somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, Lee Kuan Yew কে একটাও বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মেডিকেল কলেজ এর লাইসেন্স দিতে হয় নাই সিঙ্গাপুর এর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত ২৮ শে জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ বেড়িয়েছে "প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মেডিকেল কলেজ চেয়েছে পুলিশ।" আমার ব্যক্তিগত অভিমত দেশে বর্তমানে ৫৪ টা ব্যাংক থাকার পরেও ব্যাংকের লাইসেন্স চাওয়ার অঘোষিত কারণ ঘুষের টাকা সরকারি ব্যাংকে রাখা নিরাপদ মনে করতেছেন না পুলিশের ঘুষখোর কর্ম-কর্তা ও সৈনিকরা। মেডিকেল কলেজের লাইসেন্স চাওয়ার কারণ নিজেদের অযোগ্য ছেলে মেয়েদের কে বর্তমানে দেশের ২৯ টা সরকারি মেডিকেল কলেজে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে ডাক্তার হওয়ার যোগ্যতা রাখে না বা সেই আত্মবিশ্বাস নাই।

বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী বা প্রগতিশীল শ্রেণীর মানুষরা সারা জীবন মুখ বিক্রি করল বা কলমের কালি যে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সেনাবাহিনীকে ম্যানেজ করে ক্ষমতায় আসে। ইতিহাস ঘাইটা দেখা গেল স্বাধীনতার প্রথম ৪০ বছরে সেনাবাহিনী পেয়েছে ১ টা মেডিকেল কলেজ ও ১ টা বিশ্ববিদ্যালয়; যেগুলোতে প্রধান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের জন্য কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হত। গত ৭ বছরে নিশ্চয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২, ৩ বা ৪ গুন বৃদ্ধি করা হয় নাই!!! হঠাৎ করে কেন তাদের ৪ টা মেডিকেল কলেজ ও ৪ টা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইসেন্স এর প্রয়োজন পড়ল?

৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ নির্বাচনের ঠিক পূর্বে সেনাবাহিনী ৪ টা মেডিকেল কলেজ ও ৪ টা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন করে ও সরকার কোন কাল বিলম্ব না করে লাইসেন্স দিতে রাজি হয়ে যায়।

পত্রিকায় সংবাদ বেড়িয়েছে "প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মেডিকেল কলেজ চেয়েছে পুলিশ।"

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের শতকরা ৮০ ভাগ আসে গার্মেন্টস শিল্প থেকে; এখনও দেশের জিডিপি উন্নয়নের শতকার ২০ ভাগ যোগান দেয় কৃষক; বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের অর্ধেক যোগান দেয় মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত গায়ে গতরে খাটা শ্রমিক। গার্মেন্টস শ্রমিক ও তাদের পরিবার, মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত শ্রমিক ও তার পরিবার ও কৃষকদের জন্য গত ৭ বছরে কি কি পদক্ষেপ নিয়ে তা জানতে ইচ্ছে করতেছে।

বাংলাদেশের কোন এলাকায় দরিদ্রতা কতটুকু কমেছে জানিনা; গত ১৭ ই অক্টোবর দৈনিক প্রথম আলোতে সাংবাদিক মশিউল আলম একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন যার শিরোনাম ছিলো ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা’ ও ভাত খাওয়ার গল্প । পঞ্চগড় জেলা শহরে খবার হোটেলে বসে যে দারিদ্রতার যে চিত্র দেখেছেন সেই চিত্র উত্তর বঙ্গের ৭ টি জেলার বিশাল একটা জন গোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনেরই বাস্তব চিত্র। এই চিত্র কতটুকু সত্য সেটা বিশ্বাস করার জন্য আপনাকে জনাব মশিউল আলমের মতো ঐ সকল জেলায় গিয়ে সরা দিন হোটেলে বসে মানুষের সাথে কথা বলতে হবে, দেখতে হবে।

কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ অপেক্ষা কেয়ক গুন বেশি ছেলে-মেয়ে পড়তে আসে। এই ঐ ছেলে মেয়েদের মধ্যে অর্ধেকই হলো সেনাবাহিনীতে কর্মকর্তাদের। আজ থেকে ১০০ বছর পূর্বে ব্রিটিশরা উপমহাদেশে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য সেনাবাহিনীতে কর্মরত এদেশীয় কর্মকর্তাদের পাকিস্তানের সবচেয়ে উর্বর এলাকায় হাজার হাজার একর কৃষি জমি বরাদ্দ দেয়,বসবাসের জন্য সকল সুবিধা যুক্ত আবাসিক এলাকা বানিয়ে দেয়। ব্রিটিশ সরকারের অনুগত্য লাভের জন্য চালু ঐ পলিসি ধীরে ধীরে উপ মহাদেশে জন্ম দেয় পাঞ্জাবি নামক এক এলটি শ্রেণী।

