somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম বিমান ভ্রমন অভিজ্ঞতা এবং দ্যা ওয়েষ্ট লেক...(ছবি ব্লগ)

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ একটা সুন্দর জায়গার স্মৃতি খুব মনে পরছে। স্থানটি চীনের জিজিয়ান প্রদেশের রাজধানী হাংজু শহরে। অফিসের কাজে চীনে গিয়েছিলাম দিন পনের এর জন্য। আমার জীবনের প্রথম বিমান ভ্রমন। জুনের শেষে দেশে তখন প্রচন্ড গরম তার পরও বিমান বন্দরে যাওয়ার আগ মূহুর্তে গায়ে একটা ব্লেজার চাড়িয়ে নিয়ে ছিলাম। ঢাকা বিমান বন্দর থেকে চায়না ইষ্টার্ন এয়ার লাইন্স এর রাত তিন টায় ফাইট। আমার সফর সঙ্গী আমার সিনিয়র অফিসার জাকির স্যার। যিনি বসের চাইতে বড় ভাই, বন্ধুর মত আমার ভ্রমনটা অনেক মজাদার করে তুলেছিলেন।

জানালার পাশে সিট পরেছিল ছোট জানালা দিয়ে রানওয়ের হলুদ বাতি দেখা যাচ্ছিল। মালামাল পরিবহনের জন্য ট্রাকের মত কিছু গাড়ি এম্বুলেন্সের মত বাতি জ্বালিয়ে ছুটাছুটি করছিল। গভীর রাতে রানওয়ের অপরিচিত ব্যস্ততা কেমন যেন অন্য রকম লাগছিল। অপরিচিত চেহাড়ার লোক জন বিমান ক্রুদের রুটিন ওয়ার্ক কেমন যেন ঘোর লাগা চোখে চেয়ে চেয়ে দেখছিলাম। প্রসঙ্গত বলে রাখি আমি আবার রংপুরের ’মফিজ’। অপরিচিত কিছু দেখলে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকি।

কিছুক্ষণ পর মৃদু গুঞ্জন দিয়ে মাঝারী সাইজের বিমান টি নড়ে উঠলো। ধীরে ধীরে বাসের মত করে আগাতে থাকলো মূল রান ওয়ের দিকে। এরপর ছুটতে শুরু করলো। জানালা দিয়ে ছুটন্ত বাতি গুলো দেখছি আর ভাবছি আমার প্রিয় মানুষ গুলোকে রেখে যাচ্ছি। একটা সময় পেটে সুড়সুড়ির মত অনুভুতি দিয়ে পিছন দিকে হেলে গেলাম, অর্থাৎ বিমান আকাশে উড়াল দিয়েছে, আমি জীবনের প্রথম আকাশে উড়াল দিলাম........উপড় থেকে নীচে রাতের ঢাকা শহর দেখতে পেলাম, রাস্তার সোডিয়াম বাতির সারি আর রাস্তা দিয়ে চলা যানবাহনের হেডলাইটের বিন্দু বিন্দু আলো। একসময় আর কিছু দেখা গেল না। জানালার পাশ অন্ধকার, ইঞ্জিনের চাপা গর্জন এরই মধ্যে খেয়াল করে দেখি আমার সফর সঙ্গী ঘুমিয়ে পরেছেন।

আমিও ঘুমিয়ে পরেছিলাম, আমার হাত ঘড়িতে তখন সকাল ছয়টা বাজে, জানালা দিয়ে পাহাড়ী এলাকা, ট্রেন, নদী আর চীনা ধাচের বাড়ি দেখতে পেলাম। বিমান বেশ নীচ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে অর্থাৎ নামার সময় হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর কুনমিং এয়ার পোর্টে বিমান অবতরন করলো। বিমান থেকে নামা মাত্র ঠান্ডা হাওয়া সাড়া শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দিলো। যাত্রীরা একে একে বিমান থেকে নেমে একটি বাসে উঠলো, যে বাস মূল এয়ার পোর্টের ইমিগ্রেশনের দিকে নিয়ে যাবে। কুনমিং থেকে তিন ঘন্টার বিরতিতে আমাদের পরবর্তী ফাইট হাংজু এর উদ্দেশ্যে।


হাংজু একটি সাজান গোছান পরিকল্পিত শহর। শহরটি টুরিষ্টদের জন্য খুবই আকর্ষনীয়। হাংজুতে আসার ২য় দিন চীনা প্রতিনিধি আমাদের ওয়েস্ট লেক দেখানর পরিকল্পনা জানাল। আমরা দুপুরের খাবার শেষ করে গাড়িতে করে রওনা হলাম হোটেল থেকে ২২ কিমি দুরে ওয়েস্ট লেকের উদ্দেশ্যে।

ওয়েষ্ট লেকের সৌন্দর্যে আমি এতোটাই মুগ্ধ যে লিখে সে অনুভুতি প্রকাশ করতে পারবো না। আপনাদের উদ্দেশ্যে কিছু ছবি দিলাম।



জানালা দিয়ে দেখা যায় নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা।



এই বিমানে করে এসেছিলাম।



বিমান থেকে নামার পর এমন বাসে করে মূল টার্মিনালে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।



নয়নাভিরাম ওয়েস্ট লেকের একটি দৃশ্য।



আমার কাছে গাছ গুলো সুন্দর লেগেছে।





আমি ও জাকির স্যার।



হাসি খুশি উচ্ছল মিস সু্কি সহ আমরা।







লেক দেখার মজা আরও বাড়িয়ে দেয় এই জিগজ্যাগ ব্রীজ।







লেকের ধারে সুন্দর পরিচ্ছন্ন হাটার রাস্তা।





ভাসমান বোট কাম রেস্টুরেন্ট।



বিভিন্ন পানীয় ও স্যুভেনীর দোকান।





সন্ধ্যা নামলে বোট গুলিকে আলোকিত করা হয়। ড্রাগন আকৃতির বোট গুলো দিয়ে যেন রুপকথার মহোনীয় দৃশ্য তৈরী হয়। আমাদের এখানে সংসদ ভবন বা চন্দ্রিমা উদ্যানে কিনবা রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীরের মত সন্ধ্যার পর তরুনরা একত্রিত হয়, গিটার বাজিয়ে গান করে।



সৌখিন ফটোগ্রাফার দের মিলন মেলা।

আরও কয়েকটি দৃশ্য দিয়ে শেষ করছি, ধন্যবাদ





সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৮
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×