জাতীয় সংবাদপত্রে, ব্লগে এবং অন্যান্য মাধমে লাগাতার জাহাজভাঙ্গা কাজে শ্রমিকদের মানবেতর জীবন-যাপন, তাদের নির্মম মৃত্যু, তাদের নূন্যতম মজুরি, তাদের প্রটেকশন নিয়ে লেখালেখি এবং একর পর এক বিষাক্ত গ্যাসের বিষক্রিয়ায় শ্রমিকের মৃত্যুর সংবাদ ছাপা হতে দেখে অবশেষে সরকারের পক্ষ থেকে এই শিল্প নিয়ে নীতিমালা তৈরি করা, আমদানি নীতি কঠোর করার ঘোষণা আসে। তিন-চার মাস টানাপোড়েনের পর অবশেষে মাত্র এক মাস আগে সেই পুরোনো জাহাজ বা স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির নীতিমালা তৈরি হয়।
সেই নীতিমালায় যে যে শর্ত দেওয়া ছিল তা পুরণে ব্যর্থ হওয়ায় চট্টগ্রাম বর্হিনঙ্গরে ১০ টি স্ক্র্যাপ জাহাজ আটকে যায়। আমদানিকারকের প্রধান শর্ত ছিল তাকে সার্ভেয়ার নিয়োগ দিয়ে এই মর্মে সার্টিফিকেট দিতে হবে যে, আমদানিকৃত জাহাজে কোন বিষাক্ত বর্জ্য নেই( যদিও এটা খুব যৌক্তিক ব্যবস্থা নয়, কারণ আমদানিকারকের নিয়োগকুত প্রতিষ্ঠান তার পক্ষেই মত দেবে। এটা করানো উচিৎ রপ্তানিকারক দেশের সরকারি পর্যায়ের সার্ভেয়ার দিয়ে)। কিন্তু আমদানিকারকদের সমিতি দেশের আর দশটা সমিতির মত বেঁকে বসেছে! তারা বিভিন্ন পর্য়ায়ে দৌড়ঝাঁপ করে এখন এই নীতি বাতিলের জন্য তদ্বির করে যাচ্ছেন। এবং যথারীতি সরকার তাদের সেই দাবি মেনেও নিচ্ছেন! তাহলে কি দাঁড়াল? সেই নিরাপদে আবার বিষাক্ত বর্জ্য আছে এমন জাহাজ অবাধে দেশে এসে ভিড়বে। সেই বিষের মরণ ছোবলে আবার শ্রমিকের জীবন নাশ হবে। আবার সমগ্র উপকূলজুড়ে মরণ বিষের নীল ছোবল অশিক্ষিত খেটে খাওয়া মানুষকে খুবলে খাবে। তাহলে কেন সরকার "জনকল্যাণে নীতিমালা প্রণয়ন" নামক মূলো ঝুলিয়ে দিয়েছিল? এই প্রশ্নের কোন উত্তর নাই।
Toxic chemicals in our environment threaten our rivers and lakes, our air, land, and oceans, and ultimately ourselves and our future.
The production, trade, use, and release of many synthetic chemicals is now widely recognised as a global threat to human health and the environment.
এই ভীতিকর টক্সিক ওইসব স্ক্র্যাপ জাহাজে করেই এদেশে চলে আসছে। আরো জানতে এখানে দেখুন
ট্যারিফ কমিশন, মূসক, রাজস্ব বিষয়ক নীতিনির্ধারণী কমিটি, রাজস্ব বোর্ড, এই নামগুলি সাধারণ মানুষের কাছে একেবারেই অচেনা,অপরিচিত। এখানে কখন কে কি করেন, কি ভাবে কোথাকার নীতি কোথায় গিয়ে ‘নীতিহীন’ হয়ে যায়, কবে কি ভাবে কোন পণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক কমে যায়-বেড়ে যায়, কোন পণ্য কাদের ইশারায় আমদানি নিষিদ্ধ থেকে ‘অবাধ আমদানি যোগ্য’ হয়ে যায় তার খোঁজ সাধারণ মানুষ পায় না, রাখে না। আর এই না পাওয়া বা না রাখার ভেতরেই রাতারাতি রিতিনীতি বদলে যায়। পরে কোন একদিন ‘দেশের স্বাথে’ সেই খবর সংবাদপত্রে ছাপা হলেই কেবল সাধারণ মানুষের নজরে আসে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, জাতীয় ট্যারিফ কমিশন, বিনিয়োগ বোর্ড প্রমূখ সরকারি দপ্তরগুলো প্রচন্ড ক্ষমতাবান। তাদের জবাবদিহিতাও আছে, তবে তা কার কাছে সে এক কোটি টাকার প্রশ্ন!