ব্রিটিশরা উপমহাদেশ ছেড়ে চলে গেছে সেই ১৯৪৭ সালে কিন্তু গোখরো সাপের মতো বিষাক্ত শ্রেণীটি ১৯৪৭ সালের পর থেকে পূর্বপাকিস্তানের মানুষের উপর শোষণ, নিপীড়ন চালিয়েই চুপ থাকেন নি ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেন নি। ১৯৭১ সাল মুক্তি যুদ্ধে পাঞ্জাবি সেনা কর্মকর্তারাই গণহত্যায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। ভারত ভাগের ৭৮ বছর পার হয়ে গেলেও পাকিস্তানের রাজনীতি, অর্থনীতি কোন কিছুতেই সেনাবাহিনীর প্রভাব কমে নি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলতে ঘুরে ফিরে ঐ পাঞ্জাবিদেরকেই বুঝায়। পাঞ্জাবি জেনারেলরাই সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়ন্ত্রণ করে চলছে কাল ক্রমে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার প্রতি কড় জোড়ে মিনতি করি ব্রিটিশরা যেমন পাঞ্জাবী নামক এলিট শ্রেণী তৈরিক করে পাকিস্তানি জাতিটিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে তেমন করে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে একটা এলিট শ্রেণী তৈরি করবেন না। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিশেষ সুবিধা নিয়ে দিনে দিনে এলিট শ্রেণীতে পরিণত হবে। বাংলাদেশের কৃষক পরিবারের ছেলে-মেয়রা রাষ্ট্রের কাছ থেকে একই রকম সুবিধা না পেয়ে পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের মানুষদের মতোই উগ্রপন্থা বা পন্থার দিকে ধাবিত হবে।

বাংলাদেশে যেমন করে একটি সুবিধাবাদী শ্রেণী সৃষ্টি করা হচ্ছে তাতে করে বাংলাদেশে কোন দিনও উগ্রপন্থা বিস্তার ঠেকানো সম্ভব হবে না। পুলিশ, সেনাবাহিনী সহ পৃথিবীর কোন বাহিনীই চরম পন্থার বিস্তার ঠেকিয়ে রাখতে পারে নাই; যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি। পৃথিবীর ইতিহাস সেটাই সাক্ষ্য দেয়। একই সাথে পৃথিবীর ইতিহাস এটাও সাক্ষ্য দেয় যে চরম পন্থার বিস্তার ঠেকানোর একমাত্র কার্যকর উপায় হলো সমাজে বৈষম্য কমানো। রাষ্ট্রের চোখে প্রতিটি নাগরিক সমান; সবাই একই রকম সেবা আশা করে রাষ্ট্রের কাছ থেকে।

পৃথিবীতে সবচেয়ে কম অপরাধ সংগঠিত হয় স্কান্ডেনেভিয়ান দেশ গুলোতে। ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬, জার্মানির বার্লিন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) বিশ্বজুড়ে দুর্নীতির ধারণাসূচক (সিপিআই) ২০১৫-এর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশের মর্যাদা পেয়েছে ডেনমার্ক।

গত কয়েক বছর পূর্বে জানতে পেড়েছিলাম যে ডেনমার্কে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ঐ স্কুলের টয়লেট ক্লিনারের বেতন প্রায় একই সমান। প্রধান শিক্ষকের বেতন ২০ টাকা হলে কুলির বেতন ১৯ টাকা। যে কারণে ঐ দেশের কাউকে ঘুষ দিতে হয় না বা কেউ ঘুষ খায় না।

২০০৮-২০০৯ শিক্ষা বর্ষে ইতালির Abdus Salam International Centre for Theoretical Physics (ICTP) এ পড়া কালীন দেখেছি সেখানকার পরিচালক বিশ্বের অন্যতম নামকরা বৈজ্ঞানিক খাবার ট্রে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন টয়লেট ক্লিনিং মহিলার পিছনে। বিল পরিশোধ করে দুই জনই একই টেবিলে গিয়ে বসেছে দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য।


