somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাল্পনিক_ভালোবাসা
বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

গল্পঃ বিবর্ন প্রতিশোধ।

০৮ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শায়লা ঠিক খাটের মাঝখানে শুয়ে আছে। ফ্যানের বাতাসে শাড়ির আঁচল কিছুটা সরে গেছে। শাড়ির পাতলা আবরন কিছুতেই লুকাতে পারেনি তার অপূর্ব দেহ সৌষ্ঠব। শাড়ির আবরনের সেই ধরনীতে যুগল হিমালয় শৃঙ্গ দেখে যে কেউই চাইবে দুঃসাহসী পর্বতারোহী হতে। পর্দার ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে শেষ বিকেলের আলো এসে শায়লার মুখে পড়ছে। শেষ বিকেলের আলোর একটা সোনালী আভা থাকে। সেই সোনালী আভা শায়লার মুখে পড়ে সৃষ্টি করেছে অদ্ভুত এক মাদকতা। মাদকতা ছড়িয়ে পড়ছে রুমের পরিবেশেও।

রুমের একপাশে চেয়ারে বসে আছে আসাদ। রকিং চেয়ারে দুলছে আর শায়লাকে দেখছে। চেয়ারের সামনেই ড্রেসিং টেবিল। হঠাৎ আসাদের চোখ পড়ল আয়নায়। নিজেই নিজের গর্বিত প্রতিবিম্ব দেখে খানিকটা লজ্জা পেল। চোখ ঘুরিয়ে তাকাতেই আবারো চোখে পড়ল দৃশ্যটা। মানতে বাধ্য হল, নাহ! মেয়েটা আসলেই সুন্দর।

খানিকটা ইতস্ততবোধ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল আসাদ। হেঁটে গিয়ে বিছানার পাশে এসে দাঁড়াল। একটু ঝুকে শায়লার কপালে হাত রাখল। নাহ শরীরটা এখনও গরম আছে। কতক্ষন গরম থাকবে কে জানে? দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকাল আসাদ। মাত্র পাঁচটা দশ বাজে। কিছুটা বিরক্ত হয়ে ভাবল এতক্ষনে মাত্র আধাঘন্টা পার হলো?

সেই চারটা তিরিশে বালিশ চাপা দিয়ে শায়লাকে হত্যা করা হয়েছে। শায়লা ঘুমিয়েই ছিল। শুধু বালিশ দিয়ে চেপে ধরেছিল আসাদ। কিছুক্ষন শুধু ঝাপটা ঝাপটি করেছিল শায়লা। কিন্তু লাভ হয়নি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে ঝামেলা শেষ। খুব বেশি একটা কষ্ট হয় নি। কিন্তু মৃতদেহ ঠান্ডা হতে এত সময় লাগছে কেন? যদিও হাতে অফুরন্ত সময়। সব কিছু গুছিয়ে প্ল্যান করা আছে। কিছুক্ষন পর শায়লার লাশটাকে বাথরুমে নিয়ে কুটি কুটি করে কাটা হবে। তারপর মেরুল বাড্ডার দিকে আসাদের এক পরিচিত মাছের খামার আছে যেখানে বিদেশী মাগুরের চাষ হয়, সেখানে খাবার হিসেবে ছিটিয়ে দেয়া হবে। সব ফাইনাল করা আছে। ঝামেলার কোন সম্ভবনা নাই।

