somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসঃ নিয়তির পথে যাত্রা(পর্ব ১) অক্ষশক্তির সৃষ্টি, স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ এবং অষ্ট্রিয়া দখলের প্রথম পদক্ষেপগুলো।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১মার্চ, ১৮৯৬ সাল।
আদওয়া শহর, ইথিওপিয়া[প্রাচীন আবিসিনিয়া]।

সর্বমোট ১৮০০০ পদাতিক সৈন্য এবং ৫৬টি আর্টলারি পিসে সজ্জিত, জেনারেল ওরেস্তে বারাতিয়েরির(Oreste Baratieri) ইটালিয়ান সেনাবাহিনী রাতের অন্ধকারে আদওয়া শহরের দিকে অগ্রসর হয়। তাদের উদ্দেশ্য, সংখ্যার দিক দিয়ে আধিপত্য বিস্তারকারী কিন্তু যুদ্ধসরঞ্জামের দিক দিয়ে নাজুক অবস্থায় থাকা আবিসিনীয় বাহিনীকে, চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়া। যদিও জেনারেল বারিতিয়েরি এই আক্রমণের ব্যাপারে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন। একজন ফিল্ড কমান্ডার হিসেবে তিনি আগেই টের পেয়েছিলেন, মার্চ মাসের ভয়ানক গরমে ৭৩০০০ সৈন্যের বিশাল ইথিওপীয় বাহিনীর ভরণ পোষণ করা একটি দুঃসাধ্য কাজ হবে। ইথিওপীয় সেনাবাহিনীর ভরণ পোষণের জন্যে মূল রসদ আসতো স্থানীয় দরিদ্র গ্রাম্য কৃষকদের কাছ থেকে। বারিতিয়েরি সঠিকভাবে অনুমান করেছিলেন, কৃষকদের ভান্ডার দ্রুত ফুরিয়ে আসছে এবং ইতিমধ্যে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। তার হিসেব মতে, ইথিপিও বাহিনী আর অতিরিক্ত পাঁচ দিনের বেশী টিকবে না।

বারাতিয়েরির পরিকল্পনা ছিল, তিনি অপেক্ষা করবেন। আদওয়া শহরে ইথিওপীয় বাহিনীকে আটকে রাখতে পারলে, তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হবে। বাস্তবে এই পরিকল্পনাই সঠিক ছিল।

কিন্তু বারাতিয়েরির এই সিদ্ধান্তে ইতালীয় সরকারের আঁ তে ঘা লাগে। তারা চটজলদি বারাতিয়েরিকে আদওয়া শহর আক্রমণ করার আদেশ দেন। বারাতিয়েরি শুধুমাত্র পাঁচটা দিন অতিরিক্ত চেয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রার্থনা মঞ্জুর করা হয় নি।

পরিকল্পনা অনুসারে বারাতিয়েরির বাহিনী রাতের অন্ধকারে তিন দিক থেকে আদওয়ার পথে অগ্রসর হয়। কিন্তু তাদের কাছে থাকা মানচিত্র বেশ পুরোনো ছিল বলে, তারা পথ হারিয়ে ফেলে। সকাল বেলা দেখা যায়, বারাতিয়েরির তিন দল একটি বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে যুদ্ধ পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবে আঁতকে উঠার মতো বিষয় হল এই যে, পথ হারিয়ে ফেলায় তারা পুরোপুরি ইথিওপীয় বাহিনীর বন্দুকের গুলির আওতায় চলে আসে, যা তারা নিজেরা ঘুনাক্ষরে টের পাই নি।

ইথিওপীয়রা তাদের সুযোগ হাতছাড়া করেনি। তারা জানতো স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার এটাই একমাত্র সুযোগ। তাদের হাতে সময়ও বেশী ছিল না। অতঃপর তারা ইটালীয়দের উপর আক্রমণ করে। এক ভয়ানক যুদ্ধে ইথিওপীয়দের শেষ পর্যন্ত জয় হয়। ইটালীয়দের পক্ষে হতাহতের সংখ্যা দাঁড়ায়, ৭০০০ নিহত এবং ১৫০০ আহত। অন্য দিকে, ইথিওপীয় বাহিনীর ৩০০০-৪০০০ সৈন্য নিহত হয় এবং প্রায় ৮০০০ সৈন্য আহত হয়।

