somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুদভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার ভয়ঙ্কর রূপ

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুদ ইসলামে হারাম। আর ইসলাম সুদকে হারাম করেছে তা সামাজিক ব্যাধি হওয়ার কারণে।
তবে অনেকে আপত্তি উঠায় যে ইসলাম যেই সুদকে হারাম করেছে তা হচ্ছে মহাজনী সুদ। যেগুলো প্রাচীন কালে প্রচলিত ছিলো। বর্তমানে তা বিলুপ্ত বললেই চলে।!!!!!!!!!!!!
সত্যিই খুব আশ্চর্য ও দুঃখের বিষয় যে ইসলাম যা হারাম করেছে তা বৈধ করার অপচেষ্টা বুঝমান মুসলমানদের থেকে প্রকাশ পাচ্ছে।
একটা হল আমার থেকে গুনাহ হয়ে যাচ্ছে। আমি সেটার কারণে লজ্জিত।এবং এই লজ্জাবোধ পরবর্তীতে আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত বানাবে। অথবা তওবার দিকে নিয়ে যাবে।
কিন্তু গুনাহকে গুনাহই মনে করলামনা। উল্টা ইসলামের বিধানকে তুচ্ছ জ্ঞান করলাম, এটা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
যা বলছিলাম যে, মহাজনী সুদের বিষয়টি তো স্পষ্ট।
আজ আলোকপাত হবে শিল্পপতিরা ব্যাংককে যেই সুদ দেয় সেটার সম্পর্কে। আল্লাহ তাওফীক দান করুক।
এক্ষেত্রে ব্যাংক বা অন্য কোন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সুদের কারণে এদিকে লক্ষ্য থাকেনা ঋণগ্রহীতার ব্যবসায় লাভ হলো কি লস হল। সব সময়ই তারা তাদের লাভটা নিয়ে নেয়। ব্যবসায় ক্ষতি হলেও তারা তাদের লাভ অর্থাৎ সুদ পাবেই। আর যদি এখানে ইসলামের মুদারাবার মুনাফা হারে ঋণ হতো, তাহলে দুজনই সমান সমান থাকতো। সুদে কারণে যার লাভ তার আংগুল ফুলে কলাগাছ। আর অপরজনের মুলিবাঁশ।
আর ব্যাংক থেকে কোন বড় পুজিপতি বিরাট অংকের ঋণ নেয়। সেখানে লসের সম্ভাবনা খুবই কম। এক্ষেত্রে তার কারবারে লাভ হয় বিশাল অংকের। সেই লাভ অনুযায়ী খুব অল্প অংশ ব্যাংককে দেয়। আর ব্যাংককে মাধ্যমে ব্যাংককের সাধারণ ডিপোজিটার যাদের টাকা ব্যাংকে জমা, তারা খুব অল্প অংশ সেখান থেকে পায়।আর বাকি লাভ সম্পূর্ণ তার কাছেই রয়ে যায়। তার একটি সরল উদাহরণ।
আমাদের সমাজে সাধারণত কোন ব্যক্তি নিজের পকেট থেকে ১০ লাখ কোন কারবারে লাগায়। ৯০ লাখ ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। এভাবে এক কোটি টাকার ব্যবসা করে। যখন এত বিশাল পুজি নিয়ে ব্যবসা করা হয় তখন তার লাভটাও অনেক বেশী হয়ে থাকে। ধরুন তার কারবারে ৫০ লাখ লাভ হল। এবং এক কোটি দেড় কোটি হয়ে গেল।
তখন এই পুজিপতি ৫০ লাখ লাভের ১৫ লাখ ঋণের সুদ ব্যাংককে ফিরিয়ে দিবে। এতে ব্যাংক নিজের লাভ রেখে আনুমানিক ১০ অথবা ১২ লাখ ঐ সমস্ত সাধারণ মানুষের মধ্যে বন্টন হবে যাদের টাকা ব্যাংকে জমা ছিল। যার সংক্ষিপ্ত ফলাফল এই যে, ওই অসংখ্য ব্যক্তির ৯০ লাখ টাকা যেগুলোর কারণে এই বিশাল অংকের লাভ সম্ভব হয়েছে তারা মাত্র ১০ লাখ লাভ পেল। আর এই পুজিপতি যে কিনা মাত্র ১০ লাখ টাকা পুঁজিতে খাটিয়েছে সে লাভ করল ৩৫ লাখ। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে যে, এই ১৫ লাখ টাকা যেটা ব্যাংককে দেয়া হল, এবং ব্যাংক এর মাধ্যমে সাধারণ ডিপজিটারা পেল এই টাকাটা পুজিপতি নিজের কারবারের খরচের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত করে রেখেছে। এই ১৫ লাখ তার পকেট থেকে বের হয়নি। বরং সাধারণ মানুষের পকেট থেকেই বের করে নিয়েছে। কেননা সে যেই পন্য তৈরি করেছে, সেটার মধ্যে পুজিপতি যেই মুল্য নির্ধারন করেছে, সেটার মধ্যে ব্যাংককের সুদও অন্তর্ভুক্ত করে রাখে। যা সাধারণ মানুষের পকেট থেকে বের হয়। এভাবেই কারবারে তার পকেট থেকে কোন খরচই হয়না।
আর যদি কোন দুর্ঘটনায় কারবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো, তখন এর খরচ ইন্স্যুরেন্স থেকে পেয়ে যায়। যে ওই সাধারণ মানুষদেরই টাকা জমা থাকে। যা মাসে মাসে জমা হয়। এবং বছরের পর বছর সেটা তোলাও হয়না।
আর অন্য দিকে যদি বিশাল বিশাল কয়েকজন পুজিপতি বড় অংকের কোন ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার দরুন ব্যাংকের ঋণ ফিরিয়ে দিতে অপারগ হয়, যার দরুন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে তো এই পুজিপতির অল্প টাকাই গেল। কিন্তু টাকা হারায় এই সাধারণ মানুষেরা।
মোটকথা সুদভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার কারণে সমগ্র জাতির পুজিকে কয়েকজন বড় পুজিপতি নিজেদের উপকারের জন্য ব্যবহার করে। এবং এর প্রতিদানে জাতিকে খুবই অল্প অংশই দিয়ে থাকে। আর এই অল্প অংশও পন্যের মুল্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে, সাধারণ ভোক্তাদের থেকেই তুলে নেয়। আর এভাবেই সুদভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের পুজির উপকার বড় বড় পুজিপতিরাই বেশী ভোগ করে। সাধারণ মানুষ এর দ্বারা খুব অল্পই লাভবান হয়। এবং সম্পদের গতি বড়লোকদের দিকে থাকে।
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×