পরের দিকে দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করে। মানুষ চাষ করা শিখে ফেলে। তাদের আয়ত্বে পশুপালন বা ছোটখাট অস্রের ব্যবহারও এসে যায়। ফলে দুটি শক্তির সৃষ্টি হয়। এক হল , যাদের চাষযোগ্য জমি বেশি ছিল, এবং যারা শারীরিকভাবে বেশি সক্ষম ছিল। এই শ্রেনীভেদের আগে মেয়েরা ইচ্ছামত যে কোন পুরুষের সাথে মেলামেশা করতে পারত। (মিসরীয় সভ্যতা ও আদিম কথা-অ´ফোর্ড প্রকাশনী) কিন্তু যারা সম্পদশালী হয়ে উঠল তাদের সম্মদ এর কি হবে এ নিয়ে তাদের চিন্তাও ছিল। ফলে তারা নিশ্চিতভাবে জানতে চাইত যে তাদের বাচ্চা কারা। যেহেতু মেয়েরা অনেকের সাথে মেলামেশা করলে তার বাচ্চাটি ঠিক কার সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয় না। তাই তারা চাইত যে যে মেয়েগুলো তার পছন্দের সেই মেয়েগুলো যাতে অন্যের সাথে মেলামেশা করতে না পারে। মেয়েরাও শক্তিতে না পেরে বিভিন্ন ছলে, কৌশলে তাদের অধিকার আদায় করে নিত।
--ফলে তারা মেয়ে মানুষকে শুধু ভোগ ,বিলাসিতার সামগ্রী হিসেবে গায়ের জোরে বা সম্পদের জোরে দখলে রাখত। কিন্তু বিপত্তি ঘটে গেল। বন্দি মেয়েরা ভালবাসা কমিয়ে দিত। তখন তাদের যে সব শিকল দিয়ে বাঁধা হত সেগুলো সোনার বা অন্য কোন মূল্যবান ধাতু দিয়ে তৈরি করে দেয়া হত। এক এক সর্দারের রক্ষিতারা এক এক রঙের কালি কপালে লাগিয়ে রাখত । এতে সহজেই অন্যরা বুঝতে পারত যে এই মেয়ে শুধু তার জন্য। হিন্দু ধর্মের সেই সব অলঙ্কার নাকি এখনও শাঁখা সিঁদুর ইত্যাদি আকারে টিকে আছে। অর্থাৎ এই মেয়ের মাথায় সিঁদুর , এটা আমার সম্পত্তি , কেউ এই মেয়েকে ব্যবহার করার চেষ্টা করবা না। কিন্তু পুরুষদের ব্যাপারে এ ধরনের কোন বিধিনিষেধের বালাই নাই, ছিলও না।
দুই. এবার মুল প্রসঙ্গে আসি। আমরা আর বর্বর নাই। এখন এই সভ্যতার মানুষ বিজ্ঞানের অনেক কিছু আবিস্কার করে ফেলেছে। নিজেদেরকে অনেক সভ্য দাবী করি। কিন্তু প্রকৃতিগতভাবে মেয়েদের দুর্বল মানসিকতা যে তৈরি হয়ে আছে সেটা থেকে কি উত্তরন হয়েছে ? আমি একটি উদাহরন দেই , এখোনো দেখবেন মেয়েদের মধ্যে মিস কল দিয়ে কথা বলার প্রবনতা ছেলেদের থেকে বেশি। অথাৎ নিজের অজান্তেই মেয়েরা নিজেদের ভোগের সামগ্রী বানায়। যে তার সাথে কথা বলে যেহেতু একটি ছেলে মজা পাবে , তাই সে টাকা খরচ করে কথা বলুক। সব ক্ষেত্রে বা সবার ক্ষেত্রে যে এটা হয় তা কিন্তু না। পরিবর্তন কিছু হয়েছে। অনেকে নিজেকে সত্যিকার অর্থেই পুরুষের সমকক্ষ করে তুলতে পেরেছে।
কিন্তু সমাজ কি চায়? যত বড় সভ্যতাই হোক সেখানে মেয়েরা তত বড় প্রডাক্ট। বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগীতা কেন হয়? মেয়েরা কেন সৌন্দর্যের পরীক্ষা দিবে বার বার? কেন তাদের পোশাক খুলে খুলে পুরুষদের সামনে নিজেকে প্রমান করার চেষ্টাই বা কেন?সিনেমাগুলোতেও দেখবেন মেয়েদের উপস্থিতি দায়সারা কারনে। হলিউডের দশটা ছবি নিয়ে বসবেন, দেখবেন আটটিতেই মেয়ে আর্টিষ্ট শুধু সেক্মুয়াল কারনে সামনে আসে। আর আমাদের দেশে যে এদের কিভাবে উপস্থাপন করে সেটা তো জানেন ই। আবার বাস্তবে মেয়েরা স্বাধীন ভাবে পোশাক পরলে বা তাদের যেটা করতে ইচ্ছা করে সেটা করলে সেটা নিয়ে এরাই প্রশ্ন তোলে । ছি ছি করে।
বিপননে মেয়েরাই অনেক বড় একটি ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন অফিসে রিসেপশনে সুন্দরী নারী , বড় কর্মকর্তার পি এ সুন্দরী নারী। কেন?
মার্কেটিংএ বড় বড় লোকের মন ভুলাতে সুন্দরী নারী কর্মী রাখা হয়। সুন্দরী নারীরা মার্কেটিংএ সফলও হয়। সব ক্ষেত্রে তার চরিত্র বিক্রি করতে হয় এমনটা মোটেই না। তবে তার আবেদনকে তো ব্যবহার করতেই হয়। বড় বড় শপিং মলে , কোন নামকরা কোম্পানী নতুন প্রোডাক্ট বাজারে নিয়ে আসলে মেয়েদের ব্যবহার লক্ষ্যনিয়। মেয়েরা এসব ক্ষেত্রেও কাজ করবে। করাই উচিৎ, কিন্তু সেটা তার যোগ্যতায়। মেয়ে হয়ে জন্মেছে বলে নয়। তাদের শরীর প্রদর্শনের জন্য তো নয়ই। তাছাড়া মেয়ে হয়ে জন্মানো তো আলাদা কোন গুন হতে পারে না। মেয়েরা তাদের অধিকার আদায় করে নেবে। আদায় করে নেবে স্বাধীনতা। পরিবর্তন হবে মানসিকতার ও। সেটাই তো সভ্যতার মাপকাঠি হওয়া উচিৎ। কিন্তু দীর্ঘদিনের অব্যাবহারে মেয়েরা এখোনো তাদের স্বাধীনতার সঠিক ব্যবহার করতে শিখেছে কিনা সেটাও চিন্তার বিষয়। বেগম রোকেয়ার একটি উক্তি আছে যে, মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের শত্র“। তারা যদি মানসিক ভাবে সম অবস্থানে আসে তো কার সাধ্য যে মেয়েদের প্রডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৫:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



