somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুর অভিভাবকদের প্রতি

১৭ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ১১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিশুরা ছবি আঁকছে, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে, প্রথম-দ্বিতীয় হচ্ছে, সনদপত্র বিতরণ চলছে, এমনকি সাধারণ স্কুল গুলোতেও ছবি আঁকার জন্য নম্বর দে’য়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছে এবং জাপান-ভারত থেকেও পুরস্কার জিতে আসছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই শিশুগুলো বড় হয়ে যায় কোথায় ? কোন ধূম্র ধুসরে মিলায় তারা ?
কিল-গুতো দিয়ে এসব বাচ্চাদেরকে নম্বর কিংবা পুরস্কার পাবার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়। ছবি এরা আঁকেনা, ছবি এদের থেকে জোর করে আঁকিয়ে নে’য়া হয়। এদেরকে কেউ ঘোড়ার ডিম আঁকতে বলেনা, বলে হাঁস মুরগীর ডিম আঁকতে। অথচ ঘোড়ার ডিম আঁকাটাই বাচ্চাদের জন্য খুবই জরুরি, এই জরুরি বিষয়টি থেকে শিশুদেরকে বিরত রাখতে বাধ্য করা হচ্ছে। কোন শিশুচিন্তা এদের মনে কাজ করেনা, করতে দে’য়া হয়না। যেখানে কোন স্বাধীন চিন্তা নেই-শিশুচিন্তা নেই সেখানে শিল্পীচিন্তা অনুপস্থিত। অতএব "হিসাব সোজা"- এরা শিল্পী হবেনা।

এমন গলদের কথা জানা সত্ত্বেও আমাদের যেন কিছুই করার নেই। পূর্ব অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারি আমরা বিশাল একটি ঘাপলার মধ্যে আছি। আমাদের অভিভাবকগণও অনেকেই উপরোক্ত অভিযোগগুলো থেকে মুক্ত নন। একটি শিশু যদি একটি মানুষ আঁকে, তার দুটি শিং-ও কখনো কখনো এঁকে ফেলে, এতে আমাদের মতো শিশু শিল্পী শিক্ষকদের উচিত সেই শিশুটিকে সাবাসী প্রদান করা। অন্যদিকে অভিভাবকগণ নাক সিট্কান, তাদের দাবী হচ্ছে মানুষের আবার শিং থাকে নাকি ! আকাশ আবার হলুদ রঙের হয় নাকি ! এতে করে কি স্কুলে কিংবা প্রতিযোগিতায় নম্বর উঠবে ? আর আমাদের শিক্ষকদের ফ্যাসাদটাও সেখানেই। আমরা শিক্ষকরা চাই স্কুলের নম্বরী দাওয়াই থেকে প্রকৃত শিশু সুলভ চিন্তাটাকে বের করে আনতে, কিন্তু আমরা তা পারছিন না।
শিল্পী সমাজেরও কখনো কখনো সমস্যা ধরা পড়ে। তাঁরা যখন প্রতিযোগিতায় বিচারক থাকেন, তখন তাঁরা ভুলে যান শিশু সুলভ চেতনাটিকে এবং তাঁরা প্রতিযোগিতার বিচারের জায়গাটিতে বয়স্কতার দৃষ্টি ছাপ অনেক ক্ষেত্রে রেখে দেন। যেহেতু তাঁরা শিল্পী, সেহেতু সেই অধিকার তাঁদের সার্টিফিকেটে সংরক্ষিত থাকে। কাজেই তাঁদেরকে নিয়ে বেশি কথা বলার মতো মাস্টার আমি নই। যেহেতু আমরা শিশুদের নিয়ে কাজ করি , সেহেতু এইসব বয়স্ক দৃষ্টিভঙ্গি যে শিশুদের জন্য কত বড় ক্ষতির কারন, তার প্রমান আমার কাছে ঢের রয়েছে- বেশ সম্ভাবনাময় শিশুটিকে এখন আর খুঁজে পাই না।

একুশ শতকে এসে সৃজনশীলতাকে স্কুলিং- এর বাইরে রাখা যাবে না। তাই বলে স্কুলিং- এর বাইরে সৃজনশীলতা নেই এমনটিও বলা যাবেনা। কথা হচ্ছে, এমন স্কুলিং ব্যবস্থা করা যাতে সৃজনশীলতা বিঘ্নিত না হয়ে বরং উৎসাহ পায়। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে আমদের উচিত আমাদের স্কুলগুলোতে “বর্ষ সেরা পদক” প্রবর্তন করা, যা শিশুর শৈল্পিক সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে বিবেচনা করা হবে। তাছাড়াও প্রতিটি ক্লাসে শুধুমাত্র সৃজনশীলতার জন্যে তাৎক্ষণিক ভাবে শ্রেণী সেরা পুরস্কার প্রদান করা উচিত।

সারা বছর শিক্ষকগণ শিশুটির আঁকার ধরণ লক্ষ্য করে বছর শেষে বিবেচনা করবেন কোন শিশুটি “বর্ষ সেরা পদক” পেতে পারেন। এছাড়া প্রতিটি শিশুকে তার শ্রেণী উত্তীর্ণ হলে বর্ষ শেষে একটি সার্টিফিকেট দে’য়া উচিত। প্রতি বছর অধিক গুরুত্ব সহকারে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সহ তা প্রদর্শনীর আয়োজন করা উচিত। হতেও পারে এসব উৎসাতে বেরিয়ে আসবে আগামী দিনের জনাতার শিল্পী, প্রকৃত মানবতার শিল্পী।

শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য, পুরুষরা উঁকি দিতে চেষ্টা করবেন না . . . ২
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:১০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×