somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্পঃ পাখিপাঠ

২১ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এক

একদিন দুপুরে- চা বিক্রি বন্ধ রেখে- শিবু দোকানে বসেই কাচা হলুদ পিষতে বসে। চা খেতে আসা লোকেরা- ‘এইবার পুরা মাথা গেছে’ বলে- মনোযোগ দিয়ে কাজটা দেখে, আর কিছুক্ষণ পরে বলে, ‘ও শিবু, আরেকটু মিহি কর।’ শিবু আংটা ভাঙা একটা কাপ দিয়ে হলুদ পিষে মিহি বানায়। ‘আমি লাগায়া দেই’ বলতে বলতে কে যেন একদলা হলুদ আঙ্গুলে মাখায়, তারপর জিজ্ঞেস করে, ‘হইল কেমনে?’ শিবু বলে, ‘বিলাইয়ের কাম!’ লোকটা টিয়া পাখিটিকে ধরতেই পেছন থেকে কে যেন বলে ওঠে, ‘আরে কানা, বাম না, ডাইন পাখনা, ডাইন পাখনা!’ শিবু বলে, ‘দুই পাখনাই গেছে।’ লোকটা যত্ন নিয়ে পাখিটির ভাঙা পাখনায় হলুদ মাখায়। কে যেন বলে, ‘ও শিবু, একটা ব্যাণ্ডেজ হইলে ভাল হইতো।’ কথাটি শুনে পেছন থেকে কারা যেন খ্যাক খ্যাক করে হাসে; হাসতে হাসতে একজন আরেকজনের উরুতে থাপর মারে এবং উরু ডলতে ডলতে গালি দেয়, ‘দুশ-শালা।’ তারপর হাসি থামলে ‘আরে, টিয়া ছিল আমার ফুপু বাড়ীতে'- বলে কে যেন গল্প শুরু করে। গল্প জমে ওঠে। শিবু চা বানায়।

পরের দিন দু’টি শিশু স্কুলে যাওয়ার পথে শিবুর দোকানে থামে, তাদের দেখাদেখি আরো একজন, এরপর আরো কয়েকজন। হঠাৎ করে বটতলায় পাখিদের ছুটি হয়, শিশুদের আসর বসে; কিচির-মিচির গলায় একজন জিজ্ঞেস করে, ‘ও দাদা, তোমার টিয়া কথা কয়?’ শিবু ডানে-বায়ে মাথা নাড়ে, বলে, ‘এখনো শিখতেছে।’
- ‘পাখনায় কি হইছে?’
- ‘বিলাইতে কামড়াইছিলো, ওষুদ দিছি।’

শিশুরা বড় বড় চোখে পাখিটির দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর বটগাছে বিড়াল খোঁজে। শিবু বলে, ‘বিলাই পরে খুঁইজো, এখন স্কুলে যাও।’

একঝাঁক শিশু সকালের স্কুলে যায়। পথে নামার আগেই অজানা হীরামন পাখির জন্য তাদের মনটা কেমন করে, স্কুলে নামতা শেখার আগেই শুরু হয় পাখিপাঠ।

শিশুরা বিদায় নিলে- বুকের কাছে পাটিগণিত বই, আর মুখে হাসি নিয়ে আনোয়ারা এসে দাঁড়ায়, বলে, ‘ও শিবু দাদা, তোমার টিয়ার কথা শুনলাম।’ আনোয়ারাকে দেখে শিবুও হাসে, বলে, ‘কাইল প্রদীপ আসছিল।’ প্রদীপের নাম শুনেই আনোয়ারা এক পলক মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে, পাখির খাঁচায় হাত বোলায়, জিভ দিয়ে শব্দ করে, তারপর আস্তে আস্তে বলে, ‘ও পাখি, নাম কি তোমার?’ ‘প্রদীপ এইটা দিছে’, শিবু আনোয়ারার হাতে ভাঁজ করা একটি কাগজ দেয়। বইয়ের ফাঁকে সেটিকে গুঁজে রেখে- লজ্জায় লাল হয়ে উঠতে উঠতে আনোয়ারা বলে, ‘আব্বারে কিছু বইলো না।’ শিবু কিছু বলার আগেই আনোয়ারা আবার ফিসফিস করে, ‘দাদা, তোমার পাখিটা খুব সোন্দর হইছে।’


