somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কবে জেগে উঠবো?

০২ রা নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ESP : Bangladesh

ESP(DW) : Effective Support Program for Distressed Women in Bangladesh. (সহিংসতার শিকার মেয়েদের সহযোগিতার জন্য সমন্বিত কর্মসূচী)

রচনা : মনিরা চৌধুরী ও শর্মা লুনা

ঘটনা১ : শম্পা। সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ছাত্রী। তার বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। একদিন সন্ধ্যায় ইউনিভার্সিটি থেকে নারায়নগঞ্জের বাড়ি ফেরার সময় মুঠোফোনে মাকে জানিয়েছিল যে সে শিঘ্রই ঘরে ফিরছে। কিন্তু তার সে ফেরা আর হল না। বহুদিন থেকে উত্যক্ত করে আসা এলাকার বখাটে কাওসার তাকে অপহরণ করে। শম্পার পরিবার বুঝতে পেরে পরদিন সকালে থানায় কেস করে। পুলিশ মামলাটি নেবার পরদিন একজনকে ধরল ঠিকই কিন্তু গ্রেফতার করল না। উপরন্তু বলল, মেয়েটি নাকি মুঠোফোনে পুলিসকে জানিয়েছে যে, সে কাওসারকে বিয়ে করেছে। প্রশাসন নিরব। যদিও পরিবার-পরিজন জানে যে আসল ঘটনা ভিন্ন। পত্র পত্রিকা ব্লগে প্রকাশিত হল ঘটনাটি। কিন্তু রহস্যজনক কারনে প্রশাসন নিশ্চুপ। সিংগাপুরে বসবাসরত বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেই আছে। আজ ও মেয়েটির সন্ধান মেলেনি।

ঘটনা ২: মা চাঁপা রানী ভৌমিকের অপরাধ ছিল তিনি তার জমজ দুই কিশোরী কন্যাকে উত্যক্তকারীর হাত থেকের বাঁচিয়েছিলেন। সন্ত্রাসীরা এর প্রতিশোধ নেয়। রাস্তায় মোটর সাইকেল তুলে দেয় চাঁপা রানীর গায়ে। তিনি মারাত্মক আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার ১৩ বছর বয়স্ক কিশোরী কন্যাকে ঘরে আটকে নির্যাতন করে বখাটে রনী। মেয়েটি পরে আত্মহত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার তদন্তে প্রশাসন আসামীকে ধরতে এবং বিচার করতে উদাসীন। দেবাশীষ সাহা রনী নামক সেই পশুটির শাস্তি হয়েছে মাত্র ৩ বছর যা আমাদের প্রচলিত বিচারব্যবস্থায় পরিহাসের মত।

ঘটনা ৩: বরগুনার বামনা উপজেলার বড়জোড়া গ্রামের নবম শ্রেণীর ছাত্রী কিশোরী জেনিকে ধর্ষর্ণের পর বখাটে তাপু তার হাতে এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে সিগারেটের আগুন দিয়ে এভাবে দগ্ধ করেছে রাতভর। তারপর তার করুন মৃত্যু ! ছয়দিনেও প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করতে পারে নি পুলিশ।
বরগুনার বামনা উপজেলার ছোট ভাইজোরা গ্রামের হতভাগ্য জেনি আক্তার । প্রতিবেশী ইউপি সদস্য গোলাম হায়দার হেমায়েত মৃধার ছেলে তাপু মৃধা তাকে ধর্ষণের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেছে।

এখানে ক্লিক করুন


ঘটনা ৪: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে ছাত্রলীগ নেতা। ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে উল্লাস প্রকাশ করেছে সে।

এ বিষয়ে ধর্ষিতা মামলা করলেও তার পুরো পরিবার ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। আসামিরা প্রতিনিয়তই হুমকি দিচ্ছে তাদের হত্যা করার। এ ঘটনায় পুলিশ আকাশ নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।


ঘটনা ৫: সংবাদ সম্মেলনে সারাক্ষণই কেঁদেছেন স্বপ্না। কেঁদে কেঁদে তিনি বলেন, বংশাল থানা পুলিশের সহযোগিতায় ধর্ষণ, গর্ভপাত ঘটানো, সর্বশেষ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। জীবিকার তাগিদে চাকরি নিয়ে ঢাকায় এসেছিলাম। তবে আমার আর চাকরি করা হলো না। আবারও আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো এমনকি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে ওই চক্র।


