কর্মসংস্থান নিয়ে অনেক দিন কিছু লেখা হচ্ছে না। এদিকে অনেক কথা জমে আছে পেটে! চাকুরির বাজারটা ক্রমেই 'ট্রিকি' হয়ে আসছে। চাকুরি প্রত্যাশী এবং চাকুরি দাতা উভয়েই এখন মহাসংকটে! আস্থার সংকট তো আছেই, চিরাচরিত সংকট হিসেবে আছে একে অপরকে না বুঝার সংকট। এটি যেন আকারে-প্রকারে শুধুই বড় থেকে বিকটতর হচ্ছে। এরকম একটি কঠিন সময়ে আমি প্রশাসন থেকে বিযুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে এসে ল্যান্ড করলাম। এ বিষয়টি এর আগে প্রশাসনেরই অংশ ছিল। নতুন বোতলে পুরাতন জুস আর কী! সবই কর্তার ইচ্ছা!
আস্থার সংকটটি বুঝতে পারা যায় যখন বিধি মোতাবেক সমস্ত শর্ত মেনে আবেদন করার পরও ইন্টারভিউ কলটি আসে না। অথবা ইন্টারভিউ পর্যন্ত মোটামুটি ভালো করেও যখন, পরবর্তিতে কোন খবর আসে না, তখনই বুঝা যায় উভয়ের মধ্যে আস্থার অভাব আছে। এসময়ের সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটি হলো, রেফারেন্স ছাড়া চাকরি না হওয়া। অথবা প্রথম ব্যক্তিটিকে ডিঙ্গিয়ে দ্বিতীয় তৃতীয় বা চতুর্থ এমনকি দশম ব্যক্তিটিকে চাকরি দেওয়া।
একে অন্যকে না বুঝার ব্যাপারটি আরও স্বাভাবিক - তবে দুঃসহনীয়। দু'টি পক্ষ অত্যন্ত আনুষ্ঠানিক পরিবেশে প্রার্থী নির্বাচন বা 'চাকরিটি পাইতেই হবে' - এরকম চাপ নিয়ে রোবটিক আলোচনায় লিপ্ত হলে, এখানে 'আন্ডারস্ট্যান্ডিং' না হবারই কথা। প্রথাগতভাবে 'না বুঝার পরিস্থিতিটি' সৃষ্টি করেন নিয়োগকর্তা এবং এর কুফল ভোগ করেন উভয়ই। এরকম পরিস্থিতিতে চাকরি প্রার্থী আত্মবিশ্বাসী হলে, পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে নিয়ে আসতে পারেন।
একটি কেইস স্টোরি শেয়ার করছি। রাইসুল হাসান স্বভাবত উগ্র না। কিন্তু একটি সিনিয়র পদে চাকরির ইন্টারভিউতে সে বুঝতে পারে নিয়োগকর্তাদের কথায় কোন ফাঁক আছে। ইন্টারভিউয়ারদের সামনে বসেই সে রাগে ফুঁসতে থাকে। সে সমস্ত নির্দেশ অনুসরণ করেছে এবং প্রত্যাশিত যোগ্যতার প্রায় সবগুলোই তার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার সাথে মিলে গেছে। টেস্টেও সে ভালো করেছে। তবু ইন্টারভিউয়ারদের একজন তাকে যা বললেন, তা হাসান মেনে নিতে পারছে না। 'মি. হাসান, ফ্রাংকলি স্পিকিং... আপনার এভরিথিং ওকে। কিন্তু কিছু বিষয় আমাদেরকে প্রসিড করতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।' কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে হাসান করণীয় নির্ধারণ করে। হাসান জানে, চাকরিটা তার এমনিতেই হচ্ছে না। তাই রাগের মাথায় রাইসুল হাসান বেশকিছু প্রশ্ন করে বসলেন নিয়োগকর্তাদের নাক বরাবর! প্রশ্নগুলোর অধিকাংশই