somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিগন্যাল বাতি

১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মেঘ বৃষ্টির এই জুলাই আগস্টে ফিলিপাইনে ঝকঝকে সকালের দেখা প্রতিদিন মেলেনা। কিন্তু আজকের সকালটা একটু বেশিই রৌদ্রজ্জল। বাসা থেকে বের হয়েই মন ভালো হয়ে গেল। কি চমৎকার নিল আকাশ ! মাঝে মাঝে তুলির আঁচরের মত সাদা মেঘের ছাপ। যদিও তাপমাত্রা একটু বেশী, কিন্তু কোন গুমোট ভাব নেই। বাসা থেকে অফিস কুড়ি মিনিটের পথ। গাড়ীর কাঁচ নামিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। সামনে চৌরাস্তার মোড়ে গাড়ি থামলো। রাস্তার কোণে জ্বলজ্বলে এক লাল বাতি। আমাদের সামনে পেছনে ডানে বামে আর কোন গাড়ি ঘোড়া নেই। নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। তবুও চালক সবুজ বাতির অপেক্ষায় গাড়ি থামিয়ে অপেক্ষা করছে। গাড়ীর পাশেই জেব্রা ক্রসিং। কয়েকটি ছেলে মেয়ে এসে দাঁড়ালো। তাঁরা বাম দিকে যাবে। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় এই ট্রাফিক সিগন্যালে পথচারীর সিগন্যাল বামদিকে লাল হয়ে থাকায় তাঁরাও দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে।
এদের এই ধৈর্য্য আর শৃঙ্খলা দেখে আমার ঠোঁটের কোণায় হাঁসি ফুটে উঠলো। এই ছেলে মেয়েদের যায়গায় নিজেকে ভাবালাম। আমিও হয়তো এমন ফাঁকা রাস্তায় শুধু ট্রাফিক লাইট দেখে অপেক্ষা করতাম না। শুধু আমি নয়, আমাদের দেশের খুব কম মানুষই মনে হয় সিগন্যাল বাতির দিকে তাকায়। আমরা সময়ের মুল্য দিতে জানি। সিগন্যাল বাতি দেখার সময় আমাদের নেই। তাড়া হুড়ো করতে গিয়ে গাড়িতে ধাক্কা লাগতে পারে বা দিতে হতে পারে তাই আমাদের গাড়ীর সামনে পেছনে বেশ শক্ত মোটা ধাতব বাম্মপার লাগাতে হয়। এর পর যত পার হর্ন বাজাও আর মেতে ওঠ সামনে যাবার দৌড়ে। নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এগিয়ে যাওয়াই আমাদের প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য।
আমার এক ফিলিপিনো বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেল। সে গিয়েছিলো বাংলাদেশে এক সপ্তাহের জন্য। ফিরে এলো এক মুখ হাঁসি নিয়ে। জানতে চাইলাম, কেমন দেখলে বাংলাদেশ? সে তাঁর হাঁসিটাকে আর একটু আলোকিত করে বলল, খুব ভালো। তোমাদের দেশের মানুষ বেশ বন্ধুত্ব পরায়ণ। আমি হে হে করে হাসলাম। সেতো অবশ্যই। আমরা খুব অতিথি পরায়ণও। খাবার সময় কোন অতিথি আমাদের ঘরে এসে না খেয়ে গেলে আমাদের অমঙ্গল হয়। তা তুমি কিসে বুঝলে আমরা বন্ধুত্ব পরায়ণ? সে তাঁর হাঁসিটাকে আরও একটু প্রসারিত করল, তোমাদের ড্রাইভারদের দেখে। আমি একটু অবাক, সেটা কি ভাবে? সে ব্যাখ্যা করতে শুরু করলো। দেখো তোমাদের এক গাড়ি চালক অন্য গাড়ির পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে জোরে হর্ন দেয়। সামনের গাড়ি থেকে মুখ বের করে চালক কিছু বলে। মনে হয়, হাই হ্যালো বলছে। হয়তো অনেক দিন দেখা হয়নি, তাই রাস্তায় হাই হ্যালো সেরে নিচ্ছে। অথচ দেখো আমাদের এখানে, একটু ধাক্কা লাগলে রক্ষে নেই। জরিমানা গুনতে হবে।
আমার মুখ শুকিয়ে গেলেও হাঁসি ধরে রাখার চেষ্টা করলাম। মনে মনে ভাবলাম, তুমি যদি সেই ড্রাইভারদের হাই হ্যালোর ভাষা বুঝতে তাহলে তুমি বুঝতে বন্ধুত্ব কাকে বলে।
এর মধ্যে অফিসে চলে এসেছি। দুই মিনিট ট্রাফিক লাইটে দাঁড়িয়ে থেকে আমার খুব বেশী সময়ের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হয়না। আমরা যদি আমাদের দেশে শুধু একটু ধৈর্য ধরে ট্রাফিক আইনগুলো মেনে চলি তাহলে ট্রাফিক জ্যামের পুরো চিত্রটা বদলে যেতে বাধ্য।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×