এই যুদ্ধ লাইবেরিয়ার পাশাপাশি ইথিওপীয়াকে আফ্রিকার দ্বিতীয় সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। উল্লেখ্য, তৎকালীন সময়ে আফ্রিকার বাকি সব দেশ, কোনো না কোনো ভিনদেশী রাষ্ট্রের কলোনি ছিল।

ইটালীয়রা এই হারের কথা সহজে ভুলতে পারেনি। এই চরম অপমানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে তারা বদ্ধপরিকর ছিল।

***

১৯৩০ সাল।
ইটালীয় কলোনিয়াল সীমান্ত এবং ইথিওপীয় সীমান্তের মাঝামাঝি স্থান, ওয়েল-ওয়েল(wel-wel/wal-wal/ual- ual) ওয়াসিস।

উক্ত স্থানে, ইটালী এবং ইথিওপীয়ার মধ্যে সাক্ষরিত সীমান্ত চুক্তিকে লঙ্ঘন করে ইটালীয়রা একটি দুর্গ নির্মাণ করে। পরে দেখা যায়, ইটালীয়রা ইচ্ছাকৃতভাবে ইথীওপীয় সীমান্তের ভিতরে তা নির্মাণ করেছে। এতে ইটালী এবং ইথিওপীয়ার মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। ইথিওপীয়রা লীগ অফ নেশন্সে এর প্রতিবাদ করে।

***

১৯৩৪ সাল, ডিসেম্বর মাস।
ওয়েল-ওয়েল ওয়াসিসের দুর্গ।

ইটালীয় এবং ইথিওপীয়দের মধ্যেকার এক ভয়ানক দাঙ্গায় ১৫০জন ইথিওপীয় এবং ২জন ইটালীয় নিহত হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে ফের অবস্থার অবনতি ঘটে।

***

১৯৩৬ সালের ৭ই মার্চ, জার্মানি ফরাসি-জার্মান সীমান্তবর্তী রাইনল্যান্ড এলাকা দখল করে নেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় বিশ্বশক্তি তাজ্জব বনে যায়। জার্মানিকে এতদিন তারা কেউ গণনায় ধরেনি আর হঠাৎ করে সেই পুরোনো বাঘ পুনরায় জেগে উঠেছে!

ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য ইউরোপীয় পরাশক্তিগুলো রাইনল্যান্ড দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের কথা চিন্তা করে তারা তা নেয়নি। এতে শাপে বর হয় জার্মানির। বিশেষ করে তাদের নেতা এডলফ হিটলারের। রাইনল্যান্ড দখল করার মত এরূপ দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত তিনি নিজে একা নিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে চরম বিরোধিতা হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে, রাইনল্যান্ডে হিটলারের ছোট্ট বাহিনী প্রবেশের সাথে সাথে ফরাসি বাহিনী তা ধুলোয় মিশিয়ে দিবে। কিন্তু হিটলার ছিলেন অনড়। এবং শেষে দেখা গিয়েছে, হিটলারের কথাই সঠিক ছিল। ফরাসিরা সেই ক্ষুদ্র জার্মান বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনি। এক ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তার কারণে হিটলার তার জীবনের এক চরম পরীক্ষায় উৎরে যান।

রাইনল্যান্ড তো দখল হল। কিন্তু রাইনল্যান্ড দখল করার সাফল্যে তৃপ্তির ঢেকুড় তুলে বসে থাকা যায় না। রাইনল্যান্ড জার্মানদের নিজস্ব সম্পত্তি, যা জোড়পূর্বক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। হিটলারের সামনে আরও বড় কিছু পাবার হাতছানি। আর তা পাবার জন্যে দরকার কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য। ইতিমধ্যে সমরাস্ত্র কারখানাগুলো রাতদিন অস্ত্র উৎপাদন করছে। সেই সাথে, পুরোদমে সেনাবাহিনীর জন্যে নতুন সেনা বাছাই এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নাগরিক জীবনেও, ইহুদীদের নিয়ে বিষয়টি বাদে, ফিরে এসেছে স্বস্তি। হিটলারের জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বেকারত্ব প্রায় নেই বললে চলে। সময়টা হল ধৈর্য ধরার। সঠিক মুহুর্তে আঘাত হানতে পারলে, রাইনল্যান্ডের চেয়েও বড় পুরষ্কার ঘরে আসবে।

