চিরদিনই মাগো তব করুণায়
ঘর ছাড়া প্রেম দিশা খুঁজে পায়
ঐ আকাশে যদি কভু ওঠে ঝড়
সে আঘাত বুক পেতে লবো || -- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার
... .... .... .... ..... .....
নামে আন্তর্জাতিক হলেও আসলে হবে মার্কিন কেন্দ্রিক।আমেরিকা ও তার অনুসারী কমবেশি ৮৯ টা দেশ প্রতিবছর মে'র ২য় রবিবার "মা দিবস" পালন করে। মূলতঃ ঊনিশ শতকের গোড়ার দিকে শুরু হওয়া মা দিবস হল একটি সম্মান প্রদর্শন মূলক অনুষ্ঠান যা মায়ের সন্মানে এবং মাতৃত্ব, মাতৃক ঋণপত্র, এবং সমাজে মায়েদের প্রভাবের জন্য উদযাপন করা হয়।
পরবর্তিতে ছুটির দিনটি ক্রমে এত বেশি বাণিজ্যিক হয়ে পড়ে যে এটির স্রষ্টা আনা জার্ভিস এটিকে একটি "হলমার্ক হলিডে" হিসেবে বিবেচিত করেন। তিনি শেষে নিজেরই প্রবর্তিত ছুটির দিনটির নিজেই বিরোধিতা করা শুরু করেন।
এ বছর স্থানীয় এক টিভি'র জরিপে দেখা যাচ্ছে কী করবে আমেরিকান'রা এই দিনে।
- ৬৪% আমেরিকান বলেছে তারা তাদের মা'য়ের সঙ্গে একসঙ্গে দুপুরের খাওয়া খাবে কোন রেস্তরাঁয়।
-২৬% আমেরিকান বলেছে অতিব্যস্ততা বা দুরত্বের কারনে লাঞ্চ করা সম্ভবনা, তাই ফোনকলই ভরসা।
৮% শুধু গিফটকার্ড পাঠাবে আর বাকী ২ ভাগ নির্লিপ্ত (অর্থাৎ জরিপের কথা শুনে স্রাগ করেছে)।
মা দিবসের অতি আদিখ্যেতা নিয়ে কমতি না হলেও আসছে জুনে বাবা দিবসের সময় থাকবে অনেকটাই গা ছাড়া ভাব।
৩৮ থেকে ৪০ ভাগ আমেরিকান শিশু তারা মা-বাবা'র সঙ্গে বেড়ে ওঠে। বাকী শিশুরা বাবাকে পায়না, পায় কেবল "সিঙ্গল মাদার"।২০১২ সালের ২৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটন টাইমসের এক নিবন্ধে উঠে আসে এই তথ্য।লেখক নিবন্ধের শুরুতে " তিন বোনের ম্যাচ করা গ্লিটার এর জুতা এবং অনন্য রঙের চুলে ফিতা সুন্দর মানিয়ে গেলেও তাদের তিনজনের পিতা তিনজন। এমনকী তাদের জন্মের পর কেউ তাদের স্ব-স্ব পিতাকে দেখেইনি।"
ভাবুন একবার, ২৫/২৬ বছরের এক অল্পবয়সী মা তার ৩-৫-৬ বছরের তিনকণ্যাকে নিয়ে আছে,তার বাচ্চাদের জন্মের আগেই তাদের পিতারা তাদের (Fathers disappear from households across America...Big increase in single mothers ) ফেলে চলে গেছে।
যা বলছিলাম, পশ্চিমা সংস্কৃতিতে বাবার প্রভাব প্রায় অনুপস্থিত।
শুধু মার্কিনীরা কেন? ইউরোপের দিকে তাকালে আরো স্পষ্ট বোঝা যাবে।স্নায়ুযুদ্ধের অব্যহতি পরেই পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর অবস্থা আরো প্রকট। তখনকার সময়ে যাদের জন্ম,অর্থাৎ আজকে যাদের বয়স ২৩/২৫ বছর, বেশিরভাগই জানেনা তাদের পিতা কে ছিলো।
বছর দুয়েক আগে ইন্দোনেশিয়াতে এক আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক সম্মেলনে পোল্যান্ড থেকে আগত এক তরুণ শিক্ষিকা ব্যক্তিগত আলাপের একপর্যায়ে জানালো সে তার বাবাকে দেখেইনি।কারন তার মায়ের বিয়েই হয়নি। আমার প্রতিক্রিয়া দেখে জানালোএই ব্যপারটা ওখানে জলভাত। পরে আরো বেশকয়েকজনের সঙ্গে আলাপে এই কথাটার সমর্থন পেয়েছি।
এবার বুঝুন পশ্চিমাদের মা-বাবা প্রীতি কোন পর্যায়ের।