somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রিয় ছবি : দ্য গড ফাদার

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দৈর্ঘ : ২ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট
রঙ : রঙিন
ভাষা : ইংরেজি
দেশ : আমেরিকা
পরিচালনা : ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা
প্রযোজনা : আলবার্ট এস. রুড্ডি
চিত্রনাট্য : মারিও পুজো [উপন্যাস], ফ্রান্সি ফোর্ড কপোলা
পুরস্কার/ সম্মান : ১৯৭৩ সালে অস্কারে দশটি নমিনেশ পায়, পুরস্কায় পায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ রূপান্তরিত চিত্রনাট্য
অভিনয় : মার্র্লোন ব্রান্ডো, আল পাচিনো, জেমস কান, রিচার্ড এস, কাসটেলানো, রবার্ট ডুভাল, জ্যাক ওলজ, যায়ান কিটন, জন কাজাল
সঙ্গীত : কারমাইন কপোলা, রে ইভানস, জনি ফেরো, জে লিভিংস্টন, নিনো রোটা, মার্টি সিমস
চিত্রগ্রহণ : গির্ডন উইলিস
সম্পাদনা : মার্ক লোব, বারবারা মার্কস, উইলিয়াম রেনল্ডস, মারি সলোমোন, পিটার জিনার


কাহিনী সংক্ষেপ : ইতালীয় মাফিয়া ডন ভিত্তো কর্লিওন অপরাধ সাম্রাজ্যকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। মার্কিন মুল্লুকে বাস করে তিনি পুলিশ তথা রাষ্ট্রীয় সব ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে নিজের আইন-কানুন চালু করেছেন। বড় ছেলে সনি কর্লিওন পিতার সাম্রাজ্য দেখা-শোনায় সাহায্য করে। কিন্তু সে অতি রগচটা এবং পিতার তীক্ষ বুদ্ধিও পায়নি। মেঝো ছেলে ফ্রেডো যথার্থ অর্থে এ পরিবারের অযোগ্য, সে ভিতু এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। ছোট ছেলে মাইকেল ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। প্রাক্তন সৈনিক হিসাবে তার সুনাম আছে। সে বাবার ‘ব্যবসা’ পছন্দ করে না। পিতার সাথে এক তর্কের পর সনি বাড়ি ছেলে চলে যায়। এদিকে ডনকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। পরিবার ও মাফিয়া সাম্রাজ্যের খাতিরে সামনে এগিয়ে আসে মাইকেল। পারিবারিক বন্ধু টমের সহায়তায় মাইকেল একই সঙ্গে খুনিদের খুঁজে বের করে এবং অসুস্থ পিতার সাম্রাজ্য চালানোর দায়িত্ব নেয়।


বিশেষত্ব : বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত এই ছবি ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা এবং মারিও পুজোর যৌথ প্রচেষ্টার ফসল। মারিও পুজোর শক্তিশালী উপন্যাসকে রূপালী পর্দায় আরও শক্তিশালী করে উপস্থাপন করেছেন কপোলা। পিতা-পুত্রের সম্পর্ক, ন্যায়-অন্যায়ের দ্বন্দ, পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্ব, মূল্যবোধ অপরাধের দ্বন্দ Ñ এ রকম অনেক বিষয়ই এই একটি ছবিতে উঠে এসেছে। অস্কারে সেরা ছবি, সেরা চিত্রনাট্য ও সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেয় এ ছবি। এন্টারটেইনমেন্ট উইকলির মতে এটি বিশ্বের সেরা ছবি। এ এফ আই -এর সেরা ১০০ ছবির তালিকাতেও এটি ঠাঁই পেয়েছে। এম্পারার ম্যাগাজিনের বিশ্বের সেরা ৫০০ ছবির মধ্যে এটি প্রথম স্থানে ঠাঁই পেয়েছে।


