somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুপৃষ্ঠ ছেড়ে বেল গাছে চড়তে চান? তবে আপনার জন্যই এই পোস্ট

১৮ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বল্টু মিয়া একজন সুন্দরবনের বিখ্যাত মান্কি, রাইডার, সেল্ফ-হেল্প কমেডিয়ান এবং মোটিভেশনাল স্পিকার (ঠিকঠাকভাবে বাংলা করতে না পারায় দু:খিত)। “আমি-পাগল” পাবলিকেশন্স এর আন্ডারে প্রকাশিত “বেল পারতে গাছে চড়ুন” বইটির জন্য উনি সর্বাধিক বিখ্যাত। এই “বেল পাড়তে গাছে চড়ুন” সিরিজে উনি ১৫ টি বই লিখার আশা করছেন যার সবগুলো মিলে ৩৪ লাখ (ডেস্টিনি আবাল) কপির ও বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন। বই ছাড়াও তিনি ডেস্টিনি আবালদের নিয়মিত গাছে চড়ার কৌশল শেখান।


তিনি বই ছাড়াও ভিডিও সিডি, অডিওটেপ এবং গেমসের মাধ্যমে মানুষকে গাছে চড়তে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। তার সেমিনার এবং প্রোগ্রামগুলো ডেস্টিনি আবালদের মাঝে খুবই জনপ্রিয়। যদিও উনি একজন গাছে চড়ায় বিশেষ পারদর্শী কিন্তু তার অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে তিনি একজন শিক্ষক এবং উনি মানুষকে শেখাতে ভালবাসেন। তার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ বেল গাছে চড়তে এবং বেলের শরবত খেয়ে অধিকতর ভাল জীবন-যাপন করছে। তার রচিত বইগুলো বেলগাছ এবং ন্যাড়া সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দুর করে যেকোন মানুষের জ্ঞানের ভাণ্ডার খুলে দেয়।

উনি যে শিক্ষায় মানুষকে শিক্ষিত করতে চান সে শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উনি নিজে আজ একজন অত্যন্ত সফল বেল গাছচারী এবং উনি মন থেকে চান যেন পৃথিবীর সব মানুষ তার মত করেই সাফল্যের শিখরে (বেল গাছে) আরোহণ করতে পারে। আর এজন্যই এত বড় মাপের একজন বেলগাছ বিশারদ হয়েও তিনি মানুষকে শিক্ষা দেয়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

২০০৫ সালে প্রকাশিত “ভূপৃষ্ঠ ত্যাগ করার পূর্বে” বইতে উনি ভাবী বেল গাছচারীদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

উনি ১০ টি ভিন্ন ভিন্ন লেসনের মাধ্যমে একজন মানুষকে কিভাবে কাটাময় বেল গাছে চড়া যায় সে সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। আর এ লেসনগুলোর মাধ্যমে একজন মানুষ অনায়াসেই তার নিয়মিত বিচরন ক্ষেত্র ভুপৃষ্ঠে বহাল থেকে কাটাময় বেলগাছে চড়ার কৌশল রপ্ত করার জন্য ছক কেটে কাজ করতে পারবেন। এরপর যখন প্রস্তুতি শেষ হবে তখনই তিনি তার ভুপৃষ্ঠকে বিদায় জানিয়ে দিয়ে চড়তে পারবেন তার স্বপ্নের বেলগাছে।

তো চলুন জেনে নেয়া যাক উনি ঠিক কি শেখাতে চাইছেন এই দশটি লেসনের মাধ্যমে। আমি ভাবানুবাদের চেষ্টা করেছি। প্রাঞ্জলতার হানি অবশ্যই ঘটেছে। তবে বোধহয় মূল ম্যাসেজটা বুঝতে অসুবিধে হবে না।

শিক্ষা-১: Check your attitude

দৃষ্টিভঙ্গিই মূলত: মানুষের সবকিছু। শুধুমাত্র বেলের শরবত খাওয়ার জন্য আমি কাউকে বেল গাছে চড়তে বলবনা। যদি কেউ বেলের শরবত খেতে চায় তবে গাছে চড়া ছাড়াও আরও অসংখ্য উপায় আছে এবং সেগুলো বেশ সহজ (যেমন, রাস্তার ধারে হকাররা বেলের শরবত বিক্রি করে। ২ টাকা দেন আর খান। জন্ডিসের রিস্ক আপনার)। যদি আপনি গাছে চড়তে পছন্দ না করেন এবং গাছে চড়তে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় সেগুলো যদি আপনাকে ভীত করে তোলে তাহলে সম্ভবত বেলগাছ আপনার জন্য নয়। আপনি বরঞ্চ ছোটখাট কোন আমগাছ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন।

শিক্ষা-২: Get as much experience as possible on five levels of the B-I Triangle

আমি আমার পূর্ববর্তী বইগুলোতে এই উপদেশ দিয়েছি যে যখন বেল গাছে চড়বেন, তখন শেখার জন্য চড়বেন, বেলের শরবত খাবার জন্য নয়। আপনি যদি চাকরি করেন তবে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য চাকুরি করুন, অর্থ উপার্জন যেন কোনক্রমেই আপনার চাকুরির মূল উদ্দেশ্য না হয়। উদাহরণস্বরুপ, যদি আপনি কিভাবে বেল গাছে চড়তে হয় সে সস্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে চান তবে ডেস্টিনির সদস্য হয়ে যান। এই ডেস্টিনি বর্তমান বিশ্বের একটি অন্যতম সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আপনি নি:সন্দেহে আশ্চর্যান্বিত হবেন এই দেখে যে ব্যবসাটি কতটা সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে একজন কাস্টোমার কেবল নিজের সর্বস্ব ডেস্টিনিকে বিলিয়ে দেয় আর সাথে সাথে নির্দিষ্ট সময়ান্তে তার সামনে হাজির হয় মিথ্যা আর প্রতারণা মিশ্রিত মধুর ফাদ।। বিশ্বে যতগুলো প্রতারক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে এটি তার মধ্যে একটি। অথচ এই অসাধারণ বিজনেস সিস্টেমটি এমন কিছু মানুষ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে যাদের কেবলমাত্র বেল গাছে চড়া আর প্রতারণার শিক্ষা ছাড়া আর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই!!!