দুই

টিয়া পাখির খাঁচায় ঝুলানো একগোছা শুকনোমরিচ। শিবু বলে, ‘দিনে আধপোয়া মরিচ লাগে কত্তার।’ মরিচখোর টিয়ার দিকে খদ্দেরা তাকিয়ে থাকে। টিয়া পাখি নখ দিয়ে খাঁচার গায়ে ঝোলে, টুকটুকে লাল ঠোঁটে খাঁচায় ঠোকর মারে। শিবু চায়ের কাপে টিয়ার খাঁচায় পানি দিতে দিতে বলে, ‘দিনে দুই কাপ জলও লাগে।’
- ‘এতকিছু জানলি কেমনেরে শিবু?’
- ‘বিয়া করা, চা বানানি, আর টিয়া পালা কারোরে শিখায়া দিতে হয়না।’

কথা বলতে বলতে শিবু ওপরের দিকে তাকায়, অন্যরাও সে দৃষ্টি অনুসরণ করে। তবে কারো চোখই বেশী দূর এগোয় না, দোকানের মাথায় টাঙানো নীল পলিথিনে আটকে যায়। শিবু তাকিয়েই থাকে। খদ্দেররা চোখ নামিয়ে সাগরকলা ঝুলানো সূতালিতে মাছি দেখা শুরু করলে- শিবু বলে, ‘হুলা আসে।’ তারপর মান্দারের একটা কাঠ হাতে নিয়ে- ‘আইজ তোর খবর আছে’ বলতে বলতে পলিথিনের চালায় গুতা দেয়। বটের কয়েকটা শুকনো পাতা, আর কীসব হাবিজাবি নীচে পড়ে। কাপ ছলকে কার যেন গায়ে চা পড়ে, সে চেচায়, ‘কী হইলোরে শিবু?’ শিবু দ্বিগুন জোরে পলিথিনে বাড়ি মারে, বলে, ‘হুলার বাচ্চা, তোরে খাইছি!’ বটতলায় দাঁড়িয়ে থাকা একজন বলে, ‘টিয়া আনার পর থিকা শালার মাথামুথা গেছে! ওই শিবু, গাছে বিলাই থাকেনিরে!’ শিবু আপাত অদৃশ্য বিড়ালের মা-বাপ তুলে গালি দেয়, লাঠি ফেলে গামছায় হাত মোছে, মুঠোভর্তি চা পাতা গরম পানিতে ছুড়ে দিয়ে ক্ষাণিক তাকিয়ে থাকে কেতলির দিকে, তারপর বলে, ‘থাকে না আবার!’

শিবুর কথার সূত্র ধরে বটতলায় বিড়ালের গল্প ওঠে। কারো ছোট খালার শ্বশুর বাড়ী থেকে গল্পটা শুরু হয় এবং সেটি এ-গ্রাম সে-গ্রাম ঘুরে মোতালেবের মামা বাড়ীতে এসে ঘুরপাক খেতে থাকে। এমন সময় শিবুর গলা শোনা যায়, ‘ও পবন, কওতো- বোল হরি, হরি বোল।’ মোতালেবের মামা বাড়ীর খাটাশ না-কি বেড়ালের গল্পে উত্তেজনা তৈরীর আগেই শ্রোতাদের একজন বলে, ‘ও শিবু, পবন কেরে?’
'ক্যা জানোনা, শিবুর টিয়ার নাম!’, মস্করার রসে কে যেন একদানা মিশ্রি ফেলে।
মোতালেবের পাশে বসা লোকটি দাঁত খোঁচানো বন্ধ রেখে বলে, ‘দুশ-শালা, টিয়া পক্ষীর নাম আবার পবন হয় ক্যামনে! নাম শুনলেই মনে হয়- কালা ভইস্যা গরু, গতর ভর্তি পশম!’
-‘ও শিবু, তোর টিয়ার নাম মালতি রাখ।’
-‘দূর ব্যাটা, এইডা মর্দা টিয়া।’
'তাইনি!’ মালতি নামের প্রস্তাবদাতা টিয়ার দিকে তীক্ষ্ণ নজর দেয়, ডানে-বায়ে চোখ ঘুরিয়ে কি যেন খোঁজে, তারপর টিয়া পাখির লিঙ্গ পরিচয় অনিশ্চিত রেখেই জিজ্ঞেস করে, ‘ও শিবু, টিয়া কি তোর মতোই আ-কাটা নি?’