জার্মানরা অপেক্ষা করতে লাগলো। তাদের এখন প্রয়োজন একজন শক্তিশালী মিত্রের। এই মিত্র হতে পারে ইটালী। কেননা জার্মানি এবং ইটালীর তৎকালীন সরকারের মধ্যে আদর্শগত মিল ছিল। যেখানে আদর্শের মিল থাকে, সেখানে অন্যান্য মিল হতে বেশী সময় লাগে না। কিন্তু মুসোলিনির দেশের সাথে মিত্রতা স্থাপন করার মত তেমন কোনো সুযোগ জার্মানির আসছে না। রাইনল্যান্ড দখলের পর জার্মানি একটি মজবুত ভিত পায়, যার উপর দাঁড়িয়ে সে ইটালীর সাথে তার মিত্রতার বন্ধন জোড়দার করতে পারে।

তবে এখানে জার্মানির জন্যে আরেকটি বড় বাঁধা ছিল। রোমের সাথে তখন প্যারিস এবং লন্ডনের দহরম মহরম সম্পর্ক। তাদের মধ্যে গলায় গলায় ভাব। যদিও আদর্শের দিক দিয়ে তাদের মাঝে কোনো মিল নেই। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স চায়, হিটলার যাতে কোনো ভাবেই তার মাতৃভূমিকে, তথা অস্ট্রিয়াকে, জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করতে না পারে। এ কারণে, তারা ইটালির শরণাপন্ন হয় এবং মুসোলিনির সাথে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। বন্ধুত্বের শর্তানুযায়ী, ইটালী জার্মান-অস্ট্রিয়ান সীমান্তের কাছাকাছি ব্রেসা(Bressa) নামক স্থানে, এক বিশাল সেনা সমাবেশ করিয়ে রাখে।

হিটলার জানতেন, অষ্ট্রিয়াকে কব্জা করতে হলে আগে ইটালিকে নিজের আওতায় আনতে হবে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি অপেক্ষা করবেন। আগেও সুযোগ আপনা আপনি তার হাতের মুঠোয় এসেছিল, এবারো আসবে।

হিটলারের কাছে সুযোগ আসতে বেশীদিন লাগেনি।

***

অক্টোবর, ১৯৩৫ সাল।

ওয়েল-ওয়েল ওয়াসিসে নির্মিত সেই দুর্গকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া দাঙ্গার জের ধরে, ইটালি এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যায়। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স এই অন্যায় যুদ্ধে ইটালীকে সমর্থন না জানালেও, তারা নিষ্ক্রিয় থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩৬ সালে, হিটলার রাইনল্যান্ড দখল করার দুই মাস পর তথাপি মে মাসে, ইটালী এবং ইথিওপিয়ার মধ্যবর্তী যুদ্ধ শেষ হয় ইটালীর জয়ের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু, ৭মাস ধরে চলা এই অন্যায় যুদ্ধের কারণে, বিশ্ব দরবারে মুসোলিনির ইটালীর মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সাথে তার সম্পর্কেরও অবনতি হয়।

চতুর হিটলার এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। এর আগ পর্যন্ত তিনি অস্ট্রিয়ার উপর কোনো প্রভাব খাটাতে পারেননি। কিন্তু ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই, বিশ্ব রাজনীতির নাজুক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জার্মানির সাথে অষ্ট্রিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়ে যায়।

***

তৎকালীন সময়ে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনায় জার্মান মন্ত্রী হিসেবে কর্মরত ছিলেন ফ্রাঞ্জ ভন পাপেন। দুই বছর আগে, ১৯৩৪সালে, তিনি ভাগ্যের জোরে হিটলারের আদেশে পরিচালিত গণহত্যা থেকে বেঁচে যান। আর তার দুই বছর পর,ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, তাকে হিটলারের পক্ষে ভিয়েনায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে! ভিয়েনায় পাপেনের প্রধান কাজ ছিল কি করে অষ্ট্রিয়াকে বিনা যুদ্ধে জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা নিশ্চিত করা। ১৯৩৬ সালে, ইথিওপিয়া নিয়ে ইটালীর সাথে ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের মধ্যেকার সম্পর্কের অবনতি ঘটায়, পাপেনের কাছে তার বহু প্রতীক্ষিত সুযোগ চলে আসে। তিনি জার্মানির পক্ষে অষ্ট্রিয়ার তরুণ প্রধানমন্ত্রী কার্ট শুজনিগের সাথে শান্তি চুক্তি সাক্ষরের জন্যে উদ্যেগী হয়ে উঠেন।