এমন আরও শত শত মর্মান্তিক প্রাণস্পর্শী ঘটনা প্রতিদিন ই আমাদের সমাজে ঘটছে, প্রতিদিন আমাদের মা, বোন অথবা সহকর্মীরা শিকার হচ্ছে নানারকম হয়রানীর, নানা রকম নির্যাতনের যার বেশিরভাগ আমরা জানিনা।

উপরোক্ত ঘটনাগুলো আলোচিত এবং হৃদয়বিদারক। গনমাধ্যমের দায়িত্ব জনসাধারণকে চলমান ঘটনাবলী সম্পর্কে অভিহিত করা। ইলেকট্রনিক মিডিয়া, পত্রিকা তাই করেছে। কিন্তু এই ঘটনাগুলোর শেষ পরিনতি কী হয়েছে তা কী আমরা জানি? জানি না। কারণ তা গনমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।

এখন দেখা যাক স্পর্শকাতর এই ঘটনাগুলো গনমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া কী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ব্লগে ব্লগে আর ফেসবুকের ওয়ালে ওঠে প্রতিবাদের ঝড়। মানববন্ধন, পুলিশী মামলা। তারপর ঝড় আবার শান্ত। মামলা চাপা পড়ে যায় আরো শত সহস্র সমসাময়িক ঘটনার নিচে।

২০০১ সালে ভয়াবহ সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক হামলার শিকার পূর্ণিমা এখন কোথায় কেমন আছে আমরা জানি না। আসামীরা সাজা পেল কিনা সে প্রসংগে সংবাদ মাধ্যম নিরব। চাপা রানী ভৌমিক এবং তার মেয়ের হত্যাকারীর সাজা এমন পরিহাসময় সে প্রশ্ন কারো মনে জাগেনা? শিক্ষক মিজানুর রহমানের খুনিকে কেন ধরা হচ্ছে না, এর উত্তর কে দেবে! সরকার?প্রশাসন?? সবাই নিরুত্তর। কিন্তু আমরা?আমরা ও কী নিরুত্তর থাকবো? যদি আমরা নিরন থাকি একদিন এই হায়েনাদের কাছে বলি হবে আমাদেরই কেউ। তাই নিজেদের মান সম্মান নিয়ে টিকে থাকার জন্য, পরবর্তী প্রজম্মের জন্য একটি নিরাপদ আবাসের জন্য আমরা একতাবদ্ধ হয়ে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেবো নিজেরাই। আমাদেরই বাধ্য করতে হবে কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে তৎপর হতে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে। বাধ্য করতে হবে সরকারকে নারীর নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে। তাহলেই বাধ্য হবে এই ঘুমন্ত সমাজ জেগে উঠতে।


আমাদের করনীয়

বর্তমান এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে ব্লগ, অনলাইন ফোরাম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর অনেক প্রভাব। দেশে এবং নাগরিক জীবনে ঘটমান প্রায় সব ঘটনা অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ে, সবাই জানতে পারে। সেই সাথে পাঠক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে গড়ে তোলা সম্ভব সচেতনতা ও প্রতিরোধ। শুধুমাত্র ঘৃনাপ্রকাশ বা প্রতিবাদ কোনই কাজে আসে না যদি পাঠক বা লেখকরা সংঘবদ্ধ না হন।

ESP(Effective Support Program for Distressed Women) নারীদের উদ্যেগে পরিচালিত পাঠকদের সংঘবদ্ধ কর্মসূচি। এই কর্মসূচিভিত্তিক সংগঠনের ছায়ায় যেকোনো পাঠক নারীর প্রতি নির্যাতনমূলক ঘটনার প্রতিবাদ নয় শুধু, প্রতিকার ও করতে পারবে। এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য হল নির্যাতীত নারীকে কার্যকর(Effective) সহায়তা প্রদান করা, এবং নির্যাতন কারীকে আইনের মাধ্যমে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা। এছাড়া নৈতিক শিক্ষা ও শালীন পোষাকের জন্য উদ্ধুদ্ধ করার কর্মসূচীর একটি অংশ।


কীভাবে?
যেহেতু ESP একটি অনলাইনভিত্তিক সংগঠন, যার বিস্তৃতি থাকবে পুরো দেশব্যাপী। এর একটি শক্তিশালী কাঠামো থাকা গুরুত্বপূর্ন। শক্তিশালী কাঠামো বলতে বুঝায় সংগঠনের বৈধতা, ভাবমূর্তি, কার্যক্ষমতা, ব্যপ্তি, জাতীয় এবং উচ্চপর্যায়ে পরিচিতি এবং জনসাধারণের সাথে সংশ্লিষ্টতাকে। ESP কে একটি পূর্নাঙ্গ সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলা হবে এসব শর্ত পূরণ করেই। তাছাড়া সমস্যা সমাধানের কর্মকৌশল হবে স্বচ্ছ এবং সত্য।