ব্যাপারটি হচ্ছে মাত্র কিছুদিন আগেই জাতীয় আমদানিনীতি পাশ হয়েছে। এই আমদানিনীতি অনুযায়ী নির্ধারিত হবে কোন কোন পন্য অবাধে আমদানি করা যাবে বা কোন কোন পণ্য আমদানি যোগ্য নয়, অর্থাৎ আমদানি নিষিদ্ধ। সেই আমদানিনীতি বলে পুরোনো বর্জ্যযুক্ত জাহাজ আমদানিযোগ্য নয়। আমদানি হলেও বিশেষ বিশেষ শর্ত পালন স্বাপেক্ষে। এটি একারণেই করা হয়েছে যাতে করে বাংলাদেশে কোন বর্জ্যযুক্ত জাহাজ আসতে না পারে। বিষাক্ত বর্জ্যযুক্ত জাহাজ আসলে কি কি ক্ষতি তা কম-বেশি সকলেরই জানা আছে। তেমনি সরকারেরও জানা আছে বলেই পুরোনো বর্জ্যযুক্ত জাহাজ আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বা নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। এখন একটি স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থ রক্ষার্থে তাদের প্ররোচনায় সেই আমদানিনীতি পরিবর্তনের কথা উঠেছে। পুরোনো বা স্ক্র্যাপ জাহাজ আনার জন্য আমদানি-নীতি আদেশ শিথিল করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘পুরোনো জাহাজে বিষাক্ত বর্জ্য আছে কি না, তা বাংলাদেশের আমদানিকারকের নিযুক্ত সার্ভেয়ার কোম্পানি প্রত্যয়নপত্র দেবে।’ আমদানি-নীতিতে এই ধারাটি যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
মাত্র এক মাস আগে জারি করা আমদানি-নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশের কোনো আমদানিকারক বিদেশ থেকে পুরোনো জাহাজ আমদানি করতে চাইলে যে দেশ থেকে আমদানি করা হবে, সেই দেশের সরকার বা সরকার অনুমোদিত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। এতে উল্লেখ থাকতে হবে, ‘জাহাজটি বিষাক্ত বর্জ্যমুক্ত’।
আমদানি-নীতি শিথিলের জন্য পরিত্যক্ত জাহাজ ব্যবসায়ীরা অবশ্য দুই সপ্তাহ ধরে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) তদবির করছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে সরকার যে এই বিশেষ মহলের সুপারিশে আমদানিনীতি শিথিল করতে চাইছে তার পেছনে কারণ কি? কেন দেশের স্বর্থের কথা বিবেচনায় না এনে একটি বিশেষ মহলের আবেদন বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে? এইসব পুরোনো জাহাজ কোথা থেকে আসে, তাতে কি কি বর্জ্য থাকে, তা আমাদের দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য কি কি ভয়ংকর ক্ষতি করতে পারে তা নিয়ে আগেও লেখালেখি হয়েছে। পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে পরিবেশ বিজ্ঞানি, পরিবেশ আইনজীবী সমিতি সহ অনেকেই এ নিয়ে তাদের আপত্তি জানিয়েছেন। এই ধরণের জাহাজ সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যাকঃ