দুর্নীতিতে সারা বিশ্বের ১৬৮ টা দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পিছন দিক থেকে ১৩ নম্বর। অর্থাৎ, বিশ্বের ১৩ তম সেরা দূর্নিতীগ্রস্ত দেশ আমাদের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্থান ছিল ২০১৫ সালে ১৪ তম; এবারে হয়েছে ১৩ তম। তবে ১ ধাপ এগিয়ে যাওয়াতে আমাদের কোন কৃতিত্ব নাই। ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে দুর্নীতি কমে নাই। ২০১৪ সালে ১৭৫টি দেশের মধ্যে উচ্চক্রম অনুযায়ী, বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৫তম। ২০১৫ সালে ১৬৮টি দেশের মধ্যে উচ্চক্রম (ভালো থেকে খারাপের দিকে) অনুযায়ী, বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯তম। সূচকের ১০০ মানদণ্ডের মধ্যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের স্কোর বা নম্বর ২৫। ২০১৪ সালেও বাংলাদেশ ২৫ নম্বর পেয়েছিল ১০০ এর মধ্যে।

আমি বিশ্বাস করতে পারি না যে ৪ বছর বাংলাদেশ সারা বিশ্বের দূর্ণিতীগ্রস্ত দেশ গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল তার চেয়ে বর্তমান সময়ে দুর্নীতি কমে গেছে। আমি জানিনা বাংলাদেশের সরকারি কোন সার্ভিসটি ঘুষ ছাড়া পাওয়া যায়। কেউ জানলে দয়া করে আমাকে জানালে বাধিত থাকিব।

১) ঢাকার বাহিরের সরকারি হসপিটাল গুলোতে গিয়া রোগীদের প্রশ্ন করেন ঘুষ না দিয়া বেড পেয়েছে কি না?

২) অবসরপ্রাপ্ত শিকক্ষ কেরামত আলীকে প্রশ্ন করেন ঘুষ না দিয়া পেনশনের টাকা পেয়েছে কি না?

৩) কৃষক গনি মিয়াকে প্রশ্ন করেন ঘুষ না দিয়া সার বা সেচের ভুর্তুকীর টাকা পেয়েছে কি না?

৪) সাহস থাকলে গ্রামে গিয়া কৃষক গনি মিয়াকে প্রশ্ন করেন সার, সেচ, বীজের খরচ বাদ দিয়ে ১ বিঘা জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে কয় টাকা হাতে পেয়েছে?


দরবেশ বাবার সরকারি ব্যাংক থেকে মেরে দেওয়া ২ হাজার কোটি টাকার সাথে গার্মেন্টস শ্রমিক মালেকা বেগমের ৬ হাজার টাকা বেতন যোগ করে ২ দিয়া ভাগ করে সংসদ নামক মাছের বাজারে বসে হিসাব দিবেন বাংলাদেশের ২ জন মানুষের গড় আয় ১ হাজার কোটি ৩ হাজার টাকা ও নিম্ন মধ্যবিত্ত দেশ বইলা পিঠ চাপড়াইবেন তাতে কোন লাভ নাই। রাতের আধারে ঢাকার বস্তি গুলাতে আগুন দিয়া ভোরে বস্তির স্থানে পুলিশ বসাইয়া দিয়া পরের বছর গলাবাজি করবেন দ্যাখ দ্যাখ ঢাকায় এখন কোন বস্তি নাই। বস্তির স্থানে ২০ তলা ৩০ তলা বিল্ডিং উঠছে। পূর্বে দেশের কিছু মানুষ দিনে বা ফি হপ্তায় ঘ্যাঁস খাইলেও কৃষি প্রযুক্তির কল্যাণে এখন অন্তত আলু ভর্তা দিয়া ভাত খাইতে পারে। পূর্বে আয়োডিন যুক্ত লবণের অভাবে দেশের অনেক বোকা মানুষের জন্ম হইলেও বর্তমান প্রজন্মের খুব কম মানুষই আয়োডিন স্বল্পতায় ভুগে।

আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট Abraham Lincoln এর একটা বিখ্যাত উক্তি মনে করিয়ে দিতে চাই

"You can fool all the people some of the time, and some of the people all the time, but you cannot fool all the people all the time." -

গত ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সুইজারল্যান্ডের ডাভোস নামক শহরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একটা উক্তি করেছেন "GDP is not a good measure of economic performance, it's not a good measure of well-being"