শিক্ষা-৩: Always remember that বেল গাছে কাঁটা আছে।

আপনি যদি ভাল বেল গাছচারী হতে চান তবে অবশ্যই আপনার কাঁটা এড়ানোর দক্ষতা থাকতে হবে। যদি আপনি কাঁটা এড়ানোর কাজে দক্ষ না হন তবে গাছে চড়ার পূর্বে যত বেশি সম্ভব কাটার খোঁচা খাওয়ার অভিজ্ঞতা নিন। চল্টু ছাগলা একদা বলেছিলেন, "কিছু কিছু মানুষ জন্ম থেকেই ভাল খোঁচা খেতে পারে। কিন্তু বাকিরাও এই খোঁচা খাওয়ায় দক্ষতা অর্জন করতে পারে শেখা এবং চর্চার মাধ্যমে"। এই আমিও কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে খোঁচা খেতে শিখিনি। ভাল একজন বেল গাছচারী হবার জন্য আমাকে যার-পর-নাই চেষ্টা করতে হয়েছে এবং তারপর আমি সফল হয়েছি। যদি আপনি সত্যিই চমৎকার খোঁচা খেতে চান এবং বেলগাছচারী হতে চান তবে কোন একটি নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা ডিরেক্ট সেলিং কোম্পানিতে জয়েন করুন। অত:পর “আমার সোনার ডেস্টিনি, আমি তোমায় ভালবাসি” টাইপ পোষ্ট দিন। আপনাকে আর কিছু করিতে হবে না। সামুর মামুরা আপনাকে যত ধরনের কাঁটা আছে সবগুলো ব্যবহার করে উত্তম রুপে খোঁচাইতে থাকবে।

শিক্ষা-৪: Be optimistic as well as brutally honest with yourself

আপনাকে অবশ্যই মারাত্মকভাবে সৎ লোক এবং নিরাশাবাদী লোকের মধ্যে তফাৎ বুঝতে হবে। আমি এমন বহু লোককে চিনি যারা খুব ভাল করেই জানে যে ডেস্টিনিতে জয়েন করলে কাজ হবে অথচ পরামর্শ দেবার সময় বলবে,"এসব করে কোন লাভ নেই, এতে কাজ হবে না"। আমি এমন বহু মানুষকে চিনি যারা তাদের ব্রেনটাকে কেবলমাত্র নেতিবাচক খবরের গুদামঘর বানিয়ে রাখতে ভালবাসে এবং ডেস্টিনিতে জয়েন করে না। নেতিবাচক মানুষ অথবা নিরাশাবাদী মানুষ কেউই আসালে মারাত্মকভাবে সৎ নয়। একমাত্র ইতিবাচক এবং ডেস্টিনির সদস্যরাই আশাবাদী ও মারাত্মকভাবে সৎ।

শিক্ষা-৫: আজই শুরু করুন গাছে চড়া:

সাইকেলে না চড়ে কেউ কখনই সাইকেল চালানো শিখতে পারবেনা। সেরকমভাবে কোন একটি গাছে না চড়ে কেউ কখনই গাছে চড়া শিখতে পারবেনা। কিভাবে গাছে চড়তে হয় সে ব্যাপারে অভিজ্ঞতা অর্জন করার একটিইমাত্র পথ আছে। আর তা হল, কোন একটি গাছে চড়ার চেষ্টা শুরু করা। যখন গাচে চড়া পুরোপুরি রপ্ত করতে পারবেন, তখনই শুরু করুন বেল গাছে চড়া। আমি সবসময়ই মানুষকে এই পরামর্শ দিই যে তারা যেন প্রথম অবস্থায় তাদের নিয়মিত বিচরন ক্ষেত্র ভূপৃষ্টেই থাকে এবং একটি ছোট খাট গাছে মাঝে মাঝে চড়ার চেষ্টা করে।

আজ এ পর্যন্তই। বাকি পাঁচটি লেসন সহ বিভিন্ন রকম নতুন নতুন ও মজার মজার বিষয় নিয়ে সামনে আবারও হাজির হব।

কৃতজ্ঞতায়: চাকুরীজীবী থেকে মাল্টিমিলিয়নিয়ার বিজনেস ম্যান হতে চান? তবে আপনার জন্যই এই পোস্ট (মুভি পাগল)

ডিসক্লেইমার: আমার এই পোষ্ট কোন মতেই “রবার্ট কিয়োসাকি” এর লেখার ব্যাঙ্গ নয়। এই লেখাটা তাদের জন্য উৎসর্গকৃত যারা রবার্ট কিয়োসাকি কিম্বা শিব খেরার অসাধারণ মোটিভেসনাল স্পিচ গুলো তাদের মত করে ব্যাখ্যা করে প্রতারণার কাছে ব্যবহার করে।
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×