শিবুর খৎনা না হওয়া শিশ্ন পরিচয়- বটতলায় হাসির পিচকিরি মারে। বটের পাতা, বেকার কিছু মানুষ, আর বিশ্রাম নেয়া রিক্সাগুলো এর-ওর গায়ে ঢলে পড়ে। হাসতে হাসতে কার যেন লুঙ্গির গিট ঢিলে হয়ে যায়, নাকি কেউ তার লুঙ্গি ধরে টান মারে বলেই- ঝপ করে তাকে মাটিতে বসে পড়তে হয় এবং তাতে হাসির কুচিঢেউ সশব্দে বটতলায় আছড়ে পড়ে। রাস্তার লোকজনের বটতলার আড্ডা দেখে; শিবু চুলায় লাকড়ি ঠেলতে ঠেলতে আবার বলে, ‘ও পবন, কওতো- বোল হরি, হরি বোল।’ মানুষের হাসি আর শিবুর হরিনামে টিয়ার বিশেষ আগ্রহ নেই, সে শুকনো মরিচ খাচ্ছে।

শিবেন দাসের টিয়া শুকনো মরিচ খায়, পানি খায়, খোসার গায়ে লেগে থাকা সাগর কলা খায়। তার খদ্দেররা, যারা টিয়াটির নাম ‘মালতি হইলেই বেশী ভালো হইতো’ মনে করে, তারাও চায়ে চুমুক দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে বলে ওঠে, ‘ও পবন, কওতো- বোল হরি, হরি বোল।’


তিন

একদিন টিয়া পাখিটি চুপচাপ বসে রইলো, তার সামনে পড়ে রইলো আধ-পোয়া শুকনো মরিচ, আধ-খাওয়া একটা সাগর কলা, কাপ ভর্তি পানি। শিবু ক্যাশবাক্সে প্রণাম শেষে বার কয়েক বলল, ‘ও কত্তা, কি হইছে তোমার? ও কত্তা!’

সেদিন স্কুলে যাওয়ার পথে শিশুরা এলো বটতলায়। পাখির খাঁচার পাশে দাঁড়িয়ে তারা মিহিগলায় ডাকলো, ‘ও পবন! ও পবন!’ ওদের কেউ একজন শিবুকে জিজ্ঞেস করলো, ‘টিয়ায় কথা কইবো কবে?’ শিবু চায়ের কেতলিতে পানি ঢালতে ঢালতে বললো, ‘তোমরা যেদিন পাচের-ঘরের নামতা কইতে পারবা।’
- ‘আমি পারি, পাচ অক্কে পাচ, পাচ দু’গুনা দশ, তিন পাচায়-’
- ‘কওতো পাচ-সাত্তায় কত হয়?’
- ‘পাচ-সাত্তায়? পাচ-সাত্তায়- পাচ অক্কে পাচ, পাচ দু’গুনা দশ-’
- ‘একবারে কও।’

শিশুরা আঙ্গুল গোণে, তাদের পাঁচের নামতা প্রতিদিন একই জায়গায় ঠোক্কর খায়। শিশুরা নামতায় ভুল করে, পাখির হরি বোল ফোটে না।