****

১৯৩৬ সালের ১১জুলাই, ফ্রাঞ্জ ভন পাপেনের উদ্যেগে জার্মানির সাথে অষ্ট্রিয়ার একটি শান্তি চুক্তি স্থাপিত হয়। চুক্তি অনুসারে, জার্মানি অষ্ট্রিয়ার সার্বভৌমত্বকে সম্পূর্ণরূপে স্বীকৃতি প্রদান করে। জার্মানি এই অঙ্গীকারও করে যে, তারা অষ্ট্রিয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাবে না। বিনিময়ে অষ্ট্রিয়া অঙ্গীকার করে, তারা নিজেদেরকে সর্বদা জার্মানিরই একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে ধরে নিয়ে তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করবে।

চুক্তিটি এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত, এবং তা অষ্ট্রিয়ার জন্যে মঙ্গলজনক হত। কিন্তু জার্মানির কড়া হুমকিতে এখানে আরও কিছু গোপন শর্ত যুক্ত হয়।

শর্তানুযায়ী, অষ্ট্রিয়ায় বন্দী সকল নাৎসি রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। এবং সেই সাথে, কোনো ব্যক্তি নাৎসি পার্টির সমর্থক হলেই তাকে অষ্ট্রিয়ার রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

অষ্ট্রিয়া এ গোপন শর্তগুলি মেনে নেয়।

আপাত দৃষ্টিতে চুক্তিটি দেখতে নিরীহ গোছের মনে হলেও, এই চুক্তির জোড়েই অসংখ্য নাৎসি সমর্থক অষ্ট্রিয়ার রাজনৈতিক দায়িত্ব পেয়ে যায়। আর তাদের কারণেই একদিন অষ্ট্রিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত হয়।

****

এই চুক্তি সাক্ষরের পরপরই উচ্ছসিত পাপেন বার্লিনে হিটলারকে ফোন করেন। চুক্তিটি এত দ্রুত সাক্ষরিত হয়েছিল যে, হিটলার পর্যন্ত এর গোপন শর্তগুলো সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন না। পাপেন যখন তাকে ফোনের উপর চুক্তির কিছু অংশ পড়ে শুনাচ্ছিলেন, তখন হিটলার রাগে ফেটে পড়েন। এ কেমন শান্তি চুক্তি!!! দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, স্বরচিত স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থে পাপেন সেই সময়কার কথা স্মরণ করে বলেন, "হিটলারের প্রতিক্রিয়ায় আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। যেখানে আমার প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার কথা, সেখানে তিনি আমাকে খারাপ ভাষায় জর্জরিত করলেন। "আমি তাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছি", তিনি বললেন। পুরো জিনিসটি নাকি জার্মানির জন্যে একটি ফাঁদ!"

চুক্তিটি একপ্রকার ফাঁদই ছিল। তবে তা জার্মানির জন্যে নয়। অষ্ট্রিয়ার জন্যে। এই চুক্তি সাক্ষর করে অষ্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর কার্ট শুজনিগ ফাঁদে পড়ে যান। চুক্তি সাক্ষর করার সময় কোনো পক্ষই আসলে তা বুঝতে পারেননি। যার কারণে, পাপেনকে অভিনন্দন না জানিয়ে হিটলার তার সাথে সেদিন উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছিলেন।

অন্যদিকে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রমাণিত হল যে, ইটালি তার প্রতিবেশী দেশ অষ্ট্রিয়াকে সুরক্ষা প্রদান করতে আগের মতো আর সক্ষম নয়। সে ধীরে ধীরে জার্মানির উপর তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে। ইটালিকে পাশ কাটিয়ে, নাৎসিদের ক্ষমতা অষ্ট্রিয়ার অভ্যন্তরে পৌছে গিয়েছে এবং দুঃখের বিষয় হল এই যে, মুসোলিনির এখানে আর কিছুই করার নেই।

***

২২শে জুলাই, ১৯৩৬।
অষ্ট্রিয়ার সাথে শান্তি চুক্তি স্থাপনের ১১দিন পর।
বাইরয়েথ(Bayreuth), বাভারিয়া, জার্মানি।