গত ১ মাসে পুলিশ বাহিনীর বেশ কিছু সদস্যের অপরাধ কর্মকাণ্ডের সংবাদ পড়ে পিলে চমকে যায়। ২০১৬ সালের শুধু জানুয়ারি মাসে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের অপরাধ গুলোর প্রকৃতি দেখলে বোঝা যায় তারা কি পরিমাণ বেপরোয়া। টাকা আদায় করার জন্য নিরপরাধ মানুষকে ভয় দেখিয়ে। তার কয়েকটি নিম্নরূপ

১) যুগ্ম সচিবের ছেলেকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানাতে গিয়ে ধারা পড়েছে এক এএসআই
২) এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তার বান্ধবীকে আটকে রেখে ইয়াবা সেবনকারী হিসেবে ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে ঘুষ নিয়েছে পুলিশ।
৩) সুইডেন প্রবাসী বাংলাদেশী দম্পতির কাছ থেকে ডলার ছিনতাই।
৪) বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাকে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা
৫) ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে মেরে আহত, সেই সাথে পুলিশ সদস্যদের দম্ভোক্তি "মাছের রাজা ইলিশ, দেশের রাজা পুলিশ"

"পড়েছি মোঘলের হাতে খানা খেতে হবে এক সাথে "

উপায় নাই গোলাম হোসেন। পুলিশের বন্দুক ও লাঠির উপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে ঠাকতে চেষ্টা করবে তত বেশি করে পুলিশের বাহিনীর অনৈতিক কাজ কর্ম দেখে চোখ বন্ধ করে থাকবে সরকার।

পৃথিবীর ইতিহাস বলে কোন বিশেষ শ্রেণীকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে কোন সরকারই চিরস্থায়ী ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে নি। অনৈতিক সুবিধা নেওয়া শ্রেণীটিও নিজেদের আখের গুছিয়ে যথা সময়ে সটকে পড়েছে সরকারকে বিপদের মুখে ফেলে। বাংলাদেশেকে সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়া হওয়ার স্বপ্ন দেখান খুবই ভাল কথা। আমরাও সেটা চাই।



ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে আধুনিক সিঙ্গাপুর এর জনক Lee Kuan Yew কিংবা মালয়েশিয়ার মহাথির মোহাম্মদের কেউই ঐ ২ টা দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় থাকে নি।

তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় টিকে ছিলো সু-শাসন দিয়ে। তাদের ২ জনের কেউই নিজ নিজ দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেন নি। আধুনিক সিঙ্গাপুর এর জনক Lee Kuan Yew এর জীবনী পড়ে জানা যায় ১৯৬৫ সালে স্বাধীনতার পরের বছরই উনি পলিসি নিয়েছিলেন ঐ সমাজে কোন বৈষম্য থাকবে না। মেধাই হবে সরকারি চাকুরী প্রাপ্তির প্রধান শর্ত।

Lee Kuan Yew স্বাধীনতার পরের বছরই পলিসি নিয়েছেন চাইনিজ, মালয় ও ভারতীয়দের নিজস্ব কোন এলাকা থাকবে না। ১০ ফ্লাটের কোন বিল্ডিং তৈরি হলে ঐ বিল্ডিং এ ৬ জন চাইনিজ; ৩ জন মালয় ও ১ জন ভারতী বসবাস করবে (তৎকালীন জন সংখ্যার জাতিসত্বা হিসাবে)। Lee Kuan Yew আইন করেই সেই পলিসি বাস্তবায়ন করেছেন। যার ফলাফল হলো আজকের বিশ্বের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্র। মাথা পিছু আয় ৫৫ হাজার ডলার।

ভারতীয় এক আমলা South Asian Diaspora Convention (SADC) নামক একটি সম্মেলনে আধুনিক সিঙ্গাপুর এর জনক Lee Kuan Yew কে নিচের প্রশ্নটি করেছিলেন।

"What are the fundamental tenets of good governence which you would like to give as advice to our politician?"

Lee Kuan Yew নিচের উত্তরটি দিয়েছিলেন:

"First, integrity, absence of corruption.

Second, meritocracy – the best people for the best jobs. And

Third, a fair level-playing field for everybody."