১। সহিংসতা প্রতিকারে অগ্রাধিকার নির্বাচন করা হবে সর্বপ্রথম. অপরাধ বা নির্যাতনের অগ্রাধিকার নির্বাচন করে সমস্যা সমাধানের পথে অগ্রসর হবে। নিম্নরূপ:

অপরহণের ঘটনা গুলো সবচেয়ে আগে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তারপর ধর্ষণ, খুন, ইভটিজিং ইত্যাদি ক্রমান্বয়ে। তেমনি শিক্ষার্থী মেয়েদের সমস্যাগুলো আগে তারপর পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুক বাল্যাবিবাহ ইত্যাদির বিষয় আসবে। নারী পাচার, এসিড নিক্ষেপ, হুমকি দেয়া, নারীব্যাবসা ইত্যাদি বিষয়ও ক্রমান্বয়ে কর্মসূচীতে আসবে।


২।বাংলাদেশের সকল থানার কর্মকর্তা, সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নারীবাদী ও সমাজসেবা সংস্থার কর্মকর্তাদের নাম ও ফোন নাম্বার এ সংগঠনের কার্যকর পরিষদের কাছে থাকবে, যাতে সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষনিকভাবে তাদের উপর সম্মিলিতভাবে চাপ সৃস্টি করা যায় বা দাবি জানানো যায়।

৩।সর্বোচ্চ আদালতের নারীকল্যানে নিয়োজিত সকল আইনজীবীর এবং দেশের যেকোন স্বনামধন্য বুদ্ধিজীবীর সহায়তা নেয়া হবে ।

৪।ঘটনার পর তাৎক্ষনিকভাবে মুঠোফোন বা অনলাইনে মেইলের মাধ্যমে সংগঠনের পক্ষ থেকে তদন্তকারী এবং অনুসন্ধানী সংবাদদাতা পাঠানো হবে যাতে ঘটনার সত্যতা বিস্তারিতভাবে দ্রুত জানা যায়, সমাধান করা যায় এবং নির্যাতীতাকে সহায়তা প্রদান করা যায়। যে এলাকায় অপরাধ সংগঠিত হবে সে এলাকার পাঠক যদি সংগঠনের সদস্য নাও হন তবু তিনি চাইলে তদন্ত করতে পারবেন এবং সংগঠনকে তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন। তার তথ্য যদি নির্ভূল প্রমাণিত হয়, তার নিরাপত্তা এবং তথ্য সংগ্রহ ব্যয়ের দায়িত্ব সংগঠন নেবে।

৫। দেশের সকল নারী সংগঠনগুলোর সাথে নিরবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক থাকায় একত্রিত কর্মসূচি দেবে।

৬।অপরাধির শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর আইনি এবং অর্থনৈতিক সহায়তা দেবে নির্যাতীতা এবং তার পরিবারকে।


ESP : Effective Support Program for Distressed Women



ESP বর্তমানে DWDO(http://www.dwdo.opest.org/) এর আওতাধীন একটি অন্তর্জালভিত্তিক কর্মসূচি। তবে এটি একটি স্বতন্ত্র এবং স্বায়ত্বশাসিত সংগঠন হিসেবেই কিছুদিনের মধ্যে পূর্নাংগরূপে গঠিত এবং পরিচালিত হবে।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

১।মূলত এই সংগঠনের উদ্দেশ্য নারীদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করা। এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা যাতে মেয়েরা নিজেকে নিরাপদ ভাবতে পারে। যাতে স্কুল-কলেজ-কর্মস্থলে কোথাও যেন নির্যাতনের শিকার না হতে হয়। যাতে কেউ অপহরণ,ধর্ষণ,খুন বা কোন ধরণের নির্যাতনের সাহস না করে। যাতে প্রতিটি অপরাধিকেই বিচারের মুখোমুখি করে যথাযোগ্য শাস্তি প্রদান করে দৃষ্টান্ত প্রদান করা যায়। যার ফলে নারীর প্রতি সহিংসতার হার ক্রমান্বয়ে শতকরা শূন্যের কোঠায় নেমে আসতে পারে।

২। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে অনলাইনে ও অফলাইনে নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করে নারী নির্যাতন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা হবে ।

৩। সামাজিক কার্যক্রমে আগ্রহী ও মানবিক চিন্তাধারার পুরুষদেরও সহযোগীতা নেয়া হবে।

৪। আইনের সুষ্ঠ প্রয়োগ না থাকার কারণে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অপরাধী পার পেয়ে যায় বিধায় নারীর প্রতি সহিংসতা- ধর্ষন, অপহরণ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে অপরাধিকে শাস্তি প্রদানে চাপ প্রয়োগ করা হবে।