বছরের এই সময়টাতে, হের হিটলার এই ছোট শহরে অপেরা শুনতে আসেন। ২২শে জুলাই রাতে, অপেরা থিয়েটার থেকে তার নিবাসে ফিরে যাওয়ার পর, তার সাথে কিছু লোক দেখা করতে আসেন। এদের মধ্যে দুজনকে তিনি চিনতে পারলেন। তারা নাৎসি পার্টির স্থানীয় নেতা। আরেকজনের পরিচয় জানা গেল, তিনি একজন মরক্কো নিবাসী জার্মান ব্যবসায়ী। একটি অতি জরুরি চিঠি নিয়ে তিনি এসেছেন। ভদ্রলোক চিঠিটি দিয়েই স্থান ত্যাগ করেন। চিঠিটি ছিল স্প্যানিশ বিদ্রোহী ন্যাশনালিস্ট গ্রুপের নেতা, জেনারেল ফ্রাঙ্কোর লেখা। উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই, ১৯৩৬ সালে স্পেনে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যায়।

"
মহোদয়,
আজ এই সংগ্রাম, আমাদের দেশকে দূর্নীতিগ্রস্ত গণতন্ত্র এবং সেই সাথে রাশিয়া কর্তৃক পরিচালিত কমিউনিজমের করাল্‌গ্রাস থেকে বাঁচানোর জন্যে পরিচালিত হচ্ছে। এই চিঠিটি আপনার কাছে দুজন জার্মান ভদ্রলোক মারফত পৌঁছানো হবে, যারা আমাদের সাথে এই দুঃসহ মুহুর্তের শরিক হয়ে আছেন।
সকল প্রকৃত এবং ভালো স্প্যানিশবাসী আমাদের এই মহান সংগ্রামের সাথে যোগদান করেছে। তারা এটি করেছে স্পেইন এবং ইউরোপের ভালোর জন্যে।
স্প্যানীশ নৌবাহিনীর সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠায়, মরক্কোয় নিয়জিত আমাদের পরীক্ষিত সেনাবাহিনীর একাংশকে, মূল স্প্যানীশ ভুখন্ডে আনায়নের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিকুলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার হিসেবে, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, আপনি আমার সেনাবাহিনীকে ১০টি সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পরিবহন বিমান, ২০টি ২০মিমি বিমানবিধ্বংসী কামান এবং ৬টি হাইঙ্কেল ফাইটার বিমান দিয়ে সাহায্য করবেন। সেই সাথে সর্বোচ্চ পরিমাণে রাইফেল এবং মেশিনগান আমাদের প্রয়োজন। এছাড়া প্রয়োজন বিভিন্ন ভরের এয়ার পাম্প, সর্বোচ্চ ৫০কেজি।
স্পেইন চিরকাল ধরে তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে আসছে। কমিউনিজমের বিরুদ্ধে আজ আপনার অবস্থান সুসংহত ।
ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো বাহামনদে,
সুপ্রীম কমান্ডার অফ আর্মড ফোর্সেস ইন মরক্কো।
"


চিঠিটি পড়ে হিটলার সাথে সাথে তার দুই বিশ্বস্ত সঙ্গী, ফিল্ড মার্শাল হেরমান গোয়েরিং এবং সমরমন্ত্রী ভার্নার ভন ব্লমবার্গকে তলব করলেন। তিনি তাদের স্পেনে সামরিক সাহায্য প্রদানের জন্যে আদেশ দেন। হিটলার সাহায্য পাঠানোর জন্যে একটুও দ্বিধাবোধ করেননি। কেননা, স্পেনের পরিস্থিতি তিনি অনেক আগে থেকেই পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি জানতেন গৃহযুদ্ধ আসন্ন। এবং তিনি এও জানতেন, জেনারেল ফ্রাঙ্কো শুধুমাত্র তাকে নয়, বরং মুসোলিনির কাছেও সাহায্যের আবেদন করেছেন। এবং স্পেনকে সাহায্য করার অর্থ হল, ইটালিকে বাগে আনা।

***

স্পেনের প্রতি হিটলারের প্রেরিত সাহায্য ছিল অনেক সুপরিকল্পিত। তিনি জেনারেল ফ্রাঙ্কোর দ্রুত বিজয় কোনোদিনও চাননি। বরং তিনি চেয়েছিলেন যুদ্ধটি অনেক বছর চলুক। এই কারণে, স্পেনের প্রতি জার্মান সাহায্য কোনোদিন ইটালির সমপর্যায়ে পৌছায়নি। যেখানে ইটালি প্রায় ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ জন সেনা, সাহায্যের জন্যে পাঠিয়েছিল, সে তুলনায় জার্মান সাহায্য ছিল অতি নগন্য। হিটলারের ইচ্ছাই শেষতক পূরণ হয়। স্প্যানীশ গৃহযুদ্ধ তিন বছর ধরে চলে। আর এ সময়ে ইটালি হিটলারের হাতের মুঠোয় চলে আসে।