ভাবতে ভাবতে বিছানার কাছ থেকে সরে এসে রুম সংলগ্ন বারান্দায় এসে দাঁড়াল আসাদ। গোধুলীর প্রায় শেষ লগ্ন। এই সময়টাতে কেন যেন বিষন্ন হয়ে যায় মন। আসাদের মনটাও কেমন যেন বিসন্ন হয়ে উঠল। ও একটা সিগারেট ধরাল। এক রাশ ধোঁয়া ছেড়ে খানিকটা উদাসভাবে নিচে তাকল। নিচের লনে বাচ্চারা এখনও খেলাধুলা করছে। এখনকার দিনের বাচ্চাদের খেলাধুলা সবই কম্পিউটার আর টেলিভিশন কেন্দ্রিক। তবে এই বাসায় দৃশ্যটা বেশ ব্যতিক্রমী। এইখানে ফ্লাটের বাচ্চারা সবাই বিকেল হলেই খেলতে নিচে ছুটে যায়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাচ্চাদের খেলা দেখতে আসাদের দারুন লাগে। অবশ্য ঢাকা শহরের কয়টা বাসায় সামনে লন বা বাচ্চাদের খেলার জায়গা আছে এটাও একটা প্রশ্ন।

পাশের বাসার মেয়েটার সাথে চোখাচোখি হল। বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। আসাদকেই দেখেই হাত নাড়ল। জবাবে আসাদও হাত নাড়ল। মেয়েটার নাম তানিয়া। বেশ আধুনিক মেয়ে। মেয়েটার চলনে বলনে কেমন যেন একটা ড্যাম কেয়ার ভাব আছে। ইদানিং কালে এই সব সদ্য তরুনী মেয়েরা বিবাহিত পুরুষের প্রতি একটা ফেন্টাসি উপলব্ধি করে। এই মেয়েও তার ব্যক্তিক্রম নয়। কথাবার্তায় বেশ একটা প্রচ্ছন্ন আমন্ত্রনের ছায়া আছে। বেশ কয়েকবার শায়লা যখন বাসায় ছিল না, তখন বাসায় আসতে চেয়েছে। আসাদ খুব বেশি একটা সাড়া দেয় নি। একই সাথে দুই নৌকায় পা দেয়া আসাদের পছন্দ নয়। মনে মনে ভাবল, এই মেয়েকেও একটা শিক্ষা দেয়া দরকার। শায়লার একটা গতি করে নিই, তারপর একে দেখা যাবে।

হঠাৎ হাতে সিগারেটের ছ্যাকা লাগায় আসাদ চমকে উঠল। বিরক্তির সাথে সিগারেটের শেষ অংশ ছুঁড়ে ফেলে দিল। আবার তানিয়ার দিকে তাকাল। এখনও মেয়েটা বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাথে ফোনে ঝগড়া করছে। আসাদের মুখে ধীরে ধীরে একটা নিষ্ঠুর হাসি ফুটে উঠল।

আবার রুমে ফিরে এল আসাদ। অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। হাতড়ে গিয়ে লাইট জ্বালালো। টিউবলাইটের আলোতে শায়লাকে কেমন যেন ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে। ঠোট দুটো কিঞ্চিত ফাক হয়ে আছে। চোখও কিছুটা আধোখালো। নাহ! এখন দেখে মনে হচ্ছে এটা একটি লাশ। কোন এক তরুনীর মৃতদেহ।

হঠাৎ মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠল আসাদের। ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতল বের করে এক গ্লাস পানি খেল ও। চেয়ারে গিয়ে বসল। বসে একটা সিগারেট ধরাল। ভাবল, কাটাকুটি পর্ব শুরু করার আগে কিছুক্ষন বিশ্রাম নেয়া যাক। আবার চোখ পড়ল শায়লার দিকে। বাতাসে চুল উড়ছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করল আসাদ। চোখ বন্ধ করতেই পুরানো সব দিনের কথা মনে পড়ল।

এক বন্ধুর বিয়েতে শায়লার সাথে আসাদের পরিচয়। প্রথম পরিচয় থেকেই ভাল লাগা আর কিছুদিনের মাঝেই বিয়ে। বিয়ের পর তারা ঘুরতে গেল নেপালে। এক সাথে হাতে হাত রেখে যখন তারা হিমালয় দেখছিল, তখন আসাদের কাছে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে মনে হয়েছিল। শায়লার মত একটা বউ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তবে কিছুদিনের মধ্যেই শায়লার বেশ কিছু আচরনে আসাদ বেশ কষ্ট পেল। শায়লা কিছুতেই আসাদের মা এবং তার পরিবারকে মেনে নিতে পারছিল না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে সে গুলশানের এই ফ্লাটে এসে উঠে। নতুন করে শুরু হলো নতুন জীবন।