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে দূর্ণিতীগ্রস্ত দেশ হিসাবে নিজের দেশকে দেখা অনেক লজ্জাকর। পৃথিবীর সবচেয়ে দুষিত শহর হিসাবে নিজ দেশের রাজধানীর নাম দেখটা খুবই লজ্জাকর। সারা বিশ্বের বসবাস অযোগ্য দেশের তালিকার শীর্ষে নিজ দেশের রাজধানীর নাম দেখাটা আরও লজ্জাকর।

অথচ বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা চিকিৎসা সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধ বলছে সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি কায়িক পরিশ্রম করা মানুষ হলো বাংলাদেশীরা।




সরকারি কর্মচারীদের মাঝে অর্থনৈতিক বৈষম্য যত বড়বে দেশে দুর্নীতি তত বাড়তে থাকবে। আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা ততই বাড়তে থাকবে; চরমপন্থা বা উগ্রপন্থার বিস্তার ততই ঘটতে থাকবে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে আরও বেশি ঘুষ দিতে হবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে। সময়ের সাথে সাথে সকল বন্বিচিত মানুষের সমর্থন হারাতে থাকবেন ঠিক যেমন করে একাধিক ভাই-বোনদের সবচেয়ে কম আদর পাওয়া সন্তানটি বাবা-মায়ের পাশ থেকে সরে যায়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। আপনি সেটাকে উল্টাতে পারবেন না। প্রশাসন ক্যাডারের মাত্র ৫ হাজার কর্মকর্তাদের খুশি করতে গিয়ে দেশের প্রায় সকল সরকারি কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছেন। যদিও পূর্বের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন বেতন বাড়িয়েছেন তাদের। কিন্তু ক্ষোভটা সৃষ্টি হতো না যদিনা নিজের লাভের জন্য অল্প কিছু মানুষকে অনৈতিক সুবিধা দিতেন।

মানীয় প্রধানমন্ত্রি,

সমাজের কোন শ্রেণীকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ১০ বা ২০ বছর ক্ষমতার টিকে থাকার চেষ্টা না করে সুশাসান (good governance) ও আইনের শাসন নিশ্চিত করুন; দূর্ণিতী দমন কমিশন দিয়া সের দরে ভালো মানুষের সনদ বিক্রির নিতী পরিবর্তণ করে দূর্ণিতীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান; বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে মৃত্যুর পূর্ব সেকেন্ড পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রাখবে; রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামীলীগ ব্রিটিশদের ৩০০ বছরের কলোনিয়াল সময় কালের রেকর্ড ভঙ্গ করবে।

মানীয় প্রধানমন্ত্রী,

শেষ বারের মতো আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই, আধুনিক সিঙ্গাপুর এর জনক Lee Kuan Yew বা আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার Mahathir Mohamad কে তাদের দেশের কোন বাহিনীকে একটাও বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মেডিকেল কলেজ এর লাইসেন্স দিতে হয় নাই।

জনপ্রশাসনের মধ্যে বিভক্তি তৈরি করে Lee Kuan Yew সিঙ্গাপুর কে মাথা পিছু ৫৫ হাজার ডলারের দেশে পরিণত করেন নি, বরং ঐ দেশের চাইনিজ, মালয় ও ভারতীয়দের এক ছাদের নিচে বসবাস করার ব্যবস্হা করে তাদের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি করেছেন; আপনার মতো আমলা, সেনাবাহিনী, শিক্ষক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেন নাই। ব্রিটিশদের রেখা যাওয়া divide and rule নিতি প্রয়োগ করে পৃথিবীর কোন সমাজ বা রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় নি; বরং সবসময় বিশৃঙ্খলা বজায় থেকেছে।
আপনি বাংলাদেশের মানুষকে সিঙ্গাপুর বানানো স্বপ্ন দেখান; উত্তম প্রস্তাব। আমরা মাথা পিছু আয় ৫৫ হাজার ডলারের দেশে পরিণত হতে চাই। তবে সিঙ্গাপুর হওয়া তখনই সম্ভব যখন আপনি ব্রিটিশদের রেখা যাওয়া divide and rule নিতি ত্যাগ করে Lee Kuan Yew সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ মডেলে দেশ শাসন করবেন।

জনগণকে সুশাসন দিন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীকে বাংলা লিংক দামে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মেডিকেল কলেজ এর লাইসেন্স দিতে হবে না। তারাও ব্যাংক ও মেডিকেল কলেজ এর লাইসেন্স চাওয়ার সাহস পাবে না।





সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:২৬
২৬টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×