শিশুরা চলে গেলে আনোয়ারা আসে। শিবু প্লাস্টিকের বয়ামে নোনতা বিস্কুট রাখতে রাখতে একনজর মেয়েটিকে দেখে। আনোয়ারা একটু দূর থেকেই পাখিটিকে ডাকে, ‘ও পবন!’ তারপর কাছে এসে বলে, ‘দাদা, টিয়ার কি হইছে?’ শিবু পাখির খাঁচার দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর বলে, ‘কাইল প্রদীপ আইছিল।’ আনোয়ারা চুপ করে থাকে, কী যেন ভাবে, তারপর হঠাৎ মনে পড়ে গেছে এমন ভঙ্গিতে বলে, ‘আমার কথা কিছু কইলো?’ শিবু বলে, ‘কিছু কয় নাই!’ আনোয়ারা অঙ্ক বইয়ের পাতা ওল্টায়, সরল অঙ্কগুলোর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে, তারপর লজ্জায় মাটিতে মিশে যাওয়ার আগে কোনোমতে বলে, ‘প্রদীপরে বইলো- এই শুক্রবারে আমারে দেখতে আইবো।’ মেয়েটি হয়তো টিয়া পাখিকে কথাগুলো বলেছিল, অথবা সে কিছুই বলেনি- তবু সে অপেক্ষা করে এবং একসময় সে শিবুর দিকে তাকায়, কেমন করে হাসে, বলে, ‘দাদা, পবনের যত্ন নিও।’

আনোয়ারা চলে গেলে বটতলায় মিহির আসে, আসে তাজুল। এরই ফাঁকে সূর্য চড়াও হয় মৃধাবাড়ীর টিনের চালায়। আড্ডা জমে। শিবু চা বানায়। পবন নামের টিয়া পাখিটি চুপ করে বসে থাকে খাঁচায়।

চায়ে চুমুক দেয়ার আগে কে যেন জিজ্ঞেস করে, ‘ও শিবু, তোর টিয়ার কী হইছে? শালাতো ঘাপটি মাইরা রইছে!’ কেউ একজন উত্তর দেয়, ‘মনে হয় বাড-ফ্লু।’
- ‘দূর গাধা, বাড-ফ্লু মুরগীর রোগ।’
- ‘তাইলে রাণীক্ষেত। দেখোনা, কেমন ঝিমায়!’

এ আলোচনায় ইয়াকুব মিয়া ঢুকে পড়ে, বলে, ‘বাউসী হইতে পারে, কি কও?’ কথা শেষ হওয়ার আগেই সাত জোড়া চোখ ইয়াকুব মিয়ার দিকে নেমে আসে এবং সে ভস্ম হয়ে যাওয়ার আগে গরম চায়ে জিভ পুরিয়ে ফেলে। ‘ওই হারামী, তোর না বাজারে যাওয়ার কথা!’, এক বৃদ্ধ হাপানি আর শ্লেষ্মা ঠেলে ইয়াকুবকে ধমকায়। বৃদ্ধের কথার ঝাঁজ তাকে বাজারের পথে ঠেলে দেয়; পেছন থেকে তারস্বরে একজন বলে; ‘ও ইয়াকুব, চা শেষ কইরা যা!’ ইয়াকুব দৃষ্টির আড়ালে চলে গেলে- বৃদ্ধ হাপাতে হাপাতে বিড়বিড় করে, ‘গাধার বাচ্চা!’ কথাটি শেষ হওয়ার আগেই আরেকজন ফোড়ন কাটে, ‘যেমন বাপ!’ বৃদ্ধের হাপানি দ্বিগুন হয়, কাশি ওঠে; তারপর হাপানি আর কাশির ফাঁকে বলে ওঠে, ‘দূর হারামী!’ শিবু টিয়ার খাঁচা থেকে চোখ না সরিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘কাকার বাউসি কতদিনের?’ বুড়োর বেদম কাশি শেষে- ‘দূর হারামী’ কথাটি শোনার জন্য সারা বটতলা অপেক্ষা করে; হরিলাল বিড়িতে শেষ টান দিতে দিতেও দেয়না, ফেলবে বলে মুখে আনা একদলা কফ গলার কাছে আটকে রাখে আব্দুল হাই। বুড়ো ঊঠে দাঁড়ায়, বলে, ‘শিবু, তোর টিয়ারে ডাক্তার দেখা!’ এরপর সে বটতলার জটলা থেকে আলাদা হয়ে পথে নামলে ছায়া তৈরী হয়, সূর্যের নীচে একলা মানুষের ছায়া। সেদিকে তাকিয়ে থেকে বটতলার আড্ডাবাজরা ক্লান্ত হয়ে উঠলে- তুলশীপাতার রস, আর মধু দিয়ে কি করে হাপানীর অব্যর্থ দাওয়াই বানাতে হয়- সে গল্প ওঠে; যে গল্পের লেজ থেকে কাহিনী জন্ম নেয়, আর কাহিনীর আঙ্গুল থেকে বেড়ে ওঠা ইতিহাস দেখতে দেখতে রজবতী হয়ে ওঠে।