৫। এই সংগঠনের কার্যকরী পরিষদের মূল সদস্য এবং সাধারণ কর্মী হিসেবে ভুক্তভুগীদের ও অন্তর্ভূক্ত করা হবে যাতে তারা অন্যান্য নির্যাতীতদের সহায়তা করার জন্য সক্রিয় থাকেন।

৬। সংগঠিত অপরাধ গনমাধ্যমে প্রচার করা ও সদস্যদের দ্বারা সকর মাললা ও ঘটনা লিখিতভাবে সংরক্ষনে রাখা- ওয়াচ করা, প্রশাসন ও নারীবাদী সংস্থার দৃষ্টি আকৃষ্ট করা, নির্যাতীতা ও তার পরিবারের নিরাপত্তা দেয়া, গনমাধ্যমে প্রকাশ করা, সংশ্লিষ্ট পরিবারকে আইনি সহায়তা দেয়া যতক্ষণ না তারা ন্যায় বিচার পায়, এবং ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থা করা, দোষীকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা।

৭। মামলাসমূহ অগ্রাধিকারের নিয়ম অনুযায়ী সমাধান করা।

সংগঠন সৃস্টির কারন

এই বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণের কারণ আজকের এই সমাজের নির্মম বাস্তবতা। সাধারণত যখন কোন মেয়ে অপহরণ, ধর্ষন বা নির্যাতনের শিকার হয় তার পরিবার প্রচন্ড মানষিক এবং সামাজিক চাপের শিকার হয়। ধর্ষিতা বা অপহৃতা নারীর পরিবার যদি অর্থনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বা প্রতিপত্তিশালী না হয়, সেক্ষেত্রে অপরাধী ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে বা মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে, খুনের হূমকি দেয়। এবং তারা সফল ও হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। দেখা যায়,থানায় মামলা নেয়া হয়না। আবার মামলা নিলেও অপরাধীকে গ্রেফতার করা বা যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া সম্ভব হয় না। আবার কখনো কখনো অপরাধীর অত্যাচারে নির্যাতীতা এবং তার পরিবারকে পালিয়ে বেড়াতে হয়। মেয়েটি শিক্ষার্থী হলে পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। আর যদি এমন হয় যে, পরিবারটি অভিভাবকহীন, সেক্ষেত্রে করার কিছুই থাকে না। সেক্ষেত্রে অপরাধীর সাহস বেড়ে যায়। সমাজে আরও অপরাধ কর্মকান্ড সংঘঠিত হয়। কোন সহিংসতার প্রতিকার শুধুমাত্র কোন একটি পরিবারের পক্ষে করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।ঐক্যবদ্ধ সহায়তা প্রয়োজন। সেজন্য সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনকেই এগিয়ে আসতে হবে। ESP নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিকারক হিসেবে সবচেয়ে কার্যকর(Effective) সামাজিক সংগঠন হিসেবে কাজ করতে বদ্ধকর ।

গঠনতন্ত্র

১।পরিচালনা পরিষদ

২।কার্যকরী পরিষদ

৩।উপদেষ্টা পরিষদ

৪।কর্মীবৃন্দ


অর্থসংস্থাণ ও ব্যয়

সামাজিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হলেও এর ব্যয়ভার ও কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য অর্থ অত্যাবশ্যক। সাধারণত এ ধরনের কর্মসূচিতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সকলে সহযোগীতা প্রদান করে বা করবে কম বেশি। তবে সবচেয়ে গুরূত্বপূর্ন বিষয় হল, অর্থসংস্থান ও ব্যায়ে কোন অনিয়ম না থাকা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। যদি আয় ব্যয় স্বচ্ছ না হয়, সম্পূর্ন কর্মসূচি ই ব্যর্থ হবে। মানুষ যা বিশ্বাস করে প্রদান করবে তা যদি যথাযথভাবে ব্যয় না করা হয় প্রথমত তা হবে বিশ্বাসঘাতকতা এবং একটি মহৎ কর্মসূচিকে সমূলে উৎপাটন করার প্রকৃয়া।তাই এর সর্বাঙ্গীন স্বচ্ছতার জন্য নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হবে :


১। সংগঠনের নিজস্ব দপ্তর এবং ওয়েবসাইট থাকবে।

২। নিজস্ব ব্যাংক আ্যকাউন্ট থাকবে। যদি কেউ অর্থ দান করতে চায়(ডোনেশন) ব্যাংক আ্যাকাউন্ট নাম্বারে জমা দিলেই হবে।