ইউরোপিয়ান দেশগুলো যেমন, ডেনমার্ক, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর কেন আমাদের দেশে জাহাজ নির্মাণে আগ্রহ দেখাচ্ছে? ইউরোপিয়ান দেশগুলো তো নিজেরাই বছরের পর বছর জাহাজ নির্মাণ শিল্পে পৃথিবীর সেরা। গত প্রায় এক শতাব্দীধরেই তো তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জাহাজ, ফেরি বোর্ট, টাগ বোট রপ্তানি করে আসছে, এখন কি এমন হলো যে তারা আমদানী করতে চাইছে? তারা তাদের দেশের গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং দায়বদ্ধ। তাই তাদের নিজের দেশের মানুষদের দিয়ে যে অমানবিক এবং বিপজ্জনক কাজ করাতে পারে না তা-ই আমাদের মত লেস ডেভেলপ্ড দেশে করিয়ে নেয়। তাদের পারমানবিক বর্জ্য জাহাজে ভরে সারা ইউরোপের কোথাও ফেলতে পারেনা। গ্রীণপিস কর্মীরা তেড়ে আসে। সেই সব জাহাজ একসময় এসে ভেড়ে এই বাংলাদেশে। মারাত্মক বিষাক্ত পারমানবিক বর্জ্য, বিষাক্ত রাসায়নিক,টক্সিন, প্রাণঘাতি যৌগ ডাম্প এবং রিসাইক্লিং করার মোক্ষম জায়গা এই বাংলাদেশ,
কেননা এখানে সস্তায় মানুষ মেলে! নামমাত্র দামে এই যুগেও দাস পাওয়া যায়! এরা ঝাঁকে ঝাঁকে মরলেও তেমন কোন সামাজিক প্রতিবাদের মুখোমুখি হতে হয়না।বড় অংকের ক্ষতিপুরণ দিতে হয়না। উন্নত দেশগুলোর যে সব বিষাক্ত পরিত্যাক্ত জাহাজ তাদের কোন বন্দরে ভেড়ার সুযোগ পায় না সেই সব হ্যাজার্ড কার্গো চলে আসে বাংলাদেশে। এইসব জাহাজ পুড়িয়ে ফেলাও যাবেনা। তাই তাকে সেটা ভাঙ্গতেই হবে। আর ভাঙ্গার জন্য বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রেভইয়ার্ড।
জাহাজভাঙ্গা শিল্পের নামে হেল অব আর্থ বা বিশ্বের নরক!
Chittagong, Bangladesh, Some 45,000 workers of the ship-breaking industry in Chittagong are now working in hazardous atmosphere risking life in handling of old equipment used to break ships and dealing with toxic chemicals in their daily routine work. In the absence of any protective measures at least 300 workers of the yards had so far died and about 550 were handicapped in accidents in harness in the last 18 years. At present the workers of 30 ship-breaking yards in Chittagong are working at high risk of accident particularly explosion of gas cylinder and oil tanker.
Asbestos in the Ship-breaking industry of Bangladesh: Action for Ban
জাহাজভাঙ্গা এই কাজে দেশের মানুষের কি কি ক্ষতি হচ্ছে, পরিবেশের কি কি ক্ষতি হচ্ছে, সত্যিকার অর্থে জাতীয় অর্থনীতিতে কতটুকু অবদান রাখতে পারছে সেই খতিয়ান কোথাও পাওয়া যাবেনা। এবার দেখি কি কি ডিজাস্টার ইতিমধ্যেই ঘটে গেছে, এবং এখনো ঘটে চলেছেঃ
এই ধরণের বিষাক্ত জাহাজগুলি রেখে যাবে বছরের পর বছর ধরে বিষাক্ত কেমিক্যালসের মরণ ব্যাধি। চেরনোবিল পারমানবিক বিষাক্ততার পাশ্বপ্রতিক্রিয়ায় এখনো সেখানে বিকলাঙ্গ শিশু আর প্রাণীর জন্ম হয়। আর এখানে জন্ম হবে বিশ্বের অভূতপূর্ব সব রোগব্যাধী আর ভাইরাস!!
toxicswatch-alliance against pollution & corporate crimes
ToxicsWatch keeps track of callousness, corporate crimes, military-industrial complex & their impact on humans & ecosystem. It is concerned about public health impacts from companies of all ilk and related public and corporate policies. It is an ally of WaterWatch Alliance.