বিশেষ তথ্য : ১. প্রায় এক দশক ধরে মার্কিন চলচ্চিত্র বিদেশী ছবির খাচ্ছে মার খাচ্ছিলো। গড ফাদার মার্কিন ছবির অবস্থানকে বানিজ্যিক ও শৈল্পিক উভয়ক্ষেত্রেই ফিরিয়ে আনে।
২. পর পর সাতটি ছবির ব্যর্থতার পর গড ফাদার ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার কপালে শুধু হিটের তকমাই দেয়নি, বরং কপোলাকে সারা বিশ্বের অন্যতম সেরা এবং দামী পরিচালকে পরিণত করেছে।
৩. এই ছবির মাধ্যমেই সারা বিশ্ব মাফিয়া বা কসানোস্ট্রা ব্যাপারটি সাথে পরিচিত হয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো, পুরো ছবিতে কোথাও মাফিয়া শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি, বরং ফ্যামিলি শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে বারবার।
৪. ইতালীয় ধ্র“পদী লুচিনো ভিসকোন্তির লেপার্ড [১৯৬৩] ছবি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু বিয়ের দৃশ্যটি চিত্রায়িত হয়।
৫. কপোলা নিজে ইতালিতে গিয়েছিলেন নিনো রোটাকে আনতে। রোটা ফেলিনির অধিকাংশ ছবির মিউজিক করে সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এ ছবির জন্যে নিনো রোটা অস্কারে নমিনেশন পান। পরে যখন জানা যায় তিনি ফরচুনেলা [১৯৫৯] ছবির সুরকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এ ছবিতে ব্যবহার করেছেন তখন তার নমিনেশন বাতিল করা হয়।
৭. জ্যাক নিকলসন, ওয়ারেন বেটি, ডাস্টিন হফম্যান মাইকেলের চরিত্র ফিরিয়ে দেন। ব্রায়ান ও নীল ও রবার্ট রেডফোর্ডের কথা ভাবা হয়েছিলো।
৮. প্যারামাউন্ট মার্লোন ব্রান্ডোকে নেয়ার পক্ষ ছিলো না। কারণ ইতোপূর্বে মিউটিনি অন দ্য বাউন্টি ব্রান্ডোকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তাদের বাজেট অনেক বেড়ে যায়।
৮. জনি ফন্টেইনের চরিত্রের জন্যে ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু পরে দেখা যায় বাস্তবের জনির সঙ্গে সিনাত্রার জীবনের অনেক ঘটনাই মিলে যায়। তাই জনি ফন্টেইন চরিত্রে শেষে আল মার্টিনোকে নেয়া হয়।
৯. অডিশনের সময় বুলডগের মতো দেখানোর জন্যে ব্রান্ডো মুখের ভেতর তুলো গুঁজে রাখেন। পরে ছবিতে শ্যূটিকালে ডেন্টিসদের তৈরি বিশেষ এক ধরণের জিনিস মুখের ভেতর রাখেন তিনি।
১০. বেডরুমে ঘোড়ার কাটা মাথার দৃশ্যটি রিহার্সেলের সময় নকল ঘোড়ার মাথা দেয়া হতো, কিন্তু শ্যূটিংয়ের সময় সত্যিকারের ঘোড়ার কাটা মাথা রাখা হয়। এই মাথাটি একটি কুকুরের খাদ্য-গুদাম থেকে জোগাড় করা হয়েছিলে।
১১. আর্নেস্ট বোর্গাইন, এডওয়ার্ড জি গিবসন, অরসন ওয়েলস, ডেনি টমাস, রিচার্ড কন্টে, আন্থনি কুইন এবং জর্জ সি স্কটকে ডনের চরিত্রের জন্য প্যারামাউন্ট ভেবেছিলো। কপোলা বলেছিলো সে হয় লরেন্স অলিভার অথবা মার্লোন ব্রান্ডোকে এ চরিত্রে চায়।
১২. ছবির শূটিংয়ের সময়ই এটি এতো আলোচনায় আসে যে তখনই এর সিক্যুয়াল বানানোর সিদ্ধান্ত হয়ে যায়।
১৩. কপোলা যথার্থই এই ছবিকে ফ্যামিলি মুভি বানাতে চেয়েছিলেন।এ ছবিতে তার বোন বোন তালিয়া শিরে কনি ক্যারলেওনে চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি ট্রিলজির বাকী দুটোতেও ছিলেন। তার মা ইটালিয়া কপোলা রেস্টুরেন্ট একটা চরিত্রে ছিলেন, বাবা কারমিনে কপোলা একটা দৃশ্যে পিয়ানো বাজিয়েছেন। এবং তার দুই ছেলে জিয়ান-কার্লো কপোলা, রোমান কপোলা ও মেয়ে সোফিয়া কপোলাও এ ছবিতে অভিনয় করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৩৮
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×