somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি একটা ফাউল, আপনি একটা আজাইরা

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিএনপি নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা বিরোধীরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখনোতো মুক্তবুদ্ধি, অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, প্রগতিশীল লেখক বুদ্ধিজীবীদের ওপর এতটা উপর্যপুরি নৃসংশতা নেমে আসেনি। তবে আজ কেন

৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পরও আমরা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে ক্ষমতায় রেখেছি, এদের বুহূবিধ কুকর্ম মুখ বুঁঁজে সহ্য করছি কেবল, এদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সুযোগটাকে যেন পুরনো শকুনেরা ভিত্তভূমি হিসেবে তৈরি না করতে পারে। পাছে আবার জামায়াত ও উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি ক্ষমতার মসনদে না বসে। তার প্রতিদান এই?

এক এক করে সহযোদ্ধার লাশের মিছিল ভারি হচ্ছে। বাধ্য করা করা হচেছ মুক্তচিন্তার সারথীদের বাইরে পালিয়ে যেতে। চাপাতি, গুলি, পুলিশের হয়রানি, প্রতিমুহূর্তে ছায়ার মতো পেছনে হন্তারকের পাহারা, একের পর এক নিত্যনতূন হত্যার তালিকা- এভাবে ভয় দেখিয়ে, চারিদিকে আতঙ্ক তৈরি করে সরকার কি বোঝাতে চায়। আমরা এ রাষ্ট্রের কেউ না? এ রাষ্ট্র তাহলে কাদের? কারা এর উন্মত্ত উত্তরাধিকার?

সরকার বলছে, তাদেরকে বেকায়দায় ফেলবার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা এসব বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তাহলে এই যে হত্যার মিছিল দীর্ঘতর হওয়া, অব্যাহত হুমকি, মুক্তচিন্তার উপর রাষ্ট্রীয় নজরদারি স্রেফ বিশৃঙ্খলা?

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রহিত করে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলবৎ রাখা, ধর্মানুভূতির কথা বলে কেবলই ইসলাম ধর্মের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে অন্য ধর্মাবলম্বীদের একঘরে করে দেয়া, তাদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতন করে দেশত্যাগে বাধ্য করা ও তাদের সহায় সম্পত্তি দখল করা, প্রগতিশীল ও মক্তুচন্তাকে ৫৭ ধারা দিয়ে টুটি চেপে ধরা, আর ধর্ম ভিত্তিক জঙ্গি-হন্তারকদের বাক, চিন্তা, ও জেহাদকে অবারিত করে দেয়া কোন শৃঙ্খলার নামান্তর? রাষ্ট্র বা সরকার কেন এ ধরণের শৃঙ্খলাকে (?) আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে আর নীরব মদদ দিয়ে যাচ্ছে খুনীদের?

প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার মানুষ, সংস্কৃতিকর্মী, লেকক, ব্লগার, নাস্তিক, বিজ্ঞানী-বুদ্ধিজীবী বলে বলে আমরা জঙ্গিবাদিদের টার্গেটকে খুব ছোট পরিসরে নিয়ে এসেছি। এরা মূলত জঙ্গিবাদের প্রাথমিক টার্গেট। ওরা হয়তো এখন বলছে, ধর্ম নিয়ে প্ররশ্ন করি বলে সে আমাকে হত্যা করছে। আর আপনি ধর্ম নিয়ে কথা বলেন না, তাই নীরব। এরপর বলবে, আমি বিজ্ঞান নিয়ে লিখি বলে সে আমাকে হত্যা করছে, আপনি বিজ্ঞান নিয়ে লেখেন না, ভাবেন না, তাই আপনি নীরব। ওরা বলবে আমি গান গাই বলে ওরা আমাকে হত্যা করতে চায়, কেননা গানতো ইসলামে হারাম। আর আপনিও নিরাপদ বোধ করবেন, কেননা আপনি গান গানও না, গান শুনেনও না। এরপর ওরা বলবে, কবিতা লিখি বলে ওরা আমাদের হত্যা করছে, আমাদের কবিতায় প্রেম-প্রকৃতি, নারী, দেশ, চিন্তা, দর্শন থাকে। ওরা এসব একদম সহ্য করে না। ওরা বলবে কবিতায় শুধু মরুভূমি থাকবে, নইলে তুমি খতম। আমি বা আমরা খতম হবো। আপনারা নীরব থাকবেন, কেননা আপনারা কবিতা লেখনও না কবিতা পড়েনও না।

এরপর.... ওরা বলবে,আপনি দাড়ি রাখেন না, নামায পড়েন না, বোরকা পড়েন না, আপনি স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান, নারী-পুরুষ এক সঙ্গে চলেন, কথা বলেন, হাসেন, তো আপনি খতমের তালিকায়। আপনি লালনের তরিকার, মাইজভান্ডারি তরিকার আপনারও রক্ষা নাই।

আর রাষ্ট্র বা সরকার? তারাতো ক্ষমতার মসনদ স্থায়ী করতে মাথা পেতে নেবে বর্বর, মূঢ়দের আস্ফালন। চেতনার বিরুদ্ধে, চিন্তার বিরুদ্ধে, স্বপ্নের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা ও প্রগতির বিরুদ্ধে ওরা একেক করে আইন করবে, পুলিশ লেলিয়ে দেবে, আর্মি লেলিয়ে দেবে, আপনাকে করবে ঘরছাড়া, দেশ ছাড়া। কেন না আপনি এ রাষ্ট্রের কেউ না, দেশেরও কেউ না। আপনি একটা ফাউল, আপনি একটা আজাইরা...
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৯
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×