একবার শায়লা অনাকাংখিত ভাবে গর্ভবতী হয়ে পড়ল। আসাদ খুশি হলেও শায়লা খুব বেশি একটা খুশি হতে পারে নি। শায়লা চেয়েছিল আরো কিছুদিন পর বাচ্চা নিতে। শায়লার ইচ্ছে ছিল মাস্টার্সটা শেষ হোক তারপর বাচ্চা নেয়ার ব্যাপারটা ভেবে দেখবে। তাছাড়া শায়লা নাকি এখন মানসিক ভাবে মা হবার জন্য প্রস্তত নয়। শায়লার এই আচরনে আসাদ বেশ অবাক হয়েছিল। কিন্তু মুখে কিছু বলেনি। মন খারাপ হওয়া স্বত্তেও শায়লার কথা ভেবে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। ডাক্তারও বললেন, প্রথম বাচ্চা এটা অ্যবশর্ন না করলেই কি নয়? শায়লা কিছু বলে নি। শুধু শুকনো হাসি হেসেছিল। কিছু পরীক্ষা করতে দিয়েছিলেন ডাক্তার। সেই পরীক্ষাগুলো করিয়ে আবার দেখা করতে বলেছিলেন। যেদিন ডাক্তারের কাছে রিপোর্টের কাগজগুলো নিয়ে যেতে হবে সেদিনই ইমারজেন্সি কাজে আসাদকে চট্রগ্রামে যেতে হয়। শায়লা বলেছিল ও একাই যেতে পারবে। টেনশনের কিছু নেই। চট্রগাম পৌছেই ফোনে শায়লার সাথে কথা হল। রিপোর্টের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলল, বাচ্চা না চাইলে তিনি দ্রুত অ্যবশর্ন করাতে বলেছেন। আসাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। বুকের ভেতর কেমন যেন কষ্ট লাগছে। ফোনে কিছু প্রকাশ পেতে দিল না ও। শুধু বলল, ঠিক আছে। আমি ফিরে আসি। তারপর করিয়ে ফেলব।

একরাশ চিন্তা নিয়ে আসাদ চট্রগাম থেকে ঢাকা ফিরল। ঢাকায় ফিরেই ডাক্তারের সাথে কথা বলতে গেল। গিয়ে দেখল ডাক্তারের মুখ গম্ভীর। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করাতে যা শুনল, তার জন্য আসাদ মোটেই প্রস্তুত ছিল না। ডাক্তার বললেন, দেখুন আসাদ সাহেব এটা আপনার স্ত্রীর দ্বিতীয় এ্যবশর্ন এবং মাত্র কয়েক মাস আগে প্রথম এ্যবশর্নটি হয়েছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে আবারও এ্যবশর্ন ব্যাপারটি রিস্কি। সামনে হয়ত তিনি আর মা নাও হতে পারে।
আসাদ চমকে উঠে জিজ্ঞেস করল, মানে, এসব কি বলছেন আপনি?
ডাক্তার বলল, কি বলছি আপনারই ভাল জানা উচিত। আপনারা প্রেম করে বিয়ে তো করেছেন, কিন্তু বিয়ের আগে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন তো আর কম করেন নি। আগে যা হয়েছে তা বুঝলাম কিন্তু এখন কেন নিজের অনাগত সন্তান হত্যা করতে চাইছেন? তাছাড়া ধার্মিক দৃষ্টিতে এটা পাপ।
আসাদ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি বলছেন আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি বাবা হতে চাইছি না কে...
প্লীজ মিথ্যে কথা বন্ধ করুন। আসাদকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে কড়া গলায় বলে উঠলেন ডাক্তার।
আপনার স্ত্রী আমাকে সব বলেছে। তাছাড়া, আমি পুরুষদের চিনি। তারা এত সহজে বাচ্চা কাচ্চার ঝামেলায় যেতে চায় না। আমার যা বলার তা বলেছি, এখন বাকিটা আপনার বিবেচনা। আপনি এখন আসতে পারেন।

আসাদ কিছু না বলে উঠে চলে আসল। ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে ফুটপাত ধরে হাঁটা শুরু করল ও। প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে নিজেকে। ডাক্তারের কথাগুলো এখনও কানে বাজছে। কেন যেন নিজেকে ভীষন পরাজিত মনে হচ্ছে তার। প্রচন্ড অভিমান হলো শায়লার উপর। শায়লা কিভাবে এত বড় কথাটি তার কাছে গোপন রাখল? আসাদ জীবনের সব কিছুই শায়লার সাথে শেয়ার করেছে। শায়লাও বলেছে সব কিছুই। আসাদই নাকি শায়লার প্রথম প্রেম। প্রথম ভালবাসা। তাহলে কি সব মিথ্যে? সবই কি প্রতারনা?

হঠাৎ নিজেকে ভীষন একলা মনে হল আসাদের। রাস্তায় আসে পাশে এত মানুষ তাও, মনে হচ্ছে কোথাও কেউ নেই। এক ভদ্রলোক তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাঁটছেন। বাচ্চাটা কি সুন্দর হাত নাড়ছে, হাসছে। বুকের ভেতরটা কেমন যেন ফাঁকা হলে এলো। মনে হচ্ছে কষ্ট গুলো দুমড়ে মুচড়ে কান্না হয়ে বের হয়ে আসবে। একটু কাঁদতে পারলে হয়ত স্বস্তিই লাগত। কিন্তু কান্না আসছে না। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল, নাহ যেভাবেই হোক শায়লাকে এর পরিণতি বুঝাতেই হবে, যে করেই হোক বাচ্চাটা আমার চাই।

হর্নের তীব্র শব্দে চমকে উঠল আসাদ। কখন যে রাস্তার মাঝখানে চলে এসেছে টেরই পায়নি। কিছু বুঝে উঠার আগেই বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি বাসের সাথে ধাক্কা খেল ও। ছিটকে গিয়ে পড়ল রাস্তায়। আশে পাশের মানুষ চিৎকার দিয়ে উঠল। হঠাৎ সমস্ত পৃথিবী কেমন যেন ক্রমশ অন্ধকার হয়ে এল আসাদের কাছে। জ্ঞান হারানোর আগে শেষবার শুনতে পেল। কে যেন ডাকছে এ্যাইইইইইইইইই। তারপর সব অন্ধকার।


বহুদূর থেকে মনে হল কে যেন ডাকছে, এ্যাইইইইইইইই, কি হলোটা কি? উঠবে না ঘুম থেকে? আর কত ঘুমাবে?? এই ভরসন্ধ্যা বেলায় এত ঘুমায় নাকি মানুষ??

আসাদ আস্তে করে চোখ মেলল। চোখ খুলেই শায়লার বিরক্তি মাখা মুখ দেখতে পেল। আসাদকে চোখ মেলতে দেখে অভিমানী কন্ঠে বলল, তোমাকে সেই কখন থেকে ডাকছি। ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ঘুমিয়েছিলে নাকি? জানো না আজকে বাসায় পার্টি আছে? প্লীজ উঠো রেডি হও। গেস্টরা সবাই অপেক্ষা করছে।

