somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা হয়ত জাতি হিসেবে অন্ধ ।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েক বছর আগে সিলেটে বেড়াতে গিয়েছিলাম, রাস্তার দু পাশের বিশাল পাহাড় আর ঝর্না গুলো দেখে জিজ্ঞেস করেছিলাম এগুলো তে যাওয়া যায় না? যে আন্টি আংকেল সহ গিয়েছিলাম , তারা বলেছেন এগুলো সব ভারতের। দেশ ভাগ করার সময় ওরা এমন করে ভালো সবকিছু ওদের দিকে রেখে দিয়েছে। জাফলং তামাবিল যাবার পথে মেঘ ছুই ছুই এই পাহাড় আর পরিবেশ দেখলে, এতে আমাদের কোন অধিকার নেই ভাবলেই ভেতরে এক ধরনের শুন্যতা গ্রাস করে।

এরপর আসি বংগোপসাগর আর সমুদ্রসীমা নিয়ে। আমরা পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের মালিক এই অনুভুতি সব বাংলাদেশিকেই এক ধরনের আনন্দ দেয়।
যেখানে সিঙ্গাপুর শুধু তাদের বন্দর দিয়ে উন্নতির এমন পর্যায়ে উঠে গেছে , সেখানে আমরা যেন আমাদের চট্টগ্রাম, মংলা বন্দর গুলোকে রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যম আর আবর্জনা বানানোর চেষ্টায় আছি। আমরা পারলাম না চট্টগ্রামকে আধুনিক করে, কয়েক ঘন্টায় জাহাজ লোডিং আনলোডিং কাজ সম্পন্ন হয় এমন সুশৃংখল করে আশে পাশের দেশ থেকে নিজেদের উপরে নিয়ে যেতে। কিভাবে পারবো? আমরা তো ভাবি নিজের ভালো থাকা , নিজের পকেট ভর্তি করা নিয়ে। দেশ নিয়ে ভাবার সময় কোথায়?

আমরা সমুদ্র বিজয় নিয়ে আনন্দ করতে করতে আত্মহারা হয়ে গেলাম। খুজেও দেখলাম না দেশের সীমানা অনুযায়ী রেখাটা সমান্তরাল না হয়ে ত্রিভুজ আকৃতির সীমানা দিয়ে আমাদের সমুদ্র সীমাও অর্ধেকের বেশী ছোট করে দেয়া হল। হারালাম ব্লকের গ্যাস, সমুদ্রের ভেতরকার অপার ঐশ্বর্যের অধিকার।





তবু আমরা আনন্দ করেছি, সংবর্ধনা দিয়েছি, যারা সমুদ্র বিজয়( ??!! ) এনেছেন আমাদের জন্য।নেট ঘেটে নীচের লিংক গুলো পেলাম। এই বিষয়ে জ্ঞান রাখেন এমন কেউ যদি যা লিখেছে তা খন্ডন করেন, বা নতুন ব্যাখ্যা দেন তাহলে বাংলাদেশী হিসেবে মনে শান্তি পাই।
Click This Link

http://www.shaptahik-2000.com/?p=1401

খুলনা গিয়েছিলাম সুন্দরবন দেখতে। এলাকার মানুষ বললো “ আমাদের দিকে বাঘ তেমন নেই। সব বাঘ ভারতের দিকে চলে গেছে।“ --- আফসোস ! আমরা আমাদের জাতীয় পশুকেও রক্ষা করতে পারলাম না। আয়তন হিসেবে সুন্দরবনের বড় অংশ বাংলাদেশের সীমানায়। অথচ আমরাই যেন তার সব টুকু ফল অন্যদের হাতে তুলে দিয়ে আসতে চাই। সুন্দরবন, গাছ-গাছালী, পরিবেশ, পশু-পাখি সবকিছুই আমাদের সম্পদ, আমাদের অহংকারের বিষয়।

খুলনায় বেশ উল্লেখযোগ্য হারে চিংড়ির আবাদ হয় ।সুন্দর বন যাবার পথে দেখেছি বিশাল খন্ডের জমি চিংড়ির ঘের করা। যা থেকে আমাদের রপ্তানি আয় নিতান্ত কম হয় না।

এবার আমরা দেশপ্রেমিকরা সেই সুন্দরবনের পাশেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র করবো। বাহ। সুন্দরবন ধবংস হয়ে যাক, আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধে ভারত যে সাহায্য করে ঋনী করছে তার ঋণ শোধ হবে না তবু। হাইকোর্ট রায় দেবার পরও পরিবেশবিদ দের কথা অগ্রাহ্য করে কার স্বার্থে এই চুক্তি হয়? রাশিয়ার সাথে পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন যদি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েই থাকে তবে এই মাত্র ৫০০ মেগাওয়াটের জন্য আমাদের এত বড় সম্পদ ধ্বংশ করা কেন? গুগুল করে পাওয়া এই লিংকটির পোস্টটি পড়ে শুধু কস্ট আর হতাশায় ডুবে গেলাম যেন।
http://www.greenmagz.info/rampal/

এই লিংকটিও তথ্যবহুল।
http://dhakajournal.com/?p=3760


সুন্দরবন শেষ করে আমরা বিদ্যুত চাই না!!!!!

জানি বলে লাভ নেই। অভাগা দেশ এভাবেই শেষ হবে একদিন। আমরা দামী গাড়ির বদলে গ্যাস দিয়ে দেই, আমরা ট্রাংকে ভরে টাকা পাচার করি মধ্যপ্রাচ্যে, আমরা সমুদ্রসম্পদ মুক্ত হস্তে দান করে এসে বলি আমাদের জয় হয়েছে, আমরা দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ কে এখনো ফেরী দিয়ে পদ্মা পার করাই। আবার সেই আমরাই না খেয়ে অনশন করি, মরতে বসি ৪১ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার গ্লানি থেকে দেশকে বাচাতে। আমরা চোখ মেলে দেখিনা বর্তমানের বিলীন হয়ে যাওয়া । আমাদের চোখ আসলে অন্ধ। আমরা হয়ত জাতি হিসেবেই অন্ধ ।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:১৯
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×