প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি, কাজের ধরণ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো স্বভাবতই কিছুটা আক্রমণাত্মক এবং স্পর্শকাতরণ হয়ে যায়। আর তাতে 'ডিফেন্স' করতে এগিয়ে আসেন বোর্ডের নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকা ভদ্রলোকটি। হাসান ধারণা করেছে, তিনিই হবেন প্রতিষ্ঠানের সিইও, কারণ উত্তরগুলো খুবই জুতসই এবং দায়িত্বশীল হচ্ছে। আইসব্রেকিং পর্ব শেষ! আস্তে আস্তে ইন্টারভিউর গোমট পরিবেশ হালকা হয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থায় চলে আসে। অন্যান্য ইন্টারভিউয়াররা ক্রমে কক্ষ ছাড়তে থাকেন। সিইও তার দুপুরের খাবার পিছিয়ে দেন। প্রায় দু'ঘণ্টার আলাপচারিতার বিস্তারিত সকল তথ্য এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। প্রাসঙ্গিক হলো, নিয়মভঙ্গ করে হাসান সেদিন রোবটিক আলোচনাকে ‘মানবিক সমঝোতায়’ রূপ দেয়। প্রশ্ন-উত্তর আর প্রতিপক্ষ-মুখী জিজ্ঞাসাবাদকে সমঝোতামুখী সংলাপে পরিণত করে। হাসানকে সাহায্য করেন প্রতিষ্ঠানের সিইও নিজে। রাইসুল হাসানের সরল কিন্তু তীক্ষ্ণ ও প্রত্যক্ষ প্রশ্নগুলোকে কর্তৃপক্ষ সততা ও পেশাদারিত্বের চিহ্ন হিসেবে দেখেছে। সঙ্গতকারণেই এর ফলাফল হাসানের পক্ষে চলে যায়।
রাইসুল হাসানের ঘটনায় অনেক প্রতিষ্ঠিত কিছু প্রথার ব্যতিক্রম হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যে নিয়মটি হাসান লঙ্ঘন করেছে, তা হলো ইন্টারভিউ বোর্ডে বিতর্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা। চাকরির ইন্টারভিউতে একটি প্রতিষ্ঠিত নিয়ম হলো, নিয়োগকর্তাদের সাথে বিতর্ক সৃষ্ট হয় এমন কথা বলা বা এমন প্রশ্ন করা যাবে না। তাতে সব ভেস্তে যাবে। কিন্তু হাসানের ব্যক্তিত্বে এবং কণ্ঠস্বরে এমন কিছু ছিলো, যার কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেও নিজের পক্ষে তা কাজে লাগাতে পেরেছে।
অফিস ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেও নিজের স্বকীয়তা তুলে ধরার বিষয়টি অনেক প্রার্থী মনে রাখতে পারে না। নিজস্বতা তো নেই-ই, নিজের সর্বনিম্নটুকু তুলে ধরতে ব্যর্থ হয় অনেকে। এই সমস্যার গোড়া অনেক গভীরে। যেতে হবে আমাদের স্কুলজীবনে, যেখানে নিজস্ব কিছু করা মানেই শিক্ষকের বেত আর মায়ের বকুনি। ইংরেজি অথবা গণিতকে ছোটকাল থেকেই ‘কঠিন বিষয়’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকের কাছে জিম্মি থেকে আমাদের শিক্ষা জীবন শেষ হয়। তাই ব্যতিক্রম আমরা প্রায় জানি না।
এরকম সমাজ ব্যবস্থায় টিকে থাকা এবং নিজেকে অতিক্রম করা খুবই কঠিন। তবু কয়েকটি নিয়ম লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরছি। পৃথিবীর যাবতীয় বিধান, নীতিমালা আর চুক্তিনামা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে - চাকরি প্রার্থীর পক্ষে কেবল একজনই থাকে। তাই চাকরি প্রার্থীর পক্ষ থেকে কয়েকটি ব্যতিক্রম তুলে ধরা চেষ্টা করলাম। এগুলোই সব নয় - কেবলই দৃষ্টান্ত:
১) প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ছকে আবেদনপত্র ব্যতিত আর কিছুই গ্রহণযোগ্য হবে না -এনিয়মটি মানতেই হবে এমন নয়। ঘোষিত পদ এবং দায়িত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট ট্রেনিং বা অভিজ্ঞতার সনদ থাকলে তা যুক্ত করা যায়। প্রথম দর্শনই সেরা দর্শন।
২) সিভিতে 'আমি' শব্দটি একদমই ব্যবহার করা যাবে না, এটিও খোঁড়া যুক্তি। চাকরির আবেদন মানেই হলো নিজেকে নিয়ে মার্কেটিং করা। যেখানে ব্যক্তিগত যোগ্যতাই প্রধান নিয়ামক, সেখানে অন্তত ৪/৫বার 'আমি' ব্যবহারে মহাভারত অশুদ্ধ হয় না। আমি ব্যবহার করলে আবেদনপত্রটিকে বরং একটু 'মানবিক' দেখাবে। মানবিক হওয়াটা জরুরি। মানুষ যা পছন্দ করে, তার সবই প্রকাশ করতে পারে না! নিয়োগকর্তারা সকলে জানেন না, তারা কিসে সন্তুষ্ট হবেন।
৩) 'আপনার সমস্ত কাজের/চাকুরির বিবরণ দিন।' কী দরকার আছে এত কিছু বলার? সমস্ত কর্মজীবনের ইতিহাস তাদেরকে জানিয়ে কী লাভ! তার পরিবর্তে এই কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা/ কর্মসংস্থানের বিবরণ তুলে ধরা যায়।
৪) 'আগ্রহীদেরকে নিম্নের ঠিকানায় আবেদনপত্র পাঠাতে অনুরোধ করা হলো।' এভাবে নিয়ম পালন করে অনেকেই তার সিভিখানি প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যক্তির হাতে পৌঁছাতে পারে নি। দোষ দিয়েছে ডাকবিভাগের অথবা নিজ কপালের। পরামর্শ হলো, তাদের নির্দেশিত ঠিকানা ছাড়া আরও কোন সরাসরি পথ আছে কিনা, তা খুঁজে বের করতে হবে। অনেকে নিয়োগকর্তার নামটি সংগ্রহ করে একদম তার নাম উল্লেখ করে আবেদনপত্র পাঠায়। ইন্টানেটের যুগে নাম বেরা করা খুব কঠিন নয়। নিয়োগকর্তা যদি সত্যিই উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে বের করতে চান, তবে বিশেষ মাধ্যমে পাঠানোর কারণে আপনার আবেদনপত্রটি বাতিল হবে না। বরং আলাদা গুরুত্ব পেতে পারে।
৫) 'অনাকাঙ্ক্ষিত যোগাযোগ প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে।' হতেই পারে। তবে পরিস্থিতি বুঝে এখানেও কিছু কৌশল খাটানো যায়। কোন রেফারেন্স না দিয়ে নিজের যোগ্যতার বিবরণ দিয়ে এবং কোন পদের উল্লেখ না করে - নিয়োগকর্তাকে একটি ইনফরমাল চিঠি পাঠানো যায়। গৃহীত হলেও চমৎকার, না হলেও প্রার্থীর ফাঁসী হবে না!