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় বলেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে কয়েকটি জাহাজ আটকে আছে। এতে শুধু ব্যবসায়ীরাই নন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উদীয়মান জাহাজ নির্মাণ শিল্পও। সুতরাং আমদানি-নীতি আদেশের সংশ্লিষ্ট শর্ত শিথিল করা না হলে জাহাজ ভাঙা শিল্পটি সামনের দিকে এগোতে পারবে না।
একই ধারার ৪০ উপধারায় বলা আছে, ‘পরিত্যক্ত জাহাজ (স্ক্যাপ ভ্যাসেল) আমদানির ক্ষেত্রে তা বিষাক্ত বর্জ্যমুক্ত এই মর্মে রপ্তানিকারক দেশের সরকার বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র শিপিং ডকুমেন্টসের সঙ্গে অবশ্যই দাখিল করতে হবে।’
এদিকে আমদানি-নীতি আদেশের শর্ত শিথিলের জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আবেদনের এক দিন পর এনবিআর একই সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, আমদানি করা জাহাজ বর্জ্যমুক্ত কি না, তা আমদানিকারকেরাই বলবেন। আর তা যাচাই করবে বেসরকারি জরিপ প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর আমদানিকারকেরা সরকারকে এমন অঙ্গীকারনামা দেবেন যে, বিষাক্ত বর্জ্যযুক্ত জাহাজ আনা হলে যেন বিধি অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কি বিভ্রান্তিকর কথা! আমদানিকারক অঙ্গীকার দিলেই যেন সাত খুন মাফ! যে আমদানিকারকরা বিষাক্ত বর্জ্য বিষয়ে সামান্যতম জ্ঞাত নন, যাদের কাছে এই দেশের মানুষের বিষাক্ত টক্সিক প্রভাবে মৃত্যুঝুঁকি কোন ভাববার বিষয় নয়, যাদের কাছে মোটাদাগে ‘কর্ম সংস্থান করে দিচ্ছি’ টাইপ দাতাগিরিই প্রধান, যারা টাকার জন্য গ্রীণপিস বর্ণিত বিষাক্ত জাহাজ এনে শত শত মানুষকে বিষে নীল করতেও দ্বিধা করেন না তাদেরই কাছে চাওয়া হচ্ছে ‘অঙ্গীকারনামা’! এ যেন শিয়ালে কাছে কুমিরের বাচ্চা রেখে শিয়ালকে না খেতে অনুরোধ করা!
জাহাজ ভাঙা সমিতির সভাপতি জাফর আলম বলেন, ‘আমদানি নীতি আদেশের ওই শর্তের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। এরই মধ্যে অনেক জাহাজ এসে গেছে। তবে বাংলাদেশে যেসব জাহাজ আসে, সেগুলোতে বিষাক্ত বর্জ্য বলতে কিছু থাকে না।’ এই যে সমিতি প্রধান নির্দিধায় সার্টিফিকেট দিয়ে দিলেন তার কি কোন গ্রহণযোগ্যতা আছে? তিনি কি নিশ্চিত যে আসলেই সেই জাহাজে কোন ক্ষতিকর বিষাক্ত বর্জ্য নেই? তা কেন? তিনি তো বলেই দিলেন-‘থাকে না’। তার মানে আছে কি নেই সেই প্রশ্নও ওঠে না! এখন এই ‘সার্টিফিকেট’ যদি একটি সমিতি প্রধান দিতে পারেন, আর তা যদি সরকারের একাধিক দপ্তরের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পরিবেশ-টরিবেশ আর বিষাক্ত বর্জ্যটর্জ্য নিয়ে মাতামাতির কিছু থাকেনা। এই সব তুঘলকি আইন-কানুনের ট্যুইস্ট দেখে জনমনে গভীরভাবে এই প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, এই বিশেষ মহল কি সরকারকেও প্রভাবিত করতে পারে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে-পারে! তাহলে আর কে রইল এই দেশের অশিক্ষিত সরল সোজা মানুষদের বিষের দংশন থেকে বাঁচানোর?
বিষ নিয়ে হেলাফেলা করে বিষের দংশনে গরিব খেটে খাওয়া মানুষকে ছুঁড়ে ফেলার এই মরণ খেলা অবিলম্বে বন্ধ করুন। সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই এটা বন্ধ করুন। মনে হতে পারে, এতে সামান্যই সমস্যা হবে। মনে হতে পারে-এতে কি-ই বা আসে-যায়? কিন্তু বিষের ছোবল শুধুই যে এর সাথে জড়িত সাধারণ শ্রমিকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে সেই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারেনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩৫