somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোকো কি তবে দেশে আসছেন???

৩১ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দৈনিক ডেসটিনিতে একটি সংবাদ দেখলাম।
আমাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এক ছেলেকে নিয়ে। তিনি আরাফাত রহমান কোকো। এ ছেলেটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাহাড়সম। বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম দুর্নীতিবাজ পোলা আর আসবে বলে মনে হয় না। আমরা এই পোলার ভালো হয়ে যাওয়ার জন্য মাগফেরাত কামনা করি। খবরটা পড়ুন-

এ বছরের মধ্যেই আরাফাত রহমান কোকোকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আদালতের রায়ে প্রাপ্ত সাজা ভোগ শুরু হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া পাচারকৃত অর্থ এ বছরের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকও মনে করছে এ বছরের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
এদিকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া দ্রুত করতে বর্তমানে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনায় জাতিসংঘের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধবিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত ২৯ আগস্ট ভিয়েনার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মাহবুব আলম। ইউএনওডিসির (ইউনাইটেড নেশন অফিস অন অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম) অ্যাসেট রিকভারি শাখার বিশেষ সম্মেলনে তার সঙ্গী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আইনবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফেরদৌস আলম। ৩০-৩১ আগস্ট দুদিন এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনের অন্যতম এজেন্ডা বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নেওয়া। এ ছাড়া ব্যাংককে থাকা কোকোকে দেশে নিয়ে যাওয়ার
আইনি রাস্তা ঝালিয়ে নেওয়ার কাজটি সারবেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ভিয়েনায় অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (আইন) ফেরদৌস আলম গতকাল বৃহস্পতিবার ভিয়েনা থেকে দৈনিক ডেসটিনিকে বলেন, যে কোনো কিছুই হতে পারে। দুদক এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে। দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনের কাছে ফোন জানতে চাইলে, হাসপাতালে ভর্তি থাকায় তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেবেন না বলে জানান।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে এ বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পাচারকৃত অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক ডেসটিনির প্রতিবেদকের কাছে কোকোর মানিলন্ডারিং মামলায় দুদকের প্রধান কেঁৗসুলি ব্যারিস্টার আনিসুল হক বলেন, আমার কাজ ছিল অর্থ পাচার হয়েছে কিংবা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা প্রমাণ করা। সেটা প্রমাণ করেছি। এখন শাস্তি বাস্তবায়ন কিংবা অর্থ উদ্ধার নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলই ভালো বলতে পারবেন। আমার কিছু বলার নেই। কোকোর সাজা কার্যকর করতে হলে কী করতে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার অন্যতম কেঁৗসুলি অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, কোকো বর্তমানে যে দেশে রয়েছেন সে দেশের সঙ্গে প্রত্যাবর্তন চুক্তি থাকলে তা কার্যকর করতে পারে। তিনি বলেন, তবে কোকো কোথায় আছেন তা আমার জানা নেই। এটা সরকারের ব্যাপার। আমি মন্তব্য করতে চাই না।
কোকো কোথায় : কোকো বর্তমানে কোথায় রয়েছেন তা সরকারের কোনো সংস্থাই নিশ্চিত করতে না পারলেও একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছেন আরাফাত রহমান কোকো। সেখানে তিনি তার এক বন্ধুর বাসায় অবস্থান করছেন। তবে এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, তিনি দূতাবাসের নজরদারির মধ্যেই আছেন। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আতিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, কোকো মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে শ্রমিক ভিসা নিয়েছেন। গত ৪ বছরে মাত্র ৬ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন। থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পাওয়া কোকো মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ব্যাংকক ত্যাগ করেন ২০১০ সালের ১৫ অক্টোবর। থাই ইমিগ্রেশন ব্যুরোর তথ্যানুসারে, আরাফাত রহমান এমএইচ-৭৮৩ বিমানে কুয়ালালামপুর যান। এন্টি মানিলন্ডারিং অফিস (এএমএলও) থেকে ঢাকায় অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে পাঠানো এক চিঠিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে গত বছরের আগস্টে থাই সরকারের কাছে কোকোর অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। থাই সরকারের পক্ষে এএমএলও এ চিঠি দেয় ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এএমএলও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আরাফাত রহমান দুদফায় থাইল্যান্ডের প্রারাম-৯ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। প্রথম দফায় ২০০৮ সালের ২৫ জুলাই বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। ২৬ আগস্ট ২০০৮ হাসপাতাল ছাড়েন। পরে পেশির ব্যথাজনিত কারণে একই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ২০১০ সালের ১৭ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংক চেক ব্যবহার করে আরাফাত রহমান বা তার কোনো সহযোগী থাইল্যান্ডে কোনো ধরনের লেনদেন করেননি। সর্বশেষ এ বছরের মার্চে এমএলও জানায়, মালয়েশিয়াতে আছেন কোকো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন দৈনিক ডেসটিনিকে বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তাকে ফিরিয়ে আনা ও শাস্তি কার্যকরের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। পাচার করা অর্থও এ বছরের মধ্যে দেশে ফিরবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান। ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট শর্ত ভঙ্গের দায়ে তার প্যারোল বাতিল করা হয়। তাকে দেশে ফিরতে নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি দেশে ফেরেননি।
মামলার বিবরণ : সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি টাকার বেশি অর্থের অবৈধ লেনদেনের দায়ে গত বছরের ২২ জুন বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে ৬ বছরের সশ্রম কারাদ- দেয় আদালত। সিঙ্গাপুর থেকে এই টাকার সমপরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে আদেশ দেয় আদালত। এ ছাড়া কোকোকে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেয় আদালত।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ খাতে সিমেন্সকে কাজ পাইয়ে দিতে এই অর্থ ঘুষ নিয়েছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। মামলার অপর আসামি সাবেক মন্ত্রী মরহুম লে. কর্নেল আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনকে একই দ- দেয় আদালত। আদালত মোট জরিমানা করে ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যা কোকো ও সায়মনকে অর্ধেক অর্ধেক করে দিতে হবে। মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর। ২০১১ সালের ৪ জানুয়ারি কোকো পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ শুরু হয়। ১৯ জুন যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ২২ জুন রায়ের তারিখ ধার্য করে। এর আগে ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় দুদক এ মামলা করে। সিঙ্গাপুরে ২৮ লাখ ৮৪ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলার এবং ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ ইউএস ডলার (সে সময়ের বাজারদর অনুযায়ী ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৮ টাকা) অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর কোকোকে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের মে মাসে তাকে সাময়িক মুক্তি (প্যারোল) দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর কয়েক দফা এর মেয়াদ বাড়ানোর পর ২০১০ এর ১৪ আগস্ট প্যারোলের মেয়াদ শেষ হয়। ১৯ আগস্ট প্যারোল বাতিল করে ৩১ আগস্টের মধ্যে দেশে ফিরতে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কোকোর পক্ষে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট ৪০ দিনের জন্য প্যারোলের মেয়াদ বাড়ালেও এর শর্ত ভঙ্গ করায় আপিল বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। এরপর বিচারিক আদালত কোকোর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তথ্যসূত্র: দৈনিক ডেসটিনি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×