somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদঃ

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এর আজ ৯০ তম জন্মদিন। তার এই জন্মদিনের প্রণঢালা শুভেচ্ছ ও অভিনন্দন। প্রচারে বরবর বিমূক তাজউদ্দিন সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম কিছুই জানে না। দেশে এবং জাতির জন্য তাকে আমাদের জনা খুবই প্রয়োজন।
“১৯৭১ সালে সিমান্ত পাড়ী দিয়ে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রির ই‍ন্দিরা গান্ধির সাথে সাক্ষাত করে ভারতের সহযোগীতার পথ প্রশস্ত করলেন। দলের অন্য কোন নেতাদের সাথে তখনো তার যোগাযোগ ঘটেনি।তবুও তিনি তার কাজ শুরু করলেন। প্রবাসী এই সরকার গঠন এবং পরিচলনা করতে যেয়ে তাকে বারে বারে বাধা এবং ষড়যন্ত্র এর সন্মুখীন হতে হয়েছে। সরকার গঠনের আ‍গেই তিনিই প্রথম বাধার সন্মুখীন হলেন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির কাছ থেকে। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক অথচ বঙ্গবন্ধ‍ুর আত্মীয় দাবী নিযে মনি ‍তাকে নেতা মেনে নেওয়ার হস্যাসকর দাবী করেন। শুধু তাই নয় তার সরকারের বিরোধীতা করে এবং বেতারে তার বক্তৃতা বন্ধ করার জন্য ৪২ জন আওয়ামী লীগ ও যুব নেতার স্বাক্ষর গ্রহণ করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আ‍বেদনপ্রত্র পাঠান।" (মূলধারা ’৭১)

এসব ষড়যন্ত্রকে বিচক্ষনতার সাথে প্রতিহত করে সরকার এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ১১ টি সেক্টর প্রতিষ্ঠা করে তিনি এক বিরল বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধে যোগদানকারী সকল দলে আংশগ্রহন নিশ্চিত করার জন্য একটি উপদেষ্টা মন্ডলী গঠন করে তার সভাপতির দায়িত্ব অর্পন করেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর উপর। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্য়‍য়ে খন্দোকর মোস্তাক যখন বঙ্গবন্ধুর মুক্তির বিনিময়ে পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন এর ষড়যন্ত্র শুরু করে তখন তার বিচক্ষণতা ভন্ডুল করে দিয়ে দেশকে মুক্তির পথে এগিয়ে নেন। এখন বুঝতে পারি যে তাজউদ্দিনের মত বলিষ্ঠ এবং দৃড়চেতা নেতা না থাকলে বাংলাদেশ হয়তো স্বাধীন হত না।মুক্তিযুদ্ধে তার দলের অ‍নেক সহকর্মীরা যখন পরিবার পরিজন নিয়ে আরাম আ‍য়েসে ব্যাস্ত ছিল তখন সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কাজে সর্বক্ষন সময় দেবার জন্য তিনি কলকাতার থিয়েটার রোডের তার কার্যালয়ের সাথে একটি খাট পেতে রাত্রি যাপন করতেন। নিজের পরিবারকে রাখতেন তার থেকে আনেক দূরে।

মুক্তিযুদ্ধের চলাকালিন সময়ে ঈদ উদ্দযাপন করার জন্য বেছে নিযেছিলেন রঙ্গানের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প। ৭১ সা‍লে ঈদের সময় তার স্ত্রী, সন্তাদেরকে সময় নাদিয়ে তিনি ঈদ কাটা‍তে চলে গেলেন মুক্ত অঞ্চলে মুক্তি‍যোদ্ধাদের সাথে। সন্তানতূল্য মুক্তি‍যোদ্ধাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেবার জন্য। তিনি জানতেন ঈদে তাকে না পেয়ে তার স্ত্রী-সন্তানরা কাঁদছে। কিন্তু তিনি এর থে‍কেও বড় দায়িত্ব মনে করলেন ঈদে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য। তিনি বুঝতেন এই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প‍রিবার পরিজন থেকে বহু দূরে। যারা দেশের জন্য জীবন দিতে যাচ্ছে তাদের সাথে সংঙ্গ দেওয়া তার সব থেকে প্রধান দায়িত্ব। তিনি বললেন "যে ছেলেরা তাদের পরিবার পরিজন ছেড়ে দেশ স্বাধীন করার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করার পণ করছে তাদের সাথে ঈদ করা তার কর্তব্য"

১৬ ডিসেম্বরের পর দেশে ফিরে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসা‍বে দেশ পূর্নগঠনে মনোনিবেশ করলেন তাজ্উদ্দিন আহমেদ । ত‍বে তাতে বাধা আসল। নেতার নির্দেশে তাকে প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়ে তার মন্ত্রীসভায় একজন মন্ত্রী হলেন। ভেস্তে গেল তার দেশ গঠনের সমস্ত পরিকল্পনা। তাতেও তিনি রেহাই পেলেন না। নেতার নির্দেশে তিনি মন্ত্রী প‍রিষদ থেকে পদত্যাগ করলেন। চলে গেলেন পর্দার অন্তরালে। এরপরও তিনি রেহাই পেলেন না। ১৫ আগষ্ট পট পরিবর্তণ পর তার কোন ক্ষমতা না থাকা সত্বেও তাকে গ্রেফতার করা হল। তার ব্যাক্তিত্বে ভিত হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রথম থেকে ষড়যন্ত্র করে আসা তারই দলের নেতাদের নির্দেশে তাকে হত্যা করা হল। এই হল তার মত দক্ষ, সফল ভাবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী একজন ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন নেতার শেষ পরিনতী। ত‍বে এটাও শেষ নয়। ৭৫ পর থেকে তার দল, এই দেশের জন্য তার যে বিশাল আবদান তা তুলে ধরতে ‍লজ্জা পায়। মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দিন আহমদ এর যে বিশাল অবদান তা আজ জাতি জানতে পারেনা। তার মত নেতার কর্মকান্ড তুলে ধরলে যে তার দলের অনেকে তার মত দক্ষ, যোগ্য বলিষ্ঠ হত। তা থেকে জাতি ‍বঞ্চিত হল।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×