আসাদ ভাল করে তাকাল শায়লার দিকে। একটা লাল রঙ্গের পাতলা শিফন শাড়ি পড়েছে শায়লা। শায়লার হলুদাভ মাখনের মত কোমল পেট দেখা যাচ্ছে পাতলা শাড়ির আবরনে। সুগঠিত হাতের আভা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে শর্ট হাতা ব্লাউজের কল্যানে। শায়লাকে ঠিক একটা সদ্য ফোঁটা গোলাপের মত লাগছে। আসাদ হেসে ফেলল। তোমাকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে শায়লা।
থ্যাংক ইয়্যু। নাও এখন উঠে পড়। উঠে আমাকে উদ্ধার কর। তোমার এই দেরী আমাকে শোভন ভাইয়ের সামনে ছোট করছে। আজকে তার জন্মদিন উপলক্ষে আমি পার্টি দিয়েছি। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও। আমি টিপলুকে পাঠিয়ে দিচ্ছি, ও তোমাকে হুইল চেয়ারে তুলে দিবে, ওকে?
ওকে। আসাদ মাথা কাত করে জবাব দেয়।

কিছুক্ষনের মধ্যেই টিপলু রুমে আসে। আসাদকে ধরে হুইল চেয়ারে তুলে দেয়। ৩ বছর আগে রোড এক্সিডেন্টে আসাদ তা পা দুটো হারায়। শায়লার বাবার বাড়ি থেকে এই টিপলুকে আনা হয়েছে। আসাদের দেখাশুনা করার জন্য। সেই থেকে এই টিপলুই ওকে দেখা শুনা করে। শায়লা অফিস, নানা রকম পার্টি নিয়ে ইদানিং অনেক ব্যস্ত থাকে। বলাবাহুল্য নিঃসন্তান আসাদ-শায়লা দম্পতির ফ্ল্যাট এখন শায়লার বন্ধুদের আড্ডার জায়গা। গভীর রাত পর্যন্ত শায়লার বন্ধুরা আড্ডা দেয়। বন্ধুরা না বলে বলা উচিত শায়লার মামাত ভাই শোভনই আড্ডা দেয়। অনেক সময় রাতে বেশি দেরী হলে শায়লা, তার শোভন ভাইকে যেতে দিতে চায় না। সেই রাত্রিগুলোতে শায়লা গভীর রাতে চুপে চুপে বিছানা থেকে উঠে গেস্ট রুমের দিকে যায়, আসাদ ঠিকই চোখ বন্ধ করে তা অনুভব করে।

ও খালু শইলডা কেমন? ঘুম ভালা হইছে? টিপলু মমতা ভরা কন্ঠে জিজ্ঞেস করে।
চমকে উঠে আসাদ। জীবনের কঠিন বাস্তবে ফিরে এসে নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়। নিষ্ফল আক্রোশে দাঁত কিড়মিড় করে উঠে । প্রবল খুনে চোখে ভেসে উঠে স্বপ্ন। নাহ তাড়াতাড়ি আবার ঘুমাতে হবে। প্রতিশোধের জন্য ঘুম প্রবল ঘুম দরকার। হোক সে বিবর্ন প্রতিশোধ।

---------------------------------------------------------------------------------------
অনেক দিন পর একটি গল্প লিখলাম। কেমন হয়েছে জানি না, তবে এই গল্পটিকে সুন্দর করার জন্য বেশ কিছু পরামর্শ পেয়েছি কিছু ব্লগারের কাছ থেকে। তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। ইচ্ছে করেই তাদের নাম প্রকাশ করিনি। আমার ভাল লাগা এবং এই কৃতজ্ঞতা বোধ আমার নিজেই একান্ত ব্যক্তিগত। যাদের সাথে এই গল্পটি আগে শেয়ার করেছি, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সহ ব্লগার এই গল্পের প্রেক্ষাপটিকে নিয়ে তাদের মত করে গল্পটি লিখতে চেয়েছেন। আমি আশা করছি, প্রতিটি লেখাই আরো চমৎকার হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৪ ভোর ৬:৩৬
৮০টি মন্তব্য ৮০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×