'আরে, আমার মাইজা খালার বড় ননদেরতো একবার জান যায় যায় অবস্থা। তার হইছিল হাপানী, যারে কয় ঘুইষা হাপানি’, লোকটির কথা শেষ হওয়ার আগেই আরেকজন শুরু করে, ‘রাখ তোর মাইজা খালার ঘুইষা হাপানি! ওই হালিম, তুই আমার বড় মামার হাপানী দেখোস নাই! আজরাইল খাড়াইয়া থাকতো তার কইলজার মধ্যে-’, বটতলার গল্প জমে।

হাপানীর ওষুধ দেশ-বিদেশ ঘুরে হোমিওপ্যাথিতে এসে থামলে- গল্পবাজদের একজন বলে ওঠে, ‘ও পবন, কওতো- বোল হরি, হরি বোল।’ শিবুর টিয়া পাখি অনড় বসে থাকে, দুটো মাছি খাঁচার পাশে ভনভন করে। শিবু তার টিয়ার খাঁচায় মৃদু ঝাঁকুনি দেয়, বলে, ‘ও কত্তা, কী হইলো তোমার?’ হঠাৎ করে বটতলার গল্প থেমে যায়। আড্ডার পেছনে বসে থাকা একজন ঊঠে আসে, বলে ‘কী হইছেরে শিবু?’ হরিলালের পাশে হাটু অব্দি লুঙ্গি গুটিয়ে রাখা ইসমাইল, আর তোরাব আলী হায় হায় করে ওঠে। কে যেন বলে, ‘ডাক্তারখানায় নিয়া চল।’

শিবুর টিয়া পাখি এহাত-ওহাত ঘুরে বেড়ায়, কে যেন তাকে বুকের কাছাকাছি শক্ত করে ধরে রাখে, কেউ একজন অনাবশ্যক উচু গলায় বারবার বলতে থাকে ‘ও হরিলাল রিক্সা বাইর কর, হসপিটালে যাব।’ পাখিটিকে বুকের কাছে ধরে রাখা লোকটি ফিসফিস করে বলে, ‘এখনো জান আছে।’ দাড়িওয়ালা একজন বটগাছের সবগুলো পাতা কাঁপিয়ে বলে ওঠে, ‘ইয়া মাবুদ!’ তোরাব আলী হাত রাখে ইসমাইলের কাঁধে; ইসমাইল শিবুর টিয়া পাখিটি দু’হাতের আজলায় তুলে নেয়, যেন দু’হাতের মুঠোয় আটকে রাখা যায় অমরতা।

মধ্যদুপুরে বটের ঘন ছায়ার নীচ থেকে এক দঙ্গল মানুষ নেমে আসে রাস্তায়। সূর্যের নীচে পুড়তে থাকা জীবনের ছায়া পড়ে মাটিতে; মুঠোয় মুঠোয় জীবন বয়ে বেড়ানো মানুষের ছায়া।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:১১
৬১টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×