অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে শক্রবার বিকাল ৫ টার সময় নীলফামারী জেলার, সদর উপজেলার গোড়-গ্রাম ইউনিয়নে "পুকুর পাড়া" নামক একটি গ্রামের প্রায় সকল পরিবারের থাকার ঘর, কৃষি পণ্যে গোলা, কাপড়-চোপড় সহ বসত ভিটার সকল সম্পদ অগ্নিকান্ডের কারণে সম্পূর্ণ রূপে ছাই হয়ে গেছে। কোন পরিবার নিজেদের ভাত খাওয়ার প্লেট ও পানি খাওয়ার গ্লাসটিও রক্ষা করতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের ৪ টি ছবি যোগ করা হলো যা দেখলে অনেকের চোখে পানি চলে আসবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।নিচের ছবিতে দেখুন ভাতের সাথে তরকারি হিসাবে গরিব মানুষের প্রধান সবজি আলু গুলো কিভাবে আগুনে ঝলসে গেছে ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুড়ে যাওয়া বসত ভিটায়।
দুর্ভাগ্যক্রমে অগ্নিকান্ডেটি ঘটেছে শক্রবার বিকাল ৫ টার সময়, যে দিনটি হলো ঐ এলাকার সবচেয় বড় সাপ্তাহিক হাট-বাজারের দিন। বাজারটি গ্রাম থেকে ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। যে কারণে অগ্নিকান্ডের সময় গ্রামটি ছিলো পুরুষ মানুষ শূন্য। দারিদ্র্যতার কারণে গ্রামটি ছিলো প্রচণ্ড ঘনবসতি পূর্ণ। গ্রামটি নীলফামারী জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ও গ্রামের সবচেয়ে নিকটবর্তী পিচ ঢালা রাস্তাটি ৪ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ার কারণে অগ্নি নির্বাপণ কর্মীরা সেখানে পৌঁছেছে আগুন লাগার ১ ঘণ্টা পরে। ঐ সময়ের মধ্যে গ্রামের ৫১ টি পরিবারের থাকার ঘর, ধানের গোলা, পড়নের কাপড় সহ সকল কিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মহিলা মানুষরা নিজেদের শিশু সন্তান ও বৃদ্ধদের আগুনের শিখা থেকে বাঁচাতে পেড়েছে কোন রকমে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামটি কি পরিমাণ দারিদ্র তার ১ টা উদাহরণ দিতে চাই। ঐ গ্রামের প্রায় ৫০ টি পরিবারে মধ্যে মাত্র ১ টি পরিবারের ১ জন ছেলে পুলিশ বাহিনীতে সিপাহী হিসাবে চাকুরী করে। অন্য ২ টি পরিবারে অল্প কিছু কৃষি জমি আছে ও ৪-৫ টি পরিবার বর্গা চাষি। অবশিষ্ট পরিবারের সদস্যরা দিনমজুর শ্রমিক। অন্যের কৃষি জমিতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে। আমি আবারও বলতেছি গ্রামটি কি পরিমাণ দারিদ্র তা ঐ গ্রামে না গেলে কেউ বিশ্বাস করতে পারবে না।
আপনারা অনেকেই অবগত আছেন নীলফামারী জেলাটি মঙ্গা পীড়িত একটি জেলা হিসাবে পরিচিত ও বাংলাদেশের অন্যতম দারিদ্র জেলা। শুক্রবার ও শনিবার রাতে ঐ গ্রামের ৩০০ মানুষের বেশি ভাগই শিশু সন্তান ও বৃদ্ধদের নিয়ে গাছের নিচে ঘুমিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসের এই প্রচণ্ড শীতে। অন্যান্য গ্রামের সামর্থবান কৃষকরা বাঁশ ও খড় দিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু তাদের পক্ষে শীতের কম্বল, সুয়েটার, কিনে দেওয়া সম্ভব না। তাই আপনাদের প্রতি বিনীত অনুরোধ যার যত টুকু সামর্থ্য আছে এমনকি ১ টাকা হলেও তা দিয়ে সাহায্য করার জন্য।
ছোট ভাই বলল আজকে তারা প্রতিটি পরিবারকে ১ টা প্লেট, ১ টা গ্লাস ও ১ টা তরকারির বাটি কিনে দিয়েছে এলাকা থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে। এবার বুঝে নিন কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবার গুলো।
বিদেশ থেকে পে-পাল কিংবা ব্যংকের মধ্যে টাকা সংগ্রহে সহযোগিতা করতেছে Bangladesh Disaster Aid and Rehabilitation নামক একটি অ-লাভ জনক (Non-Profit) প্রতিষ্ঠান যা কানাডা সরকারের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ও কানাডার রাজস্ব বিভাগের কাছে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে দায়বদ্ধ। এই প্রতিষ্ঠানটি গত ৪ বছর ধরে বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় প্রবাসী বাংলাদেশী মানুষদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করে তা দেশের দুর্গত মানুষদের মাঝে পাঠানোর ব্যবস্হা করে আসতেছে। প্রবাসী কেউ সাহায্য করতে চাইলে নিম্নোক্ত ই-মেইলে PayPal এর মধ্যমে পাঠাতে পারবেন।
Bangladesh Disaster Aid and Rehabilitation এর PayPal একাউন্ট #
[email protected]
দেশের মধ্য থেকে কেউ পাঠাতে চাইলে নিম্নোক্ত ফোন নাম্বারে বিকাশ এর মধ্যমে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
বিকাশ: ০১৭১৭-৭৯৩৪২২
দেশের মধ্য থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন:
ডাচ বাংলা ব্যাংক: MD HSIBUL HASAN
একাউন্ট নাম্বার: DBBL: 172-101-23488
আপনার আপত্তি না থাকলে আপনার পাঠানো টাকার কথা নাম উল্লেখ পূর্বক প্রাপ্তি স্বীকার করা হবে।
আপনাদের প্রতি আবারো অনুরোধ ১ টাকা বা ১ ডলার হলেও তা দিয়ে সাহায্য করুন চরম দারিদ্র ঐ মানুষ গুলোকে। এই কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরাই আমাদের দেশের চালিকা শক্তি। তাদের এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
কবির ভাষায় বলি "শুন হে মানুষ ভাই সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই"
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