***

জার্মানরা পরবর্তীতে হিসাব করে দেখতে পায়, স্প্যানীশ যুদ্ধে তারা প্রায় ৫০০ মিলিয়ন রাইখস্‌মার্ক খরচ করেছে। সেই সাথে এই যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করার জন্যে, তারা তাদের বিমানবাহিনীর একটি ক্ষুদ্র অংশ সেখানে পাঠায়। সেই বিমানবাহিনীর ইউনিটটির নাম দেওয়া হয় "কন্ডর লিজিওন"। এই কন্ডর লিজিওনের মাধ্যমে, গোয়েরিং তার তরুণ বিমানবাহিনীর সদস্যদের, উপযুক্ত বাস্তবযুদ্ধের অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পেরেছিলেন।

"স্প্যানীশ গৃহযুদ্ধ ছিল আমার তরুণ বিমানবাহিনী লুফট্‌ওয়াফের জন্যে প্রশিক্ষণের উপযুক্ত স্থান। ফুয়েরারের সম্মতিক্রমে, আমি আমার পরিবহন বিমান বহরের একটি বড় অংশ, এ যুদ্ধে প্রেরণ করি। সেই সাথে পরীক্ষামূলক ফাইটার ইউনিট, বম্বার বিমান এবং বিমান বিধ্বংসী কামানের ইউনিট তো ছিলই। তাদের নিয়োজিত করার মাধ্যমে, আমার বুঝতে সুবিধা হয়েছিল, বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের তৈরি যন্ত্রগুলো সঠিকভাবে কাজ করবে কিনা। বিমানবাহিনীর সদস্যদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের জন্যে আমি বদলি নীতির ব্যবস্থা করেছিলাম, যাতে সকলে সুযোগ পায়।" ----- হেরমান গোয়েরিং, ন্যুরেম্বার্গ বিচার, ১৯৪৬।

***

এভাবে ঘটনাবহুল ১৯৩৬ সাল পার হয়ে যায়। ইটালী এবং জার্মানি স্প্যানীশ গৃহযুদ্ধে সরাসরি মদদ দিতে থাকে। তাদের প্রতিপক্ষ, তথা ফ্রান্স এবং ব্রিটেন, নিজেদের অভ্যন্তরীন সমস্যা নিয়ে এতই ব্যতিব্যস্ত ছিল যে, তারা স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের বিরুদ্ধে মৌখিক প্রতিবাদ ছাড়া আর কিছুই করেনি।

১৯৩৭ সালের শুরুর দিকে, হিটলারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন দূত মুসোলিনির দরবারে গমন করেন। তাদের উদ্দেশ্য, মুসোলিনির বন্ধুত্ব পুরোপুরি নিশ্চিত করা। ১৫ জানুয়ারি, ফিল্ড মার্শাল হেরমান গোয়েরিং নিজে মুসোলিনির সাথে দেখা করতে যান। কিন্তু গোয়েরিং অষ্ট্রিয়ার কথা তোলার সাথে সাথে, মুসোলিনি ভয়ানক ভাবে মাথা নাড়েন। তিনি বুঝালেন, অষ্ট্রিয়ার ব্যাপারে ইটালি তখনো অনড়। জুন মাসে, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে পুনরায় রোমে যান এবং মুসোলিনিকে আশ্বস্ত করেন যে, অষ্ট্রিয়াকে দখল করার কোনো ইচ্ছা জার্মানির নেই। জার্মানি এবং অষ্ট্রিয়ার মধ্যে শান্তিচুক্তিটি নিরর্থক নয়।

মুসোলিনির তখন জয়জয়কার। জার্মানিকে তিনি চুপ করিয়ে রেখেছেন। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স তার বিরুদ্ধে টু শব্দটিও করতে পারে না। তাদের নাকের ডগা দিয়ে তিনি ইথিওপিয়া দখল করেছেন। তাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও, তিনি জেনারেল ফ্রাঙ্কোকে স্প্যানীশ যুদ্ধে মদদ দিচ্ছেন। তার সেনাবাহিনী স্প্যানীশ যুদ্ধে তীব্র পারদর্শীতার সাথে সকল প্রতিরোধ গুড়িয়ে দিচ্ছে। আর এমনই এক সুসময়ে, সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ, ১৯৩৭ সালে, মুসোলিনি বার্লিনগামী এক বিমানে চেপে বসলেন, ফুয়েরারের আমন্ত্রণে, তার প্রথম জার্মান সফরের উদ্দেশ্যে। এই এক সফর, যা পরবর্তীতে ইউরোপের ক্ষমতার মানচিত্র পুরোপুরি পালটে দিবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রধান খেলা, এর পরপরই শুরু হয়ে যাবে।