৬) 'আপনার বেতনের ইতিহাস তুলে ধরুন।' বললেই হলো? সংশ্লিষ্ট পদে তারা কী পরিমাণ বেতন দিয়েছেন, তা কি তারা কখনও জানাবেন? কখনও না। তবে কেন নিজের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে নেগোশিয়েটিং স্ট্রেংথ কমানো? এসব ক্ষেত্রে মিথ্যা বিবরণ দিলে কিন্তু বুমেরাং হতে পারে। তবে সত্যটি গোপন করা যায়।
৭) 'আমরা প্রশ্ন করবো, আর আপনি শুধু উত্তর দেবেন' এরকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু নিয়োগকর্তাদেরকে এতো সুযোগ দিয়ে নিজেকে 'ভেড়া' বানাবেন না। একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পরবর্তি প্রশ্নটির জন্য বোকা হয়ে বসে থাকবেন, সেটি না করলেও চলবে। উত্তর দিন, তবে সুযোগমতো প্রশ্নও করুন। অনেক সময় প্রশ্নকর্তাদের মধ্যেও বিরতি থাকে। বিনয়কে অস্ত্র হিসেবে ধারণ করে সেসব বিরতিতে নিজেকে প্রবেশ করাতে হবে। সাধারণত, প্রশ্ন যে করে, চালকের আসনে সে-ই থাকে।
ইন্টারভিউ বোর্ডে 'সবই ঠিক আছে' বা 'আমি রাজি' গায়ে পড়ে এমন মনোভাব দেখানোর চেয়ে নিজের সামর্থ্যটুকু দেখানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে মনে করেন, ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্ন বা কোন প্রকার জিজ্ঞাসা করলে তাতে কাজটির প্রতি প্রার্থীর অনীহা প্রকাশ পাবে। অথবা, নিয়োগকারী নাখোশ হতে পারেন। নিয়োগকারীকে খুশি করার চেষ্টা না করে, সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করতে হবে। তারা আনন্দ পেতে বসেন নি, উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পাবার জন্য বসেছেন।
কাজটি পেলেই করবো। নির্বাচিত হলেই ওই বিষয়ে পড়াশুনা শুরু করে দেবো। এরকম শর্তে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে, পছন্দের প্রতিষ্ঠান/কাজটিকে লক্ষ্য করে আগে থেকেই কিছু জেনে রাখাটা বুদ্ধিমানের কাজ। 'আপনার কোন জিজ্ঞাসা আছে?' এরকম সুযোগে তখন কার্যকর কিছু জিজ্ঞেস করা যাবে। তাতে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রার্থীর ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পায়। নিয়োগকর্তাদের মনে আস্থার সৃষ্টি হয়। প্রশ্নে ব্যক্তিত্বের প্রকাশ। উত্তরের মধ্য নয়, প্রশ্নের মধ্য দিয়ে মানুষকে চেনা যায়।
একটি সফলতা পরেরটিকে এগিয়ে নিয়ে আসে। ইন্টারভিউ বোর্ডে বেয়াদবি করার দরকার নেই, সেটি যোগ্যতার অংশ নয়। নিয়োগকারীর প্রশ্ন আক্রমণাত্মক হলেও মনে করতে হবে, এর অন্য কোন অর্থ আছে। রেগে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করলে, সেটি ভালো ফল নিয়ে আসবে না। বরং নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক অনুভূতির সৃষ্টি হবে, যা পরবর্তি প্রচেষ্টায় প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রশ্নের উত্তরে যথাযথ আচরণ করাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর জানতে হবে এমন কোন কথা নেই, সেক্ষেত্রেও নিজেকে ধরে রাখতে হবে। এখানে লজ্জার কিছু নেই। আবার অতি বিনয়কে তারা লাজুক বা অন্তর্মুখী স্বভাব হিসেবে ধরে নিতে পারেন। তাই বিনয়ের অবতার হয়ে জানা বিষয়টিকেও এড়িয়ে গেলে কোন ফল হবে না। একেকটি প্রশ্ন একেটি সুযোগ।
