somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বমানের গবেষণা এখন বাংলাদেশে

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার এক দেশ। এই দেশ পারেনা এমন কিছুই হয়তো থাকবেনা অদূর ভবিষ্যতে। অসম্ভব কে সম্ভব করে তোলার প্রচেষ্টা এ দেশের মানুষকে করেছে পরিচিত।
আজ আমি এমন এক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপামর জনসাধারণের ধারনা এই দেশে গবেষনা কাজে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তার কিছু অংশ ঠিক হলেও সম্পূর্ণটা নয়। বাংলাদেশ এর সর্বচ্চো বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আন্তর্জাতিক মানের গবেষনা হয় তা অনেকের ই অজানা। আমি সৌভাগ্য ক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিভাগ প্রান রসায়ন ও অনুপ্রান বিজ্ঞান বিভাগ এ পড়ার এবং গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছি। এই বিভাগ এবং আমার গবেষণায় কাজ করার সুযোগ আমার আজকের লেখার অনুপ্রেরনা।
প্ল্যান্ট বায়োটেকনোলজী ল্যাব এই আমার গবেষণার হাতেখরি। প্রথমে ধারনা করতাম বাংলাদেশে যেহেতু গরিব দেশ এখানে আর গবেষণা কি হবে? কিন্তু আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হলো যখন আমি জানতে শুরু করলাম যে আমাদের এই ল্যাবে কি ধরনের গবেষণা হয়। আসলেই অভাবনীয়। আমি বিস্মিত হলাম, অবাক হয়ে সবকিছু জানলাম এবং ঠিক করলাম যে আমিও এখানেই গবেষণা করব।
সবার ই হয়তো জানার ইচ্ছা করছে যে কি ধরনের গবেষণা হয় এই ল্যাব এ? তাই এর কিছুটা আলোচনা করছি। সবটা হয়তো এই অল্প পরিসরে লেখা সম্ভব হবেনা তবুও পরবর্তীতে ধারাবাহিক ভাবে লেখার ইচ্ছা আছে।
পুরো বিশ্ব এখন মলিক্যুলার লেভেল এ কাজ করে। তার মানে হচ্ছে শুধু বাহ্যিক দিক নয়, কোষ এর অভ্যন্তরে নিউক্লিক এসিড (DNA) এর পরিবর্তন এবং এর ফলে আরো যে সকল পরিবর্তন হয় তার বিশ্লেষণ করা এখন খুবই প্রয়োজন। বিশ্ব যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এই বিষয়ক গবেষণায় সেখানে আমাদের প্রচেষ্টা থাকাটা খুবই জরুরি। সেই প্রচেষ্টা এবং তার সুফল অচিরেই হয়তো আমাদের চোখে পরবে। এক্ষেত্রে সম্প্রতি পাঁট ও একটি ছত্রাক এর জীবন রহস্য উন্মোচন উল্লেখযোগ্য। এধরণের সাফল্য ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামীতে হয়তো আমরা আরো সুখবর শুনতে যাচ্ছি।
এবার আসি প্ল্যান্ট বায়োটেকনোলজি ল্যাব এর মলিক্যুলার লেভেল এর কাজ এর বর্ননায়, এই ল্যাব এর একটি মূল উদ্দেশ্য হলো লবন সহিষ্ণু ধান গাছ কৃষক এর হাতে তুলে দেওয়া। এর জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রচেষ্টা চলছে। যার মধ্যে মলিক্যুলার লেভেল এর কাজ এর পরিমান খুবই বেশি। এরই মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন পথের মাধম্যে অগ্রসর হয়ে মূল লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। যার মধ্যে রয়েছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে নতুন জীন (segment of DNA) ধান গাছে প্রবেশ এবং প্রকাশ করা। DNA marker(চিহ্ন) এর মাধম্যে উপযুক্ত বৈশিষ্ট্য কে সনাক্তকরন এবং ক্রসিং এর মাধ্যমে তা অধিক ফলনশীল ধান জাতে স্থায়িকরন। এছাড়াও সম্প্রতি ট্রান্সক্রিপ্ট লেভেল এ কোষ এর অভ্যন্তরে পরিবর্তন লক্ষ্য করার কাজ ও হাতে নেয়া হয়েছে। এসব এর সাথে তো রয়েছেই বায়োইনফরমেটিক্স এর কাজ। সর্বোপরি একেবারেই বিশ্ব মানের কাজ। এসব ই সম্ভব হয়েছে কিছু মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা ও মননের কারনে। এক্ষেত্রে আমাদের ল্যাব এর প্রধান গবেষক এর নাম অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। তিনি হচ্ছেন অধ্যাপক ডঃ জেবা ইসলাম সেরাজ। যার তত্ত্বাবধানে এই ল্যাব এর কাজ পরিচালিত হচ্ছে। এরকম কিছু বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধার উপযুক্ত ব্যাবহার এর কারনেই আজকে আমাদের এই বিশ্ব মানের গবেষণা দেখার ও করার সুযোগ হচ্ছে বাংলাদেশে থেকেই।
হয়তো আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে অনেক মেধাবী বিজ্ঞানীই আজ বিদেশে গবেষণা করছেন। কিন্তু আমাদের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে যদি আর একটু গুরুত্ব দেয়া হতো আমাদের এই ধরনের গবেষণাকে হয়ত আমারা আরো এগিয়ে যেতাম। তারপরেও আমি খুবই আশাবাদী যে আমাদের সাফল্যের পাখা হয়তো আরো বিস্তৃত হবে ভবিষ্যতে। এই কামনাই করি।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×