****

মুসোলিনির এই জার্মানি সফরে, তার সাথে কোনো ধরণের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা করা হয় নি। বরং, এই সফরের শুরু থেকেই, সফরের জন্যে বিশেষ সামরিক পোশাকে সজ্জিত "এল দুচে" খ্যাত মুসোলিনিকে, জার্মানির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে, বিভিন্ন সামরিক প্রদর্শনীতে নিয়ে যাওয়া হতে লাগলো। একদিন তাকে S.S বাহিনীর প্যারেডে নিয়ে যাওয়া হয়, তো আরেকদিন নিয়ে যাওয়া হয় মেকেলেনবার্গে ট্যাঙ্ক প্রদর্শনীতে। আরেকদিন তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রুহ্‌র(Ruhr) অঞ্চলের কানে তালা লাগানো সামরিক কারখানাগুলোতে।

সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ, তথা মুসোলিনির সফরের তৃতীয় দিনে, তার আগমনের উদ্দেশ্যে, বার্লিনে একটি উৎসবের আয়োজন করা হয়। ১০লাখ মানুষের এক বিশাল জনসভায়, মুসোলিনি এবং হিটলার বক্তৃতা দেন। মুসোলিনির চোখে তৃপ্তির চরম ঝিলিক ছিল। ১০ লাখ মানুষের সম্মিলিত গগনবিদারী চিৎকারে, এবং সেই সাথে হিটলারের অতি বিনয়ী বক্তৃতায় তিনি উদ্বেলিত ছিলেন। এমতাবস্থায় হঠাৎ করে আকাশে ভয়ানক বজ্রপাত আরম্ভ হয়ে যায় এবং একটি বজ্রপাত জনসভার কাছাকাছি এসে পড়ে। চারিদিকে সামান্য বিশৃঙ্খলা দেখা দিলেও, তা মাইকের সামনে দাঁড়ানো মুসোলিনির উৎফুল্ল মনোভাবে কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। তার পাশে দাঁড়ানো হিটলার বুঝতে পারছিলেন, মুসোলিনি তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে ফেলেছেন। ভবিষ্যতে জার্মানির সঙ্গী হবে ইটালি। মুসোলিনির ভবিষ্যত এখন জার্মানদের সাথী করে রচিত হবে।

****

অক্টোবর, ১৯৩৬ সাল।

কমিউনিজমের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রতিরোধ সৃষ্টি করবার লক্ষ্যে, জার্মান পররাষ্ট্রদূত জোয়াকিম ভন রিবেনট্রপ, ইটালি গমন করেছেন। তার উদ্দেশ্য, একটি কমিউনিজম বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর করা। চুক্তি স্বাক্ষরকালে, তিনি মুসোলিনির কাছে হঠাৎ অস্ট্রিয়ার কথা জিজ্ঞেস করে বসলেন। মুসোলিনির কাছ থেকে উত্তর আসলো, "প্রকৃতিকে তার আপন গতিতে চলতে দাও।" সত্যই, এই মুসোলিনি, আর ১০ মাস আগের মুসোলিনির মাঝে অনেকটুকু তফাৎ। ১০ মাস আগের মুসোলিনি কখনো এই কথা বলতে পারতেন না।

জার্মানির ফুয়েরার এডলফ হিটলার ঠিক এই উত্তরটি শুনার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি জানতেন, অষ্ট্রিয়া দখল এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

****
রেফারেন্সঃ ১] দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অফ দ্য থার্ড রাইখ, আলান শাইরার।
২] হিটলার, এ স্টাডি ইন টির‍্যানি। আল্যান বুলক।
৩] হিটলার'স ওয়ার অ্যান্ড দ্য ওয়ার পাথ। ডেভিড এরভিং।

***

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আমার লেখা দুটো সিরিজ আছে। পড়ে আসুন আমার ব্লগে। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২৬
২৬টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×