত হয়ে ডাক্তার এর খোঁজ করছেন। ডাক্তার রোগী দেখলেন। আগের টেস্ট রিপোর্ট ও অন্যান্য ডাক্তারের প্রেসক্রিপসন দেখলেন। উনি রোগীর গার্ডিয়ান এর সাথে কথা বললেন। অপারেশন করা লাগবে তবে রিস্ক অনেক। রোগী মারাও যেতে পারে। এই সব কেসে বেঁচে ওঠার চান্স ৬০-৪০। উনি পুরো অবস্থাটা রোগীর আত্মীয়দের সামনে তুলে ধরলেন। খরচের পরিমানটাও জানাতে ভুল করলেন না। তাদের উপর ডিসিসন ছেড়ে দিলেন তারা কি চান?
রোগীর আত্মীয়রা উত্তেজিত। ডাক্তার, টাকা কোন ব্যাপার না। আপনি অপারেশন করেন। যত টাকাই লাগে আমরা চান্স নিবই।
অপারেশন এ রোগী মারা গেলেন সঙ্গে পেটের বাচ্চাটাও। না, ডাক্তার উনার যাবতীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাই কাজে লাগিয়ে ছিলেন। কিন্তু রোগী সেই ৬০% এর দলে ভিড়ে গেলেন।
এখন নাটকের ক্লাইমমেক্স !!!!
রোগী মারা গেছে এখন বিল দেয়া ফালতু খরচ। হাতে বালা পড়া রোগীর শশুর পক্ষের এক আত্মীয়, তার উঠতি মাস্তান বন্ধুদের আর চেনা সাংবাদিকদের ফোন করে তাড়াতাড়ি চলে আসার জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লিনিকে মাস্তানদের হল্লা আর ক্যামেরা সহ সাংবাদিকদের ভীড়। বলাবলি চলতে লাগলো দেশের আর কোথায় কোথায় কে কবে মারা গেলো।
যারা বলেছিলেন "টাকা কোন ব্যাপারই না, আমরা চান্স নিবো , তাদের আর কোথাও দেখা গেলো না।
ক্লিনিক/হাসপাতাল এই পক্ষের কিছু লোক নিয়ে "মিটিং" এ বসলেন। বিল তো পেলেনই না উল্টো আরো টাকা দিয়ে, প্রশাসনকে খুশী করে এ যাত্রায় "মাফ" পেলেন।
"ভাগ্যবানের বউ মরে" টাইপের চিকন হাসি দিয়ে রোগীর আত্মীয়রা লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন।
কষ্ট পেলেন শুধু মেয়েটার মা,বাবা আর সেই ডাক্তার যিনি সবটুকু দিয়ে এই মায়াভরা মেয়েটাকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করেছিলেন !!!!!!!!
আমার সোনার বাংলা - (চলবে
আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