৩। অর্থ দানকারী ব্যাক্তির নাম, অর্থের পরিমান এবং সে অর্থ দ্বারা কৃত কাজের বর্ননা,ছবি সবকিছু ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করার ব্যাবস্থা থাকবে।এতে অর্থের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। উল্লেখ্য এই হিসাব প্রদর্শন অন্য কোন সংস্থা করে না।এর ফলে অন্যান্য সংস্থাগুলোর অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা কম এবং এজন্যই কর্মসূচিগুলোতে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না।

৪। হিসাব বিজ্ঞানের নিয়ম অনুযায়ী সংগঠনের অর্থ বছর শেষে চূরান্ত হিসাব করা হবে। এবং অডিটর দিয়ে তা চেক করানো।

৫। পরিচালনা পরিষদ এবং কার্যকরি পরিষদের সদস্যদের নাম, স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা এবং মুঠোফোনের নাম্বারের তালিকা ওয়েবসাইটে থাকবে যাথে যে কেউ যোগাযোগ করে নারী নির্যাতনসহ সংগঠনের অর্থনৈতিক বিষয়ে অভিযোগ,পরামর্শ এবং তথ্য সরবরাহ করতে পারে।

সদস্য হবার যোগ্যতা এবং উপায়

ESP এর সদস্য হওয়া সহজ।যেহেতু এটি একটি অনলাইন সামাজিক সংগঠন সেহেতু যেকোন অন্তর্জাল ব্যাবহারকারী বা পাঠক এর (ওয়েবলিংক) ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে সদস্য হতে পারেন। তবে যারা ভুক্তোভুগি এবং ESP এর সহায়তাপ্রাপ্ত তাদেরকে নিবন্ধিত হতে হবে সমাজে নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সহানুভূতিশীল যেকোন বিবেকবান মানুষ তিনি পুরুষ হোন কিংবা নারী, আহবান জানাচ্ছি এই সামাজিক সংগঠনের সদস্য হতে।

একজন সুস্থ ও মননশীল নারী মানে একটি সুস্থ ও মননশীল জাতি। নেপোলিয়ন বলেছিলেন,"আমাকে একজন সুস্থ মা দাও,আমি একি সুস্থ সুন্দর জাতি উপহার দেবো।"নারীর প্রতি অন্যায়ের প্রতিকার শুধু নারীর জন্য নয় ; বরং এটি আমাদের সভ্যতার মাপকাঠি যে আমরা একজন নারীকে কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পেরেছি। আমরা কতটা সভ্য হতে পেরেছি।

আর আজ একজন নারী অন্যায়ের শিকার হয়েছে,এর প্রতিবাদ এবং প্রতিকার না হলে কাল আপনিও অন্যায়ের শিকার হবেন তা কিছুটা হলেও নিশ্চিত। অতএব,আসুন চুপ করে না থেকে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে একতাবদ্ধ হই। গড়ে তুলি এমন একটি বাংলাদেশ যেখানে কোন ধর্ষক নেই, কোন নরপশু নেই, কোন ইভটিজার নেই। যে বাংলাদেশ নারীদের জন্য নিরাপদ একটি আবাস। যে বাংলাদেশ পৃথিবীর সবদেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে।


ইতিমধ্যে পোষ্ট করা হয়েছে। এখানে
Click This Link


প্রিয় পাঠক/ পাঠিকা
দয়া করে আপনার মন্তব্য দিন। সংশোধন বা সংযোজন করুন। কোন পরামর্শ বা সমালোচনা দিয়ে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করুন।
ফেসবুক গ্রুপে আমাদের সাথে যোগ দিয়ে আমাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করুন। আমরা চাই উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক সদস্য হলে সবাইকে নিয়ে একটি সাধারণ সভার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে। সততা ও নৈতিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের নারী সমাজের জন্য কার্যকর ভুমিকা রাখতে।


ESP : Bangladesh

ESP(DW)

Effective Support Program for Distressed Women in Bangladesh.


Email : [email protected]
Facebook : http://www.facebook.com/esp.bangladesh
Blog : http://www.somewhereinblog.net/esp



Coordinator :
Sharma Luna
[email protected]
01738362346
Eden College

Written by :
Monira Chowdhury and Sharma Luna
On 30 September 2011

Legal support by : DWDO
Disables Women Development Organization
Govt. Registered Women NGO

Web support by : http://www.esp.opest.org

Online support by : Online writers Forum
http://www.facebook.com/online.forum


Last updated on 02 November 2011


সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১১ রাত ৮:৩৮
১৯টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×