যেকোন প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আত্মবিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু বায়বীয় বিষয়। মনস্তাত্ত্বিকদের কাছে আত্মবিশ্বাস হলো বিশ্বাসের মধ্যে। আপনি ততটুকুই আত্মবিশ্বাসী যতটুকু আপনি মনে করেন। আরেকটি নিয়ম হলো, আত্মবিশ্বাস কেউ দিয়ে দেয় না, নিজে থেকেই অর্জন করতে হয়।
সমাজে প্রকৃত নেতার খুবই অভাব। কিন্তু আত্মবিশ্বাস নেতৃত্বদানের জন্য প্রধান নিয়ামক। চাকরি প্রার্থীকে মনে রাখতে হবে যে, ইন্টারভিউ বোর্ডে আত্মবিশ্বাস তার যোগ্যতারই অংশ। ওটি না দেখাতে পারলে, উত্তর সঠিক হলেও তা পালে বাতাস পাবে না।
চাকুরির বাজার যেন একটি গ্ল্যাডিয়েটরস থিয়েটার! যোগ্যতা দেখিয়ে চাকরি পাওয়া একটি নিষ্ঠুর প্রক্রিয়া, তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমান চাকরির বাজারটি আরও অমানবিক হয়ে যাচ্ছে। প্রার্থীর প্রচেষ্টা থাকবে মানবিক হবার এবং যতটুকু সম্ভব ঘরোয়া পরিবেশ ফিরিয়ে আনার।
এসব ক্ষেত্রে যেসব বিধি-বিধান বা নিয়ম-নীতি আছে, তার প্রায় সবই নিয়োগকারীর অনুকূলে। বুদ্ধিমান প্রার্থীরা দু'টি কাজ করেন: ১) নিজের মতো করে সেগুলো অনুসরণ করেন অথবা/এবং ২) সুযোগমতো এড়িয়ে চলেন। ভুলে গেছি, ব্যস্ততার কারণে সার্কুলারটি ভালোভাবে পড়ার সুযোগ হয়ি নি অথবা আমি তো কেবল আজই জানলাম - সাথে সাথে আবেদন করলাম। এসব বলেও কিছু বিধান এড়িয়ে যেতে সক্ষম হন অনেক প্রার্থী। প্রার্থীকে শুধু মানবিক হবার চেষ্টা করলেই, অনেক নিয়মকে তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন।
শেষ কথা: বিষয়টিতে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। কর্মসংস্থানের মৌলিক সমস্যাগুলো এই পোস্টে পর্যাপ্ত আলোচিত হয় নি। কর্মসংস্থান বা চাকুরি পাবার সাথে জড়িত প্রধান বিষয়গুলো হলো: দক্ষতা, যোগ্যতা এবং ব্যক্তিত্ব। সম্পূর্ণ বেকারত্বের চাপ নিয়ে ভালো চাকুরির জন্য নেগোশিয়েশন করা যায় না। তাই নতুনদের কাছে পরামর্শ হলো, প্রারম্ভিক কোন কাজে যুক্ত হয়ে প্রাথমিক কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা। আত্মবিশ্বাস এবং সংশ্লিষ্ট চাকরিটি সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা থাকলে প্রার্থী যেকোন ব্যতিক্রম করতে পারেন। ব্যতিক্রমের লক্ষ্য হতে হবে: মানবিক এবং নৈকট্য সৃষ্টি করা। নিয়মের ব্যতিক্রম করাই যেন একমাত্র লক্ষ্য না হয়।
৩ সেপটেম্বর ২০১৪।
কর্মসংস্থান নিয়ে প্রাসঙ্গিক ক'টি লেখা:
1. কর্মক্ষেত্রে শুরুর দিনগুলো কেমন হওয়া চাই
2. স্বশিক্ষিত ক্ষণজীবীরা...
3. চাকুরি করবেন নাকি দেবেন?
4. কর্মসংস্থান ব্যবসায় - একটি অনাবিষ্কৃত শোষণ ব্যবস্থা
5. আউটসোর্সিং...
-----------------------------
রেসিপি: চাকরি প্রার্থী এবং চাকরি দাতা হিসেবে অভিজ্ঞতা, চলমান ট্রেন্ড এনালিসিস এবং কিছু অনলাইন তথ্যের এলোপাতাড়ি সংমিশ্রণ। একান্তই নিজস্ব রেসিপি। যে কারও বিস্বাদ লাগতে পারে এবং দ্বিমত করতে পারেন, তাতে কোন আপত্তি নেই - বরং স্বাগত জানাই!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৩