৯ জুলাই “আমাদের সময়” এ প্রবাসী কলামিস্ট আবিদ রহমানের একটি কলাম ছেপেছে।তিনি ৭ জুলাই
আমাদের সময়ের হেডলাইন“উদ্ধত পুলিশ , লাঞ্ছিত গনতন্ত্র”এর রিরোধীতা করেছেন।
এ দেশে যারা বসবাস করেন না তারা এদেশের অনেক নীতিনির্ধারনী বিষয়ে কলাম লেখেন, মতামত দেন। সম্প্রতি দেশে বড় বড় কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। এসব ঘটনায় একথা স্পষ্ট যে ,সরকার বিরোধী কথা এদেশে যে ই বলুক না কেন , রাস্তায় নামলেই তাদের পেটানো ছাড়া আর কোন মন্ত্র এ সরকারের জানা নাই। এমনকি মহাজোটের শরিকদেরকেও রাস্তায় নামতে দেয়া হচ্ছেনা। সরকার বিরোধী কোনো প্রতিবাদই করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে পরিস্থিতি ১/১১ সরকারের থেকেও ভয়াবহ।
এ পরিস্থিতিতে আমরা প্রবাসী কলামিস্টদের স্বাগত জানাই কারন তাদের অন্তত গ্রেফতারের ভয় থাকে না। কিন্তু অনেকেই বিদেশে গিয়েও তেল দিয়ে লেখালেখির স্বভাব পরিবর্তন করতে পারেনি। তারা দেশের বাইরে চলে গেছেন , ভাল কথা। কিন্তু দেশে যারা আছেন তাদের ক্ষতি করার অধিকার তো তাদের নেই। কোনো দাবী নিয়ে এদেশে রাস্তায় নামা না হলে মেলবোর্ন বসে আবিদ রহমানের তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। তিনি কি বুঝবেন , একটা দেশ যখন এভাবে জেলখানায় পরিনত হয় তখন সাধারন মানুষের কেমন লাগে?
আবিদ রহমান তার মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য শুরুতেই এক মহা ভাওতাবাজি কথা বলেছেন । তিনি বলেছেন সকল নাগরিকের মর্যাদা সমান । খুবই সত্য কথা। কিন্তু ভাই ৫ বারের নির্বাচিত একজন এম, পি. যিনি লাখ লাখ জনগনের সমর্থন পেয়েছেন, যিনি রাষ্ট্রীয় একটি গুরুত্বপূর্ন জনপ্রতিনিধিত্বমূলক পদে অধিষ্ঠিত, তাকে তিনি এই যুক্তিতে সমান কনে দিলেন। তাকে এভাবে অসম্মান করলে তাকে যারা সমর্থন করেছে সেই সব জনতার মান সম্মান কোথায় থাকে? এই সহজ সমীকরন টা আবিদ রহমানের মাথায় ঢুকলো না।
তিনি মহা চরিত্রহীন প্রভাকে নিয়েও কিছুদিন লেখালেখি করেছেন,আমার মনে আছে। আমার ধারনা আবিদ রহমানের এই মোটাবুদ্ধি নিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তার আশায় প্রভাকে নিয়েই লেখালেখি চালিয়ে যাওয়া উচিৎ। তাতেই ওনাকে মানায় ভাল।
তিনি এক খোঁড়া যুক্তি দিয়ে বলেছেন কেবলমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাই কি গতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি? সমার্থক?
ভাই আবিদ রহমান , রাজনৈতিক ব্যক্তিরা গনতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি কিনা জানি না, তবে জনপ্রতিনিধিরা গনতন্ত্রের প্রতিচ্ছবি ই। সন্দেহ থাকলে তাকে আবার আব্রাহাম লিঙ্কনের বইপত্র ঘাঁটতে অনুরোধ করছি।
পুলিশ কেন এ কাজ করেছে তার পক্ষে উনি দুটি পরস্পর বিরোধী যুক্তি দিয়েছেন।
১। পুলিশ উপরের নির্দেশে এ কাজ করেছে।
২। ফারুকের উস্কানিতে এ কাজ করেছে।
কোনটি সত্য? আবিদ রহমান এ ঘটনাকে ধৈতা দেয়ার আশায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অতি জঘন্যভাবে তুলে ধরেছেন। এদেশের যত রকম রাজনীতিবিদ যত রকমের অন্যায় করেছেন তার সকল দোষ একা ফারুকের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আর পুলিশের পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। ভুলেই গেছেন এই পুলিশ ই ইয়াসমীনকে ধর্ষন করে হত্যা করেছিল, এরাই দেশের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্থ গোষ্ঠি.এরাই ব্লাকমেইল করে জনগনের টাকা পকেটে পোরে। এহেন পুলিশকে একজন নিরস্ত্র জনপ্রতিনিধি তুই সম্বোধন করেছে বলে তাকে অর্ধনগ্ন করে চারদিক দিয়ে ঘেরাও করে ইচ্ছেমত পিটিয়েছে। আর আবিদ রহমান সেটাকে সমর্থন করেছেন।
হাতে অস্ত্র থাকলে নিজের ঔদ্ধত্য বশে রাখা কঠিন। এ জন্যই পুলিশকে ট্রেনিং দেয়া হয় । আবার হাতে কলম থাকলেই যে এসব হাবিজাবি লেখা যায়না সেটা শেখানোর জন্যও আবিদ রহমানের মত লেখকের ট্রেনিং নেয়া জরুরী। ওই পুলিশদের নিয়ে ৯ জুলাই তারিখেই আমাদের সময়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। দয়া করে সবাই রিপোর্টটি পড়ে দেখবেন যে আবিদ সাহেব কাদের পক্ষ নিয়েছেন।
কোন সভ্য মানুষ এই ধরনের পশুবৃত্তিক চর্চার পক্ষ নিতে পারে? এ ধরনের সহিংসতার বৈধতা দিতে পারে? আমরা সভ্য হয়ে উঠছি কি চারদিকে ঘিরে একজন নিরস্ত্র মানুষকে পেটানোর জন্য? যাদের আবেগের উপর এতটুকু নিয়ন্ত্রন নাই,এরা পুলিশের বড় কর্মকর্তা? প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী? যারা মহান জাতীয় সংসদের সামনে প্রকাশ্যে এই পশুবৃত্তি দেখিয়েছে , তাদের পক্ষ নেয়াও এক ধরনের পাশবিকতা। আবিদ রহমানের এই লেখাটাই প্রমান করে , আমরা যত উন্নত দেশেই যাই না কেন-চিন্তায়, চেতনায় , কর্মে সভ্য হয়ে ওঠার এখোনো অনেক বাকি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



